জটিল কিছু যন্ত্রপাতি দেখে কৌতূহল হয়েছিল মুসার, দেখার জন্য আগের জায়গা থেকে সরে চলে এসেছিল, সে-কারণেই কিশোরকে আক্রান্ত হতে দেখেনি। চাপা চিৎকার শুনে ফিরে তাকাল। গোল্ডের সবুজ পার্কা আর লাল ক্যাপ চিনতে পারল। কিশোরের গলা জড়িয়ে ধরে রেখেছে পোন্ড।
বন্ধুকে সাহায্য করতে ছুটল মুসা।
তবে ওর সাহায্যের প্রয়োজন হলো না। গোন্ডের কনুই আর কজি চেপে ধরে হঠাৎ ঝটকা দিয়ে পাশে সরে গেল কিশোর। জুজুৎসুর প্যাচ হ্যামারলক-এ আটকে ফেলল বিস্মিত গোন্ডকে।
ছাড়ো ছাড়ো! ব্যথা দিচ্ছ তো আমাকে! চেঁচিয়ে উঠল গোল্ড। আমি বুড়ো মানুষ!
আমাকে ধরার আগে কথাটা ভাবা উচিত ছিল আপনার। গোল্ডকে ছেড়ে দিয়ে দ্রুত দুই কদম পিছিয়ে গেল কিশোর। গোল্ড যদি আবার কিছু করতে চায়, পাল্টা ব্যবস্থা নিতে প্রস্তুত ও।
ভুরু দুটো কুঁচকে রেখে বাহুর ওপরের অংশ ডলতে লাগল গোল্ড। আমার ওপর নজর রাখছিলে তুমি। এ সব আমার ভাল লাগে না।
নজর রাখতে আসিনি, আপনার সঙ্গে কথা বলতে এসেছি, জবাবটা দিল মুসা। আপনাকে ঘাবড়ে দিতে চাইনি। বলেই বুঝল ভুল কথা বলে ফেলেছে।
ঘাবড়ে দেবে! চিৎকার করে উঠল গোল্ড, আমাকে? কেউ আমাকে ঘাবড়ে দিতে পারে না!
না না, তাড়াতাড়ি বলল মুসা, আসলে চমকে দিতে চাইনি।
মাটিতে থুতু ফেলল গোল্ড। আমাকে কেউ চমকেও দিতে পারে। পিছন থেকে এসে টেক্স ফেরানিকে অবাক করবে, এত সহজ। আমি তোমাদের আসার শব্দ শুনেছি। তোমাদের গন্ধ পেয়েছি…
ওকে থামিয়ে দেয়ার জন্য কিশোর বলল, আমরা এসেছি আপনার সঙ্গে কথা বলতে।
গোল্ডের ঝোপের মত ভুরুজোড়া কুঁচকে গেল। চোখে সন্দেহ। কী কথা?
থিম পার্ক সম্পর্কে আপনি কী ভাবছেন জানতে এলাম। গ্লিটারবাসীদের কাকে ভোট দেয়া উচিত?
উজ্জ্বল হলো গোল্ডের চেহারা। জরিপ চালাতে এসেছে, আগে বলবে তো। আমার মনে হয় সবারই হ্যাঁ ভোটে ভোট দেয়া উচিত। না দিতে যাবে কেন?
থিম লাইফের আইডিয়াটা তারমানে আপনার পছন্দ হয়েছে?
না হওয়ার কোন কারণ আছে? টাকা আসবে, প্রচুর টাকা! পকেট ভর্তি করে আনবে টুরিস্টরা। আমার খনি দেখতে আসবে। এখানকার সবচেয়ে বড় আকর্ষণ হয়ে উঠবে এটা। পুরানো গোল্ড রাশের দিনগুলোর একটা চিত্র পাবে লোকে। বছর দুএকের মধ্যেই
অবসর নেয়ার মত টাকা কামিয়ে ফেলতে পারব আমি। ফ্লোরিডায় চলে যাব।
প্যান্টের পকেটে হাত ঢোকাল গোল্ড। বের করে এনে সামনে বাড়িয়ে দিল। দেখো।
দুর্বল সূর্যালোকে চকচক করে উঠল হাতের তালুতে রাখা মটরদানার সমান একটা সোনার নুড়ি।
সোনা! চেঁচিয়ে উঠল মুসা।
দাঁত বের করে হাসল গোন্ড। একটা ভাঙা দাঁতের গোড়া দেখা গেল।
এখানে পেয়েছেন? জিজ্ঞেস করল কিশোর।
হ্যাঁ। ঘুরে দাঁড়িয়ে বরফে ঢাকা একটা খাঁড়ির দিকে হাঁটতে শুরু করল গোল্ড। ওর সঙ্গে তাল রেখে হাঁটতে হিমশিম খেয়ে গেল কিশোর ও মুসা।
খাড়িতে পেয়েছি এই নুড়ি, অনর্গল কথা বলে যাচ্ছে গোল্ড। মহা শয়তান ওই খাড়ি, ভীষণ চালাক। কিন্তু আমি ওটার চেয়েও চালাক। আমার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে পারবে না। হাজার হাজার বছর ধরে ওপরের ওই পাহাড় থেকে নালা বেয়ে খাড়িতে এসে পানি পড়ে। বয়ে নিয়ে আসে সোনা। খাড়ির পানি ইউকনে গিয়ে পড়ে। একবার বড় নদীতে সোনা চলে গেলে সেটা আর পাওয়া যায় না। তার আগেই খাড়ি থেকে বের করে নিতে হয়। সেটাই করছি আমি।
আপনি কি প্যান করে সোনা বের করেন? কিশোর জানতে চাইল।
সিনেমায় প্যান করতে দেখেছে ও। বড় বড় চালনির মত জিনিস নিয়ে সোনার খনির ধারে নালার অগভীর পানিতে দাঁড়িয়ে থাকে স্বর্ণসন্ধানীরা। চালনি দিয়ে পানি থেকে নুড়িপাথর, মাটি, কাদা, বালি সব ঘেঁকে তোলে। চালনি নেড়ে নেড়ে সোনার ডো আবর্জনা থেকে আলাদা করে ফেলে। পাথরের চেয়ে সোনা ভারী। তাই আলাদা করতে অসুবিধে হয় না।
প্যান করে বোকারা, গোল্ড বলল। আমি প্রেসার মাইন ব্যবহার করি।
কাঠের একটা লম্বা সরু সেচযন্ত্রের মত জিনিস দেখাল ও। ওটা দেখছ? গরমকালে নালার বুক থেকে চেঁছে তুলে আনা কাদাপানি আমি ঢেলে দিই ওটাতে। পানি, কাদা, সব গড়িয়ে পড়ে যায়। আর সোনা ভারী বলে তলানি হয়ে বাক্সে পড়ে থাকে। গুঁড়ো, নুড়ি, টুকরো, সব।
মুসা জিজ্ঞেস করল, সোনা কতটা পাওয়া যায় এখানে?
বলব না, ওদের দিকে চোরা চাহনি দিল গোল্ড। তবে একটা তথ্য জানাতে পারি। এখনকার দিনে সোনা পেতে চাইলে খনিতে খুঁজে লাভ হবে না, তাতে খাটনিই বাড়বে। আসল সোনা এখন টুরিস্টদের পকেটে।
হাসল কিশোর। আপনার কথায় কিন্তু মনে হচ্ছে থিম পার্ক কোম্পানির কাছে ঘুষ খেয়েছেন।
ধূর! একটা আধলাও দেয় না, জবাব দিল গোল্ড।
কিন্তু আমরা যে শুনলাম, আপনি নাকি ইলকিস বিগসের হয়ে কাজ করেন? মুসা বলল, আপনাকে নাকি অনেক টাকা দিতে দেখেছে।
মুঠোবদ্ধ হয়ে গেল গোল্ডের হাত। কে দেখেছে?
লুক স্টার্লিং, মুসা বলল।
ওর কথা! আস্ত মিথুক! ভঙ্গি দেখে মনে হলো সামনে লুককে পেলে এখনই ঘুসি মেরে বসত গোল্ড। ওর অবর্তমানে বাতাসে মারল। ও আমাকে দেখতে পারে না। যেদিন থেকে বুঝে গেছে, আর সবার মত আমাকে ঠকাতে পারবে না, সেদিন থেকেই আমার পিছে লেগেছে। আজ পর্যন্ত ইলকিস বিগ আমাকে কিছু দেয়নি, বকবকানি ছাড়া।
কথা বলতে যাচ্ছিল কিশোর। থামিয়ে দিল গোল্ড। যাও এখন। আর কোনদিন যেন আমার এলাকায় না দেখি। শুরু থেকেই সন্দেহ হচ্ছিল তোমরা কারও স্পাই, এখন দেখছি ভুল করিনি।
গোল্ডের কাছ থেকে আর কিছু জানা যাবে না। শহরে ফিরে চলল কিশোররা।
কিশোর বলল, লুক আর গোল্ড, দুজনের মধ্যে একজন মিথ্যে বলছে। কোনজন? গোল্ড যদি ইলকিস বিগসের হয়ে প্রচারের কাজ করেই থাকে, সেটা অন্যায় নয়, লুকানোর দরকার কী?
জবাব দিতে যাচ্ছিল মুসা। দূর থেকে আসা শব্দ শুনে থেমে গেল। ঘাড়ের নোম দাঁড়িয়ে গেল। কিশোর! নেকড়ে!
হাসল কিশোর। হ্যাঁ, ডাকটা নেকড়ের ডাকের মতই। গোল্ড আমাদের ভয় দেখাচ্ছে।
কিন্তু মেনে নিতে পারল না মুসা। শহর এখান থেকে কতদূর?
কেন? ভুরু নাচাল কিশোর। তুমি ভাবছ নেকড়েরা শহরের সীমানায় ঢোকে না?
দেখো, কিশোর, ইয়ার্কি না! ফিরে তাকাল মুসা। নীরব কালো গভীর বন। বনের ভিতর কিছু ছায়ার নড়াচড়া। ওগুলোকে শুধু ছায়া ভেবেই সান্ত্বনা পেতে চাইল ও।
লুকও মিথ্যে বলে থাকতে পারেন, আগের প্রসঙ্গে ফিরে গেল কিশোর। গোন্ডের সঙ্গে তাঁর শত্রুতা। বুড়োর বিরুদ্ধে বলতেই পারেন।
শহরে সীমানার বাইরের শেষ ঢালটা পেরোচ্ছে ওরা, এমন সময় শহরের প্রান্তের একটা কেবিন থেকে বিগত্সকে বেরোতে দেখল। মুসা বলল, ভোটর প্রচার করতে বেরিয়েছে। যাই বলল, ভীষণ পরিশ্রমী লোক। চলো, গোেল্ডকে টাকা দিয়েছে কি না জিজ্ঞেস করি।
বিগসও ওদের দেখেছে। দাঁড়িয়ে গেল। ওরা কাছে গেলে জিজ্ঞেস করল, খনি দেখতে গিয়েছিলে নাকি?
কী করে জানলেন? কিশোরের প্রশ্ন।
অনুমান। ওদিক থেকেই এলে তো।
গোল্ড ফেরানির প্রেসার মাইন দেখতে গিয়েছিলাম, কিশোর জানাল।
ভালই করেছ, বিগ বলল। এখানকার একটা দর্শনীয় জায়গা। ঠিকঠাক করে নিয়ে টুরিস্ট আকৃষ্ট করার উপযুক্ত করা গেলে গোল্ড রাশ টাউন হিসেবে কদর বেড়ে যাবে গ্লিটারের।
মুসা বলল, আপনাদের থিম-প্ল্যান নিয়ে গোল্ড কিন্তু খুব আশাবাদী।
মাথা ঝাঁকাল বিগ্স। হবেই। ওর ওই খনি ওকে স্টার বানিয়ে দেবে। হলিউডের ছবিতে যে সব স্বর্ণসন্ধানীদের দেখো, সবাই অভিনেতা, ওর মত আসল স্বর্ণসন্ধানী ওরা কোথায় পাবে? গ্লিটারে থিম পার্কের সবচেয়ে বেশি বেতনভোগী কর্মচারী হয়ে গেলেও অবাক হব না।
আমি তো ভেবেছিলাম, এখনই বেতন পাওয়া শুরু করেছে গোল্ড, বিগৃসের প্রতিক্রিয়া দেখার জন্য বলল কিশোর।
তীক্ষ্ণ হয়ে গেল বিগসের দৃষ্টি। কার কাছে শুনলে? শুনেছি, যার কাছেই হোক, কিশোর বলল। কথাটা ঠিক কি বলুন।
গ্লিটারে থিম পার্কের একমাত্র বেতনভোগী কর্মচারী আমি, বিগস জবাব দিল। আরও কেউ যদি নিজেকে গ্লিটারের কর্মচারী বলে দাবি করে থাকে, কেন করছে আমি জানি না। যাই, অনেক কাজ। এখনও বহু লোককে বোঝননা বাকি।
চলে গেল বিগস।
ও ছাড়া গ্লিটারে থিম পার্কের আর কোন কর্মচারী নেই, হয়তো ঠিকই বলেছে, বিড়বিড় করল কিশোর, কিন্তু কোম্পানির কাছ থেকে কারও ঘুষ খেতে তো কোন অসুবিধে নেই। কোম্পানির হয়ে যদি কাউকে ঘুষ দিয়ে থাকে বিগস্…
নোংরা কাজ করানোর জন্য, কথাটা শেষ করল মুসা। তারমানে, এখন থেকে বিগসের ওপর নজর রাখতে হচ্ছে আমাদের।
এগিয়ে চলল ওরা। পায়ে চলা যে পথটা ধরে চলেছে, সেটা দিয়েই জোসির কুকুরের কেনলগুলোর কাছে যেতে হয়। মোড় পেরোলেই দেখা যাবে। কুকুরের উত্তেজিত চিৎকার শোনা গেল।
মোড়ের অন্যপাশে এসে জানা গেল উত্তেজনার কারণ। চিৎকার করে বলল কিশোর, মুসা, দেখো, একটা কুত্তা দড়ি ছিড়ে পালিয়েছে।
ঘরের কাছে খুঁটিতে বাঁধা থাকে কুকুরগুলো। একটা খুঁটির দড়ি ছেড়া। মুসা বলল, কামড়ে কেটে ফেলেছে।
দৌড়ে আসতে দেখা গেল জোসিকে। কাছে এসে হেঁড়া দড়িটা দেখে মুখ কালো হয়ে গেল। সর্বনাশ! রেড লাইট পালিয়েছে!
প্রতিটি কুকুরের কাছে গিয়ে কানের কাছে মোলায়েম স্বরে কথা বলে বলে ওগুলোকে শান্ত করতে লাগল ও। চুপচাপ দাঁড়িয়ে দেখতে লাগল কিশোররা। কুকুরগুলো শান্ত হলে জোসি বলল, সাংঘাতিক ক্ষতি হয়ে গেল। রেড লাইট ডায়মণ্ডহার্টের সহকারী। ডায়মণ্ড অসুস্থ হলে কিংবা অন্য কোন কারণে স্লেজ টানতে না পারলে রেড লাইট নেতৃত্ব দেয়। ইস, নেকড়েগুলোর ডাক শুনেই কেন যে চলে আসিনি!
নেকড়ের ডাক আমরাও শুনেছি, মুসা বলল।
দলের শক্তি বাড়ানোর জন্য পোষা কুকুরকে লোভ দেখিয়ে ডেকে নিয়ে যায় নেকড়েরা, জোসি বলল। জ্যাক লণ্ডনের কল অভ দি ওয়াইল্ড পড়নি? আবার কুকুরগুলোর কাছে গিয়ে মৃদু স্বরে ওগুলোর সঙ্গে কথা বলতে লাগল ও।
কী মনে হতে রেড লাইটের খুঁটির কাছে গিয়ে দাঁড়াল কিশোর দড়ির ছেড়া মাথাটা হাতে নিয়ে পরীক্ষা করতে লাগল। ফিরে তাকিয়ে ইশারা করল মুসাকে।
মুসাও দেখল দড়িটা। সুতোর ছেড়া মাথাগুলো এত মসৃণ কেন? দাঁত দিয়ে কাটলে কিংবা টানাটানি করে ছিড়লে তো এত সমান হয় না।
ঠিকই বলেছ, মাথা ঝাঁকাল কিশোর। ধারাল ছুরি দিয়ে কাটার মত। মানে বুঝতে পারছ? দড়ির বেশির ভাগটাই কেটে রেখেছিল কেউ। কুকুরটা দুই-চার টান দিতেই বাকিটুকু ছিড়ে গেছে।
দূর থেকে আবার শোনা গেল নেকড়ের ডাক। সঙ্গে সঙ্গে চেঁচানো শুরু করল কুকুরগুলো। জোসি বলল, ইজি, বয়েজ, ইজি।
তুমি ওদেরকে শান্ত করো, জোসিকে বলল কিশোর। আমি আর মুসা গিয়ে রেড লাইটকে খুঁজে আনি।
বাধা দিতে গিয়েও কী ভেবে দিল না জোসি।
রেড লাইটের পায়ের ছাপ অনুসরণ করে বনের মধ্যে এসে ঢুকল কিশোর ও মুসা।
কুকুরটা অনেক বড়। থাবাও বড়। তুষারে গভীর হয়ে ডেবে গেছে। অনুসরণ করা সহজ।
নীচের দিকে চোখ নামিয়ে হাঁটছে দুজনে। কিশোর বলল, আমরা যখন মোড়ের অন্যপাশে, কুকুরগুলো তখন চেঁচাননা শুরু করেছিল। মনে আছে?
মাথা ঝাঁকাল মুসা। হ্যাঁ।
আমার ধারণা, ওই সময়ই দড়ি ছিড়ে বনের দিকে দৌড় দেয় রেড লাইট। আর তাই যদি হয়ে থাকে, বেশি দূরে যায়নি ও।
পায়ের ছাপ ধরে এগোতে থাকল ওরা। বন থেকে বেরিয়ে ছোট্ট এক টুকরো খোলা জায়গা পেরিয়ে আবার বনে ঢুকে গেছে কুকুরটা।
কাঁপা কাঁপা তীক্ষ্ণ চিৎকার থেমে থেমে ভেসে এল বনের ভিতর থেকে। পরস্পরের দিকে তাকাল কিশোর-মুসা। সাবধান হয়ে গেল।
কাছেই নেকড়েগুলো, কণ্ঠস্বর খাদে নামিয়ে বলল মুসা। তারমানে কুকুরটাও আছে।
বনের ভিতর দিয়ে এগোতে এগোতে গাছপালার ফাঁক দিয়ে সামনে ছোট্ট আরেক টুকরো খোলা জায়গা চোখে পড়ল ওদের। ওরা বেরিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে থেমে গেল ডাকাডাকি।
বরফের মত জমে গেল যেন দুজনে। বাতাস স্তব্ধ। কোথাও কোন শব্দ নেই। ভূতুড়ে লাগল এই হঠাৎ নীরবতা। গায়ে কাঁটা দিল।
আস্তে করে গাছের আড়াল থেকে বেরিয়ে এল বাদামি-ধূসর একটা মাদী নেকড়ে। বড় জাতের কুকুরের সমান। দাঁড়িয়ে গেল ওদের দিকে তাকিয়ে।
<