থমথমে বাড়ির সারিকে 
অসহায় করে 
বৃষ্টি এল। 
এক বন থেকে অন্য বনে বিচ্ছুরিত সঘন গমক 
এসে জোটে চৌকাঠের ধারে 
মাথা কোটে বিষাক্ত গরজে, 
সর্বাঙ্গে আপন করে তাকে ঘুম পাড়াবার 
আমার সমস্ত চেষ্টা ব্যর্থ হল, 
কয়লার ধোঁয়ার কুয়াশার 
গ্রন্থিল স্পর্শের নীচে ধমনি কাতর। 
 
পাঁচিলে গুলির দাগ স্ফীত হয় 
জলে ভিজে, 
দৈত্যের প্রকাণ্ড লুব্ধ মুঠির আকারে 
স্ফীত হয় স্তম্ভিত প্রদোষে, 
খরশান হাজার বল্লমে 
পর্দাগুলো ছিঁড়ে কুচিকুচি 
অলিন্দ চত্বর অসহায়। 
 
আমার এ-শহরের মাঝখানে নির্জন নদীর 
ঘাস-মোড়া পাড়ে 
পায়ে পায়ে মরা পথ বেয়ে 
জাহাজঘাটায় আজ যদি যাওয়া যায় 
দেখা যাবে সমস্তই অস্পষ্ট কাঠামো। 
 
ঝাপসা ওড়না ছিঁড়ে 
জাগল মন্থর 
সংকীর্ণ কপাল সাদা, 
সাদা ঠোঁট হিম গাল 
স্তনভাঙা নিমীলিত ত্বক । 
করুণ আশ্রয়প্রার্থী অবয়বে দ্বিধা 
আমাকে পীড়িত করে, 
সায়াহ্ন দুঃস্বপ্ন আসে জলে ভেজা পাঁচিলের কূলে। 
 
দ্বিধা ছাড়ো 
তুমি দ্বিধা ছাড়ো 
অন্ধ গলিমুখে 
নিঃশব্দ কী হাসির বিদ্রুপ তোমাকে বিশ্লিষ্ট করে 
তুমি জানো আমিও তা অনুভব করি। 
বিভক্ত প্রতীক্ষা কেন 
আর কেন? 
হে সাথি 
বৃষ্টি এল। 

Arun Mitra ।। অরুণ মিত্র