বেয়াড়া আত্মা

পনেরো বছরের ফিলিপ নিজের জন্য এক কাপ কফি এবং দাদি সারাহর জন্য এক কাপ চা বানিয়েছে। দুই হাতে কাপ দুটো নিয়ে দাদির কামরায় ঢুকল সে। আর ঢুকেই স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে পড়ল। একটা ধূসর-সাদা ধোয়ার মেঘ যেন দাদিকে ঘিরে আছে। আজকের আবহাওয়াটা চমৎকার হলেও কামরার ভিতরে খুব শীত শীত লাগছে। বাইরে রোদ, তবে এই কামরাটা এত ঠাণ্ডা হলো কীভাবে, অবাক হয়ে ভাবল ফিলিপ। পায়ের শব্দ পেয়ে দাদি মুখ তুলে তাকিয়েছেন। অপার্থিব একটা মেঘ চারপাশ থেকে তাঁকে ঘিরে আছে দেখে থ হয়ে গেলেন সারাহও। চট করে উঠে দাঁড়ালেন, তবে ধোঁয়ার মেঘটা ঘিরেই থাকল।

এখানেই শেষ হলো না। বাড়ির সব কিছুর উপর সাদা গুঁড়োর একটা স্তর পুরু হয়ে পড়ে থাকতে দেখল তারা। এমনকী নিজের কফি এবং দাদির চায়ের ওপরও ওই একই গুঁড়ো আবিষ্কার করল ফিলিপ। তার ফুপু মেরি রান্না ঘরে ঢুকলেন আবর্জনাগুলো পরিষ্কার করতে। কিন্তু এখানে মেঝের ওপর প্রচুর পানি জমে আছে। কিন্তু রান্না ঘরের কোনো কল খোলা নেই। এত পানি তবে এল কোথা থেকে, অবাক হয়ে ভাবলেন মেরি। এদিকে মেঝেতে আরো পানি আসছে। কিন্তু মেঝেটাতে কোনো গোলমাল নেই। আশপাশে কোনোখান থেকে পানি চুইয়েও পড়ছে না। পানির কাজ করা লোকেদের খবর দিয়ে আনা হলো। কিন্তু তারাও পানির উৎস খুঁজে বের করতে ব্যর্থ হয়ে চলে গেল।

এই ঘটনাটি ঘটে ১৯৬৬ সালের আগস্টের কোনো এক দিনে। ইংল্যাণ্ডের ইয়র্কশায়ারের পনটারাক্ট নামের এক গ্রামে। খুব পুরানো, ছোট্ট একটি গ্রাম এটি।

এদিন সন্ধ্যা সাতটার দিকে আরো অদ্ভুত সব কাণ্ড-কীর্তি শুরু হল বাড়িতে। ফিলিপ আর তার দাদি টিভি দেখছে তখন। রান্না ঘরে চা পাতা আর চিনি ছড়িয়ে পড়ে থাকতে দেখা গেল। তারা যখন অবাক হয়ে দৃশ্যটি দেখছে তখন আপনাআপনি চা পাতার বাক্স মেঝেতে পড়ে গেল। বাড়ির কোনোখান থেকে বিস্ফোরণের চড়া একটা শব্দ শোনা গেল। বিষয়টা কী তদন্ত করতে হলের দিকে দৌড়ে গেল ফিলিপ। সেখানে কাউকেই দেখতে পেল না। তবে আরেকটা আশ্চর্য বিষয় নজর কাড়ল তার। সিঁড়িতে রাখা মাটির টবটা খালি, আর এর গাছটা শূন্যে ভাসছে। সাড়ে নটার দিকে ফিলিপকে নিয়ে তার কামরায় ঢুকলেন দাদি। এখানকার জিনিসপত্র রাখার খোপ, কাপড় সব কিছু যেন মাতালের মত টলছে।

গ্রামের সবচেয়ে নামকরা ওঝা অলিভার ডোনাল্ডকে ডেকে আনা হলো রাত দুটোর দিকে। কিছুই নজরে পড়ল না তার। বললেন, যদি সত্যি কোনো ভূত বাড়িতে আস্তানা গেড়ে থাকে তবে এর কোনো না কোনো চিহ্ন থাকবে, যেমন কিছু ছবি আপনা আপনি ছিঁড়ে যেতে পারে। তার কথা শেষ হতে না হতেই প্রিচার্ড দম্পতির ছবি দেয়াল থেকে মাটিতে পড়ে গেল। ছবিটা ঠিক মাঝখান থেকে দু-ভাগ হয়ে গেল, মনে হয় যেন ধারাল কোনো ছুরি দিয়ে দু-টুকরো করে ফেলা হয়েছে।

মেয়ে ডায়নাসহ মি. ও মিসেস প্রিচার্ড যখন একটা বনভোজন থেকে বাড়িতে ফিরে এলেন তখন বাড়িতে এমন সব কাণ্ড-কীর্তি ঘটে গেছে বিশ্বাসই করতে চাইলেন না তারা। পরের দু-বছর কিছুই ঘটল না। সব কিছু চলল স্বাভাবিক নিয়মেই।

অচেনা এই ভূত বা আত্মা যখন আবার সরব হয়ে উঠল তখন ফিলিপের বয়স সতেরো, আর ডায়নার চোদ্দ। বছরটা বদলেছে, তবে মাসটা সেই আগের মতই আগস্ট।

শুরুতে ফিলিপ আর ডায়নার কামরার জিনিসপত্র মাটিতে পড়তে লাগল। পরের চোটটা গেল মাটির টবগুলোর ওপর দিয়ে। একটার পর একটা ভাঙতে লাগল ওগুলো। বাড়ির বিভিন্ন জিনিসপত্র কোনো কারণ ছাড়াই লাফিয়ে ওপরে উঠে, তারপর নীচে পড়তে লাগল। ডায়নার কামরার জানালাটা আপনা আপনি বিচ্ছিন্ন হয়ে মাটিতে পড়ল। রুমে রাখা একটা বুরুশ উড়ে এসে মেয়েটির নাকে লাগল। তবে নাকে একটা দাগও পড়ল না। সবচেয়ে অস্বস্তিকর ব্যাপার হলো অশুভ আত্মাটা সমস্ত ঘটনা ঘটাতে লাগল যখন ডায়না বাড়িতে থাকে তখনই। ঘরের বাতিগুলো আপনা আপনি নিভে যায় মাঝে মাঝেই।

স্থানীয় গির্জার এক পাদ্রীকে ভূতটাকে তাড়িয়ে দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানানো হলো প্রিচার্ড পরিবারের পক্ষ থেকে। ওই ভদ্রলোক, রেভারেণ্ড ডেভি যখন বাড়িটাতে এলেন এসব ঘটনাকে গাল-গপ্পো বলেই ধরে নিলেন। কিন্তু বাড়িতে ঢোকার কিছুক্ষণের মধ্যেই এসব ভুতুড়ে কাজ কারবারে বিশ্বাস না রেখে উপায় থাকল না। একপর্যায়ে পাদ্রী নিজেই ভয় পেয়ে গেলেন। কামরার কোনায় থাকা বাতির স্ট্যাণ্ডটা হঠাৎ বিনা কারণে লাফিয়ে উঠল। ভিতরের একটা কামরা থেকে ধপাস একটা শব্দ হলো। মনে হলো যেন ভারি কোনো টেবিল উল্টে পড়েছে। যখন কামরাটায় ঢুকল সবাই, দেখল কাপ, পিরিচ মেঝেতে পড়ে আছে। তবে একটাও ভাঙেনি।

বাড়িটাকে ভূতের কবল থেকে মুক্ত না করেই চলে যেতে বাধ্য হলেন রেভারেণ্ড ডেভি। এই ঘটনার পর আরো বেশি জ্বালাতন শুরু হলো। সম্ভবত পাদ্রী ডেভির ব্যর্থতা একে আরো উৎসাহী করে তুলেছে। এদিন রাতে ডায়না যখন ঘুমানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে, কামরার বাতি নিভে গেল। সেলাইয়ের একটা মেশিন রাখা ছিল হলরুমে। স্ট্যাণ্ডসহ উড়ে এসে ডায়নার বুকের ওপর বসে গেল ওটা। অনেক চেষ্টা করেও নড়ানো গেল না। তবে ডায়না যন্ত্রটার কোনো ওজন অনুভব করছে না বুকে। কিছু সময় পর ওজনটা টের পেল সে, এবার যন্ত্রটাকে সরানো গেল।

অশুভ এসব কাণ্ড-কারখানা চলল টানা অনেকগুলো দিন। কখনো গোটা বাড়িটা অদ্ভুত একটা সুগন্ধে ভরে যায়, কখনো পাওয়া যায় বদ গন্ধ। প্লেট, পিরিচ চড়া শব্দে মাটিতে পড়ে। গোটা বাড়িতে শোনা যায় ড্রামের দ্রিম দ্রিম শব্দ, আশপাশের লোকেরাও আতঙ্কে তটস্থ হয়ে উঠল। বেশ কয়েকবার ডায়নাকে ছুঁড়ে ফেলে দেওয়া হলো তার বিছানা থেকে।

১৯৬৮ সালে আশ্চর্য এই ঘটনার খবর এল সংবাদপত্রে। শুধু ইয়র্কশায়ার নয় ইংল্যাণ্ডের বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকেরা গ্রামটিতে ছুটে আসতে লাগল, ভূতটার কাজ-কারবার দেখার জম্য। এমনকী তারা ওটার একটা নামও দিয়ে ফেলল, মি, নোবডি। আর প্রিচার্ডরা একে ডাকেন ফ্রেড নামে।

যতদূর বোঝা যায় বাড়ির সব কিছু উল্টে দেওয়া দারুণ পছন্দ মি. ফ্রেডের। জিনিসপত্র শূন্যে ভাসিয়ে ভারি মজা পায় সে। আর সব আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু ডায়না। তাকে জ্বালাতন করতে পারলেই যেন খুশি হয় সবচেয়ে বেশি। তবে মন্দের ভাল, কখনো আঘাত করেনি ওটা ডায়নাকে।

আরেকবার প্রিচার্ডদের গোটা পরিবার একত্র হয়ে ভূতটার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করল। এর জবাবে ফ্রেড ওপরের তলা থেকে সমানে জিনিসপত্র ছুঁড়ে মারতে লাগল নীচে। মনে হলো যেন বৃষ্টির মত জিনিস পড়ছে ওপর থেকে।

আরেকটা ঘটনা ঘটল একজন অতিথির সামনে। ডায়নার ফুপু মউডি পিয়ার্স এসেছিলেন তাদের সঙ্গে থাকতে। তবে ভূত বা আত্মা-ফাত্মায় তার বিশ্বাস নেই। সময়টা শীতকাল, আর ঘরের সবাই একটা আগুনের চারপাশ ঘিরে বসে ছিল। হঠাৎ ঘরের বাতিগুলো নিভে গেল। আগুনের আলোতে সবাই দেখল ফ্রিজের দরজা খুলে গিয়ে দুধ ভর্তি একটা জগ শূন্যে ভেসে ভেসে আসছে। তারপর নিজে নিজে জগটা খালি হলো মিসেস মউডি পিয়ার্সেও মাথায়।

এর একটু পরেই মিসেস পিয়ার্সের হাতের দস্তানা জোড়া অদৃশ্য হলো। যখন ঘুমাতে গেলেন, কোনখান থেকে যেন বাতাসে ভাসতে ভাসতে হাঁজির হলো দস্তানাদুটো। স্তোত্র গাইতে শুরু করলেন মিসেস পিয়ারস। দস্তানাজোড়া এভাবে নড়তে শুরু করল, যেন কোনো অর্কেস্ট্রা পরিচালনা করছে অদৃশ্য কেউ। কয়েকদিন বাদে যেটা ঘটল এমন ঘটনার নজির আর পাবেন কিনা সন্দেহ। এক সন্ধ্যায় প্রিচার্ডদের গোটা পরিবারটাই বারান্দায় বসে গল্পে-সল্পে মশগুল হয়ে আছেন। এমন সময় বন্ধ দরজা দিয়ে একটা ডিম এভাবে বেরিয়ে এল, যেন বা এখানে কোনো দরজার অস্তিত্বই নেই। শূন্যে কিছুক্ষণ ভেসে থাকার পর মাটিতে পড়ে ভেঙে গেল ডিমটা। তবে ওটা থেকে এমন একটা গন্ধ বের হতে লাগল, মনে হলো জিনিসটা ডিম না সেন্টের বোতল। উঠে গিয়ে ফ্রিজের দরজা খুললেন মিসেস প্রিচার্ড। একটা ডিম খোয়া গেছে। ফ্রিজ থেকে সবগুলো ডিম বের করে একটা ঝুড়িতে রাখলেন তিনি। তারপর ঝুড়িটার ওপর বসে পড়লেন। তবে এতে কোনো কাজ হলো না। একটু পর আরেকটা ডিম উপস্থিত হলো বারান্দায় এবং মাটিতে পড়ে ভাঙল। আরো একটা ডিম নিখোঁজ হলো ঝুড়ি থেকে। একটার পর একটা ডিম শূণ্যে ভেসে এসে মাটিতে আছড়ে পড়তে লাগল। একসময় খালি হতে হতে ঝুড়িতে আর একটা ডিমও রইল না।

কাছের এক চার্চের পাদ্রী ফাদার হাড়সনের কাছ থেকে পবিত্র পানি আনাল প্রিচার্ডরা। তারপর পুরো বাড়িতে ছিটিয়ে দেওয়া হলো ওই পানি। ভূতটাকে বাড়ি ছাড়া করার জন্য প্রার্থনার আয়োজন করা হলো। কিন্তু এর ফলাফল হিসাবে ছাদ থেকে বৃষ্টির ফোটার মত পানি পড়তে লাগল নীচে। সম্ভবত ভূতটা এটা করে বাড়ির লোকেদের দেখিয়ে দিল পবত্র পানিকে ভয় পায় না সে।

এদিন আরো দুটো ঘটনা ঘটল। ডায়না চুল আঁচড়াচ্ছিল। টেবিল থেকে একটা ড্রয়ার বেরিয়ে এসে কামরার এক কোণের দিকে ছুটে গেল। হলে ঝুলানো ধাতব ক্রসটা উড়ে এসে ডায়নার কোমরে লেগে রইল। মনে হলো যেন ডায়নার কোমরটা একটা চুম্বক, যেটা ক্রসটাকে আকর্ষণ করেছে। ওটাকে ছাড়ানোর জোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হলো ডায়না। আতংকিত হয়ে দৌড়ে রুম থেকে বের হয়ে যাওয়ার চেষ্টা করল। তবে সে বের হওয়ার আগেই ক্রসটা মাটিতে পড়ে গেল। ক্রসটা কোমরের সঙ্গে আটকে থাকার চিহ্ন অনেক দিন পর্যন্ত থাকল তার শরীরে।

আগস্ট, ১৯৬৬ থেকে মে, ১৯৬৯ পর্যন্ত ভুতুড়ে এসব কাজকারবার হয় প্রিচার্ডদের বাড়িতে। এসময়টায় তাদের প্রতিবেশীরা বাড়িটাকে একটা আলো ঘিরে থাকতে দেখে। কিন্তু আলোটাকে মোটেই সাধারণ আলো মনে হয়নি। এসময়টায় আশপাশের বাড়িগুলোর থেকে বিদ্যুতের বিলও অনেক কম এসেছে তাদের।

আরেকদিনের ঘটনা। ডায়না কিচেনে কফি বানাচ্ছে। হঠাৎ বাতি নিভে গেল। মিসেস প্রিচার্ড একটা টর্চ আনতে রান্না ঘর থেকে বেরিয়ে গেলেন। এর পরপরই ডায়নার আতংকিত চিৎকার শুনলেন। দৌড়ে এসেই ভয়াবহ একটা দৃশ্য দেখলেন। সিঁড়িতে পড়ে আছে ডায়না। তার সোয়েটার এমনভাবে কেঁটে-ছিঁড়ে গেছে মনে হচ্ছে যেন শক্তিশালী কিছু একটা ওপরতলা থেকে টেনেহিচড়ে নীচে নামিয়েছে তাকে। বাড়ির সবাই দৌড়ে এল তার সাহায্যে। ডায়নার পাশেই সিঁড়িতে হুড়মুড় করে পড়লেন তারা। পরে মেয়েটার গলায় পাওয়া গেল রহস্যমৃয় আঙুলের চিহ্ন।

১৯৬৯-এর মে মাসের শেষ সপ্তাহে শেষবারের মত দেখা দিল, ভূতটা। কিচেনের মেঝেতে অদৃশ্য হয়ে যাওয়ার সময় একে পরিষ্কার দেখলেন বাড়ির লোকেরা। প্রতিবেশীরা বাড়ির সব জায়গায় রসুনের কোয়া ছড়িয়ে দেওয়ার পরামর্শ দিল প্রিচার্ডদের। তারা তাই করলেন। এরপর থেকে আর দেখা দেয়নি ভূতটা।

এই অস্বাভাবিক ঘটনাগুলো নিয়ে অনেক তদন্ত হয়েছে। শেষ পর্যন্ত তদন্ত কর্মকর্তা স্থির সিদ্ধান্তে পৌঁছলেন গ্রামটার যেখানটায় এখন প্রিচার্ডদের বাড়ি ১০৯০-১৫৩৯ সাল পর্যন্ত এখানে একটা গির্জা ছিল। ওই গির্জার এক পাদ্রীকে রাজা অষ্টম হেনরির নির্দেশে ফাঁসিতে ঝুলানো হয়। আট বছরের এক বালিকাকে ধর্ষণ করার অপরাধে এই শাস্তি হয় পাদ্রীর। পাদ্রীকে ফাঁসিতে ঝুলানোও হয় এখন যেখানটতে প্রিচার্ডদের বাড়ি এর সীমানার মধ্যে।

তবে পনটারফ্রাক্ট গ্রামের এই ভুতুড়ে কাণ্ড-কীর্তি নিয়ে যারা গবেষণা করেছেন তারা কোনোভাবেই হিসাব মিলাতে পারেননি, এত দিন বাদে ১৯৬৬ সালে কেন পাদ্রীর আত্মা হঠাৎ সরর হয়ে উঠল। আর একটা প্রশ্নেরও উত্তর মিলল না। সেটা হলো, ওটা পবিত্র পানিতে ভয় পেল না একটুও, অথচ রসুনের কোয়া ছড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বাড়িটা ছেড়ে দিল। কী এর কারণে কে জানে?

<

Super User