শূন্য কফির মগ ভরে বেনের দিকে এগিয়ে দিল টেকোস ফারমিন। এবার তো স্বচক্ষে দেখলে সবকিছু কেমন বদলে গেছে এখানে, বাতিলের ভঙ্গিতে একটা হাত নাড়ল কুক। এটা আর র‍্যাঞ্চ নয় এখন। জমি আছে, কিছু গরু আর ঘোড়াও আছে, কিন্তু কাজ করার মত পরিবেশ বা মেজাজ কোনটাই নেই। একসময় বিশ ত্রিশজন কাজের লোক ছিল। এখন, আমার মত বুড়ো অথর্বকেও যদি গোনায় ধরো, সব মিলিয়ে হয়তো দশজন হবে। স্রেফ নিরীহ পাঞ্চার এরা, পুরানো একজনও নেই।

       কূকশ্যাকের জানালায় দাঁড়িয়ে বিশাল র‍্যাঞ্চ হাউসের দিকে তাকিয়ে আছে বেন স্লেজেল। প্রায় অসময়ে নাস্তা করেছে ও, অতীতের ডাবল-বির সঙ্গে যার কোন সামঞ্জস্যই নেই। ন্যাপারি আর দামী রূপালী কাপড়ে ঢাকা ডিশ দেখে। তাজ্জব বনে গেছে বেন, অ্যাগনেস ব্রেনেলের জন্যে অপেক্ষায় থাকতে হয়েছে পুরো দশটা মিনিট। পুরোটা সময় থালার খাবার নিয়ে খেলেছে অর্ধ-মাতাল বিল। ব্রেনেল। আর এদিকে ডাবল-বিকে নিয়ে নিজের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার ফিরিস্তি শুনিয়ে ওকে ক্লান্ত করে তুলেছে অ্যাগনেস, জানিয়েছে শহরে একটা বাড়ি তৈরির ইচ্ছেও আছে। ইচ্ছে করলে অবশ্য তাই করতে পারে মেয়েটি–স্বামীর টাকায় না হোক, বাপের টাকায় সেটা সম্ভব, কারণ একমাত্র মেয়ের কোন সাধই অপূর্ণ রাখেনি টম নোলান।

স্টোভের পাশে কাঠের বাক্সে থুথু ফেলল টেকোস। কার্লের মৃত্যুর পর থেকে মনে হচ্ছে সবকিছু উচ্ছন্নে যেতে বসেছে! বোতল নিয়ে পড়ে আছে বিল। ওকে নিরস্ত করার যথাসাধ্য চেষ্টা করেছে মিরিয়াম, কিন্তু শেষে ঝগড়া করে আলাদা হয়ে গেছে দু’জন। তাতে বরং পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। জেফকে নিয়ে শহরে থাকছে মিরিয়াম, জেফের স্কুলের পাট না চুকা পর্যন্ত ওখানেই থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। শুকনো হাসি দেখা গেল কূকের মুখে। কিন্তু বেয়াড়া ওই। ছেলেকে স্কুলে আটকে রাখতে পারবে না কেউ, এমনকি মিরিয়ামও পারবে না।

কেমন আছে ও?

চোখ তুলে তাকাল টেকোস। অতীতের ডাবল-বির ঐতিহ্য নিয়ে বোধকরি কেবল ও একাই ভাবে। মেয়েটা হয়েছেও ঠিক ওর মা-র মত সুন্দরী, বনেদী আচরণ আর মিশুক স্বভাবের কারণে বেসিনের সবচেয়ে কাঙ্ক্ষিত নারী।

আর জেফরি?

ফের সশব্দে থুথু ফেলল টেকোস। ছোট্ট একটা বেয়াড়া আঁচিল ও। তোমার। ধারণা তুমি আর বিল বুনো স্বভাবের? ঈশ্বরের দিব্যি, ওই ছেলে তারচেয়েও কয়েক কাঠি বাড়া। ওর তুলনায় তোমরা কিছুই না! নিজেকে বিলি দ্য কিড বা ওরকম কিছু মনে করে সে। পাগলামি ছাড়া আর কি, এভাবে নিজেকে জাহির করে কোন বাচ্চা ছেলে?

জানালা থেকে ঘুরে দাঁড়াল বেন। কিন্তু বরাবরই শান্ত স্বভাবের ছিল ও।

হ্যাঁ, চুপচাপ ঠিকই। কিন্তু দারুণ বিপজ্জনক! গত ছয়টা বছরে অনেক পরিবর্তন হয়েছে ওর।

তাহলে পিস্তল বয়ে বেড়ায় ও?

নড করল টেকোস। দুটো, বেন। একবার ওকে বলেছিলাম কাজ-সারার জন্যে একটা পিস্তলই যথেষ্ট, দুটোর ওজন মানুষের গুরুত্ব বরং: কমিয়ে দেয় অন্তত যে লোক পিস্তলের সঠিক ব্যবহার জানে না। কথাটা হেসেই উড়িয়ে দিয়েছে ও।

বিলি দ্য কিড তো মাত্র একটা পিস্তল ঝোলায়, স্মিত হেসে বলল, বেন।

শ্রাগ করল সে। জেফরি ব্রেনেল দুটো ঝোলায়।

পিস্তলে কেমন ওর হাত?

স্থির দৃষ্টিতে তাকাল কুক। বিলের চেয়ে ক্ষিপ্র, হয়তো তোমার চেয়েও। যদিও একটা কথা জানি আমি।

কি?

বিরক্তি দেখা গেল নীল চোখে। স্টিভ হারকারের চেয়ে ক্ষিপ্র নয় ও।

শূন্য কাপ টেকোসের দিকে বাড়িয়ে ধরল বেন। মাঝে মধ্যেই ভাবি

কি?

সিরেনোর ওই লড়াইয়ের পর নিশ্চয়ই অনেক ভেবেছে স্টিভ হারকার। ওর মত বন্দুকবাজ সবার সমীহ কাড়তে পছন্দ করে। নিজের কাছাকাছি সামর্থ্যের কোন লোককেই এরা পছন্দ করে না, ক্ষমতার অহঙ্কার বলতে পারো। পশ্চিমের সব বিখ্যাত বন্দুকবাজই এই ম্যানিয়ার শিকার। সুযোগ পেলে নিজের শ্রেষ্ঠত্ব প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করবে, এটাই স্বাভাবিক। আমার তো মনে হয় হরকারের গোপন এই ইচ্ছে কোন ভাবে আঁচ করে ফেলেছিল কার্ল ব্রেনেল, সেজন্যেই বিলের বদলে তোমাকেই বেসি ছাড়া করেছে।

মানে?

গোঁফে তা দিল টেকোস। কোন একদিন শো-ডাউন হবেই, বেন। তোমার সঙ্গে হরকারের। কিন্তু কারও পক্ষে বাজি ধরতে পারছি না আমি।

বিল আমার চেয়েও ক্ষিপ্র, টেকোস, এবং নিশানাও ভাল ওর।

সিরেনোর গানফাইটে কিন্তু তার প্রমাণ হয়নি। বিল প্রায় মাতাল ছিল।

নড করল কুক। মাতাল না হলেও কিছু যেত-আসত না। বিল হয়তো ক্ষিপ্র, নিশানাও দারুণ, কিন্তু শত্রুর সামনে দাঁড়াতে সাহস লাগে, মনের জোর থাকতে হয়। শত্রুকে খুন করার ইচ্ছে নিয়ে গুলি ছুঁড়তে হয়, সেটা নেই ওর, যা তোমার আছে।

ফালতু কথা!

উঁহু, ঠিকই বলেছি আমি।

একটা চেয়ারে বসে কফিতে চুমুক দিল বেন। বাবার ব্যাপারটা কি, টেকোস?

মাথার পেছনে একটা বুলেট আঘাত করেছে। নরম ধাতুয় মোড়া পয়েন্ট ফটি-ফোর। রাইফেল বা পিস্তল, দুটোই হতে পারে। যদিও শেরিফ দাবি করেছে। রাইফেলের বুলেট ওটা। ট্রেইলের পাশে কার্লের জন্যে অপেক্ষায় ছিল লোকটা। নরম মাটিতে কনুই আর হাঁটুর দাগ বসে গিয়েছিল, আর পাওয়া গেছে ডজন খানেক সিগারেটের গোড়া। বোঝা গেছে বহুক্ষণ অপেক্ষায় ছিল লোকটা। কার্ল। বরাবরই ওই পথ ধরে ফিরত বাথানে। খুনী সেটা ভাল করেই জানত।

কে করেছে কাজটা, কোন ধারণা আছে তোমার?

দৃষ্টি ফিরিয়ে নিল টেকোস ফারমিন। এখানে ভাল একটা চাকুরি করি আমি, এবং কাজটা পছন্দও করি।

বিল তোমাকে বরখাস্ত করবে না, টেকোস।

বিল আমাকে বরখাস্ত করল বা না-করল, এ নিয়ে দুশ্চিন্তা নেই আমার, বেন। আমি যদি মুখ খুলি হয়তো অন্য কেউ অসন্তুষ্ট হবে। সুতরাং মুখ বন্ধ রাখাই ভাল।

লেযি-এনের লোকেরাই করেছে কাজটা?

হতে পারে, কোন কিছুই নিশ্চিত বলা যাবে না।

টম নোলানকে যতটা ঘৃণা করি, ঠিক ততটাই নিশ্চিত জানি কাউকে ড্রাই গালশ করবে না সে।

কিভাবে নিশ্চিত হচ্ছ তুমি, বেন? কিছুই বলা যায় না। সবই সম্ভব।

দরজার দিকে এগোল বেন, মাঝপথে ফিরে তাকাল। মনে হচ্ছে ফিরে না এলেই ভাল হত।

টাকা আসছে তোমার কাছে, বেন। বুড়ো তোমাকে ভুলে যায়নি। আমার তো ধারণা নিজের যে কোন ছেলের চেয়ে তোমাকেই বেশি পছন্দ করত ও।

হ্যাঁ। জানি আমি। দরজা খুলে আঙিনার দিকে তাকাল ও, বহু দূরে খোলা প্রেয়ারি শেষে নদীর তীরে গাছের সারি চোখে পড়ছে। বাতাসে নড়ছে সবুজ শাখা। পাইন মাখা সুবাসিত বাতাস নাকে দোলা দিচ্ছে। তারপরও মনে হচ্ছে। ফিরে না এলেই ভাল হত, অন্যমনস্ক সুরে বিড়বিড় করল ও।

তোমাকে ফিরে আসতেই হত, বেন। কিছু কিছু কাজ আছে যেটা সবাই করতে পারে না, এবং দেরিতে হলেও সেটা সারতে হয়। প্রীচাররা যেমন বলে: সাধারণ মানুষের চেয়েও বেশি ক্ষমতা আছে, এমন শক্তির পক্ষেই সম্ভব সেসব কাজ করা। তোমাকে ফিরে আসতেই হত, বেন স্লেজেল।

ঘুরে দাঁড়াল ও। ভাল-মন্দ যাই হোক, তার জন্যে, টেকোস?

হ্যাঁ, ভাল বা মন্দের জন্যে। কারণ অদৃষ্টের খণ্ডন এখনও এড়াতে শিখিনি আমরা।

ভাবছি সেটা কি হবে?

কুয়েইন স্যাবে?

বেরিয়ে এসে পেছনে দরজা বন্ধ করে দিল বেন। মূল র‍্যাঞ্চ হাউসের দিকে এগোল। আচমকা বীজের ওপর দু’জন রাইডারকে দেখতে পেল, ঢাল বেয়ে নামতে শুরু করেছে। চোখ কুঁচকে তাকাল ও। রাইডারদের একজন মেয়ে-নিঃসন্দেহে মিরিয়াম। ভুল হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই। বেশিরভাগ পুরুষের চেয়ে অনায়াস দক্ষতার সঙ্গে রাইড করে মেয়েটা, এবং অবশ্যই মেয়েলি ঢঙে।

সাইড স্যাডলে রাইড করছে মেয়েটি। কালো চুলের রাশি খোঁপা বেঁধে রেখেছে ঘাড়ের পেছনে, হ্যাটটা চিবুকের সঙ্গে স্ট্র্যাপ দিয়ে বাঁধা। নীল রাইডিং স্কার্ট আর চামড়ার জ্যাকেট মেয়েটির পরনে। কত হলো ওর বয়েস? আঠারো, ঊনিশ? বছর গুনতে শুরু করতে বেনের মনে পড়ল মিরিয়াম ব্রেনেলের বয়স অন্তত বাইশ বছর।

গেটের দিকে এগোল বেন, গেট খুলে দেবে।

বোনের পাশে রাইড করছে ছেলেটা। লম্বা হয়েছে জেফরি ব্রেনেল। স্যাডলে বসার ভঙ্গি অভ্যস্ত, স্বতঃস্ফূর্ত। কালো পোশাক জেফরির পরনে-হ্যাট থেকে বুট পর্যন্ত সবই কালো। সকালের সূর্যের আলোয় চকচক করছে বুট জোড়া।

হ্যালো, বেন! দূর থেকে স্বাগত জানাল মিরিয়াম ব্রেনেল। শেষপর্যন্ত এসেছ তুমি!

হ্যালো, মিরিয়াম! জেফ!

দস্তানা পরা একটা হাত নাড়ল জেফরি।

ভাই-বোন প্রবেশ করার পর পেছনে গেট বন্ধ করে দিল বেন। মেয়েটির দিকে তাকাল ও, খানিকটা বিস্ময় নিয়ে দেখছে কিশোরী থেকে বদলে গিয়ে, পরিপূর্ণ নারী হয়ে ওঠা মিরিয়ামকে। অপূর্ব সুন্দর কমনীয় মুখ, দীঘল কালো চুল বরাবরের মতই উজ্জ্বল। মায়াবী নীল চোখ, খানিকটা বেগুনী আভা তাতে; আর আছে যে কোন লোকের ভেতরটা দেখার মত তীক্ষ্ণ চাহনি।

মিরিয়ামের চেয়েও বেশি বদলেছে জেফরি। স্যাডল ছেড়ে বোনকে নামতে সাহায্য করল সে। প্রায় বেনের সমান লম্বা ও, খানিকটা শীর্ণ-অন্তত বেনের চওড়া পেশীবহুল কাঁধের তুলনায়। সুদর্শন ফর্সা মুখ, গোঁফ উঠতে শুরু করেছে। দস্তানা খুলে বেনের উদ্দেশে একটা হাত বাড়িয়ে দিল সে। জেফরির স্বতঃস্ফূর্ত ভঙ্গি অন্য একজনের কথা মনে করিয়ে দিল বেনকে-ব্রেনেল এবং ক্যাস্টানে, দুই রক্তের মিশেল হয়েছে তার মধ্যে, কিন্তু বাড়তি কি যেনও আছে-লুকাছাপা, সহজে চোখে পড়ে না–অশুভ একটা ব্যাপার, যেটা হয়তো একসময় তাড়া করবে ওকে, ক্ষতিই করবে ওর।

তোমাকে দেখে খুশি হয়েছি, বেন, বলল জেফরি-নিরুত্তাপ, চাঁছাছোলা স্বর; চোখের চাহনি নিস্পৃহ, স্থির।

মুহূর্তের মধ্যে কালো পোশাকধারী আরেকজনের কথা মনে পড়ল বেনের। আরেক স্টিভ হারকারের দিকে তাকিয়ে আছে, ও! অনুভূতিটা সুখকর নয়, অন্তত ওর জন্যে। রিও ফ্রিয়ো উপত্যকার সব পিস্তলেরো কি কালো পোশাক পরতে শুরু করেছে নাকি?

তুমি দেখছি বেশ স্লিম হয়ে গেছ, হালকা চালে বলল মিরিয়াম।

টেকোসের রান্না মিস্ করেছি না!

বাড়ির দিকে ইঙ্গিত করল মিরিয়াম। ভেতরের লোকজনের জন্যে এখন আর রান্না করে না ও।

জানি।

দস্তানা দিয়ে উরুতে নিচু করে বাঁধা হোলস্টারের ওপর চাপড় মারল জেফরি। তাহলে অ্যাগনেসের কথাও জানো তুমি?

নড করল বেন।

স্ত্রী হিসেবে ওকে পেয়ে ভালই হয়েছে বিলের, মৃদু স্বরে মন্তব্য করল ছেলেটা।

জেফরির দিকে তাকাল বেন, শীতল চ্যালেঞ্জ দেখতে পেল ছেলেটার চোখে। হ্যাঁ, আমারও তাই ধারণা, জেফ।

এখানকার সবকিছু গুছিয়ে নিয়েছে ও।

হ্যাঁ।

ব্যাপারটা তোমার পছন্দ হয়নি, তাই না, বেন?

ক্ষীণ হাসল বেন। আমার পছন্দ-অপছন্দে কি যায়-আসে, অন্তত এখন? নড করল ছেলেটা।

কত হবে ওর বয়েস? স্মৃতির পৃষ্ঠা হাতড়ে বেড়াল বেন। খুব বেশি হলে আঠারো বা ঊনিশ! বিস্ময়কর পরিবর্তন হয়েছে জেফরির-যে ছেলে সারাক্ষণ বাড়ির আশপাশে থাকত; বই, খেলনা আর পোষা জন্তুদের নিয়ে সময় কাটাত; সে-ই এখন জোড়া পিস্তল বয়ে বেড়ায়। প্রায় সময়ই অসুস্থ থাকত সে, অতি মাত্রায় স্পর্শকাতর বলে খুব বেশি সহানুভূতি দেখাতেও সাহস করত না কেউ, গাঢ় নীল চোখে মুহূর্তে অসন্তোষ ফুটে উঠত তাহলে।

কিন্তু সেই তিক্ত অসন্তোষ এখন পরিপূর্ণ এক যুবকের অহঙ্কার হয়ে দাঁড়িয়েছে। সাহস দেখাতে গিয়ে ঔদ্ধত্য আর তাচ্ছিল্য প্রকাশ করছে জেফরি। স্পারঅলা বুট পরছে সে, মুক্তো বসানো হাতলের জোড়া কোল্টের ওজন বয়ে বেড়ায় ওর দুই উরু।

ওজনটা কি শেষপর্যন্ত বইতে পারবে সে? কিংবা জেফরি কি আদৌ বোঝে দুটো পিস্তল ঝোলানোর খেসারত হিসেবে কতটা মূল্য দিতে হয়?

ছয় বছরে নিশ্চয়ই অনেক ঘুরেছ তুমি, বেন? জানতে চাইল মিরিয়াম।

হ্যাঁ, বেশিরভাগ সময় দক্ষিণ-পশ্চিমে কাটিয়েছি। কলোরাডো আর ওয়াইওমিংও গেছি। কিন্তু এ জায়গাটাই এখনও সেরা আমার কাছে।

এখানে থাকতে চাইছ তুমি? প্রশ্নটা করেই বাড়ির দিকে হাঁটা ধরল জেফরি ব্রেনেল।

মনে হয় না।

অ, তাহলে টাকা নিয়ে কেটে পড়বে?

জেফ! লালচে হয়ে গেছে মিরিয়ামের মুখ।

ক্ষীণ হাসল বেন। হয়তো ঠিকই বলেছে ও। যাকগে, তোমাদের দুজন আর বিলকেও দেখতে এসেছি আমি, জেফ।

দ্রুত ওর দিকে ফিরল ছেলেটা, আচমকা মুখে ভান করা পর্দাটা সরে গেল যেন। মুহূর্তের জন্যে, তারপর আগের মতই নিস্পৃহ হয়ে গেল। মনে হয় না বাড়ি ফেরার জন্যে অস্থির হয়ে ছিলে তুমি, প্রায় তাচ্ছিল্যের সুরে বলল সে।

মিরিয়ামের জন্যে দরজা মেলে ধরল বেন। হ্যাঁ, জেফ, আমার ধারণা ছিল সত্যিই বাড়ি ফেরার জন্যে অস্থির হয়ে পড়েছিলাম। কিন্তু এখানে এসে, অবস্থা দেখে ততটা নিশ্চিত নই আর

শহরে একটা গুজব শুনলাম, এরই মধ্যে নাকি গাট-হ্ক ক্রুদের সঙ্গে ঝামেলায় জড়িয়েছ তুমি?

কিচেনের কাছাকাছি চলে এসেছে ওরা। হলওয়েতে ঢুকে ঘুরে দাঁড়াল মিরিয়াম, বেনের মুখে স্থির হলো দৃষ্টি।

খবর দেখছি দ্রুত ছড়ায়, শুকনো স্বরে বলল বেন। হ্যাঁ, ওদের সঙ্গে কিছুটা ঝামেলা হয়েছে। সন্ধের পর লেযি-এনের সীমানা পেরিয়ে এসেছি আমি, স্কিলেট ক্রীকের এপাড়ে ক্যাম্প করেছিলাম। কিন্তু দেখা গেল ডাবল-বির সীমানা নিয়ে সন্দেহ আছে ওদের, ওদের দাবি অনুযায়ী তখনও গাট-হুক রেঞ্জে ছিলাম আমি।

গোলাগুলি হয়েছিল নাকি? জেফরির প্রশ্ন।

না। তিনজন ছিল ওরা–স্লিম, কার্লি আর ফ্রেড মোরিস।

নড করল ছেলেটা। সাধারণত একসঙ্গেই থাকে ওরা। ত্রিরত্ন!

ওদের সঙ্গে হাতাহাতি হলো। স্টিভ হারকার সময়মত না এলে হয়তো মার। খেয়ে ভর্তা হয়ে যেতাম। জ্যাক হারলো ছাড়াও আরেকজন ছিল ওর সঙ্গে, ব্রীড বা মেক্সিকান হবে।

বোনের দিকে তাকাল জেফরি। বাজি ধরে বলতে পারি, ওই লোকটা কারাঞ্চো।

হ্যাঁ, মৃদু স্বরে একমত হলো মিরিয়াম। কারাঞ্চো কে? জানতে চাইল বেন। একটা শকুন!

এবং বাজার্ড! ক্ষীণ হেসে বলল বেন। বিশেষণটা লাগসই হয়, সত্যিই যদি স্টিভ হারকারের সঙ্গে চলাফেরা করে ও।

ওর কাছ থেকে দূরে থেকো, বেন, সতর্ক, উদ্বিগ্ন কণ্ঠে বলল মিরিয়াম। স্টিভ হারকারের সব নোংরা কাজ করে দেয় সে।

মিথ্যে কথা! তপ্ত স্বরে প্রতিবাদ করল জেফরি। এখানে কাউকে ডরায় না স্টিভ হারকার। ওর চেয়ে ফাস্টগান আছে কেউ? অর্থপূর্ণ দৃষ্টিতে বেনের দিকে তাকাল সে। বিলও ওর সমকক্ষ নয়।

দীর্ঘশ্বাস ফেলে শ্রাগ করল বেন। মিরিয়ামের দিকে তাকাতে দেখল মাথা নাড়ছে মেয়েটি। বোনের দিকে পেছন ফিরে ওকে নিরীখ করছে জেফরি-মাপা, উস্কানি আর ঔদ্ধত্য ভরা চাহনি।

তো, বেন, নিস্পৃহ স্বরে জানতে চাইল সে। ঠিক বলেছি না?

হয়তো।

কিংবা তুমিও ওর সমকক্ষ নও।

খানিকটা তেতে উঠল বেনের মেজাজ, জেফরির ছেলেমানুষিতে বিরক্ত। কে ফাস্টগান সেই ফালতু তর্ক করার জন্যে বাড়ি ফিরে আসিনি আমি, কিড।

কে জানে, কি জন্যে এসেছ তুমি, সেটা তুমিই ভাল বলতে পারবে, শান্ত স্বরে বলল জেফরি। কিন্তু গাট-হক ক্রুদের সঙ্গে মোলাকাত করতে একটুও দেরি হয়নি তোমার। সেধে লেযি-এন রেঞ্জে গেছ তুমি, যদিও ঠিকই জানতে ট্রেসপাসারদের দেখলেই তেড়ে আসে ওরা।

একটা বাহু চেপে ধরে জেফরিকে সরিয়ে নিয়ে গেল মিরিয়াম, লিভিংরুমের দিকে এগোল। বিড়বিড় করে অসন্তোষ প্রকাশ করল জেফরি, কিন্তু মিরিয়াম চাপা স্বরে ধমকে উঠতে নিরস্ত হলো।

দেহের পাশে দু’হাত ছড়িয়ে অসহায় ভঙ্গি করল বেন। ছেলেটার ওপর প্রায় খেপে উঠেছিল, ইচ্ছে করছিল খানিকটা হলেও শাসন করবে; কিন্তু শেষ মুহূর্তে নিজেকে সামলে নিয়েছে। জেফরির জোড়া পিস্তল দেখে ভয় পেয়েছে বা দ্বিধা বোধ করেছে তা নয়, বরং নিজেদের মধ্যে তিক্ততা বাড়ানোর অনিচ্ছাই আসল কারণ। শত হলেও এরাই ওর একমাত্র আপনজন, এবং এটাই বড় সত্যি। নিজের সামর্থ্য প্রমাণ করতে জেফরির অতি উৎসাহ তারুণ্যের খামখেয়ালীপনা বলে নিজেকে প্রবোধ দিলেও নিশ্চিন্ত হতে পারছে না।

দু’জনকে অনুসরণ করে লিভিংরূমে ঢুকল ও। বিশাল উইং চেয়ারে বসে আছে বিল ব্রেনেল, হাঁটুর ওপর পড়ে আছে দুই কনুই, শূন্য দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে ফায়ারপ্লেসের দিকে। ঠোঁটে জ্বলন্ত সিগার, আর এক হাতে পানীয়ের গ্লাস। ধোঁয়ার কুণ্ডলী পাক খেয়ে উঠে যাচ্ছে সিলিঙের দিকে। উল্টোদিকের জানালার কাছে দাঁড়িয়ে আছে মিরিয়াম, উদাস দৃষ্টিতে রিও ফ্রিয়োর সৌন্দর্য দেখছে। বোধহয়। টেবিলের কাছে একটা চেয়ারে বসেছে জেফরি, বরাবরের মতই নিস্পৃহ চাহনি চোখে।

মাথা ধরেছে অ্যাগনেসের, চোখ না তুলেই বেনের উদ্দেশে বলল বিল। আমার মনে হয়…ওকে ছাড়াই শুরু করতে পারি আমরা। বেন, নিশ্চয়ই কৌতূহল হচ্ছে বাবা ঠিক কতটা দিয়ে গেছে তোমাকে?

তাড়া নেই আমার।

আড়চোখে ওকে দেখল জেফরি, তারপর আপন-ভাইয়ের ওপর ফিরে গেল তার দৃষ্টি।

সিগারে পাফ করল বিল। উইল অনুযায়ী নগদ টাকা পাবে তুমি, বেন। টাকা…অথবা তোমার আগ্রহ থাকলে র‍্যাঞ্চের অংশও পেতে পারো–চার ভাগের এক অংশ, ক্ষীণ হাসল সে। কিন্তু একটা শর্ত আছে; কখনও আলাদা হতে পারবে না। সত্যি কথা বলতে কি, শর্তটা আমাদের যে কারও জন্যেও প্রয়োজ্য; র‍্যাঞ্চের কাজে সরাসরি কোন অবদান না থাকলেও লভ্যাংশ পাবে, কিন্তু আলাদা। হতে পারবে না কেউ কিংবা অন্য কারও কাছে এই রেঞ্জের কোন অংশ বিক্রিও করা যাবে না। ক্রেতা-বিক্রেতা, এই চারজনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। এই হচ্ছে অবস্থা, ইচ্ছে থাকলে আমার সঙ্গে পার্টনারশীপে র‍্যাঞ্চ চালাতে পারবে তুমি। সেজন্যে মাসিক একটা বেতনও ধার্য করে দিয়েছে বাবা।

এ ব্যাপারে নিশ্চিত নই আমি, বিল, অন্যমনস্ক স্বরে বলল বেন, আনমনে। কার্ল ব্রেনেলের উইলের কথা ভাবছে। বুড়োর ইচ্ছে পরিষ্কার: সে চায়নি চার ছেলে-মেয়ে আলাদা হয়ে যাক; চেয়েছে সম্পত্তি এবং সম্পর্ক, দুটোই অটুট থাকুক।

স্থির দৃষ্টিতে ওকে দেখছে বিল। কিন্তু কোন কিছু বিচার বা নিরীখ করার মত বিচক্ষণতা নেই তার চাহনিতে। তারমানে…আমার সঙ্গে পার্টনারশীপে যেতে চাও?

কারণটা ভাল করে জানো তুমি। সমস্যাটা অন্যখানে, লেযি-এনের সঙ্গে শত্রুতাই আমার দুশ্চিন্তার কারণ।

নিতান্ত অবজ্ঞা ফুটে উঠল জেফরির চাহনিতে।

এটাই শেষ কথা, বেন? মরিয়া হয়ে জানতে চাইল বিল।

বাথানের অবস্থা যা দেখলাম, আমার যথেষ্ট সন্দেহ আছে আসলে র্যাঙ্কিং করছ তুমি। বেশিরভাগ ঘোড়া নেই। টেকোসের কাছে শুনলাম আগের তুলনায় গরুর সংখ্যাও অনেক কমে গেছে। কারণটা জানি না, কিন্তু রাসলিঙের কারণে স্টক ছোট হয়ে গেছে এমন কিছু মানতে রাজি নই আমি, কারণ বরাবরই এ ব্যাপারটা দৃঢ় হাতে সামাল দিত বাবা। রাসলাররাও অদ্ভুত কোন কারণে ডাবল-বি এড়িয়ে চলত।

তো? জেফরির উষ্মা ভরা জিজ্ঞাসা।

পাশ ফিরে তার দিকে তাকাল বেন। সবসময়ই খানিকটা তাচ্ছিল্য আর চ্যালেঞ্জ প্রকাশ পাচ্ছে তরুণের স্বরে। র্যাঞ্চিং করার ইচ্ছে আমার যোলোআনাই। আছে, কিড। ডাবল-বির জমি বেসিনে সেরাগুলোর একটা, ঘোড়া বা গরু চরানোর জন্যে আদর্শ। কিন্তু অযথা ঝামেলা বাড়িয়ে লাভ কি! টাকাই নেব আমি, বিল।

দীর্ঘ নীরবতা নেমে এল কামরায়, ফায়ারপ্লেসে আগুনের মৃদু শব্দই কেবল শোনা যাচ্ছে।

তো? শেষে জানতে চাইল বেন, পুরো ব্যাপারটাই অপছন্দ হচ্ছে ওর, প্রায়। ঘৃণা করছে পরিস্থিতিটা।

ওকে বলল, বিল, শান্ত, মৃদু স্বরে বলল মিরিয়াম।

গ্লাসের সবটুকু তরল গলায় ঢালল বিল ব্রেনেল। কিছু নগদ টাকা ছিল। আমার কাছে। কিন্তু বিয়ের সময়, এবং পরে সবকিছু গুছিয়ে নিতে বেশিরভাগই খরচ হয়ে গেছে, হাত নেড়ে বিলাসবহুল লিভিংরূমটা দেখাল সে। সান্তা ফে থেকে মহিলা কৃক আনতে হয়েছে, অ্যাগনেসের জন্যে কাপড় কিনতে হয়েছে। সান ফ্রান্সিসকোয় হানিমুন করেছি আমরা। প্রায় সব টাকাই খরচ হয়ে গেছে, বেন।

অপেক্ষা করব আমি।

হেসে উঠল বিল। ক’দিন? এত টাকা কামাই হবে না র‍্যাঞ্চ থেকে, বেন, বহু দিন লাগবে।

কত টাকা?

দশ হাজার ডলার।

মৃদু শিস দিল বেন। জানতামই না বাবার কাছে নগদ এত টাকা ছিল!

গ্লাসটা আবার ভরে নিল বিল। এরচেয়েও বেশি ছিল। বাবা মারা যাওয়ার আগেই কিছু খরচ করেছি আমি, বেশিরভাগই জুয়ার দেনা। মিরিয়াম আর জেফরিরও টাকা দরকার ছিল-মাস খানেক ধরে শহরে থাকছে ওরা।

এটা আমার আইডিয়া নয়, অসন্তুষ্ট স্বরে বলল জেফরি, হেঁটে বেরিয়ে গেল কামরা থেকে। সশব্দে বন্ধ করে দিল দরজাটা।

শহরে থাকাটা অবশ্য জরুরী ছিল না, স্বীকার করল মিরিয়াম। কিন্তু আর কিছু যোগ করল না, ব্যাখ্যা দিতে নারাজ।

ব্যঙ্গ ঝরে পড়ছে বিলের হাসিতে, বিদ্রূপ মাখা আমুদে হাসিটা লেপ্টে থাকল, ঠোঁটের কোণে। বেনের সন্দেহ হলো স্রেফ হুইস্কির জন্যেই বোনের প্রতি তাচ্ছিল্য প্রকাশ করছে না সে, কিছুটা হলেও অসন্তোষ রয়েছে এর পেছনে।

বাদ দাও। এভাবেই চলুক না!

বেনের প্রস্তাবে যেন সংবিৎ ফিরল বিলের। ধীরে ধীরে নির্বিকার হয়ে গেল মুখ, দৃষ্টি নামিয়ে হাতের গ্লাসের দিকে তাকাল। পলকহীন দৃষ্টি। কিছুই ভাবছে না। সে, নিশ্চিত বলতে পারবে বেন, এক ধরনের ঘোর তাড়া করছে ওকে। সত্যি কথা হচ্ছে, তোমাকে দেয়ার মত পর্যাপ্ত টাকা নেই আমার কাছে, বেন! শেষে নিচু তিক্ত স্বরে বলল সে।

অপেক্ষা করব আমি।

উঁহু, বাধা দিল মিরিয়াম। বাকিটাও বলল ওকে, বিল।

ব্র্যান্ডিতে চুমুক দিল বিল। আমি সত্যিই জানি না কিভাবে ওই টাকা জোগাড় করতে হবে।

র‍্যাঞ্চটা আছে। সিরেনোর চৌহদ্দিতে সেরাগুলোর একটা।

কিন্তু এটা চালাতে পারছি না আমি। কখনোই র‍্যাঞ্চার ছিলাম না, হতেও পারব না, বেন। তুমি চলে যাওয়ার পর বাবা বহুবার কথাটা বলেছে আমাকে। ছয় বছর আগে হয়তো আমারই চলে যাওয়া উচিত ছিল।

কিন্তু যাওনি তুমি, চাঁছাছোলা স্বরে বলল মিরিয়াম।

অসন্তোষ নিয়ে বোনের দিকে তাকাল বিল, মুখ খুলেছিল কিছু একটা বলতে, কিন্তু নিজেকে নিবৃত্ত করে নিল শেষে।

বেনের দিকে তাকাল মিরিয়াম। বেন, বিলের সঙ্গে একটা রফা করছ না কেন? এখানেই থাকতে পারো তুমি, র‍্যাঞ্চটা চালাও। তোমার হাতে পড়লে হয়তো ক্ষতি সামলে নিতে পারবে ডাবল-বি। তারপর না হয় ইচ্ছে হলে থাকবে, কিংবা টাকা নিয়ে চলে যাবে।

চিবুক ঘষছে বেন। এখানে থাকার পরিকল্পনা করিনি আমি।

লেযি-এনের ক্রুরা কি সিদ্ধান্তটা নিতে সাহায্য করেছে তোমাকে? অধৈর্য স্বরে জানতে চাইল মিরিয়াম।

অজান্তে লাল হয়ে গেল বেনের মুখ। সময় দাও আমাকে, ব্ৰিত স্বরে বলল ও। এখানকার পরিস্থিতি পছন্দ হচ্ছে না আমার। কিন্তু এটা ঠিক, এই বাথান কিংবা রিও ফ্রিয়য়া এলাকা…সত্যিই আমার পছন্দের জায়গা। তাই বলে গান পাউডার ভরা একটা বাক্সের ওপর বসতে চাই না আমি, যেখানে সলতেয় আগুন দেয়ার জন্যে মুখিয়ে আছে কিছু লোক!

তাছাড়া, বাবার মৃত্যুর ব্যাপারটা সুরাহা হয়নি। কোন সিদ্ধান্তে পৌঁছা’নোর আগে এ সম্পর্কে নিশ্চিত হতে হবে। আপাতত শুধু এটা নিয়েই ভাবছি আমি। ফিরে যাওয়ার সময় আমি নিশ্চিন্ত হতে চাই যে বাবার খুনী ধরা পড়েছে কিংবা ডাবল-বিকে নিয়ে কেউ ষড়যন্ত্র করছে না। সেজন্যে যদি ছয় মাসও অপেক্ষা করতে হয়, থাকব আমি, এবং প্রয়োজনে যদি লেযি-এনেও হানা দিতে হয়, তাই করব!

মুখ তুলে তাকাল বিল, স্থির দৃষ্টিতে দেখছে বেনকে। দুর্বোধ্য একটা ইঙ্গিত তার চোখের গভীরে, মিরিয়ামের অগোচরে কি যেন বোঝাতে চাইছে; কিন্তু অর্ধ মাতাল যুবকের দিকে মনোযোগ নেই বেনের, ঘুরে দাঁড়িয়ে দরজার দিকে এগোচ্ছে। পোর্চে বেরিয়ে এল ও।

বাড়ি ফিরতে না ফিরতেই সবকিছু গুলিয়ে যাচ্ছে, তিক্ত মনে ভাবল ও। ঘোড়ার জন্যে স্টেবলের দিকে এগোনোর সময় শুনতে পেল নিচু স্বরে বিলের সঙ্গে তর্ক করছে মিরিয়াম।

কতটা বিপদে আছে ডাবল-বি? তিন ভাই-বোন চাইছে বাথানের দায়িত্ব নিক ও…এখন–অথচ এতদিন চেয়েছে কিনা যথেষ্ট সন্দেহ আছে। বিলের দায়িত্বহীনতাই কি ডাবল-বির ভরাডুবির কারণ, নাকি সত্যিই লেযি-এনের সঙ্গে কোন ঝামেলায় পড়েছে?

<

Super User