গভীর রাতে দু-বার গুলির শব্দ ও কিছু লোকের পায়ের আওয়াজ শুনেও আমরা বাইরে আসিনি। নিজের দেশ হলে অন্তত জানলার খড়খড়ি তুলে উঁকি মারতুম, কার কী হল জানবার চেষ্টা করতুম। এখানে সব সময় এই কথাটা মনে থাকে, এটা আমার দেশ নয়, এখানে কোনওরকম ঝামেলায় জড়িয়ে পড়ার দরকার নেই। বেশি কৌতূহল থাকাও ভালো নয়।

ঘুম ভাঙার পর প্রথম দরজা খুলে বাইরে এসে মনে হয়, সব কিছুই ছিল রাত্রির দুঃস্বপ্ন। কী সুন্দর, কী শান্ত এই সকাল, আকাশ কী পরিচ্ছন্ন নীল, অদূরেই নিবিড় সবুজ গাছপালা, মনে হয় একটু হেঁটে গেলেই দেখতে পাব, ঘাসের ওপর ছড়িয়ে আছে শিউলি ফুল।

মোটেলটিতে প্রায় পঞ্চাশটি ঘর, এর চত্বরে প্রায় গোটা চল্লিশেক গাড়ি। আগেকার দিনের সরাইখানার চত্বরে এরকমই গাড়ির বদলে ঘোড়া বাঁধা থাকত।

অধিকাংশ ঘরেরই দরজা জানলা বন্ধ, যাত্রীদের এখনও ঘুম ভাঙেনি।

কাল রাত্তিরে লক্ষ করিনি, আজ দেখলুম, ঘরের বাইরে একটা নোটিশ আছে, ‘অনুগ্রহ করে শয়নকক্ষে মাছ রাখবেন না।’

স্বভাবতই অবাক হলুম। এ আবার কী ব্যাপার? এখানে কি শুধু বাঙালিদের আড্ডা নাকি? নইলে এমন মৎস্য-প্রীতি আর কার হবে?

দীপকদা বুঝিয়ে দিলেন যে, কাছাকাছি নিশ্চয়ই কোথাও মাছ ধরার বিখ্যাত জায়গা আছে। মৎস্য শিকারিরা সন্ধের পর ক্লান্ত হয়ে ফিরে মাছ আর বঁড়শি-ঊড়শি ঘরেই রেখে শুয়ে পড়ে। তাতে ঘরের মধ্যে আঁশটে গন্ধ হয়ে যায়।

শিবাজি বলল, কাল রাত্তিরেই আমি বলেছিলুম না যে মাছের গন্ধ পাচ্ছি?

তা সে বলেছিল বটে। কিন্তু আমরা পাত্তা দিইনি। আমরা ভেবেছিলুম, অনেকদিন ও মাছ খায়নি বলে মনের দুঃখে মাছের গন্ধ কল্পনা করেছে।

এখানে মাছ ধরার ব্যাপারটা অদ্ভুত। অনেকেরই মাছ ধরার নেশা বটে, কিন্তু ধরলেও অনেকেই সে মাছ খায় না। শুধু ধরাতেই আনন্দ। কিছু সরকারি নিয়মেরও কড়াকড়ি আছে। এক পাউন্ড ওজনের কম কোনও মাছ কেউ ধরলেও সেটা আবার জলে ছেড়ে দিতে হবে। ছিপ ফেলে পুঁটি কিংবা মৌরলা মাছ ধরার কথা কেউ কল্পনাও করতে পারে না।

হায়, ধনে-জিরে-কাঁচা লঙ্কা দিয়ে কুচো মাছের ঝোলের যে কী অপূর্ব স্বাদ, তা এরা কোনওদিন জানল না।

আমাদের চা তেষ্টা পেয়েছে। মোটেলে আমরা যে সুইট নিয়েছি, তাতেই রান্নার ব্যবস্থা আছে বটে কিন্তু আমাদের সঙ্গে কোনও সরঞ্জাম নেই। তবে সব মোটেলের কাছাকাছিই বা সংলগ্ন রেস্তোরাঁ থাকে।

দোকানটি ছোট। তবে বাইরে লেখা আছে ‘মাইক্রোওয়েভ ইজ অন’। অর্থাৎ চটপট গরম খাবার পাওয়া যাবে।

বিলেত-আমেরিকার খুব আধুনিক যন্ত্রপাতিও আমাদের দেশের ধনীদের কাছে খুব তাড়াতাড়ি চলে আসে। মাইক্রোওয়েভ উনুনও এসে পড়েছে কি না জানি না, তবে আমি কোথাও দেখিনি। এ দেশে এখন মাইক্রোওয়েভ-এর ধুম চলছে!

বৈজ্ঞানিক তত্বটি আমি ঠিক বুঝিয়ে বলতে পারব না, তবে ব্যাপারটা মোটামুটি এই রকম। একটা চৌকো কাঁচের বাক্সের মতন উনুন। এতদিন পর্যন্ত যত রকম উনুনেই আমরা রান্না করেছি, তা সে কয়লা-গ্যাস-ইলেকট্রিক যাই হোক না কেন, তার উত্তাপ আসে শুধু তলা থেকে। কিন্তু মাইক্রোওয়েভ উনুনে উত্তাপ আসে তলা-ওপর ডানপাশ বাঁ-পাশ অর্থাৎ সব দিক থেকে। সুতরাং বেগুন ভাজতে গেলে যেরকম বারবার ওলটাতে হয়, কিংবা মাংস চাপিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করতে হয় অনেকবার, এতে তার কিছু দরকার হচ্ছে না। চার পাশ দিয়ে উত্তাপ আসছে বলে রান্নাও হয়ে যাচ্ছে, খুব তাড়াতাড়ি। বিভিন্ন পদের রান্নার জন্য উত্তাপ কম-বেশি করার ব্যবস্থা তো আছেই।

দোকানে-দোকানে এই জিনিসের খুবই চল হয়ে গেলেও সবাই বাড়িতে এখনও মাইক্রোওয়েভ-উনুন কেনেনি। আমাদের কলকাতায় যখন প্রথম গ্যাসের উনুন চালু হয়, তখন অনেকে বলেছিল, গ্যাসের রান্না খেলে পেটেও গ্যাস হবে। গত শতাব্দীতে কাঠের জ্বালের বদলে কয়লা চালু হওয়ার সময় অনেকে বলেছিল, কয়লার রান্না হজম হয় না। এখনও অনেকে মাইক্রোওয়েভ সম্পর্কে ওই রকম কথাই বলছে। মানুষের স্বভাব বিশেষ বদলায়নি তা হলে।

দোকানটিতে প্রথম খরিদ্দার হিসেবে ঢুকলুম আমরা সদলবলে। একটি সোনালি-চুল মহিলা সহাস্যে আমাদের অভ্যর্থনা করলেন। ঘরটা টাটকা কফির সুগন্ধে মদির।

দোকানটির নাম সিডার কাফে। জায়গাটির নাম সিডার সিটি। শহর মানে নিশ্চয়ই আড়াইশো-তিনশো নাগরিক, কারণ এখানে ইতস্তত ছড়ানো কয়েকটি বাড়ি ছাড়া শহরের আর কোনও চিহ্ন দেখতে পাইনি। একটু পরেই এখানে একটা দৃশ্য দেখে আমি চমকৃত হয়েছিলুম।

মেনিউ দেখে আমরা খাবারের অর্ডার দিলুম। জিয়া আর প্রিয়াকে নিয়ে কোনও সমস্যা নেই, ওরা এদেশে জন্মেছে, কোন দিন সকালে মন ভালো করবার জন্য ঠিক কোন রকম খাবার দরকার, তা ওরা জানে। ঝটপট নিজেদের পছন্দ জানিয়ে দেয়। আর শিবাজির কোনও খাবারই পছন্দ হবে না বলে তাকে নির্বাচনের কোনও সুযোগই দেওয়া হয় না। জয়তীদিই কার্ডে চোখ বুলিয়ে বলে দেন, শিবাজি, তুমি এগ-স্যান্ডুইচ খাও, তা ছাড়া তোমার কিছু নেই।

কোনওরকম ভোট না নিয়েই জয়তীদি আমাদের দলের নেত্রী হয়ে গেছেন। আমরা যাতে গয়ংগচ্ছ ভাব না দেখিয়ে তাড়াতাড়ি আবার পথে বেরিয়ে পড়তে পারি, সেই জন্য আমাদের তাড়া দেওয়ার ভার তাঁর ওপর। সেই জন্য আমাদের চোখের দিকে তাকিয়ে তিনি বলতে লাগলেন, তোমরা কে কী নেবে, চটপট বলো, চটপট…।

সবচেয়ে মুশকিল মেজদিকে নিয়ে। কিছুতেই উনি মন ঠিক করতে পারেন না। সসেজ বা হটডগের মতন সাধারণ খাবার ওঁর পছন্দ নয়, উনি চান নতুন-নতুন নাম। কালকেই উনি বেশ কায়দায় স্প্যানিশ নাম দেখে একটা অর্ডার দিয়েছিলেন, আসলে দেখা গেল সেটা কাবলিছোলার মিষ্টি ঘুঘনি। অখাদ্য!

আজও তিনি একটা ফ্রেঞ্চ নামের খাবার চাইলেন। আমরা কফি দিয়ে প্রাথমিক পর্ব শুরু করলুম।

ঠিক এই সময় কাঁচের দরজা ঠেলে ঢুকল দুটি ছেলে আর দুটি মেয়ে। ওরা এসে বসল ঠিক আমাদের পাশের টেবিলে।

প্রথম দর্শনেই কেমন যেন চেনা-চেনা লাগল ওদের। এমনিতে সাহেব মেমদের মতোই চেহারা ও পোশাক, কিন্তু মাথার চুল যেন বেশি কালো, একটি মেয়ের মাথায় লম্বা চুল, একটি ছেলের মাথায় বাবরি। ওদের ধরনধারণ দেখে আর একটা ব্যাপারও মনে হয়, ওরা ঠিক আমাদের মতন ভ্রমণকারী নয়, কাছাকাছি কোনও জায়গা থেকে এসেছে চা-জলখাবার খেতে।

জয়তীদি ওদের দিকে মৃদু ইঙ্গিত করে আমাদের বললেন, ওরা লাল ভারতীয়।

শিবাজি উত্তেজিত ভাবে বলল, রেড ইন্ডিয়ানস?

জয়তীদি ধমক দিয়ে বললেন, আস্তে! বাংলায় কথা বলল। ওদের শোনাবার কী দরকার।

আমরা আড় চোখে বারবার ওদের দেখতে লাগলুম। রেড ইন্ডিয়ান শুনলে রোমাঞ্চ হয়ই। হলিউডের কল্যাণে ওদের সাংঘাতিক সব মারামারির ছবি আমরা কত দেখেছি। এখনও সিনেমায় মাথায় পালকের টুপি আর মুখে লাল রং মাখা দুর্ধর্ষ ইন্ডিয়ানদের দেখতে পাই বটে, কিন্তু বাস্তবে ওদের সে রকম অস্তিত্ব নেই। আসল রেড ইন্ডিয়ানদের মেরে-মেরে প্রায় নিঃশেষই করে ফেলা হয়েছে। এক সময় এই কথাটা খুব চালু ছিল :একজন ভালো ইন্ডিয়ান হচ্ছে একজন মৃত ইন্ডিয়ান! মুষ্টিমেয় যারা বেঁচে ছিল, এই কিছুদিন আগে পর্যন্তও তাদের আমেরিকার বিভিন্ন জায়গায় এনক্লেভে ঘিরে রাখা হত, অনেকটা খোঁয়াড়ের জানোয়ারের মতন। এখন অবশ্য ততটা বাধা নিষেধ নেই। ওদের ছেলেমেয়েরাও ইস্কুলে গিয়ে লেখাপড়া করে, মূল জনজীবনের সঙ্গে মিশে গেছে। দেশের ব্যাপারে ওদের কোনও ভূমিকাই নেই। সিনেমায় এক্সটার পার্ট করবার সময় ওরা অনেকে মাথায় পালকের টুপিফুপি পরে নেয়।

ভারতীয় হিসেবে অবশ্য, আমাদের চেয়ে ওরা অনেক বেশি বিখ্যাত। আমরাই শুধু ওদের রেড ইন্ডিয়ান বলি, কিন্তু বাকি পৃথিবী ওদের জানে শুধু ইন্ডিয়ান হিসেবে। উচ্চারণটা অনেকটা ইনজান-এর মতন। অসংখ্য গল্পের বইতে, কমিক স্ট্রিপে ওই ইন্ডিয়ানদের কথাই থাকে। ইওরোপ-আমেরিকার শিশু-কিশোররা জানেই না যে ওই ইন্ডিয়ান ছাড়া আর কোনও ইন্ডিয়ান আছে। অনেক জায়গাতে আমি নিজেই দেখেছি, আমি ইন্ডিয়ান শুনে অনেক ছোট ছেলে-মেয়ে আমার দিকে বড় বড় চোখ করে তাকিয়েছে।

আমিও এই প্রথম ‘লাল ভারতীয়’ চাক্ষুষ দেখলুম, ওরা নিজেদের মধ্যে মগ্নভাবে মৃদু স্বরে গল্প করছে।

লুই লামুর নামে একজন মারামারির গল্পের লেখকের খুব ভক্ত আমাদের শিবাজি। ওই সব বই পড়ার ফলে লাল ভারতীয়দের বিষয়ে তার অনেক জ্ঞান। সে বলল, এই দেশটা তো ওদেরই ছিল, সাদা চামড়ারা জোর করে ছিনিয়ে নিয়েছে…।

অধিকাংশ বাঙালির মতনই শিবাজিরও আবেগের সময় বাংলার বদলে অনর্গল ইংরিজি কথা এসে যায়। সেই জন্য বারবার সে জয়তীদির কাছে ধমক খায়।

এরপর, নাটকের ঠিক দ্বিতীয় দৃশ্যের মতনই দরজা ঠেলে ঢুকল আর একটি দল। এই দলে নারী নেই, তিনজন পুরুষ ও একজন কিশোর।

ওদের দেখে আমি দারুণ চমকে উঠলুম। এও কি সম্ভব? ওদের একজন তো জন ওয়েন! সেই রকম লম্বা চওড়া, সেই বৃষস্কন্দ, সেই মুখে একটু অবহেলার হাসি। পোশাকও অবিকল। মাথায় স্টেটসান, কোমরে চওড়া বেল্ট, দুদিকে দুই রিভলভার। এক্ষুনি দু-হাতে দুটো রিভলভার তুলে নিয়ে দুমদুম শুরু হয়ে যাবে। কত ছবিতে জন ওয়েনকে এরকম দেখেছি।

তারপর মনে পড়ল, জন ওয়েন তো বেঁচে নেই। কিছুদিন আগে ক্যানসারে মারা গেছেন। তাহলে কি কেউ ইচ্ছে করে জন ওয়েন সেজেছে? পাশের লোক দুটোও চেনা-চেনা, একজন রবার্ট ভি নিরো আর একজন ক্লিন্ট ইস্টউড নয়? প্রত্যেকেই সশস্ত্র, কিশোরটির হাতে একটা রাইফেল। চকচকে খাঁকি প্যান্ট আর সাদা গেঞ্জি পরা সবাই।

প্রথমে ভাবলুম, এখানে কি সিনেমার কোনও শুটিং হবে? আমরা ভুল করে ঢুকে পড়েছি?

আমি ফিসফিস করে জয়তীদিকে জিগ্যেস করলুম, এদের মধ্যে কি কেউ সিনেমার…

জয়তীদি হেসে বললেন, যাঃ!

তবু আমার মনে হল, এরা যেন অতীতের একটা পৃষ্ঠা থেকে উঠে এসেছে। এরকম অস্ত্রধারী আমেরিকানদের তো রাস্তা ঘাটে চলাফেরা করতে আগে কখনও দেখিনি। এরা পুলিশও নয়, কারণ পুলিশ সাদা গেঞ্জি পরে রাস্তায় বেরুবে না। আর তিনজনের সঙ্গেই জন ওয়েন, রবার্ট ডি নিরো আর ক্লিন্ট ইস্টউডের কী আশ্চর্য সাদৃশ্য!

জন ওয়েন প্রথমে ঘাড় ঘুরিয়ে দুই টেবিলের দুরকম ভারতীয়দের দেখলেন। তারপর কিশোরটির দিকে তাকিয়ে জিগ্যেস করলেন, হোয়াট উইল য়ু হ্যাভ, সন?

ঠিক সেই রকম গলা, আর এইরকম সংলাপও আমি জন ওয়েন-এর অনেক ছবিতে শুনেছি। নিজের ছেলেকে ‘সন’ বলে সম্বোধনটা আমার বেশ ভালো লাগে। বাংলায় আমরা এরকম বলি না। অবশ্য সংস্কৃতে ‘বস’ ছিল।

দীপকদা বললেন, কাছাকাছি বোধহয় শিকারের জায়গা আছে। কাল রাত্তিরে আমরা নিশ্চয়ই শিকারের গুলির শব্দই শুনেছিলুম।

আমি অবশ্য কথাটা খুব একটা বিশ্বাস করতে পারলুম না। কোমরে পিস্তল গুঁজে কেউ শিকারে যায়? এদের তিনজনেরই চেহারা ওয়েস্টার্ন ছবির নায়কের মতন। এমনও তো হতে পারে, কোনও কারণে এই জায়গাটা গত শতাব্দীতে রয়ে গেছে। এই তিনজন আউট ল এসেছে এই শহর দখল করতে, এখুনি এসে পড়বে গ্যারি কুপার কিংবা বার্ট ল্যাঙ্কাস্টারের মতন চেহারার কোনও শেরিফ, তারপর শুরু হয়ে যাবে ডিসুম ডিসুম!

ক্লিন্ট ইস্টউডের দেখা গেল ভারতীয় মেয়েদের খুব পছন্দ। সে প্রায়ই ত্যারচা চোখে চাইছে জয়তীদির ও মেজদির দিকে। রবার্ট ডি নিরো মনোযোগ দিয়েছে এক প্লেট সসেজে। জন ওয়েন এক আঙুলে টেবিলে টকটক করে কী যেন বাজনা বাজাচ্ছে। আর কিশোরটি তার রাইফেলটি একবার নিজের ডান পাশে আবার বাঁ-পাশে রাখছে।

‘লাল ভারতীয়’দের টেবিল থেকে একটি তরুণী মেয়ে উঠে দাঁড়াল। আমাদের ডিঙিয়ে সে ফিলমের নায়কদের টেবিলটার দিকে চাইল, সে দৃষ্টিতে কী রাগ না বিদ্রূপ না ঘৃণা? মেয়েটি কি ভাবছে, এই লোকগুলোই আমাদের সর্বস্ব কেড়ে নিয়েছে, ওদের জন্যই আমরা নিজের দেশে পরবাসী।

এইবার কি শুরু হবে লড়াই? ‘লাল ভারতীয়’-দের কাছেও নিশ্চয়ই লুকানো অস্ত্র আছে। মেয়েটি ওরকম উঠে দাঁড়িয়ে এক দৃষ্টে চেয়ে আছে কেন? এবার ও কোনও গালাগালি দেবে?

মেয়েটি বলল, হাই এড!

রবার্ট ডি নিরো খাওয়া থেকে মুখ তুলে মেয়েটিকে দেখলেন। তাঁর মুখ ভরে গেল ঝলঝলে হাসিতে। চেয়ার ঠেলে উঠে দাঁড়িয়ে সে বলল, হাই জোয়ি! হাউ হ্যাভ য়ু বিন!

সে প্রায় দৌড়ে গিয়ে মেয়েটিকে জড়িয়ে ধরে ফটাফট চুমু খেল তার দুই গালে। মেয়েটির সঙ্গীরা উঠে দাঁড়িয়ে হাত ঝাঁকাল ওর সঙ্গে। তারপর রবার্ট ডি নিরো ওদের নিয়ে এল নিজের টেবিলে অন্যদের সঙ্গে পরিচয় করাবার জন্য। জন ওয়েন মেয়ে দুটির গালে পিতার মতন স্নেহে চুম্বন ছোঁয়ালেন।

তারপর কী একটা কথায় সবাই মিলে এক সঙ্গে হেসে উঠল।

<

Sunil Gangapadhyay।। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়