সুরা বালাদ্

শুরু করি লয়ে শুভ নাম আল্লার,
যিনি দয়াশীল আর কৃপার আধার।

শপথ করি এই নগরের
          যেহেতু বিরাজ করিছ হেথায়
শপথ পিতার আর তাহাদের সন্তানের
          অধিবাসী এই নগর মক্কায়।
মানুষে করেছি সৃষ্টি যে আমি
          নিশ্চয় দুঃখ-ক্লেশের মাঝ,
সে কী ভাবে, তার পরে প্রভুত্ব
          করিতে কেহই নাহি সে আজ?
‘উড়ায়ে দিয়াছি রাশি রাশি টাকা
          আমি’ – সে বলে বিনাশিতে তোমারে,
সে কি (এই শুধু) মনে করে
          কেহ দেখিতেছে না তাহারে?
আমি কি তাহার মঙ্গল লাগি
          দিইনি তাহারে যুগল নয়ন?
জিহ্বা ওষ্ঠ দিইনি? দেখায়ে
          দিইনি উভয় পথ সে কারণ?
কিন্তু প্রবেশ করিল না তো সে
          দুর্গম পথে উপত্যকার,
উপত্যকার দুর্গম সেই
          পথ – জান তুমি সন্ধান তার?
সে পথ – দাসেরে মুক্তিদান
          ও অন্নদান সে ক্ষুধার্তেরে
আশ্রয় দান ধূলি-লুণ্ঠিত
          কাঙালে, ‘এতিম’ আত্মীয়েরে।
এমনি করে সে হয় একজন
          তাদের মতোই, ইমান যারা
আনে আর দেয় উপদেশ
          সব বিপদে (মহৎ তারা)।
উপদেশ দেয় পরস্পরে সে
          দয়াশীল হতে, তারাই হবে
দক্ষিণকর অধিকারী। আর
          এ আয়াতে অবিশ্বাস করে গো যারা – হবে
বাম হস্তের অধিকারী তারা, তাদের তরে
          আছে নিবদ্ধ হুতাশনের বরাদ্দ রে।

————-
সুরা বালাদ্
এই সুরা মক্কা শরিফে অবতীর্ণ হইয়াছে। ইহাতে ২০টি আয়াত, ৮২টি শব্দ ও ৩৪৭টি অক্ষর আছে।

শানে-নজুল – কালদা নামক বলিষ্ঠ কাফেরকে হজরত মোহাম্মদ (দঃ) ইসলাম গ্রহণ করিতে বলায় সে অবজ্ঞাভরে বলিয়াছিল যে, দোজখের ১৯জন ফেরেশতাকে সে একা বাম হস্তে অবরোধ করিতে পারিবে; বেহেশ্‌তের বাগিচা, নহর ও মণিকাঞ্চনের মূল্য তাহার বিবাহাদি উৎসবে ব্যয়িত অর্থের তুল্য হইতে পারে না। তখন এই সুরা নাজেল হয়।

<

Kazi Nazrul Islam ।। কাজী নজরুল ইসলাম