কীর্তন

আমার হরিনামে রুচি    কারণ    পরিনামে লুচি  
আমি          ভোজনের লাগি করি ভজন।
আমি মালপোর লাগি তল্পি বাঁধিয়া  
              এ কল্প-লোকে এসেছি মন॥  
‘রাধাবল্লভি’-লোভে পূজি রাধা-বল্লভে,  
রস-গোল্লার লাগি আসি রাস-মোচ্ছবে!
আমার গোল্লায় গেছে মন রস-গোল্লায় গেছে মন!  
ও তো রসগোল্লা কভু নয়  
যেন ন্যাড়া-মাথা বাবাজি থালাতে হয়েন উদয়!  
গজা দেখে প্রেম যে গজায় হৃদিতলে রে,  
পানতোয়া দেখে প্রাণ নাচে হরি বলে রে!
ওই গোলগাল মোয়া মায়াময় এই সংসার দেয় ভুলিয়ে,
আর ক্ষীরের খোয়াতে খোয়াইতে কুল মন ওঠে চুলবুলিয়ে!  
মন বলে হরি হরি      হাত বলে হরো হে  
অরসিকে তেড়ে আসে বলে ওহে ধরো হে!  
সংসারেতে ভক্ত শুধু    রাঁধুনি ও ময়রাই–
         সেই দুই ভাই আজি এসেছে রে!  
যারা ময়দা পেয়ে মালপো বিলোয়  
       সে দুই ভাই আজি এসেছে রে!
আমি চিনি মেখে গায়ে যোগী হব দাদা যাব ময়রার দেশে
রস- করার কড়াই-এ ডুবিয়া মরিব গলে সন্দেশ ঠেসে।  
               ভোজন-ভজহরির শোনো এই তথ্য  
               গো-ময় সংসারে ভোজনই সত্য॥

<

Kazi Nazrul Islam ।। কাজী নজরুল ইসলাম