মহাদেবের দুয়ার কাব্যগ্রন্থের কয়েকটি কবিতা।


গাছতলার এই যে মানুষ
উপোস জানে না ;
উপোস জানে না বলে জঠরজ্বালায় তিলে তিলে
‘হা অন্ন হা অন্ন’ বলে
গাছের ছায়ায় তবি দাউদাউ জ্বলে যাচ্ছে।

যদি সে উপোস জানত
তার জন্য প্রতিদিন সোনার থালায়
পরমান্ন আনত সুজাতা

কিন্তু সে সন্ন্যাসী নয়, সাধারণ নির্বোধ মানুষ।



আমি কোনোদিন
শুনিনি বেশ্যার কান্না, দেখিনি দুয়ার দিয়ে
দাগি চোর, খুনি আর জারজ সন্তানদের
বিবর্ণ মুখের আলো

আমি কোনোদিন
তাদের পাপকে চুমা খেয়ে, তাদের পায়ের নীচে মাথা রেখে
হইনি অমল।

আমি কিছুই শিখিনি এ জীবনে শুধু ঈর্ষা ঘৃণা আর
কবির কলহ ছাড়া।


১৮
যারা কথা বলছে তারা বোবা,
যারা শুনছে সকলেই
জন্ম থেকে বধির। অথচ
সভায় মিছিলে তিলধারণের ঠাঁই নেই।

যারা উপস্থিত তারা বহুদিন মৃত
কিন্তু সকলেই হাততালি দিচ্ছে
কী জন্য এবং কাকে একজনও জানে না।


২৮
অনন্ত কাকের মেলা চারিদিকে
আর সব পাখি যদি
ফুরিয়ে গিয়েছে ;
আকাশে কেবল ধোঁয়া, ধুলো, কার্বন
আর দিনরাত ঘোলাটে ডানার শব্দ,
ক্ষুধার চিত্কার।


৩৭
একটি নষ্ট পচা ফলের জন্য
ভিক্ষুকেরা সবাই হাত বাড়ায়,
‘আমাকে দাও, আমাকে দাও আমাকে’ . . .
যেন আগুন লেগেছে ওই পাড়ায়।

ফলটি ছুঁড়ে দিতেই বাঁধল দাঙ্গা
ভিক্ষুকদের খুনোখুনি থামায় কে।

Birendra Chattopadhyay ।। বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়