মাগরিবের নামযের পর

মাগরিবের নামযের পর মবিন তার ছাত্রীর বাড়িতে যায়। গরমের দিন বলে সন্ধ্যা ৭টার দিকে আযান পড়ে। সাতটা থেকে নটা–এই দুঘণ্টা একনাগাড়ে পড়ায়। মাঝখানে ইন্টারভ্যালের মতো হয়। ছাত্রী এবং ছাত্রীর মা দু’জন উঠে চলে যান। তখন তার জন্যে চা আসে–লেবু চা। চা খাওয়া শেষ হওয়ামাত্র ছাত্রী এবং ছাত্রীর মা ঢোকেন। পড়াশোনা শুরু হয়। দেয়াল ঘড়িতে ন’টার ঘণ্টা পড়ামাত্র ছাত্রী প্ৰথমে ঘড়ির দিকে, তারপর তার মা’র দিকে তাকায় –এর অর্থ পড়া শেষ। দু’জন আবার উঠে চলে যায়।

মবিনের মাঝে মাঝে মনে হয় সে রোবটকে পড়াচ্ছে। যা বলছে লাইলী নামের রূপবতী রোবট তার মেমরি সেলে ঢুকিয়ে নিচ্ছে। পড়ানোয় রোবটের লাভ কতটুকু হচ্ছে তাও ধরা যাচ্ছে না। এ ধরনের ছাত্রী পড়িয়ে আরাম নেই। তাছাড়া সারাক্ষণ ভয়ে ভয়ে থাকতে হয়। কোনো কারণে রোবটের মর্যাদা বা সম্মান ক্ষুন্ন না হয় সেই ভয়।

একবার একটিভ ভয়েস পেসিভ ভয়েস পড়ানোর সময় মবিন একটু ঝুকে এসে–ছেটেবিলের নিচে তার পা লেগে গেল রোবটের সঙ্গে। রোবট ভয়ঙ্করভাবে কেঁপে উঠল। মুখ তুলে তাকাল মবিনের দিকে। তীক্ষ্ণ দৃষ্টি। ঠোঁট কাঁপতে শুরু করছে। মনে হচ্ছে এক্ষুণি প্ৰচণ্ড এক চিৎকার দেবে। মবিনের হাত-পা ঠাণ্ডা হয়ে গেল। রোবটের মা টেবিলের নিচে কী হয়েছে বুঝতে পারলেন না। তবে মেয়ের মুখভঙ্গি দেখে কিছু আঁচ করলেন। শঙ্কিত গলায় বললেন, কী হয়েছে রে?

লাইলী চোখ নামিয়ে বলল, কিছু না।

হাঁপ ছেড়ে মবিন আবার পড়াতে শুরু করল। একবার তার ইচ্ছে করল একটা কাগজে ইংরেজিতে লেখে Young lady, that was not intentional–দিকে বাড়িয়ে দেয়। সেই সাহসও হলো না। মেয়েটি যদি কী লেখা হয়েছে না পড়েই প্ৰেমপত্র লেখা হয়েছে মনে করে চিৎকার দিয়ে ওঠে। চাকরিটা ছেড়ে দিতে পারলে মবিনের জন্য ভালো হতো। ছাড়া যাচ্ছে না। দুঘন্টা পরিশ্রমে সাত শ’ টাকা বেতন প্লাস দুবেলা খাওয়া ভাবা যায় না।

মবিনের ধারণা ছাত্রীর রোবট ভাব এবং ছাত্রীর মায়ের খবরদারি কিছুদিনের মধ্যেই কমে যাবে। যখন দু’জনই লক্ষ করবে এই মাস্টারের উদ্দেশ্য পড়ানো–টেবিলের পা দিয়ে পা চেপে ধরা না, প্রেমপত্র লেখা না।

মবিনের ধারণা মিলছে না–দু’মাস হলো সে পড়াচ্ছে, ছাত্রী এবং ছাত্রীর মা দু’মাস আগে যেমন ছিল এখনো তেমনই আছে। মবিনকে পড়ানোর সময় হাত-পা খুব সাবধানে রাখতে হয়। সারাক্ষণ মনে হয় সে একটা কচ্ছপ হলে মেয়েটিকে পড়ানো সহজ হতো। হাত-পা খোলসের ভেতর ঢুকিয়ে শুধু মাথাটা বের করে ছাত্রী পড়াত।

প্রকৃতি জীব জগতের নানান ‘ফরম’ নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষার পর মানুষের জন্যে বর্তমান ফরম বেছে নিয়েছে। মানুষের জন্যে কচ্ছপ ফরমটাও খুব খারাপ ছিল না।

মবিন তার ছাত্রীর বাসার বারান্দায় উঠে কলিংবেলে হাত রাখল। এই আরেক বিরক্তিকর ব্যাপার। এ বাড়িতে কলিংবেল টেপার অনেকক্ষণ পর একজন কেউ এসে দরজা খোলে। দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে মনে হয় অনন্তকাল পার করে দিচ্ছে।

আজ দেরি হলো না। কলিংবেল টেপামাত্র দরজা খুলে গেল। বুড্ডা মাথা বের করে বলল, আফা পড়ব না।

মবিনের ভুরু কুঞ্চিত হলো। গতকালও রোবট পড়তে আসে নি। কেন আসে নি। সেই কারণও দর্শানো হয় নি। রোবটমাতা শুধু বলেছেন–লাইলী আজ পড়বে না। তুমি রাত ন’টার দিকে এসে খেয়ে যেও। মবিন চলে এসেছে। রাত ন’টায় ভাত খাবার জন্যে যায় নি। খাওয়ার জন্যে আবার ফিরে যেতে লজ্জা লাগল। রাতে হোটেলে খেয়ে নিয়েছে। মানুষের অভ্যাস কত দ্রুত বদলায় কাল রাতে সে টের পেয়েছে। হোটেলের খাবার বলতে গেলে কিছুই খেতে পারে নি। যা খেয়েছে তাও হজম হয় নি–পেট নেমে গেছে।

বুড্ডা বলল, আফনেরে বলছে ভাত খাইয়া যাইতে।

তোমার আপা আজো পড়বে না?

জ্বে না।

পড়বে না কেন শরীর খারাপ?

জ্বে।

কী হয়েছে তার?

শইল খারাপ হইছে।

মবিন চলে আসছে। তার মন একটু খারাপ। হোটেলের ভয়ঙ্কর খাবার আজো খেতে হবে। পেট খারাপের ব্যাপারটা মনে হয় স্থায়ী হয়ে যাবে। মবিন গেট পর্যন্ত চলে এসেছে, বুড়া ছুটে এসে বলল, আম্মা আফনেরে ডাকে।

রোবটের মা অবশ্যি সঙ্গে সঙ্গে দেখা দিলেন না। মবিনকে আধঘণ্টার মতো বারান্দায় বসে থাকতে হলো। বুডা এসে এক সময় বলল, আফনেরে ভিতরে যাইতে বলছে। মবিন বুডার পেছনে পেছনে ঢুকল। রোবটমাতা বললেন, তুমি কাল খেতে আস নি কেন? লাইলী পড়ুন না পড়ুক তোমার দু’বেলা খাওয়ার কথা, তুমি খাবে।

ওর কী হয়েছে?

গায়ে গোটা গোটা উঠেছে, মনে হয় হাম।

আমি কয়েকদিন আসা বাদ দেব?

বাদ দাও। ও সুস্থ হলে আমি খবর পাঠাব।

জ্বি আচ্ছা। আজ তাহলে যাই? এখনি যাবে কেন? ভাত খাও। ভাত খেয়ে একবারে যাও। ভাত দিতে বলেছি। মবিনের খাওয়ার সময় ভদ্রমহিলা সামনে থাকেন না। আজ রইলেন। কাছে এলেন না–দূরে বসে রইলেন। মবিনের অস্বস্তি লাগছে। দীর্ঘদিন একা একা খেয়ে অভ্যাস হয়ে গেছে। মহিলাদের কেউ আশপাশে থাকলে অস্বস্তি লাগে। ভদ্রমহিলা অবশ্যি দূরে বসে আছেন। সেটাও অস্বস্তিকর। মাতৃসম মহিলারা খাবার সময় এত দূরে থাকবেন কেন?

তোমার বাবা-মা কি বেঁচে আছেন?

জ্বি।

কোথায় থাকেন, দেশে?

জ্বি।

বাবা কিছু করেন? স্কুল টিচার ছিলেন। এখন গ্রামেই থাকেন। সামান্য জমিজমা আছে, না থাকার মতোই।

ভাইবোন ক’জন?

ভাই নেই, চার বোন।

বোনদের সব বিয়ে হয়ে গেছে?

দু’জনের হয়েছে।

ব্যক্তিগত সব প্রশ্ন জিজ্ঞেস করার জন্যে রাগ করছ না তো?

জ্বি না। আমার কাজের ছেলেটা বলছিল তোমার ঘরে সুন্দরমতো একটা মেয়েকে দেখেছে।

মেয়েটা কে?

ওর নাম মিতু। ওর বড় ভাই আমার সঙ্গে পড়ত।

যে ভাই খুনের জন্যে জেল খাটছে?

মবিন বিরক্ত হলো–মহিলা সব জেনেশুনেই জিজ্ঞেস করছেন মেয়েটা কে? এতসব প্রশ্নের দরকারই বা কি?

সে দরিদ্র প্রাইভেট মাস্টার। পড়াতে এসেছে, পড়িয়ে চলে যাবে। ব্যাস।

ঐ মেয়ে কি তোমার কাছে প্রায়ই আসে?

জ্বি।

মেয়েটা কী করে।

সিনেমার ছোটখাটো রোল করে।

এতেই ওদের সংসার চলে?

চলে আর কোথায়? কোনোমতে জীবন ধারণ করা।

তিনজনের সংসার, বাড়ি ভাড়া, বোনের স্কুলের খরচ সব মেয়ের সামান্য রোজগারে চলে?

চালাতে হয়।

আমি মেয়েটার নামে অনেক আজেবাজে কথা শুনি। দামি দামি গাড়ি নাকি মাঝেমধ্যে নামিয়ে দিয়ে যায়।

মবিনের খাওয়া হয়ে গেছে। সে হাত ধোয়ার জন্যে উঠল। ভদ্রমহিলা নিজেও উঠে দাঁড়ালেন। উপদেশ দিচ্ছেন এমন ভঙ্গিতে বললেন, এ জাতীয় মেয়েদের সাথে সম্পর্ক না রাখাই ভালো।

মবিন কঠিন কিছু কথা বলতে গিয়েও বলল না। কী হবে কঠিন কথা বলে?

আমি তাহলে যাই?

বোস। আরেকটু বোস। তোমার সঙ্গে একটা জরুরি কথা আছে। খুব জরুরি।

মবিন বিস্মিত হলো। তার সঙ্গে এই মহিলার কী জরুরি কথা থাকতে পারে? টেবিলের নিচে একবার তার রোবটকন্যার পায়ের সঙ্গে তার পা লেগে গিয়েছিল–এই খবরটা কি মেয়ে তার মা’কে জানিয়েছে?

এই ঘরে না, পাশের ঘরে আস। এই ঘরে লাইলীর বাবার কাছে বাইরের লোকজন আসে।

মবিন পাশের ঘরে গেল। এটা মনে হচ্ছে গেষ্টরুম। সুন্দর করে সাজানো। আলনা খালি দেখে মনে হয়। কেউ থাকে না। বোস, তুমি চেয়ারটায় বোস। মবিন অস্বস্তির সঙ্গে বসল। ভদ্রমহিলা দরজা ভিজিয়ে দিয়ে মবিনের সামনে এসে দাঁড়ালেন। গলার স্বর নিচু করে বললেন, কাজের ছেলেটা যে দুপুরে তোমার জন্যে খাবার নিয়ে যায়–লাইলী কি ঐ ছেলের হাতে তোমাকে কোনো চিঠি পাঠিয়েছে?

মবিন হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে রইল। ভদ্রমহিলা বিষন্ন গলায় বললেন, সত্যি কথা বল। আমি খুব অশাস্তিতে আছি।

আমি কিছুই বুঝতে পারছি না। ও শুধু শুধু আমাকে চিঠি লিখবে কেন?

লেখে নাই তাহলে?

জ্বি না।

আচ্ছা তুমি যাও।

সমস্যাটা কী হয়েছে আপনি কি বলবেন?

না, সমস্যা কিছু না।

আমার কারণে কোনো সমস্যা হয়ে থাকলে আমাকে বলে দিন।

বললাম তো কোনো সমস্যা হয় নি। আপনার যদি মনে হয় লাইলীকে পড়াতে না এলে ভালো হয়–তাহলে আমি কাল থেকে আসব না।

ভদ্রমহিলা কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে বললেন, আচ্ছা তাহলে তুমি বরং এস না।

জ্বি আচ্ছা।

আমি শুনেছি তুমি চাকরি খুঁজছ, পাচ্ছো না। আমি লাইলীর বাবাকে বলে দেব। যদি কিছু করতে পারে। ওর তো অনেক জানাশোনা।

তার কোনো দরকার নেই। আমি তাহলে যাই?

দাঁড়াও একটু, তোমার বেতনটা দিয়ে দিই।

মবিন বেতনের অপেক্ষায় বসে রইল। মাস এখনো শেষ হয় নি। দশদিন বাকি। মবিনকে তিনি খামে করে পুরো সাত শ টাকা দিয়ে গেলেন। মবিনের এত খারাপ লাগছে বলার নয়। তার ইচ্ছা করছে টাকাটা রেখে চলে আসতে। সেটা বড় ধরনের অভদ্রতা হয়। সেই অভদ্রতা করার অধিকার তার নেই। তারচেয়ে বড় কথা-সাত শ টাকা তুচ্ছ করার মতো মনের জোরাও তার নাই। সাত শ টাকা অনেক টাকা।

সন্ধ্যাবেলা এখন আর তার কিছু করার নেই। একটা টিউশনি ছেড়ে দিয়ে এইটা নিয়েছিল। এখন দেখা যাচ্ছে একুল ওকুল দু’কূলই গেছে।

চিঠির ব্যাপারটাও বেশ রহস্যময়। এই মেয়ে তাকে চিঠি লিখবে এ জাতীয় উদ্ভট চিন্তা ভদ্রমহিলা কেন করছেন? এতটা সন্দেহ বান্তিকগ্ৰস্ত হলে চলবে কীভাবে?

মবিনের নিজের কুঠুরিতে ফিরতে ইচ্ছা করছে না। কী হবে সেখানে গিয়ে? শীতলপাটির বিছানায় লম্বা হয়ে শুয়ে থাকবে? বালিশের নিচে রাখা মা’র চিঠিটা দ্বিতীয়বার পড়বে?

বাবা মবিন,
আমার দোয়া নিও। দীর্ঘদিন তোমার পাত্ৰাদি পাইতেছি না। তোমার বাবার চোখের অবস্থা খুবই খারাপ হইয়াছে। ডাক্তার দেখাইয়াছি। তাহার অভিমত অতি সত্ত্বর ঢাকা নিয়া চিকিৎসা না করাইলে চক্ষু নষ্ট হইবে। এখন তোমার বিবেচনা।
তুমি সংসারের হল অবস্থা জানা। জানিবার পরও তোমার কোনো পরিবর্তন নাই। ইহাতে আমি এবং তোমার বাবা দু’জনই মর্মাহত। গত মাসে মাত্ৰ পাঁচ শ টাকা পাঠাইয়াছ। অথচ তুমি জানা জোছনার সন্তান হইবে। সে এই কারণে বাবা-মা’র কাছে আসিয়াছে। আমি কোন মুখে জামাইয়ের নিকট হাত পাতিয়া আমার মেয়ের সন্তান প্রসবের খরচ নেই?
তোমার কারণে জামাইয়ের কাছে মাথা হেঁট হইয়াছে। যাহা হউক শুনিয়া খুশি হইবে জোছনার পুত্ৰ সন্তান হইয়াছে। জামাই অত্যন্ত খুশি হইয়াছে। নাতির মুখ দেখিয়া আমি কিছু দিতে পারি নাই। এই লজ্জা রাখবার আমার জায়গা নাই। তুমি অতি অবশ্যই একটি সোনার চেইন খরিদ করিয়া পঠাইবার ব্যবস্থা করিবে।

আল্লাহপাকের দরবারে সর্বদাই তোমার মঙ্গল কামনা করি।
দোয়াগো–
তোমার মা।

মবিন রাত আটটা পর্যন্ত রাস্তায় রাস্তায় হাঁটল। তারপর রওনা হলো মিতুদের বাড়ির দিকে।

তার মন বেশি রকম খারাপ হয়েছে। মিতুকে না দেখলে মন ভালো হবে না।

মিতু বাসায় ছিল না।

ঝুমুর হাসিমুখে বলল, আপা রাতে ফিরবে না। আপার সঙ্গে দেখা করতে হলে সারারাত থাকতে হবে। আপা ভোর রাতের দিকে চলে আসবে। ভালোই হয়েছে, আসুন আমরা সারারাত গল্প করে কাটিয়ে দেই। আপনার কি শরীর টরীর খারাপ করেছে মবিন ভাই? কী অদ্ভুত দেখাচ্ছে!

চা খাওয়াতে পারবে?

অবশ্যই পারব। চিনি এবং চা পাতা ছাড়া চা বানাতে হবে। দু’টাই নাই।

তুমি পানি গরম করতে দাও, আমি নিয়ে আসছি।

আপনি কি জানেন মবিন ভাই দুদিন আগে যে রাতদুপুরে আপনার খোঁজে গিয়েছিলাম?

জানি না তো।

তা জানবেন কেন? আপনি কি আমাদের খোঁজ নেন? খোঁজ নেন না। আমরাই যখন তখন আপনার কাছে ছুটে যাই। মা’র শরীর হঠাৎ খুব খারাপ করেছিল। তখন আপনাকে আনতে গিয়েছিলাম।

কী হয়েছিল?

সে এক লম্বা গল্প, আপনার শুনতে অনেক সময় লাগবে। চা পাতা আর চিনি নিয়ে আসুন, তারপর আপনাকে বলব। আপনার রাতের খাওয়া কি হয়ে গেছে মবিন ভাই?

না।

খুব ভালো হয়েছে, রাতে আমার সঙ্গে খাবেন। আমি আপনাকে রান্না করে খাওয়াব। ঘরে অবশ্য রান্নারও কিছু নেই। আপনাকে ডিমও কিনে আনতে হবে।

আর কিছু লাগবে?

না। আর কিছু লাগবে না। আপনি কিন্তু বেশি দেরি করতে পারবেন না–যাবেন আর আসবেন।

আচ্ছা।

চলুন রাস্তা পর্যন্ত আপনাকে এগিয়ে দিই। আপনাকে একটা গোপন খবর বলি মবিন ভাই। কাউকে কিন্তু বলবেন না। আপা যদি জানে তাহলে সর্বনাশ হয়ে যাবে।

খবরটা কী?

গতকাল থেকে আমাদের টেস্ট পরীক্ষা হচ্ছে। আমি পরীক্ষা দিচ্ছি না। পরীক্ষা দিয়ে তো গোল্লাই খাব। কী দরকার সেধে গোল্লা খাবার?

ঝুমুর খিলখিল করে হাসছে। ঝুমুরের হাসিও মিতুর মতো। হাসলে ঝনঝন শব্দ হয়। মবিনের হাসি শুনতে ভালো লাগছে।

<

Humayun Ahmed ।। হুমায়ূন আহমেদ