‘বে সিটি টাইমস্‌’, ২১ মার্চ ১৮৯৪

গতকল্য সন্ধ্যায় অপেরা হাউস-এ স্বামী বিবে কানন্দ যে চিত্তাকর্ষক ভাষণটি দিয়াছেন, ঐরূপ বক্তৃতা শুনিবার সুযোগ এই শহরের (বে সিটি) লোক কদাচিৎ পাইয়া থাকে। বক্তা ভদ্রলোক, ভারতবর্ষের অধিবাসী। প্রায় ত্রিশ বৎসর পূর্বে তিনি কলিকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। ডক্টর সি. টি নিউকার্ক যখন শ্রোতৃবৃন্দের নিকট বক্তার পরিচয় প্রদান করিতেছেন, তখন অপেরা হাউসের নীচের তলার প্রায় অর্ধেকটা ভরিয়া গিয়াছে। কথাপ্রসঙ্গে বক্তা এই দেশের লোককে সর্বশক্তিমান্ ডলারের ভজনা করিবার জন্য সমালোচনা করেন। ভারতে জাতিভেদ আছে সত্য, কিন্তু খুনী লোক কখনও সমাজের শীর্ষস্থানে যাইতে পারে না। কিন্তু এদেশে যদি সে দশলক্ষ ডলারের মালিক হয়, তাহা হইলে সে অপর যে-কোন ব্যক্তিরও সমান। ভারতে একবার যদি কেহ গুরুতর অপরাধ করিয়া বসে, তাহা হইলে বারবার সে হীন থাকিয়া যায়। হিন্দুধর্মের একটি বড় বৈশিষ্ট্য হইল—অন্যান্য ধর্ম ও বিশ্বাসসমূহের প্রতি সহিষ্ণুতা। অন্যান্য প্রাচ্য দেশের ধর্ম অপেক্ষা ভারতবর্ষের ধর্মের উপরই মিশনরীদের আক্রোশ বেশী, কেননা হিন্দুরা তাঁহাদিগকে এইরূপ করিতে বাধা দেয় না। এখানে হিন্দুরা তাহাদের ধর্মের যাহা একটি প্রধান শিক্ষা—সহিষ্ণুতা, উহাই প্রতিপালন করিতেছে, বলিতে পারা যায়। কানন্দ একজন উচ্চশিক্ষিত এবং মার্জিতরুচি ভদ্রলোক। আমরা শুনিয়াছি ডেট্রয়েট-এ কানন্দকে জিজ্ঞাসা করা হইয়াছিলঃ হিন্দুরা নদীতে তাহাদের শিশুসন্তান নিক্ষেপ করে কিনা? কানন্দ উত্তর দেনঃ না তাহারা ঐরূপ করে না, পাশ্চাত্যদেশের মত ডাইনী সন্দেহ করিয়া স্ত্রীলোকেদেরও তাহারা দাহ করে না। বক্তা আজ রাত্রে স্যাগিন শহরে বক্তৃতা করিবেন।

<

Swami Vivekananda ।। স্বামী বিবেকানন্দ