পাড়াতলী একটি গাঁয়ের নাম, এই সহজ কথাটি আজ
অনেকেই জানে বলে অনুমান করি। পাড়াতলী
আমাদের আদি বাসস্থান
বহু যুগ ধরে কল্লোলিত মেঘনা নদীর তীরে। এখানেই
ছিলেন আমার পিতা, পিতামহ, মাতামহ আর
প্রবীণ প্রপিতামহ আর বহু গুরুজন। আরও অনেকের
নাম সময়ের কালি ঢেকে
ফেলেছে সে কবে, আমি জানতে পারিনি।

পাড়াতলী গাঁয়ে কখনও সখনও যাই গূঢ় আকর্ষণে
নিজের উৎসের আর পিতার নির্মিত
দালানে প্রবেশ করি কিছু স্মৃতির সুঘ্রাণ নিতে। দালানের
পাশেই পুরনো মসজিদ, মসজিদটির পাশে
কী নিঝুম গোরস্তান, যেখানে আমার পিতা, পিতামহ আর
মাতামহ গভীর, গভীরতম ঘুমে অচেতন এবং আমার প্রিয়
সন্তানও সেখানে আছে মাটির নিচে ঘুমপাড়ানিয়া
গানে মগ্ন দুনিয়ার মাঠের খেলার মায়া ভুলে।

পাড়াতলী গাঁয়ে আজও বিদ্যুৎ পৌঁছেনি। এই গ্রাম
এখনও প্রকৃত গ্রাম রয়ে গেছে, নগরের নষ্টামি, ভ্রষ্টামি
এখনও করেনি স্পর্শ। মেঘনা নদীর ডাকে, আমার উৎসের
গভীর গভীর টানে মাঝে মাঝে আমি পাড়াতলী গাঁয়ে যাই।
১৭.১২.২০০০

Shamsur Rahman।। শামসুর রাহমান