সাইফুল ইসলাম খানার পাশ দিয়ে বাজারে যাচ্ছিল। নান্টুর দোকানে সে এখন যাবে। একটা চা এবং নিমকি খাবে। মাসকাবারি ব্যবস্থা করা আছে। মাসের শেষে টাকা দিতে হয়। এ ছাড়াও নান্টু লোকটি গান-বাজনার সমজদার। চা খেতেখেতে তার সঙ্গে গান-বাজনা নিয়ে দু-একটা টুকটাক কথা হয়। সাইফুল ইসলামের বড় ভালো লাগে। এই অঞ্চলে গান-বাজনার কোনো কদর নেই। মূখের দেশ।

সাইফুল ইসলাম শব্দ করে করে পা ফেলছিল। তার খুব সাপের ভয়। রাতের বেলা হাঁটাচলা করবার সময় সে সাড়াশব্দ করে হাঁটে। আজও সে গুনগুন করছিল,–আসে বসন্ত ফুল বনে। কিন্তু হঠাৎ সে গান থামিয়ে পাথরের মূর্তির মতো জমে গেল। বিকট চিঙ্কার আসছে থানা থেকে। বিকট এবং বীভৎস। যেন কেউ লোটার একটা হাত টেনে ছিড়ে ফেলেছে। কিংবা একটা চোখ উপড়ে ফেলেছে।

বসন্তকালে রাতের ঠাণ্ডা হাওয়ার মধ্যেও সে কুলকুল করে ঘামতে লাগল। সাপের কথা আর তার মনে রইল না। টর্চ নিভিয়ে সে নিঃশব্দে বাজারের দিকে রওনা হল।

নান্টু মিয়া তার দোকান খোলৈ নি। তার জলবসন্ত হয়েছে। সাইফুল ইসলাম নার দোকানের সামনে অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে নিজের ঘরের দিকে রওনা হল। নার দোকান ছাড়া অন্য কোন দোকানে সে চা খায় না। নান্টুর দোকানে সে নিজের পয়সায় একটা কাপ কিনে রেখেছে। এই কাপে নান্টু অন্য কাউকে চা দেয় না।

<

Humayun Ahmed ।। হুমায়ূন আহমেদ