আরও আধা ঘণ্টা ছিলাম আমরা হালদারবাড়িতে। সেই সময়টা ফেলুদা বাড়ির কম্পাউন্ডটা ঘুরে দেখল। বাগানটা দেখা শেষ করে, কম্পাউন্ড ওয়ালের কোনও অংশ নিচু বা ভাঙা আছে কি না দেখে আমরা পুকুরের কাছে এলাম! ফেলুদার দৃষ্টি মাটির দিকে, জানি ও পায়ের ছাপ খুঁজছে। শুকনো মাটি, পায়ের ছাপের সম্ভাবনা কম, তবে পুকুরের পূর্ব পাড়ে একটা অংশ ফেলুদার দৃষ্টি আকর্ষণ করায় সে থেমে গেল!

একটা ছোট্ট বুনো ফুলের গাছ যেন কীসের চাপে পিষে গেছে। আর সেটা হয়েছে কিছুক্ষণ আগেই।

ফেলুদা ফুলের আশপাশটা দেখে পুকুরের দিকে চেয়ে কিছুক্ষণ চুপ করে দাঁড়িয়ে রইল। এ পুকুর ব্যবহার হয় না, তাই জলটা পানার আবরণে ঢেকে গেছে। আমরা যেখানটা দাঁড়িয়ে আছি, সেখান থেকে হাত পাঁচেক দূরে বেশ খানিকটা জায়গা জুড়ে পান সরে গিয়ে জল বেরিয়ে পড়েছে।

কিছু ফেলা হয়েছে কি জলের মধ্যে? তাই তো মনে হয়।

কিন্তু ফেলুদা এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করল না। যা দেখবার ও দেখে নিয়েছে।

বাড়ি ফেরার সময় লালমোহনবাবু হঠাৎ বললেন, বাগানে একটা চন্দনা দেখলুম বলে মনে হল। একটা পেয়ারা গাছ থেকে উড়ে একটা সজনে গাছে গিয়ে বসল।

সেটা আমাদের বললেন না কেন? ধমকের সুরে বলল ফেলুদা।

কী জানি, যদি বেরিয়ে যায়। টিয়া! দুটো পাখি এত কাছাকাছি। তবে এ পাখিটা কথা বলে।

আপনি শুনলেন কথা?

শুনলুম বইকী। আপনারা তখন বাগানের উলটা দিকে; আমি আরেকটু হলেই একটা তেঁতুলে বিছের উপর পা ফেলেছি, এমন সময় শুনলুম, বাবু, সাবধান। আর মুখ তুলে দেখি পাখি।

পাখি বলল বাবু সাবধান?

তাই তো স্পষ্ট শুনলুম। আপনারা বিশ্বাস করবেন না বলেই বলিনি।

বিশ্বাস করাটা সত্যিই কঠিন, তাই কথা আর এগোল না।

তবে এটা ঠিক যে এ রকম একটা খুন। আর এ রকম চুরির পরেও ফেলুদার মন থেকে চন্দনার ব্যাপারটা যাচ্ছে না। খুনের দু দিন পর, সোমবার সকালে চা খাওয়ার পর ফেলুদার কথায় সেটা বুঝতে পারলাম, ও বলল, পার্বতীবাবুর খুন। আর নেপোলিয়নের চিঠি চুরি—এই দুটো ঘটনাই গতানুগতিক। কিন্তু আমাকে একেবারে বোকা বানিয়ে দিয়েছে এই পাখি চুরির ব্যাপারটা।

 

গতকাল অমিতাভ বাবু ফোন করেছিলেন; ফেলুদা জানিয়ে দিয়েছে যে নেহাত দরকার না। পড়লে এই অবস্থায় ও আর ওঁদের বিরক্ত করবে না, বিশেষ করে পুলিশ যখন তদন্ত চালাচ্ছেই। লালমোহনবাবু বলেছেন সোমবার হলেও আজ একবার আসবেন, কারণ কী ডেভেলপমেন্ট হচ্ছে না হচ্ছে সেটা জানার ওঁর বিশেষ আগ্ৰহ।

আমি বললাম,পাখির খাঁচার গায়ে রক্তটা পাখির না মানুষের সেটা তো এখনও জানা গেল না।

ওটা যে মানুষের, সেটা অ্যানালিসিস না করেই বলা যায়, বলল ফেলুদা।কেউ যদি পাখিকে খাঁচা থেকে বার করতে যায় তা হলে সেটা সাবধানেই করবে, কিন্তু পাখি ছটফট করতে পারে, খামচাতে পারে, ঠোকুরাতে পারে। অর্থাৎ যে লোকে পাখিটাকে কার করেছে, তার হাতে জখমের চিহ্ন থাকা উচিত।

সে জিনিস ও বাড়ির কারুর হাতে দেখলে?

উঁহু। সেটার দিকে আমি চোখ রেখেছিলাম। বাবু, চাকর কারুর হাতেই দেখিনি। অথচ টাটুকা জখম। অমিতাভবাবু বললেন পার্ক স্ট্রিটে আমাদের সঙ্গে দেখা হবার দু দিন আগে পাখিটা কিনেছিলেন। তার মানে ১৩ ডিসেম্বর। খুনটা হয় ১৯ ডিসেম্বর।..এই পাখির জন্য আমি অন্য ব্যাপারগুলোতে পুরোপুরি মনও দিতে পারছি না।

খুনের সুযোগ কার কার ছিল তার একটা লিস্ট করছিলে না তুমি কাল রাত্তিরে?

শুধু সুযোগ নয়, মোটিভও।

ফেলুদার পাশেই সোফায় পড়েছিল খাতাটা। সে ওটা খুলে বলল, সাধন দস্তিদার সম্বন্ধে নতুন কথা বলার বিশেষ কিছু নেই। রহস্যটা হচ্ছে তার অন্তধানে। এটা সম্ভব হয় একমাত্র যদি দারোয়ান মিথ্যে কথা বলে থাকে। সাধন তাকে ভালরকম ঘুষ দিয়ে থাকলে এটা হতে পারে। সেটা পুলিশে বার করুক। মিথ্যেবাদীকে সত্যি বালানোর রাস্তা তাদের জানা আছে।

দ্বিতীয় সাসপেক্ট–পেস্টনজী। তবে পেস্টনজীর সত্তর বছর বয়স; বুড়ো মানুষের পক্ষে এ খুন সম্ভব কি না সেটা ভাবতে হবে। আঘাতটা করা হয়েছিল রীতিমতো জোরে। অবিশ্যি সত্তরেও অনেকের স্বাস্থ্য দিব্যি ভাল থাকে। সেটা ভদ্রলোককে চাক্ষুষ না দেখা পর্যন্ত বোঝা যাবে না।

তৃতীয়-অচিন্ত হালদার। বাপের উপর ছেলের টান না থাকলেও খুন করার মতো আক্রোশ ছিল কি না সেটা ভাবার কথা। তবে নেপোলিয়নের চিঠি হাতাতে পারলে ওর আর্থিক সমস্যা কিছুটা মিটত ঠিকই। আর কেউ না হাক, পেস্টনজী যে সে চিঠি কিনতে রাজি হতেন, সেটা বোধহয় অনুমান করা যায়। চতুর্থ-

আবার আরও একজন আছে নাকি?

তাকে সাসপেক্ট বলে বলছি না, কিন্তু অমিতাভবাবু সে সময়টা কী করছিলেন, সেটা জানা দরকার বইকী। তাঁর জবানিতে তিনি বলেছেন সকালে তিনি বাগানে থাকেন। ওঁর খুব ফুলের শখ। সে দিন দশটা পর্যন্ত তিনি বাগানে ছিলেন। মাঝে একবার আমাদের ফোন করতে ন’ট্যার সময় তাঁকে নীচের বৈঠকখানায় আসতে হয়, তারপর আমরা আসার আগে আর দোতলায় যাননি। চাকর তাঁকে চা দিয়ে যায় দশটার সময় একতলায় বাগানের দিকের খোলা বারান্দায়। আমাদের গাড়ির আওয়াজ পেয়ে তিনি সামনের দিকে চলে আসেন। দোতলায় যান। তিনি একেবারে আমাদের নিয়ে, তার আগে নয়।

সব শেষে হলেন হৃষীকেশবাবু। ইনি দশটা বাজতে পাঁচে বেরিয়েছেন সেটা দারোয়ান দেখেছে, কিন্তু ফিরতে দেখেছে কি না মনে করতে পারছে না। দারোয়ানের কথাবার্তা খুব রিলায়েবল বলে মনে হয় না। চল্লিশ বছর চাকরি করছে বটে হালদার বাড়িতে, হয়তো এমনিতে বিশ্বস্ত, কিন্তু বয়স হয়েছে সত্তরের উপর, কাজেই স্মরণশক্তি ক্ষীণ হয়ে আসা অস্বাভাবিক নয়। হৃষীকেশবাবু স্টেশনারি দোকানে অতটা সময় কাটিয়েছেন কি না সেটা জানা দরকার। যদি সে ব্যাপারে মিথ্যেও বলে থাকেন, তার খুনের সুযোগ সম্বন্ধে সন্দেহ থেকেই যায়। একমাত্র নেপোলিয়নের চিঠি হাত করা ছাড়া মোটিভও খুঁজে পাওয়া যায় না।

ফেলুদা খাতাটা বন্ধ করল। আমি বললাম, চাকর-বকিরদের বোধহয় সব কটাকেই বাদ দেওয়া যায়।

শুনিলিই তো চাকর সব কটাই পুরনো। তাদের মধ্যে বেয়ারা মুকুন্দ পাৰ্বতীচরণের ঘরে কফি নিয়ে যায় পেস্টনজী ও পার্বতীবাবুর জন্য। পার্বতীচরণ একা থাকলেও রোজ দশটায় কফি খেতেন। এ ছাড়া আর কোনও চাকর নটার পর পাৰ্ব্বতীচরণের ঘরে যায়নি। বাড়িতে লোক বলতে আর আছে অমিতাভবাবুর স্ত্রী, অনিরুদ্ধ, পার্বতীবাবুর আশি বছরের বুড়ি মা, মালী, মালীর এক ছেলে, ড্রাইভার ও দারোয়ান; অচিন্ত্যবাবু বিয়ে করেননি।

ফেলুদা একটা চারমিনার ধরাবার সঙ্গে সঙ্গেই ফোন বেজে উঠল। ইনস্পেক্টর হাজরা।

কী খবর বলুন স্যার, বলল ফেলুদা।

সাধন দস্তিদারের ঠিকানা পাওয়া গেছে।

ভেতি গুড।

ভেরি ব্যাড, কারণ সে ঠিকানায় ওই নামে কেউ থাকে না।

বটে?

এবং কোনও দিন ছিল ও না।

তা হলে?

তা হলে আর কী–যে তিমিরে সেই তিমিরে। মহা ফিচেল লোক বলে মনে হচ্ছে।

আর হৃষীকেশবাবুর অ্যালিবাই ঠিক আছে?

উনি পোস্টাপিসে গিয়েছিলেন। দশটায় এবং টেলিগ্রামগুলো করেছেন এটা ঠিক। তারপর স্টেশনারি দোকানো যাবার কথা যেটা বললেন, সেটা ভেরিফাই করা গেল না, কারণ দোকানে কেউ মনে করতে পারল না।

আর পেস্টনজী?

অসম্ভব তিরিক্ষি মেজাজের লোক। প্ৰচণ্ড ধনী। দেড়শো বছর কলকাতায় আছে। এই পাশি ফ্যামিলি। এমনিতে বেশ শক্ত সমর্থ লোক, তবে কাবু হয়ে আছেন আরগ্রাইটিসে, ডান হাত কাঁধের উপর ওঠে না! ওঁর পক্ষে এই খুন প্রায় ইমপসিবল। লর্ড সিনহা রোডে গিয়ে রোজ সকালে ফিজিওথেরাপি করান। চেক করে দেখেছি; কথাটা সত্যি।

তা হলে তো সাধন দস্তিদারের সন্ধানেই লেগে থাকতে হয়।

আমার ধারণা লোকটা বারাসতেই থাকে, কারণ ওর অ্যাপ্লিকেশনের খামে বারাসতের পোস্টমার্ক রয়েছে।

সে কী, এ তো খুবই ইন্টারেস্টিং ব্যাপার।

আমরা খোঁজ করছি। এখানে গা ঢাকা দিয়ে থাকতে পারবে বলে মনে হয় না। ও, ভাল কথা, খোকার ঘরে চোর এসেছিল।

আবার?

আবার মানে?

হাজরা পাখির কথাটা জানেন না। ফেলুদা সেটা চেপে গিয়ে বলল, না, বলছিলাম-একটা চুরি তো হল বাড়িতে, আবার চোর?

যাই হাক, কিছু নেয়নি।

খোকা টের পেলে কী করে?

সে বাবা-মায়ের পাশের ঘরে এক শোয়। বিলিতি কায়দা আর কী। তা কাল মাঝ রাত্তিরে নাকি খুঁটিখাট শব্দে ঘুম ভেঙে যায়। ছেলের সাহস আছে। কে বলে চেঁচিয়ে ওঠে, আর তাতেই নাকি চোর পালিয়ে যায়। আমি খোকাকে জিজ্ঞেস করলুম।–তোমার ভয় করল না? তাতে সে বললে যে বাড়িতে খুন হবার পর থেকে নাকি সে বালিশের তলায় মেশিনগান নিয়ে শোয়, আর সেই কারণেই নাকি তার ভয় নেই।

দশটার সময় লালমোহনবাবু এসে হাজির। ফেলুদাকে গভীর দেখে ভদ্রলোক ভারী ব্যস্ত হয়ে উঠলেন। –সে কী মশাই, আপনি এখনও অন্ধকারে নাকি?

কী করি বলুন—রোজ যদি একটা করে নতুন রহস্যের উদ্ভব হয়, তা হলে ফেলু মিত্তির কী করে?

আবার রহস্য?

খোকার ঘরে চার ঢুকেছিল কাল রাত্তিরে।

বলেন কী? চোরের কি কোনও বাছবিচার নেই? মুড়ি-মিছরি এক দর?

এখন আপনার উপর ভরসা।

হুঁ—চন্দ্ৰ-সূৰ্য অস্ত গেল, জোনাক ধরে বাতি–ভীষ্ম দ্ৰোণ কৰ্ণ গেল, শল্য হল রখী! তবে হ্যাঁ-চন্দনার ব্যাপারটা কিন্তু আমায় হনটি করছে। ওটা নিয়ে একটা আলাদা তদন্ত করা উচিত। আপনার সময় না থাকলে আমি করতে রাজি আছি। তিনকড়িবাবুর দোকানে আমার খুব যাতায়াত ছিল এককালে।

সে কী, এটা তো বলেননি। আগে।

আরে মশাই, এককালে খুব পাখির শখ ছিল আমার। একটা ময়না ছিল, সেটাকে মেঘনাদবধ কাব্যের প্রথম লাইন আবৃত্তি করতে শিখিয়েছিলাম।

জল পড়ে পাতা নড়ে দিয়ে শুরু করা উচিত ছিল আপনার।

ভদ্রলোক ফেলুদার খোঁচটা অগ্ৰাহ্য করে আমার দিকে ফিরে বললেন, কী হে তপেশীবাবু, যাবে নিউমার্কেট?

ফেলুদা বলল, যেতে হয় তো বেরিয়ে পড়ুন। আমি ঘণ্টাখনেক পরে আপনাদের মিট করব।

কোথায়?

নিউ মার্কেটের মধ্যিখানে, কামানটার পাশে। বিস্তর ঘোরাঘুরি আছে, বাইরে খাওয়া আছে।

সপ্তাহে এক দিন রেস্ট্রর‍্যান্টে খাওয়াটা আমাদের রেগুলার ব্যাপার।

লালমোহনবাবুর গাড়িতে করে বেরিয়ে পড়লাম।

নিউ মার্কেটের পাখির বাজারের জবাব নেই। তবে তিনকড়িবাবু যে জটায়ুকে চিনবেন না। তাতে আশ্চর্য হবার কিছু নেই, কারণ ভদ্রলোক এ দোকানে শেষ এসেছেন সিক্সটি এইটে। লালমোহনবাবু এক গাল হেসে চিনতে পারছেন? জিজ্ঞেস করাতে তিনকড়িবাবু তাঁর মোটা চশমার উপর দিয়ে লালমোহনবাবুর দিকে চেয়ে বললেন, চেনা মুখ তো ভুলি না চট করে। নাকু বাবু তো? আপনি কারবালা ট্যাঙ্ক রোডে থাকেন না?

লালমোহনবাবুর চুপিসানো ভাব দেখে আমিই কাজের কথাটা পাড়লাম।

আপনার এখান থেকে গত দিন দিশেকের মধ্যে কি কেউ একটা চন্দনা কিনে নিয়ে গেছে? বারাসতের এক ভদ্রলোক?

বারাসতে কিনা জানি না, তবে দুখানা চন্দনা বিক্রি হয়েছে দিন দশোকের মধ্যে। একটা নিল জয়শক্তি ফিলিম কোম্পানির নেপেনবাবু। বলল চিন্ময়ী মা না মৃন্ময়ী মা কী একটা বইয়ের শুটিং-এ লাগবে। ভাড়ায় চাইছিল—আমি বললুম। সে দিন আর নেই। নিলে ক্যাশ দিয়ে নিয়ে যান, কাজ হয়ে গেলে পর আপনাদের হিরোইনকে দিয়ে দেবেন।

আর অন্যটা যে বেচলেন, সেটা কেথেকে এসেছিল। আপনার দোকানে মনে আছে?

কেন মশাই, অন্ত ইনফরমেশনে কী দরকার?

ভদ্রলোক একটু সন্দিগ্ধ বলে মনে হল।

সেই পাখিটা খাঁচা থেকে চুরি গেছে অত্যন্ত রহস্যজনকভাবে, বললেন লালমোহনবাবু, সেটা ফিরে পাওয়া দরকার;

ফিরে পেতে চান তো কাগজে অ্যাডভারটাইজ দিন।

তা না হয় দেব, কিন্তু আপনার দোকানে কেখেকে এসেছিল সেটা–

অতশত বলতে পারব না। আপনি অ্যাডভারটাইজ দিন।

পাখিটা কথা বলত কি?

তা বলবে না কেন? তবে কী বলত জিজ্ঞেস করবেন না। সতেরোটা টকিং বার্ড আছে আমার দোকানে। কেউ বলে গুড মর্নিং, কেউ বলে ঠাকুর ভাত দাও, কেউ বলে জয় গুরু, কেউ বলে রাধাকেষ্ট-কোনটা কোন পাখি বলে সেটা ফস করে জিজ্ঞেস করলে বলতে পারব না।

আধা ঘণ্টা সময় ছিল হাতে, তার মধ্যে লালমোহনবাবু একটা নখ কাটার ক্লিপ, আধা ডজন। দেশবন্ধু মিলসের গেঞ্জি আর একটা সিগন্যাল টুথপেস্ট কিনলেন। তারপর চীনে জুতোর দোকানে গিয়ে একটা মোকসিনের দাম করতে করতে আমাদের অ্যাপায়স্টমেন্টের সময় এসে গেল! আমরা কামানের কাছে যাবার তিন মিনিটের মধ্যেই ফেলুদা হাজির।

এবার কোথায় যাওয়া? মার্কেট থেকে বাইরে এসে জিজ্ঞেস করলেন লালমোহনবাবু।

বলেন কী? সেই সিরাজদ্দৌলার অ্যামল থেকে?

সেই রকম একটি প্রাচীন পাশি বাড়িতে এখন যাব আমরা। ঠিকানা হচ্ছে।–ফেলুদা পকেট থেকে খাতা বার করল

একশো তেত্ৰিশের দই বৌবাজার স্ট্রিট।

Satyajit Ray ।। সত্যজিৎ রায়