বাবা বলেন, যখন হবার
        আপনিই হয়,
                আসল ব্যাপার
                             সময় |

বাবা বলেন, সবার আগে
        জানা দরকার
                স্রোতে লাগে
                     কখন জোয়ার,
                           কখনই বা ভাঁটা |

বাবা বলেন,  এমনি  করে
        সারা রাস্তা ধৈর্য ধরে
             মড়া টপ্ কে
                মড়া টপ্ কে
                     মড়া টপ্ কে হাঁটা |

বাবারা যা বলেন তা কি ঠিক ?
        এও ভারি আশ্চর্য
             গা বাঁচাবার নাম দিয়েছেন সহ্য
                বাবাদের ধিক্
                     বাবাদের ধিক্
                        বাবাদের ধিক্ |



আমাদের প্রাণভোমরাগুলো বড় বড় খোলের মধ্যে ভ’রে
সরু সুতোয় ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে ;
আমরা অপেক্ষা করে আছি
মাথার ওপর বহ্নিমান হয়ে আকাশ কখন ভেঙে পড়বে |
এখন যে যতই সাফাই গাক্
হাত-ধোয়া নোংরা জল আমাদের চোখের ওপর দিয়ে
গড়িয়ে গড়িয়ে চলেছে |

বইতে পা লেগে গেলে আগে আমরা কপালে হাত ছোঁয়াতাম,
গায়ে পা ঠেকলেও এখন আমরা প্রণাম করি না ;
এমন কাউকেই আমরা দেখছি না
যার সামনে হাতজোড় করে দাঁড়াতে পারি |
সরু করে বানাচ্ছি প্যান্ট
যাতে হাঁটু গেড়ে বসতে না হয়,
যাতে সারা দুনিয়াকে আমরা ভালো করে পা দেখাতে পারি |
আর শত্রুর চোখকে ফাঁকি দেব বলেই
আমাদের জামায় ফুল-লতা-পাতা কাটার ফৌজি ব্যবস্থা |
কেউ আমাদের আদর করে ভোলাতে এলে
আমরা কাঠপুতুলের মতো ঠিক্ রে উঠি |
কানাকে কানা বলতে, খোঁড়াকে খোঁড়া বলতে
আমাদের মুখে একটুও আটকায় না |
ভদ্রতার মুখোশগুলো আমরা আঁস্তাকুড়ে ফেলে দিয়েছি,
কাউকেই আমরা নকল করতে চাই না |
যা বলবার আমরা জোর গলায় বলি,
শব্দ আমাদের ব্রহ্ম |

বাঁধা রাস্তায় পেটোর পর পেটো চম্ কাতে-চম্ কাতে
আমরা হাঁক দিই |
আমাদের আওয়াজে বাসুকি নড়ে উঠুক ||

Subhash Mukhopadhyay ।। সুভাষ মুখোপাধ্যায়