আমার অতীত জীবনের দিকে চাহিয়া দেখি–আর আমার দুঃখ হয়! সে যেন একটা সুখ-স্বপ্ন ছিল! সেই আমার অতীত জীবনের স্মৃতি…আজ সত্যি সত্যিই স্মৃতিমাত্র। মাঝে মাঝে মনে হয় আমার সে জীবন গেল কোথায়? সেই শোভন, সুন্দর, মোহন জীবন।
…একদিন আমার রূপ ছিল–সৌরভ ছিল–মধু ছিল। আমার সেই সুষমার দিনে কত মধুলুব্ধ ভ্রমরই না আমার কানে কানে বন্দনার স্মৃতিগান তুলিয়াছে!…তাহারা আজ কোথায়?
…এই আকাশ বাতাস আলো একদিন কতই না ভালো লাগিয়াছে! একদিন ইহাদের লইয়া সত্যই আমি পাগল হইয়া থাকিতাম…আজ কোথায় গেল আমার সেই পাগলামি…সেই সহজ উন্মাদনা–ছন্দময়ী ভাললাগার নেশা! আজ কই তারা সব?
…আজ আমি পরিপক্ক–অভিজ্ঞ। আমার সেই অতীতের তরল অনুভূতি জমিয়া যনে কঠিন হইয়া গিয়াছে।
আমার আজ কেবলই মনে হইতেছে…আমার অতীত আর ফিরিবে না জানি–কিন্তু ভবিষ্যত? সে কেমন–কি জানি! আমার আনন্দময় অতীতকে হারাইয়া আজ এই যে পরিপক্ক অভিজ্ঞ হইয়া উঠিয়াছি–ইহার পরিণতি কি?–ইহার সার্থকতা কোথায়?
* * *
গাছের একটি পাকা ফল এইসব ভাবিতেছিল। হঠাৎ বাতাসের দোলায় মাটিতে পড়িয়া গেল।…একটি পাখী আসিয়া ঠোঁটে করিয়া ফলটি লইয়া একটি ডালে বসিল এবং পরম আনন্দে ঠোকরাইয়া খাইতে লাগিল!

Balai Chand Mukhopadhyay ।। বলাইচাঁদ মুখোপাধ্যায়