ফলকে কার নাম?

এবারে একটা স্বপ্নের বর্ণনা দেব। তরে সাধারণ কোনো স্বপ্ন নয়, আর এর পর যে কাকতালীয় ঘটনাটি ঘটে তা চিন্তার খোরাক জোগানোর জন্য যথেষ্ট। এটি পাঠিয়েছেন আইরিশ একটি প্রকাশনীর প্রতিনিধি। তবে নাম গোপন করার শর্ত ছিল তাঁর। আর যেখান থেকে এটি সংগ্রহ করেছি আমরা সেখানেও তার নাম ছিল না। যাক সরাসরি মূল কাহিনিতে চলে যাওয়া যাক।

এই গল্পের নায়িকা আমার এক দাদী। আর সাক্ষীদের একজন আমার বাবা। যখনকার ঘটনা তখন বাবা তার ফুপু (আমার সেই দাদী) এবং আরও কিছু আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে থাকেন।

একদিন সকালে নাস্তার টেবিলে দাদী ঘোষণা করলেন কাল রাতে আশ্চর্য একটা স্বপ্ন দেখেছেন। বাবার সবসময়ই অদ্ভুত বিষয়ের প্রতি একটা মাত্রাতিরিক্ত আকর্ষণ ছিল। তাই পুরো ঘটনাটি তাঁর নোট বইয়ে লিখে রাখেন। সেখান থেকেই এটা বলছি।

দাদী স্বপ্ন দেখেছেন তিনি একটা গোরস্থানে আছেন। ওটাকে গ্লাসনেভিনের কবরস্থানটা বলে চিনতে পারেন তিনি। চারপাশে ছড়িয়ে থাকা মৃতদের নাম, পরিচয় লেখা অনেক ফলক চোখে পড়ল তাঁর। কিন্তু ওগুলোর একটা দৃষ্টি কেড়ে নিল। কী আশ্চর্য! সাদা মার্বেল পাথরে পরিষ্কারভাবে খোদাই করা তার নিজেরই নাম।

ক্লেয়ার এস.ডি.
মৃত্যু ১৪ মার্চ, ১৮৭৩।
সবার ভালবাসার পাত্রী, সবসময় তাকে মনে রাখব আমরা।

 

আরও আশ্চর্য ব্যাপার, পাথরে খোদাই করা তারিখটা তাঁর স্বপ্ন দেখার দিন থেকে ঠিক একবছর সামনের। তবে আমার দাদী বেশ সাহসী মহিলা। এটাকে খুব একটা পাত্তা দিলেন না। একসময় স্বপ্নটা পুরোপুরি মুছে গেল তাঁর মন থেকে। সময় গড়াতে লাগল। একদিন সকালে নাস্তার টেবিলে তাঁকে দেখা গেল না। সবাই ধরে নিল দাদী গির্জায় গেছেন। তবে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পরও আসতে না দেখে বাবা একজনকে তাঁর কামরায় খোঁজ করতে পাঠালেন, যদি ভিতরে থেকে থাকেন এই মনে করে। দরজায় ধাক্কা দিয়ে কোনো সাড়া না পেয়ে দরজাটা খোলা হলো। বিছানার পাশেই নতজানু হয়ে পড়ে আছেন দাদী। মারা গেছেন আগেই। আর তারিখটা ১৮৭৩ সালের ১৪ মার্চ। ঠিক এক বছর আগে স্বপ্নে যে তারিখটা দেখেছিলেন। দাদীকে কবর দেওয়া হলো গ্লাসনেভিনে। সাদা পাথরের সমাধিফলকে লিখে দেওয়া হলো সেই কথাগুলো, স্বপ্নে দেখা ফলকে যা পড়েছিলেন।

<

Super User