বিকেলের দিকে দুজন সঙ্গী নিয়ে বিদায় নিলো রবার্ট ওয়ারেন, শহরেই রইলো বাকি সবাই-বিল ওয়ারেন, লুইস প্যাটেন, চাক কনারস আর কুৎসিত চেহারার খর্বাকৃতি এক লোক, কলি নের অপরিচিত। একটু পর পর সিলভার বুলেট স্যালুন, রিভার বেনড কিংবা কার্লটন অ্যাণ্ড ওয়েবারে যাচ্ছে ওরা, গলা ভেজানোর জন্যে, তবে অধিকাংশ সময় রাস্তাতেই থাকছে, হোটেলের বারান্দায় অপেক্ষারত কলিনের ওপর কড়া নজর রাখছে।

কয়েকবার অফিস থেকে বেরিয়ে এসে লুইস প্যাটেন আর বিল ওয়ারেনের সঙ্গে বাক্য বিনিময় করলে শেরিফ জেফরি আরচার, বাকি দু’জনকে সে খুব একটা গ্রাহ্য করে বলে মনে হলো না। যখনই বাইরে আসছে অস্বস্তির সঙ্গে হোটেলের পোর্চের দিকে তাকাচ্ছে অরচার, লক্ষ্য করলে কলিন।

শহরবাসীরাও যেন অস্বাভাবিক কিছু আলামত টের পেয়ে গেছে। দোকানের দরজা থেকে বারবার উঁকি দিচ্ছে নাপিত রালফ বেলমী, রবার্ট কাষ, ভিক্টর কানিং, জ্যাক ফ্লেনারি আর স্যাম উইল সন একাধিকবার রাস্তায় এলো, ওকে জরিপ করলো, শেষমেষ দ্বিধা ঝেড়ে রাস্তা পেরিয়ে ওর সঙ্গে কথা বলার জন্যে এগিয়ে এলো রবার্ট কার্য।

কোনো সাহায্য লাগবে, কলিন?

নাহ, জবাব দিলো কলিন।

যেসব কথা শুনছি সুবিধের মনে হচ্ছে না, বললো কাষ। মুখে হাসি ফুটিয়ে তুললো কলিন। ভেবো না, বব। দেখতেই পাচ্ছো, এখনো কিছুই হয়নি।

আরো পরে, শেষ বিকেলের দিকে আবার বেলিনডা এলো। কলিন, বললো সে, রাতে মায়ের কাছে থাকছি আমি। তুমি আমাদের সঙ্গে সাপার করবে? খুব খুশি হবো। এক্ষুণি এসো না?

ধন্যবাদ, বেলিন, এখন নয়, পরে কোনো একসময় হবে।

ওই লোকগুলো যদি—

কথা বলতে কারো আটকায় না, বেলিনডা, খামোকা গুজবে কান দিতে যেয়ো না। লোকে যেমন ভাবে পরিস্থিতি আসলে কখনোই তত খারাপ হয় না।

এটা কথার কথা!

বাজি? ঠিক আছে, শোনো, কালই সন্ধ্যায় পার করতে তোমার র‍্যাঞ্চে আসছি আমি, দুপুরে কম করে খাবো, তো বুঝতেই পারছে, রাক্ষুসে ক্ষুধা থাকবে পেটে •••

ঠোঁট কামড়ালে বেলিনডা। আমার কোনো কথাই তুমি শুনবে না, তাই না? নড়বে না এখান থেকে! শেষ পর্যন্ত ওরা কি করে দেখতে গাট হয়ে বসে থাকবে?

আমি আসলে বিশ্রাম নিচ্ছি, আর কিছু না, এখানে এভাবে বসে থাকতে বেশ ভালো লাগছে।

একটা কথা কি জান, কলিন? মাঝে মাঝে পুরুষদের ওপর আমার ঘেন্না ধরে যায়, স্বস্তি পাই একা আছি ভেবে।

কথা শেষ করে চরকির মতো ঘুরলো বেলিনডা, সোজা শের ফের অফিসের দিকে চলে গেল। এক মুহূর্ত পর বেরিয়ে এলো জেফরি আরচার, দ্রুত পদক্ষেপে হোটেলের দিকে এগিয়ে এলো, বসে পড়লো কলিনের পাশে।

বেলিনডা পাঠিয়েছে, না? জানতে চাইলো কলিন।

এমনিতেই আসতে হতো, জবাব দিলো আরচার, শবযাত্রা ব্যাপারটি আমার নিদারুণ অপছন্দ। রাত নামার পর কি করবে, ভেবেছো?

ঘোড়ায় চেপে ঘুরতে বের হতে পারি।

জেলের পাশে অফিসের পেছনে একটা ঘোড়া বাঁধা আছে, আমার ঘোড়া ওটা, দ্রুত ছুটতে পারে। অন্ধকার পর্যন্ত অপেক্ষা করে একসঙ্গে হাঁটতে হাঁটতে ওদিকে যেতে পারি না আমরা?

ধন্যবাদ, শেরিফ। অস্পষ্ট কণ্ঠে কি যেন বললৈ শেরিফ। হেলান দিয়ে বসে পায়ের ওপর পা তুলে দিলো। সত্যি বলতে কি মিচেলকে নিয়ে ওরা এত বাড়াবাড়ি করছে কেন আমার মাথায় ঢুকছে না, লোকটাকে কখনোই আমার কাছে বিরাট কিছু মনে হয়নি।

মনে না হওয়াটাই হয়তো যুক্তিসঙ্গত, বললে কলিন, মিচেল কে ওরা উসিলা হিসেবে ব্যবহার করতে চাইছে হয়তো, এইদিক থেকে চিন্তা করেছ ব্যাপারটা?

রাগী চেহারায় রাস্তার দিকে তাকালে শেরিফ, কিছু বললো না।

সূর্য ডুবে গেছে, কিন্তু অন্ধকার নামেনি এখনো, অবশ্য ক্রমশ ম্লান হয়ে আসছে দিনের অবশিষ্ট আলো। পর্বতমালার দিক থেকে বইছে মৃদু হাওয়া। জেনকিনস থেকে ইঙ্গিত পেয়ে রাস্তার উল্টোদিকে দাঁড়ানো চার ওয়ারেন রাইডার আস্তে আস্তে সিলভার বুলেট স্যালু নের সামনে এসে সমবেত হলো, খানিক পর পর হোটেলের দিকে তাকাচ্ছে ওরা।

প্যাটেন, কনারস আর বিল ওয়ারেন-এই তিনটাকে চিনি, বললো কলিন, কিন্তু চার নম্বরটা কে?

এরিক মেইন, বললো জেফরি আরচার, লোকে বলে চালু পিস্তলবীজ, অবশ্য খুব ভালো করে চিনি না ওকে।

বিল সম্পর্কে তোমার মতামত কি?

ওর সব বাহাদুরী মুখে! কিন্তু প্যাটেন সত্যিই বিপজ্জনক লোক, কনারসও।

দল ভেঙে আলাদা হয়ে গেল চারজন। রাস্তা ধরে হাঁটা শুরু করলো কনারস, তার উল্টোদিকে চললে মেইন। স্যালুনে ঢুকে পড়লো প্যাটেন এবং দরজা ঘেষে দেয়ালে ঠেস দিয়ে দাড়ালো বিল ওয়ারেন।

অন্ধকার আরো গাঢ় হয়ে এলো, আকাশের রঙ এখন গাঢ় নীল, আর কিছুক্ষণ পরই তারা উঠবে। হাত দিয়ে পিস্তল স্পর্শ করলে কলিন, হোলসটারে আলগা করে নিলো ওটা। রাস্তার এ-মাথা ও মাথায় নজর বোলালো, মেইন বা কনারসের চিহ্ন নেই, কোথায় গেছেকে জানে! প্যাটেনই বা কোথায়? স্যালুনে ঢুকেছিলো, পেছন দরজা গলে বেরিয়ে যায়নি তো! স্যালুনের সামনের দরজা আগলে রেখেছে বিল ওয়ারেন, আবছা অবয়ব দেখা যাচ্ছে এখন।

হঠাৎ নড়ে উঠলো আরচার। সন্ধ্যা হয়ে গেছে, কলিন। চলো, এবার অফিসের দিকে এগোই। ওখানে—

আচমকা প্রচণ্ড গুলির শব্দে কেঁপে উঠলো চারদিক, পর পর তিনটে গুলি হলো, তারপর তীক্ষ্ণ আর্তচিৎকার। এক ঝটকায় উঠে দাড়ালো জেফরি অরচার।

এর মানে কি? প্রকাশ্যে কৌতূহল প্রকাশ করলো সে। এসো, কলিন। আমার পেছনে থেকো, অফিসের পাশ দিয়ে যাবার সময় কেটে পড়বে।

রাস্তা ধরে এগোলে শেরিফ, কলিন অনুসরণ করলো ওকে, হোটেলের কোণে পৌঁছেই থমকে দঁাড়ালো, পরমুহূর্তে হোটেল আর স্যাডল-শপের মাঝের সংকীর্ণ গলিতে ঢুকে পড়লো ও। হোটেল ভবনের মাঝামাঝি এসে ওর কামরার জানালা খুঁজে পেলো, খোলাই আছে, ঝটপট ভেতরে ঢুকে পড়লো ও, লবির উদ্দেশে এগোলো দ্রুত, ওখান থেকে সামনের দরজার দিকে।

দরজার মুখে ঝাড়া তিরিশ সেকেণ্ড অনড় দাড়িয়ে রইলো কলিন, হাপাচ্ছে, ধুকপুক করছে বুক, একটু জিরিয়ে নিলোও। একটু আগের গুলির শব্দ কি অর্থ বহন করে আঁচ করতে পেরেছে। একই পিস্তল থেকে ছোঁড়া হয়েছে গুলি তিনটে, খুব সম্ভব কনারসের, হোটেলের বারান্দা থেকে শেরিফকে সরিয়ে নেয়ার কৌশল।

রাস্তার দিকে তাকালো কলিন। স্যালুনের সামনে থেকে উধাও হয়েছে বিল ওয়ারেন। বোধ হয় ওকে ধরার আশায় ঘুরপথে হোটেলের পেছন দিকে গেছে। স্যালুনের খোলা দরজায় দুজন লোককে দেখা যাচ্ছে, গুলির শব্দ অনুসরণ করে রাস্তার দিকে তাকিয়ে ব্যাপার কি বোঝার চেষ্টা করছে। আর কাউকে দেখা গেল না আশপাশে।

বারান্দায় বেরিয়ে এলো কলিন, সহজ পদক্ষেপে রাস্তা পেরুলো, স্যালুনের পেছন হয়ে শহরের অপর প্রান্তে যাবে। পাঁচ কি ছয় কদম এগিয়েছে, হঠাৎ দেখলো স্যালুনের দুরবর্তী কোণ থেকে বেঁটে অথচ বলিষ্ঠদেহী এক লোক বেরিয়ে আসছে। পলকে তাকে চিনে ফেললল কলিন। গুলি ছুড়েই ফিরে এসেছে চাক কনারস।

থমকে দাড়ালো কলিন। নিমেষে উঠে এলো কনারসের হাত, গর্জে উঠলো তার অস্ত্র, কলিনের মাথার ওপর দিয়ে ছুটে গেল বুলেটটা। কলিনের হাতও ঝলসে উঠলো পরক্ষণে, পর পর দুবার গুলি করলো ও। পেছনে একটা ঝাঁকি খেলে কনারস, আধ পাক ঘুরলো, তারপর মুখ থুবড়ে পড়ে গেল ধুলায়।

পেছন থেকে গুলির শব্দ ভেসে এলে, বেশ দূরে। আন্দাজে সেদিকে একবার গুলি ছুড়লে কলিন, এক দৌড়ে স্যালুনের সব চেয়ে কাছের কোণের দিকে এগিয়ে গেল। পরমুহূর্তে বিল ওয়ারে নের চিৎকার শুনতে পেলো।

ওদিকে গেছে! স্যালুনের পেছনে!

হোটেলের সামনে আছে বিল, ভাবলো কলিন। স্যালুন আর রেস্তরাঁর মাঝখান দিয়ে ছুটলো কলিন, হাঁপ ধরে গেছে, স্যালুনের পেছনে এসে দেয়ালে ঠেস দিয়ে দাড়িয়ে দম নিলো, পিস্তল উচিয়ে রেখেছে। রেস্তরাঁর পেছনের অন্ধকার ছায়ার দিকে তাকালো ও। ওখানে আছে কেউ একজন, একটা বাক্সে স্কুপের আড়ালে গা ঢাকা দিয়ে রয়েছে। কে হতে পারে? প্যাটেন? সে-ই কি লুকিয়েছে ওখানে?

হঠাৎ একটা ফিসফিস কণ্ঠস্বর কানে এলো কলিনের।

কলিন? কলিন ফোর্বস?

জবাব দিলো না কলিন, অপেক্ষা করতে লাগলো। কিন্তু বেশি। ক্ষণ এখানে থাকা যাবে না। বিল ওয়ারেন চিৎকার করে তার লোকদের এদিকে আসতে নির্দেশ দিয়েছে, এখুনি এসে পড়বে সে, আসবে এরিক মেইনও, একটু আগে সে-ই বোধ হয় গুলি ছুড়েছে।

আবার সেই ফিসফিস কণ্ঠস্বর।

কলিন ফোর্বস। গুলি করে না যেন। আমি হ্যারলড।

হ্যারলড, পুনরাবৃত্তি করলো কলিন, হ্যারলড লেভিট?

বাক্সের ভূপের ওপাশ থেকে বেরিয়ে আসা ঢ্যাঙা, কুজো লোক টাকে চেনা মুশকিল।

হ্যারলড, বললো কলিন, শহরে কি করছো তুমি? আরচার বললো তুমি নাকি চলে গেছ?

গিয়েছিলাম, স্বীকার গেল হ্যারলড, কিন্তু আবার চিরে এসেছি। তোমার সাথে দেখা করা জরুরি। তোমার অপেক্ষাই করছিলাম আমি। চলো, এবার কেটে পড়া যাক। আমাদের কারো জন্যেই ওয়াগোনার নিরাপদ নয়। নদীর কিনারে দুটো ঘোড়া রেখে এসেছি।

স্যালুনের দেয়াল থেকে সরে এলো কলিন, পাশে এসে দাড়ালো হ্যারল। তারপর একসাথে ছুটতে শুরু করলো ওরা। প্রধান রাস্তা থেকে খানিকটা দূরে এসে গতি কমালো। পেছনে তাকালে কলিন।

মি কোথায় গায়েব হয়েছ প্রথমে বুঝতে পারবে না ওরা, বললো হ্যারলড। কিন্তু আমি আর দৌড়তে পারছি না, বুড়িয়ে গেছি তো?

যদ্দর মনে পড়ে, বললে কলিন, এটা তোমার মুদ্রাদোষ। আগে সারাক্ষণ বলতে, বুড়িয়ে গেছি তো, আর দুজনের সমান খাটুনি খাটতে। বাজি রাখতে পারি, দরকার হলে সারারাত দৌড়াবে তুমি।

তার অবশ্য দরকার হবে না, বললো হ্যারলড। এবার কিছু ক্ণ কোথাও বসে কথা বলবো আমরা। ওদিকে রাস্তায় দারুণ দেখিয়েছে কিন্তু তুমি, শুটিংয়ের কথা বলছি।

দেখেছো?

হ্যাঁ, রেস্তরাঁর কোণেই তো ছিলাম। সন্ধ্যা নামামাত্র শহরে ঢুকে পড়ি আমি, তোমাকে কোথায় পাওয়া যাবে জানা ছিলো না, কিন্তু দেখলাম হোটেলের বারান্দাতেই বসে আছে। হঠাৎ দেখলাম রাস্তার দুদিকে হাঁটা ধরেছে কনারস আর মেইন। তার পরই গুলির আওয়াজ হলো। হোটেলের কোণ ঘুরে তুমি উধাও হলে, বিল ওয়ারেন তোমাকে অনুসরণ করলো, কিন্তু দেরি করে ফেললো সে। বিল ছেলেটা কথাবার্তায় এত বেপরোয়া, কাজে লবডঙ্কা, নিজের প্রাণ বাঁচাতেই ব্যস্ত থাকে।

চারজন ছিলো ওরা, বললো কলিন, প্যাটেনকে স্যালুনে ঢুকতে দেখেছি, পেছনের দরজা গলে বেরিয়ে এসেছিলো কিনা কে বলবে!

আমার কপাল ভালো বলতে হয়, বললো হ্যারলড, ওর চোখে ধরা পড়িনি।

শহর সীমান্তে নদীর কাছে এসে পড়লো ওরা। থামলো। আবার পেছনে তাকালো কলিন।

এবার সত্যিকার অর্থে পিছু ধাওয়া শুরু হবে, আস্তে করে বললো ও, এতক্ষণ মিচেলের উসিলা দেখাচ্ছিলো, এবার কনারস যোগ হলো।

যে করেই হোক তোমাকে খতম করার চেষ্টা করবে ওরা, বললো হ্যারলড।

কেন?

তুমি ড্যানিয়েল ফোর্বসের ছেলে তাই।

কি বোঝাতে চাইছ, হ্যারলড?

আগে এসো, কোথাও বসা যাক, তারপর বলা যাবে, বললো হ্যারলড। বললাম না, বয়স হয়েছে, বেশি ছোটাছুটি শরীরে সয় না।

চাপা হাসি হাসলে কলিন।

নদীর দিকে এগোলো ওরা। হ্যারলডের রেখে যাওয়া দোড়া দুটো যথাস্থানেই পাওয়া গেল, ওগুলোর কাছাকাছি উপড়ে পড়া একটা গাছের গুড়িতে বসে পড়লো দুজন। পিস্তল লোড করে নিলো কলিন, হোলসটারে ঢুকিয়ে রাখলো, তারপর পাইপে তামাক ভরে জ্বাললো, অপেক্ষায় রইলো। গালের ভেতর তামাকের পিণ্ড টাকে বাগে আনার চেষ্টা করছে হ্যারলড।

এদিকে কেউ আসছে দেখলেই পগার পার হয়ে যাবো আমরা, বললো হ্যারলড, ওই ঘোড়াটা মেয়ে-জামাইকে না বলে তোমার জন্যে নিয়ে এসেছি, স্যাডলব্যাগে কিছু খাবার দিয়ে দিয়েছে মেয়েটা।

ওগুলো সম্ভবত কাজেই লাগবে, শুকনো কণ্ঠে বললে কলিন।

হ্যাঁ, আমারও তাই ধারণা, সায় দিলো হ্যারলড, কয়েকটা দিন গা ঢাকা দিয়ে থাকতে হবে তোমাকে–ওদের সঙ্গে যে ক’দিন যোগাযোগ করা না যাচ্ছে।

ওরা? ওরা কারা?

টেরি জেলারম্যান, টমাস টম্পসন, আরথার শেরিডান আর হনডো স্টার্ন।

কাল তিনজনের নাম বলেছিলে।

হ্যাঁ, স্ট্যামপিডের দিন টেরি, টমাস ও আরথার আমাদের সঙ্গে ছিলো, হনডা মিস করেছে ব্যাপারটা, কিন্তু র‍্যাঞ্চ হাউসের লড়াই তে ও ছিলো। টমাসের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব নাও হতে পারে, তোমাকে খবর দিতে ওয়াইওমিংয়ের পথে রয়েছে ও। কয়েকদিন পালিয়ে থাকার পর ওয়াগোনারে এসেছিলাম আমি, লুকিয়ে থাকারই কথা ছিলো, কিন্তু কি ভেবে একদিন শহরে ঢু মারলাম এবং জড়িয়ে পড়লাম ঝামেলায়। টমাস যদি তোমার নাগাল না পায় সেই কথা ভেবে ওয়াগোনারে এসে অপেক্ষা করছিলাম।

মাথা চুলকালো কলিন। বুঝলাম না।

প্রথম থেকে শুনতে চাও?

অবশ্যই।

অনেক পেছনে যেতে হবে তাহলে, ওয়ারেন ম্যাকমিলান র‍্যাঞ্চ কিনে বেসিনে হাজির হওয়ার পরই ব্যাপারটা শুরু, অনেক কিছু ঘটেছে এরপর, সব বলতে গেলে রাত কাবার হয়ে যাবে, অত কথার দরকারও নেই, সব কিছুর সারাংশ হচ্ছে : ওয়ারেনের খায়েস ছিলো বেসিনের সবাই তার কথায় নাচবে; সমবায়ের ভিত্তিতে গরু বাজারে চালান দেয়ার কথাবার্তা হচ্ছিলো, সেখানেও মাতব্বরি ফলানোর চেষ্টা করেছে সে, হোমস্টিডারদের উৎখাত করার চেষ্টা করেছে, বেসিনের ক্রীকগুলোকে শুকিয়ে যেতে দেয়া যাবে না–এরকম একটা পুরোনো চুক্তির উসিলায় তিনটে ক্ৰীকে বাঁধ দিতে চেয়েছে এমনি আরো অনেক আছে–প্রত্যেকবার ওর বাধা হয়ে দাড়িয়েছে তোমার বাবা, রুখে দিয়েছে ওকে। কিন্তু এত সব সত্ত্বেও ব্যাপারটা লড়াইয়ের দিকে মোড় নেয়নি, তবে লড়াই যখন শুরু হলো, বেসিন থেকে বহুদুরে তার সূচনা, মোক্ষম আঘাত হানলো ওয়ারেন। কিন্তু সবচেয়ে বাজে ব্যাপার হলো আমরা ওর বিরুদ্ধে কোনো প্রমাণই যোগাড় করতে পারিনি। এমনকি স্প্রীংগারভিল ড্রাইভের ঘটনা টাও ওয়াগোনারের কেউ জানে না। কেউ না।

সামনে ঝুকলো কলিন ফোর্বস। স্প্রীংগারভিল ড্রাইভ? কি ঘটেছিল স্প্রীংগারভিল ড্রাইভে?

মাস আড়াই আগের কথা, প্রায় এক হাজারের মতো একটা গরুর পাল স্প্রীংগারভিলে চালান দিয়েছিলাম আমরা। সাতজন কাউহ্যাণ্ড, একজন-কুক মোট আটজনের ট্রেইল। ড্রাইভের নেতৃত্বে ছিলো আরনেস্ট হল। স্প্রীংগারভিলের পথটা এমন কিছু দুর্গম নয়, গরু সামলানোর জন্যে সাতজন কাউহ্যাণ্ডই যথেষ্ট, চলার পথে পানির অভাব নেই, দুটো শহর পার হতে হয়, আগেও কয়েকবার নির্বিঘ্নে গরুনিয়ে গেছি আমরা। সাতদিন,বড়জোড় আটদিন লাগে সব মিলিয়ে। দু’সপ্তাহর মধ্যে ফিরে আসা উচিত ছিলো ওদের, কিন্তু ফিরলো না। আরো কয়েকটা দিন অপেক্ষা করার পর ব্যাপার কি জানার জন্যে আমি আর তোমার বাবা স্প্রীংগারভিলে রওনা দিলাম।

স্প্রীংগারভিলে পৌঁছানোর পর জানতে পারলাম গরু বিক্রি করে যথারীতি টাকা নিয়ে ফিরে গেছে আমাদের লোকেরা। লম্বা, ছিপ ছিপে একলোক নিজেকে আরনেস্ট হল পরিচয় দিয়ে টাকা গ্রহণ করেছে, লোকটার চোখজোড়া নীল। কিন্তু তোমার নিশ্চয়ই মনে আছে আমাদের আরনেস্ট হল মোটাসোটা খাটো মানুষ এবং ওর চোখ সবুজ। গরুর পাল ব্যাকট্র্যাক করা শুরু করলাম আমরা। জানা গেল আমাদের আরনেস্ট রসদপত্রের জন্যে লুডলোতে যাত্রাবিরতি করেছিলো, স্প্রীংগারভিলের নিকটতম শহর ওটা, মাত্র দু’দিনের পথ। লুডলো থেকে স্প্রীংগারভিল পর্যন্ত পুরো এলাকা চষে বেড়ালাম আমরা এবং লুডলোর মাইল বারো দূরে একটা রুক্ষ জায়গায় পেলাম কবরগুলো।

পাথরের মতো বসে রইলো কলিন।

মোট পাঁচটা, বললো হ্যারলড, বাকি তিনটেও হয়তো ছিলো কোথাও, আমরা পাইনি। গুলি করে হত্যা করা হয়েছে ওই পাঁচ জনকে, আমাদের লোক সরাই, আরনেস্টও ছিলো; রূপ উইলিস, ফ্রেড সিবার্ট আর ম্যাট ওলডফিলডের কোনো খোঁজ পাইনি, ওরা মারা গেছে ধরে নিয়েছি আমরা। আবার এমনও হতে পারে ভয় দেখিয়ে ওদের তাড়িয়ে দিয়েছে ওরা, কিংবা নিজেরাই বিকিয়ে গেছে; পালাতে পারলে ভবিষ্যতে ওদের মুখ খোলার সম্ভাবনা আছে, এ-দিক থেকে চিন্তা করলে ওদের হত্যা করাই স্বাভাবিক।

তারমানে লুডলো আর স্প্রীংগারভিলের মাঝামাঝি কেউ আমাদের গরু ছিনিয়ে নিয়েছে এবং ওগুলো বিক্রির টাকা হজম করেছে, এই তো?

হ্যাঁ। কাজটা কার প্রথমে আমরা বুঝতে পারিনি। তোমার বাবা এটাকে কোনো আউট-ল দলের অপকর্ম বলে ধরে নিলো, আমিও তাই ভেবেছিলাম। কবরগুলো পাওয়ার পর শেরিফের সঙ্গে কথা বলতে আবার স্প্রীংগারভিলে ফিরে গেলাম আমরা, সোজা স্যালুনে গিয়ে ঢুকলাম প্রথমে, গলা না ভিজিয়ে আর পারছিলাম না। অনেকক্ষণ মদ খেলাম আমরা দুজনেই। স্যালুনের বারটেনডার তোমার বাবাকে চিনে ফেললো–স্টোনি রিভার বেসিনের পুরোনো বাসিন্দা আমরা জানতে–সে জানতে চাইলে ওয়ারেনের রাইডার ক্লাইভ কাসলারকে আমরা চিনি কি না। ড্যানিয়েল বললো, না। বারটেনডার তখন জানালো কাসলার লোকটা লম্বা, ছিপছিপে, এবং তার চোখজোড়া নীল। সপ্তাহ দুই আগে স্প্রীংগারভিলে এসেছিলো সে। এসব তথ্য এক করলে কি অর্থ বেরিয়ে আসে আন্দাজ করতে পারো, কলিন? ক্লাইভ কাসলার ওয়ারেনের লোক, লম্বা, ছিপছিপে, নীল চোখ তার। আরনেস্ট হলের নাম ভাড়িয়ে আমাদের গরুর টাকা ছিনতাইকারীও লম্বা, ছিপছিপে এবং তার চোখও নীল। এতে হয়তো কিছুই স্পষ্ট হয় না–আবার অনেক কিছু পরিষ্কার হয়ে যায়, না?

কিভাবে প্রমাণ পেলে তোমরা?

শেরিফের কাছে আর যাইনি। পরদিন ক্যাটলপেনে গেলাম, লোকজনের সঙ্গে কথা বললাম। ওদের অনেকেই আমাদের গরুর পাল আর ট্রেইল ক্রুর চেহারা মনে করতে পারলো। ওদের কাছে কয়েকজনের চেহারার বর্ণনা পাওয়া গেল, কনারস, প্যাটেন আর পিটার রাইটকে চিনতে কষ্ট হলো না–সব কয়টা ওয়ারেন রাই ডার। দু’রাত পর আবার বাড়ির উদ্দেশে রওনা দিলাম আমরা। সেই পাঁচটা কবরের কাছে ক্যামপ করলাম রাতে, অন্ধকার রাত, নীল নকশা ক্যামপফায়ারের পাশে বসে অনেক আলোচনা করলাম।

ক্ষীণ হয়ে আসছে হ্যালডের কণ্ঠস্বর। ঢোক গিললো সে, তারপর আবারখেই ধরলো, সব তথ্য যোগ করলাম অমিরা, দেখলাম আদালতকে বিশ্বাস করানোর মতো কোনো প্রমাণই নেই আমাদের হাতে। গরুর পাল ক্রেতার হাতে তুলে দেয়ার সময় কয়েকজন ওয়ারেন রাই ডার স্প্রীংগারভিলে ছিলো, এটা প্রমাণ করা গেলেও ওই ট্রেইলে হত্যাকাণ্ডের জন্যে দায়ী কেউ বিশ্বাস করতো না, বরং লোকে বলতে পেনস কর্মীদের অস্ত্রের মুখে মিথ্যে সাক্ষী দিতে বাধ্য করা হয়েছে। অর্থাৎ মামলা করার কোনো উপায়ই ছিলো না আমাদের। মনে আছে উইলিস, সিবার্ট আর ওলডফিলডের খোঁজ করার কথা বলেছিলাম আমি, কিন্তু তোমার বাবার তখন ধৈর্য নেই, ও বললো, প্রচণ্ড আঘাত পেয়েছি আমি, হ্যারলড়, কতটা কল্পনাও করতে পারবে না তুমি। টাকাটা আমার খুব দরকার ছিলো, ওটা না হলে দারুণ মুশকিলে পড়ে যাবো। গরু কেনার তালে আছে। ওয়ারেন, জায়গাও কিনবে, চার্লসসহ কয়েকজন র্যাঞ্চার তাদের স্টক বিক্রি করতে এক পায়ে খাড়া, ওয়ারেন সফল হলে বেসিনে ওর অবস্থান আরো দৃঢ় হয়ে যাবে। নগদ টাকা ছাড়া ওকে ঠেকানো যাবে না।

তাহলে চলো টাকাটা কেড়ে নিই, বললাম আমি।

কি ভাবে? জানতে চাইলো তোমার বাবা।

আমি জবাব দিতে পারিনি। তোমার বাবাও তখন কোনো উপায় খুঁজে পায়নি। কিন্তু স্যাঞ্চে পৌঁছা’র আগেই কর্তব্য স্থির করে ফেল লাম আমরা। তোমার বাবা বললো, ওয়ারেনের অস্ত্রেই ওকে ঘায়েল করবো আমরা, হ্যারলড চালান দেয়ার জন্যে ক্লেব্যাংকসে একপাল গরু জড়ো করেছে ওয়ারেন, আমার চেয়ে এই মুহূর্তে ওর টাকার প্রয়োজন অনেক বেশি, কয়েকদিনের মধ্যেই একটা মোটা অঙ্কের দেনা শোধ করতে হবে ওকে। আমাকে যেমন কপর্দকহীন করেছে সে, ঠিক তেমনি তার জীবনও দুর্বিষহ করে তুলবো, কিন্তু কি করবে সেই মুহূর্তে বলেনি ড্যানিয়েল। আরনেস্ট হলদের স্মৃতি রোমন্থন শুরু করেছে, আগে বলিনি, আসলে সারাক্ষণই ওদের কথা বল ছিলো সে, গরু খোয়া যাওয়ায় যতটা না তারচেয়ে ওদের অকাল মৃত্যুই বড় হয়ে বেজেছে ওর বুকে। ওকে প্রায়–কি বলবো–পাগল করে তুলেছিলো ব্যাপারটা-ঠাণ্ডা মাথায় ভাবতে পারছিলো না কিছু, অনেকগুলো বছর ছেলেগুলো ওর হয়ে কাজ করেছে তো!

কলিনের পাইপ নিভে গেছে। আবার জ্বালিয়ে নিলো। রাতের হাওয়া আলোড়ন তুলছে গাছের পাতায়, ঝিরঝির।

নড়েচড়ে বসলো হ্যারলড। ঠোঁটের কোণ দিয়ে পিক ফেললো, বিড়বিড় করে কি যেন বলে আবার শুরু করলো, র‍্যাঞ্চে ফেরার তিনদিন পর ক্লেব্যাংকসের ওপর ওয়ারেনের গরু স্ট্যামপিড করলাম আমরা, তারপর আবার ফিরে এলাম এখানে। জানতাম এ ঘটনার দায় আমাদেরই বহন করতে হবে, তোমার বাবাও তা বুঝে নিয়েছিলো। ওয়ারেন রাইডাররা পিছু ধাওয়া করবে–জানা ছিলো–মোটামুটি তৈরি ছিলাম আমরা লড়াইয়ের জন্যে, কিন্তু শেরিফ আর শহরের লোকজন ওদের সঙ্গে যোগ দেবে চিন্তাও করতে পারিনি, আমার মাথাও ঠিক মতো কাজ করছিলো না বোধ হয়।

র‍্যাঞ্চের লড়াইয়ের কথা শোনাও, বললে কলিন।

লড়াই বলতে যা বোঝায় তেমন কিছু হয়নি। গোলাগুলি শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রাণ হারায় এডি, একটু পর আহত হয় তোমার বাবা, এর পরপরই আমরা বাকি সবাই আত্মসমর্পণ করি। কারণ ততক্ষণে আমার মাথা কাজ করতে শুরু করেছে, আমি ভেবে দেখলাম, শেরিফ থাকায় ঝটপট আমাদের ফাঁসিতে ঝোলাতে পারবে ওরা, একটু সময় পেলে আসল ঘটনা সবাইকে জানানোর সুযোগ হবে। তারপর যেই বেসিন ছেড়ে যাবার শর্তে আমাদের ছেড়ে দেয়ার প্রস্তাব দেয়া হলো, দেরি না করে লুফে নিলাম সুযোগটা।

ওয়াগোনার থেকে বিদায় নিলাম অমিরা, মোট পাঁচজন, আমি, টেরি জেলারম্যান, টমাস, আরথার আর হনডো। শহরের ছ’মাইল দুরে গিয়ে ওয়াইওমিংয়ের পথ ধরলো টমাস, তোমার কাছে গিয়ে আসল ঘটনা খুলে বলবে; অন্যদের প্রীংগারভিলে নিয়ে গেলাম আমি, কাজে লাগিয়ে দিলাম, এখনো ব্যস্ত আছে ওরা; তারপর ফিরে এসে তোমার অপেক্ষায় রইলাম, কিছু না জেনে তুমি হঠাৎ হাজির হও যদি, তাই; টমসতোমার দেখা পাবেই তার, ভরসা কি? কাল রাতে তুমি জেলে এলেও ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও শেরিফের সামনে মুখ খুলতে পারিনি, সে আমাকে না ছাড়লে আবার তোমাকে খবর দিয়ে আনাতাম অবশ্য, ওকে না শুনিয়ে বলার চেষ্টা করতাম।

স্প্রিংগারভিলে কি করছে ওরা?

নিখোঁজ সেই তিনজনের খোঁজ করছে; ওদের হত্যা করা হয়ে থাকলে, লাশ। ওদের অবশ্য খুঁজে পাওয়ার আশা কম, ভবঘুরে ছিলো, ঘুরতে ঘুরতে এসে চাকরিতে ঢুকেছিলো, আবার এমনও হতে পারে-ওহ্, ধেৎ! এখন আমরা কি করবো, কলিন?

উঠে দাড়ালো কলিন। জানি না, হ্যারলড। কিছু জানি না।

ম্প্রীংগারভিল থেকে ওদের নিয়ে ফিরতে কয়েকদিন লেগে যাবে আমার।

ওরা আবার বেসিনে আসবে?

কেউ ঠেকাতে পারবে না। তোমার বাবাকে প্রাণের চেয়েও বেশি ভালোবাসতো ওরা, বছরের পর বছর একসঙ্গে কাজ করেছে। আবার লড়াইয়ের সুযোগ পাবার আশাতেই সেদিন আত্মসমর্পণে রাজি হয়েছিলো ওরা।

ক্ষুব্ধ শোনালো হ্যারলডের কণ্ঠস্বর। সোজা হয়ে দাড়ালো কলিন, বুঝতে পারছে উত্তেজিত হয়ে পড়েছে। ওহ,এখন আর ওএকা নয়! পাশে দাড়ানোর মতো চারজন কঠিন দুর্ধর্ষ লোক পাওয়া গেছে,

ওয়াইওমিং থেকে টমাস ফিরে এলে পাঁচজন হবে ওর সঙ্গী।

হ্যারলড, বললো ও, ঘোড়ায় চাপো। যত তাড়াতাড়ি পারে। ওদের নিয়ে এসো।

এ-কথাই শুনতে চাইছিলাম, বললে হ্যারলড। আগামী চার-পাঁচদিন কোথায় লুকাবে? ফিরে এসে কোথায় যোগাযোগ করবো?

লুকাবো কোথায় জানি না। তবে যোগাযোগ করার মতো একটা জায়গার নাম বলতে পারি।

বলো।

ফোর্বস র‍্যাঞ্চ। আজ থেকে পাঁচদিন পর।

যদি ফিরে আসতে পারি।

তাহলে ছ দিন।

পাঁচ দিনেই ফিরে আসার চেষ্টা করবো। কিন্তু, কলিন, একা ওয়ারেনের সঙ্গে লাগতে যেয়ো না, কেমন? গা ঢাকা দিয়ে থেকো।

মাথা দোলালো কলিন। হাত মেলালে হ্যালডের সঙ্গে, ঘোড়া পর্যন্ত এগিয়ে দিলো ওকে, ঘোড়ার খুরের শব্দ মিলিয়ে না যাওয়া পর্যন্ত ঠায় দাঁড়িয়ে রইলো ও। তারপর গাছপালার আড়ালে অপেক্ষা করলো কিছু সময়। পুরো ব্যাপারটা আবার উল্টেপাল্টে দেখলে মনে মনে। হ্যারলডের কাছে সব শোনার পর বারবার বিষণ্ণ হয়ে যাচ্ছে মনটা, কই, বাবা তো আসলে অন্যায় কিছু করেনি।

রবার্ট ওয়ারেন অপরাজেয় এক অশুভ শক্তি হয়ে দেখা দিয়েছে এখানে, তার বিরুদ্ধে লড়াই করে কিভাবে জিতবে ও? ওই লোকটার মুখোশ খুলে দিতে পারবে?

পাঁচ দিন সময় পাচ্ছে ও, উপায় খুঁজে বের করতে হবে। পাঁচ দিন–যদি ওয়ারেনের নাগালের বাইরে থাকা যায়!

<

Super User