ঋগ্বেদ ১০।০৩৩
ঋগ্বেদ সংহিতা ।। ১০ম মণ্ডল সূক্ত ৩৩(১)
ভিন্ন ভিন্ন দেবতা। কবষ ঋষি।

১। যিনি লোকদিগকে স্বকার্যে প্রেরণ করেন, তিনি আমাকে প্রেরণ করিলেন। আমি পূষাকে অন্তরে বহন করিলাম। তাবৎ দেবতা আমাকে রক্ষা করিলেন। চতুর্দিকে রব উঠিল যে, দুর্ধর্ষ ঋষি আসিতেছেন।

২। (বোধ হয়, পিতৃশোকে কুরুশ্রবণ রাজার উক্তি)-আমার পর্শুকাগুলি (পাঁজরা) সপত্নীগণের ন্যায় আমাকে তেমনি সন্তাপ দিতেছে। মনের অসুখ আমাকে ক্লেশ দিতেছে, আমি দীনহীন ক্ষীণ হইতেছি। পক্ষীর মত আমার মন অস্থির হইতেছে।

৩। হে ইন্দ্র! যেরূপ মূষিকেরা স্নায়ুকে চর্বণ করে, আমি তোমার ভক্ত হইলেও আমার মনের পীড়া আমাকে তদ্রুপ চর্বণ করিতেছে। হে মঘবা ইন্দ্র। একবার আমাদিগের প্রতি কৃপা দৃষ্টি কর। আমাদিগের পিতৃতুল্য হও।

৪। আমি কবষ ঋষি, ত্রসদস্যুর পুত্র কুরুশ্রবণ রাজার নিকটে যাচ্ঞা করিতে গেলাম, কারণ তিনি দাতাগণের শ্রেষ্ঠ।

৫। আমার দক্ষিণা সহস্ৰসংখ্যায় দত্ত হইত এবং সকলে স্তব অর্থাৎ শ্লাঘা করিত; আমি রথারূঢ় হইলে তিনটী হরিতবর্ণ ঘোটক সুন্দররূপে বহন করে।

৬। আমার পিতার কীৰ্ত্তি দৃষ্টান্ত দিবার স্থলস্বরূপ ছিল, তাহার বাক্য সেবকদিগের নিকট যেন রমণীয় ক্ষেত্রের ন্যায় প্রীতিকর হইত।

৭। (কবষের সান্ত্বনা বাক্য) –হে কুরুশ্রবণ! যাহার কীর্তি দৃষ্টান্ত দিবার স্থল, তুমি তাহার পুত্র। তুমি মিত্রাতিথি রাজার নপ্তা। আমার নিকটে এস, কারণ আমি তোমার পিতার বন্দনাকর্তা অর্থাৎ অনুগতলোক।

৮। যদি জীবিত ব্যক্তির জীবন ও মৃতব্যক্তির মৃত্যু আমার প্রভুত্বের অধীন হইত, তাহা হইলে আমার সেই পরম উপকারী তোমার পিতা অবশ্য জীবিত থাকিতেন।

৯। একশত আত্মা অর্থাৎ প্রাণ থাকিলেও দেবতাদিগের অভিপ্রায়ের বিপরীতে কেহ বাঁচতে পারে না। এই হেতুতেই আমাদিগের সহচরদিগের সহিত আমাদিগের বিচ্ছেদ হয়।

————

(১) এই সূক্তে আত্মীয় মৃত্যুজনিত দুঃখ বর্ণিত হইয়াছে।

<

Super User