রাগাত্মিক পদ ।।
বাশুলী কহিছে শুনহ দ্বিজ।
কহিব তোমারে সাধন বীজ।।
প্রথম(১) দুয়ারে মদের গতি।
দ্বিতীয়(২) দুয়ারে আসক স্থিতি।।
তৃতীয়(৩) দুয়ারে কন্দর্প রয়।
কন্দর্প রূপেতে শ্রীকৃষ্ণ কয়।।
আসক রূপেতে শ্রীরাধা কই।
মদরূপ ধরি আমি সে হই।।
সাতাশী আখরে সাধিবে তিনে(৪)।
একত্র করিয়া আপন মনে।।
রতির আকৃতি কন্দর্প হয়।।
তিনটি(৫) আখরে রতিকে যজি।
পঞ্চম আখরে (৬) বাণকে(৭) ভজি।।
দ্বিতীয়(৮) আসকে সামান্য রতি।
তবে সে পাইবে বিশেষ স্থিতি।।
চতুর্থ(৯) আখর সামান্য রস।
তাহাতে কিশোরা কিশোরী বস।।
বাশুলী কহয়ে এই সে সার।
এ রস সমুদ্র বেদান্ত পার।।
————–
(১) “প্রথম দুয়ারে”–সামর্থা।
(২) “দ্বিতীয় দুয়ারে”–সাধারণী।
(৩) তৃতীয় দুয়ারে” সামঞ্জসা।
(৪) “তিন”–পিরীতি।
(৫) “তিনটী আখর”–কন্দর্প।
(৬) “পঞ্চম আখর”–শান্ত, দাস্য, সৌম, বাৎসল্য, ও মাধুর্য্য।
(৭) “বাণ”–মদন।
(৮) “দ্বিতীয় আসক”–রাগাত্মিক ও রাগানুগা।
(৯) “চতুর্থ আখর”–রস ও রতি।
—————-
“সাতাশী”–
পঞ্চবাণ, অর্থাৎ মদন, মাদন, শোষণ, উন্মাদন ও স্তম্ভন।
পঞ্চপ্রাণ, অর্থাৎ প্রাণ, অপান, সমান, উদান, ব্যাণ।
পঞ্চভূত, অর্থাৎ ক্ষিতি, অপ, তেজ, মরুত, ব্যোম।
পঞ্চভাব, অর্থাৎ সান্ত, দাস্য, সৌখ্য, বাৎসল্য, মাধুর্য্য।
পঞ্চগুণ, অর্থাৎ শব্দ, গন্ধ, রূপ, রস, স্পর্শ।
দশ ইন্দ্রিয়।
দশ দিক।
দশ দশা। যথা–“চিন্তাত্র জাগরূদ্বেগৌ তানবং মলিনাঙ্গতা। প্রমাদো ব্যাধিরুম্মাদৌ মোহ মৃত্যু দশাদশঃ।।
নবধাঙ্গ ভক্তি ও আত্মভাব, এই দশ। যথা–শ্রবণ, কীর্ত্তন, স্মরণ, অর্চ্চন, বন্দন, পদসেবন, দাস্য, সৌখ্য, নিবেদন, এবং স্বীয় ভাব।
অষ্টদিক। যথা–উত্তর, দক্ষিণ, পূর্ব্ব, পশ্চিম, নৈঋত, বায়ু, অগ্নি ও ঈশান।
অষ্টকাল/অষ্টপ্রহর। যথা–প্রাতঃ, পূর্ব্বাহ্ন, মধ্যাহ্ন, সায়াহ্ন, অপরাহ্ন, প্রদোষ, মধ্যরাত্রি, নিশান্তক।
এবং ছয় রিপু।
সাতাশী উপর “তিন”–(রতি) সামর্থা, সাধারণী ও সামঞ্জসা।
“গতি”–অধিকার।
“সামার্থা”–শ্রীরাধিকা ও গোপীগণ।
“সাধারণী”–কুব্জা ও কুব্জিকাগণ।
“সামঞ্জসা”–রুক্ষ্মিণী প্রভৃতি।<