দুপুরে পাড়াগাঁর শোকার্ত উঠোনে একজন জননীর
লাশ আর প্রতিহত, রুদ্ধ ক্যামেরার নূর রসায়ন
মাতৃহারা যুবকের অন্তর্গত গহনে আবার
জন্ম দেয় আরেক সন্তান-একই শরীরে দু’জন বসবাস
করে ক্রমান্বয়ে একজন হতে থাকে। জেনে যায়,
বহু বাধা নিশ্চিত ডিঙোতে হবে ঝরিয়ে বিস্তর স্বেদকণা।
দূর পাড়াগাঁর মাটি চিরে ফসল ফলায় আর
গ্রন্থাগারে নানা গ্রন্থ থেকে সু-প্রচুর বীজ করে আহরণ,
প্রত্যহ মনের জমি চষে সত্যের সন্ধানে মাতে
অবিচল ধীমান কিষান আর বাঁধার দেয়াল
তাসের ঘরের মতো ঝরে যায়; অমাবস্যা রূপান্তরে
কখনও চাঁদের আলো, কখনও রোদ্দুর।

কখনও দেখিনি তাকে, তবু মনে হয়, সে সন্ধানী
আলোকিত পুরুষ আমার
আত্মার আত্মীয়; আজ এই সর্বগ্রসী
সঙ্কটে দেখছি একজন যাচ্ছে হেঁটে লামচরি
গাঁয়ের বিজন পথে নদীর তীরে, হাটে-মাঠে, নগরে-বন্দরে
সেই ঋদ্ধ হিংস্র অন্ধকার গুহায় হানছে
ক্রমাগত আলোর কুঠার, হেনে যাবে বহুকাল। তাকে আজ
স্যালিউট করে গুণী, মানসিক খরায় পীড়িত নরনারী।

Shamsur Rahman।। শামসুর রাহমান