তোমার কটি - তটের ধটি 
       কে দিল রাঙিয়া । 
কোমল গায়ে দিল পরায়ে 
      রঙিন আঙিয়া । 
বিহানবেলা আঙিনাতলে 
এসেছ তুমি কী খেলাছলে , 
চরণ দুটি চলিতে ছুটি 
        পড়িছে ভাঙিয়া । 
তোমার কটি - তটের ধটি 
       কে দিল রাঙিয়া । 
  
কিসের সুখে সহাস মুখে 
       নাচিছ বাছনি , 
দুয়ার - পাশে জননী হাসে 
          হেরিয়া নাচনি । 
তাথেই থেই তালির সাথে 
কাঁকন বাজে মায়ের হাতে , 
রাখাল - বেশে ধরেছ হেসে 
           বেণুর পাঁচনি । 
কিসের সুখে সহাস মুখে 
        নাচিছ বাছনি । 
  
ভিখারি ওরে , অমন   করে 
         শরম ভুলিয়া 
মাগিস কী বা মায়ের গ্রীবা 
         আঁকড়ি ঝুলিয়া । 
ওরে রে লোভী , ভুবনখানি 
গগন হতে উপাড়ি আনি 
ভরিয়া দুটি ললিত মুঠি 
       দিব কি তুলিয়া । 
কী চাস ওরে অমন করে 
        শরম ভুলিয়া । 
  
নিখিল শোনে আকুল মনে 
       নূপুর - বাজনা । 
তপন শশী হেরিছে বসি 
       তোমার সাজনা।       
ঘুমাও যবে মায়ের বুকে 
আকাশ চেয়ে রহে ও মুখে , 
জাগিলে পরে প্রভাত করে 
        নয়ন - মাজনা । 
নিখিল শোনে আকুল মনে 
       নূপুর - বাজনা । 
  
ঘুমের বুড়ি আসিছে উড়ি 
       নয়ন - ঢুলানী , 
গায়ের ‘পরে কোমল করে 
        পরশ - বুলানী । 
মায়ের প্রাণে তোমারি লাগি 
জগৎ - মাতা রয়েছে জাগি , 
ভুবন - মাঝে নিয়ত রাজে 
        ভুবন - ভুলানী । 
ঘুমের বুড়ি আসিছে উড়ি 
         নয়ন - ঢুলানী । 
<

Rabindranath Tagore ।। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর