দ্বিতীয় দৃশ্য
পথ
[জগন্নাথ ও নরোত্তমের প্রবেশ। জগন্নাথের হাতে একগাছা মোটা লাঠি]
নরোত্তম। এই পথ, এইখান দিয়ে যাবে। জগা, এখনো বল, সাহস হবে ত?
জগন্নাথ। সাহস হবে না কি রে! শাস্তি নিতে রাজী হয়েই ত শাস্তি দিতে দাঁড়িয়েচি। অনেক দুঃখু দিয়েচে। মা দুর্গা! শুধু এই করো, আজ যেন একটা কাজের মত কাজ করে যেতে পারি। যেন হাত না কাঁপে।
নরোত্তম। হাত কাঁপবে কি রে?
জগন্নাথ। তা পারে। বাপ-পিতামোর কাল থেকে মার খাওয়াটাই অভ্যাস হয়ে আছে কিনা! তাই শেষ পর্যন্ত হাত যদি না ওঠে ত হাতের দোষ, আমার নয়।
নরোত্তম। তবে লাঠিগাছটা আমার হাতে দিয়ে তুই সরে দাঁড়া। দেখি আমি কি করতে পারি।
জগন্নাথ। অমন কথা তুই বলিস নে নরু। তোর ছেলেপুলে আছে, কিন্তু আমার নেই। এই আমার সময়। ছোটবাবু ফিরে এলে আর হবে না, তিনি হাত চেপে ধরবেন। তাই তাঁর জেল থেকে বেরোবার আগেই তার শোধ নিয়ে আমি জেলে গিয়ে ঢুকবো। তুই ঘরে যা।
নরোত্তম। ঘরে যাব না, কাছেই থাকব জগা।
[নরোত্তমের প্রস্থান। অপর দিক দিয়া গোবিন্দ,
বেণী ও দরোয়ানের প্রবেশ। হাতে তাহার লণ্ঠন]
বেণী। (চমকিয়া) দাঁড়িয়ে কে রে?
জগন্নাথ। আমি জগন্নাথ।
গোবিন্দ। পথে দাঁড়িয়ে লোক ভাঙ্গান হচ্চে, কেউ না খেতে যায়! না রে হারামজাদা?
জগন্নাথ। গাল দিয়ো না বলচি গাঙ্গুলীমশাই।
বেণী। গাল দেবে না হারামজাদা—শালা! কাল চাল কেটে ভিটেয় সরষে বুনে দেব জানিস?
জগন্নাথ। অনেকের দিয়েচ জানি, কিন্তু আর না দিতে পার আমি তার ব্যবস্থা কোরে যাব।
বেণী। কি ব্যবস্থা করবি রে হারামজাদা? শুনি?
[এই বলিয়া সে অগ্রসর হইয়া গেল]
জগন্নাথ। এই যে ব্যবস্থা!
নাটক : রমা Chapter : 4 Page: 65
- Details
- Sarat Chandra Chattopadhyay ।। শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
- Category: কবিতার বিষয়
- Read Time: 1 min
- Hits: 206