বারান্দায়, আমার অপেক্ষায়
কাহিনিটা শুনিয়েছেন সিংগাপুরের পঁয়তাল্লিশ বছর বয়স্ক এক অফিস সহকারী। গল্পটা বরং তাঁর মুখ থেকেই শুনি।
ফ্ল্যাটে বেশ রাত করে ফেরার অভ্যাস আমার। আর কখনও এটা নিয়ে কোনো ঝামেলায়ও পড়তে হয়নি। তবে একদিন রাত এগারোটার দিকে এমন একটা ঘটনা ঘটল যেটা কোনোদিন ভুলতে পারব না।
কাজ শেষ করে বাসায় ফেরার আগে সেদিন শহরের. অপর পাশের এক বন্ধুর বাড়িতে আড্ডা দিতে গিয়েছি। সন্ধ্যায় আবার আমার স্ত্রী, বাচ্চাদের নিয়ে তার বাবার বাড়িতে গিয়েছে। বাসাতে তাই কেউ নেই।
বেডক সংরক্ষিত এলাকায় এসে বাস থেকে নেমে পড়লাম। তারপর যে ব্লকে থাকি সেদিকে চলে-যাওয়া রাস্তা ধরে রওয়ানা হলাম। বেশ রাত হয়ে যাওয়ায় পথে খুব একটা লোকজন নেই দেখে অবাক হলাম না। তবে আমার সামনে একটা মেয়ে হাঁটছে। মেয়েটার লম্বা চুল, আর চমৎকার কাঠামো পিছন থেকেই পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে।
স্বাভাবিকভাবেই একজন পুরুষ হিসাবে মনে কৌতূহল জেগে উঠল। পিছন থেকে যেমন দেখা যাচ্ছে সামনে থেকেও কি সে এমন সুন্দর? তাকে অতিক্রম করে যাওয়ার জন্য দ্রুত পা চালালাম।
মেয়েটাকে পেরিয়ে গিয়েই চটজলদি একবার পিছন ফিরে চাইলাম দেখার জন্য। মন্দ না। তবে চেহারাটা কেমন ফ্যাকাসে। যেহেতু সামনে চলে এসেছি তাই দ্রুত আমার ব্লকের দিকে হাঁটতে লাগলাম। পাছে আবার আমি তার প্রতি আগ্রহ দেখাচ্ছি ভেবে মেয়েটা অস্বস্তিতে পড়ে যায়।
যখন আমার ব্লকে পৌঁছলাম তখন পিছনে মেয়েটার আর কোনো নাম নিশানা পেলাম না, সামনে তো নয়ই। বাড়ির সামনে এসে লিফটের অপেক্ষায় না থেকে সিঁড়ি বেয়ে পাঁচ তলায় ওঠা স্থির করলাম।
পাঁচ তলায় পৌঁছে সিঁড়ির কোনা থেকে সামনে তাকাতেই তাকে দেখতে পেলাম। এটা সেই মেয়েটা, যে আমার পিছনে ছিল। বারান্দায় দাঁড়িয়ে আমার অপেক্ষা করছে এখন।
আমার দিকে তাকিয়ে হাসল সে।
উল্টো ঘুরেই দৌড়তে শুরু করলাম। পাশের ব্লকে বন্ধুর বাসায় পৌঁছনোর আগ পর্যন্ত থামলাম না। সেই রাতে আর বাড়ি ফিরলাম না।
ঈশ্বরকে ধন্যবাদ এমন ঘটনা জীবনে আর ঘটেনি।
<