একটি নাজুক ছোট বাড়িতে বুড়োবুড়ি
করতেন বসবাস। সন্তানসন্ততি
ছিল না তাদের কেউ। দু’জনের সীমিত সংসার
আনন্দের মধুর রোদ্দুর চাঁদিনীতে
ছিল উদ্ভাসিত, জানতাম পড়শিরা। কীযে ভালো
লাগতো তাদের দেখে দূর থেকে। কখনও সখনও
যেতাম তাদের কাছে, গল্পসল্প হতো,
পুরনো দিনের কথা রূপায়িত হতো চায়ের বাটিতে বেশ।

দু’জনের সংসার চলতো জানি প্রবীণের শেষ পেনসনে।
শুনিনি তাদের মুখে সামান্য নালিশ, নিন্দা কারও।
ভাসতেন দু’জন তৃপ্তির সরোবরে। কালো রাতে
বিছানায় দু’টি প্রাণী থাকতেন পরস্পর জড়াজড়ি করে
আর অতীতের কিছু স্মৃতি সুকান্ত পাখির মতো
উড়ে উড়ে ঘুরতো, গাইতো গান মনের প্রসন্ন গোধূলিতে।
কখনও বা পূর্ণিমা চাঁদের রোশনিতে
পড়তো ওদের মনে নিজস্ব যৌবন।

একদিন সে প্রবীণ নিলেন বিদায় জীবনের সুমধুর
সব কলরব থেকে, আর নিঃসঙ্গ সে বৃদ্ধা নিষ্প্রদীপ
ছোট ঘরটিতে রাতে বিছানায় জলভেজা চোখে
কী বিপুল শূন্যতাকে আক্রোশে করেন আলিঙ্গন।
১৫.১০.২০০০

Shamsur Rahman।। শামসুর রাহমান