সপ্তদশ পরিচ্ছেদ

১৮৮৩, ২২শে ডিসেম্বর

শ্রীরামকৃষ্ণ, ভবনাথ, রাখাল, মণি লাটু প্রভৃতি সঙ্গে

বৈকালে ভবনাথ আসিয়াছেন। ঘরে রাখাল, মাস্টার, হরিশ প্রভৃতি আছেন। শনিবার, ২২শে ডিসেম্বর, ১৮৮৩।

শ্রীরামকৃষ্ণ (ভবনাথের প্রতি) — অবতারের উপর ভালবাসা এলেই হল। আহা গোপীদের কি ভালবাসা!

এই বলিয়া গান গাহিতেছেন গোপীদের ভাবে:

গান — শ্যাম তুমি পরাণের পরাণ।
গান — ঘরে যাবই যে না গো (সঙ্গিনীয়া)
গান — সেদিন আমি দুয়ারে দাঁড়ায়ে।
(বঁধু যখন বিপিন যাও, বিপিন যাও)
(বঁধু ইচ্ছা হয়, ইচ্ছা হয় রাখাল হয়ে তোমার বাধা মাথায় বই!)

“রাসমধ্যে যখন শ্রীকৃষ্ণ অন্তর্হিত হলেন, গোপীরা একেবারে উন্মাদিনী। বৃক্ষ দেখে বলে, তুমি বুঝি তপস্বী, শ্রীকৃষ্ণকে নিশ্চয় দেখেছ! তা না হলে নিশ্চল, সমাধিস্থ হয়ে রয়েছ কেন? তৃণাচ্ছাদিত পৃথিবী দেখে বলে, হে পৃথিবী, তুমি নিশ্চিত তাঁকে দর্শন করেছ, না হলে তুমি রোমাঞ্চিত হয়ে রয়েছ কেন? অবশ্য তুমি তাঁর স্পর্শসুখ সম্ভোগ করেছ! আবার মাধবীকে দেখে বলে, ‘ও মাধবী, আমায় মাধব দে!’ গোপীদের প্রেমোন্মাদ!

“যখন অক্রূর এলেন, শ্রীকৃষ্ণ, বলরাম মথুরা যাবার জন্য তাঁর রথে উঠলেন, তখন গোপীরা রথের চাকা ধরে রইলেন, যেতে দেবেন না।”

এই বলিয়া শ্রীরামকৃষ্ণ আবার গান গাহিতেছেন:

ধরো না ধরো না রথচক্র, রথ কি চক্রে চলে!
যে চক্রের চক্রী হরি, যাঁর চক্রে জগৎ চলে!

শ্রীরামকৃষ্ণ বলিতেছেন, “রথ কি চক্রে চলে” — এ-কথাগুলি আমার বড় লাগে। “যে চক্রে ব্রহ্মাণ্ড ঘোরে!” “রথীর আজ্ঞা লয়ে সারথি চালায়!”

<

Mahendranath Gupta ।। মহেন্দ্রনাথ গুপ্ত