MESCALINE
মেস্কালীন ॥ অ্যালেন গীন্‌স্‌বার্গ

গেঁজানো গীন্‌স্‌বার্গ, আমি আজ নগ্ন হয়ে আয়নার দিকে চেয়ে আছি
আমি দেখছি বুড়ো মাথা, আমার ক্রমশঃ টাক পড়ছে
রান্নাঘরের আলোতে পাতলা চুলের তলায় আমার তালু ঝলসাচ্ছে
যেন প্রাচীন স্মৃতি গুহায় কোনো সাধুর মতো—কোনো।
প্রহরীর আলোয় আলোকিত
পিছনে ভ্রমণকারীদের জনতা
তাহলে মৃত্যু আছে।
আমার বেড়াল বাচ্চাটা ডাকছে এবং জামাকাপড়ের মধ্যে দেখছে
আজ রাত্রে বইটো ফোনগ্রাফে গান গাইবে—তার পুরোনো
পরীদের গান
আমার দেয়ালে অ্যান্টিনাসের আবক্ষ মূর্তির ধূসর ছবি এখন
নীচে তাকিয়ে আছে
ঈশ্বরের সুকুমার হাত থেকে আলো ভেঙে পড়ে, তিনি একটি কাঠের
পায়রা পাঠাচ্ছেন শান্ত কুমারীকে
বিয়েতে অ্যাঞ্জেলিকোর জগৎ
বেড়ালটা পাগলা হয়ে গেছে এবং মেঝের চারিদিকে ঘুরে গজরাচ্ছে

মৃত্যু যখন গেঁজানো গীন্‌স্‌বার্গের মাথায় ধাক্কা মারবে
তখন কি হয়
কোন জগতে আমি ঢুকবো
মৃত্যু মৃত্যু মৃত্যু মৃত্যু মৃত্যু—বেড়ালটা শান্তি পেয়েছে
আমরা কি কখনো মুক্ত হবো–গেঁজানো গীন্‌স্‌বার্গ
তা’হলে এটা ধ্বংস হোক, ঈশ্বরকে ধন্যবাদ আমি জানি
কাকে ধন্যবাদ
কাকে ধন্যবাদ
তোমাকে ধন্যবাদ, হে প্রভু, আমার দৃষ্টির অতীত
পথ নিশ্চয়ই কোন জায়গায় পৌঁছোবে
পথ
পথ
স্যাঁতসেঁতে পচা জাহাজের মধ্য দিয়ে। অ্যাঞ্জেলিকোর বিষয়ের মধ্য দিয়ে
চুপ, একটি শিশুর জন্ম দাও এবং চলে যাও
হয়তো এই একমাত্র উত্তর, ঠিক জানতে পারবে না যতক্ষণ একটা ছেলে
না হচ্ছে আমি জানি না
কখনো বাচ্চা ছিল না কখনো হবেও না যেভাবে আমি চলেছি

হ্যাঁ, আমার ভালো হওয়া উচিত, আমার বিয়ে করা উচিত
দেখা উচিত এ সবের মধ্যে কি আছে
কিন্তু আমার চার পাশের এসব মেয়েদের আমি সহ্য করতে পারি না
নাওমি’র গন্ধ।
এঃ, আমি পরিচিত গ্যাঁজানো গীদ্বার্গে মজে গেছি
এমন কি ছেলেদেরও আর সহ্য করতে পারি না
সহ্য করতে পারি না
সহ্য করতে পারি না
আর কেই বা পেছন মারাতে চায় সত্যি?
অসংখ্য সমুদ্র বয়ে যাচ্ছে
সময়ের স্রোত
এবং কেই বা বিখ্যাত হতে চায় এবং অটোগ্রাফ সই করতে চায়
সিনেমা স্টারের মতো?

আমি জানতে চাই
আমি চাই আমি চাই হাস্যকর জানতে জানতে কি গেঁজানো
গীন্‌স্‌বার্গ
আমি জানতে চাই সম্পূর্ণ গেঁজে যাওয়ার পর কি হয়
আমার চুল ঝরে যাচ্ছে, আমার ভুড়ি হয়েছে, আমি যৌন-সম্পর্কে বিরক্ত
আমার পাছা পৃথিবীতে ঘসছে আমি জানি বড়বেশি
এবং যথেষ্ট নয়
আমি জানতে চাই আমার মৃত্যুর পর কি হবে
আচ্ছা, আমি খুব শীগগিরিই জানতে পারবো
আমি কি সত্যিই এখনি জানতে চাই?
সত্যি কি তার দরকার আছে দরকার দরকার দরকার
মৃত্যু মৃত্যু মৃত্যু মৃত্যু মৃত্যু
ঈশ্বর ঈশ্বর ঈশ্বর ঈশ্বর ঈশ্বর ঈশ্বর ঈশ্বর আনন্দবাজারের অরণ্যদেব
টাইপরাইটারের তরঙ্গ।
টাইপ রাইটারের ওপর ঝুঁকে আমি স্বর্গের কি করতে পারি
আমি ড়ুবে গেছি, গ্রেগরি রেকর্ডটা বদলে দাও আঃ চমৎকার সে।
ঠিক সেটাই বাজাচ্ছে
আমি এখন লক্ষ লক্ষ কান সম্বন্ধে বড় বেশি সজাগ
এখন উৎসুক কান, ব্যবসা বানাচ্ছে
খবরের কাগজে বড় বেশি ছবি
বিবর্ণ হলুদ সংবাদের ধামাধরা
আমি কবিতা থেকে সরে যাচ্ছি অন্ধকার চিন্তামগ্ন হবার জন্য

মনের আবর্জনা
পৃথিবীর আবর্জনা
মানুষ আদ্ধেক আবর্জনা
কবরে সবই আবর্জনা
প্যাটারসনে উইলিয়াম কি ভাবছে, মৃত্যু তাঁর উপর বড়
বেশি
এত আগে এত আগে
উইলিয়ামস্ কার নাম মৃত্যু?
তুমি কি এখন প্রতি মুহূর্তে এই বিরাট প্রশ্ন বোধ করছো
অথবা সকালবেলা তুমি কি চা খেতে খেতে ভুলে যাও, নিজের মুখের
কুৎসিত ভালোবাসার দিকে তাকিয়ে
তুমি কি পুনর্জন্মের জন্য প্রস্তুত
এই পৃথিবীকে মুক্তি দিয়ে স্বর্গে প্রবেশ করতে
অথবা মুক্তি দিতে, মুক্তি দিতে
এবং সবই হোক—একটা গোটা জীবন দেখা—সব চিরকাল—চলে
যাবে
শূন্যতায়, একটা কায়দার প্রশ্ন চাঁদ উত্থাপন করেছে।
উত্তরহীন পৃথিবীকে
মানুষের জন্য কোন মহত্ত্ব নেই! মানুষের জন্য কোন মহত্ত্ব নেই।
আমার জন্য কোন মহত্ব নেই! আমি নেই!

আত্মা যখন নির্দেশ করে না তখন লেখার কোন মানে হয় না।

<

Sunil Gangapadhyay।। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়