তুমি থানাওয়ালাদের বিরুদ্ধে কেইস করতে চাও?

জ্বি।

বেহুদা ঝামেলা করছ দবির।

চৌধুরী সাহেব, একটা নির্দোষ লোককে পিটিয়ে মেরে ফেলেছে।

পুলিশে ধরলে কোলে নিয়ে বসায় না, মার দেয়। তোমার ঐ লোক তো আগেই। আধমরা ছিল।

দবির মিয়া মুখ লম্বা করে বসে রইল।

চৌধুরী সাহেব সরু গলায় বললেন, বুদ্ধিমান লোক থানাওয়ালার সাথে বিবাদ করে না। কেইস করতে চাও কর। টাকা খরচ হবে। ফায়দা হবে না কিছু টাকা খরচ করতে পারবে?

টাকা কোথায় আমার?

হুঁ। তাহলে চুপ করে থাক। থানাওয়ালারা মিলে পাঁচ শ টাকা দেবে বলছে। ঐটা নিয়ে পাঠিয়ে দাও।

দবির মিয়া চুপ করে রইল। চৌধুরী সাহেব বললেন, দিনকাল খারাপ। খুব খারাপ। সবার সাবধান থাকা দরকার। বাজে ঝামেলায় যাওয়ার কোন দরকার নাই।

তা ঠিক।

আর তোমার শালাকে বলবে এইটা নিয়ে যেন একটা ঝামেলা পাকাবার চেষ্টা না করে। কথায়-কথায় আন্দোলন, এই সব বড় শহরে হয়। ছোট জায়গায় হয়। না। তোমার ভালোর জন্যেই বলা।

দবির মিয়া হোট একটা নিঃশ্বাস ফেলল।

চৌধুরী সাব, তা হলে উঠি?

বস, চা খাও। এই চা দে।

চা আসতে অনেক দেরি হল। চৌধুরী সাহেব দেশের অবস্থা নিয়ে আলাপ করতে লাগলেন। আলাপের ফাঁকে একসময় বললেন, তোমার শালাকে কোনো কাজেটাজে ঢুকিয়ে দাও, বুঝলে। চুপচাপ ঘরে বসে থাকা ঠিক না। আইস মিলে এক জন স্টোর ইনচার্জ নেবে। তুমি চাও তো ব্যবস্থা করে দিই। পাঁচশ টাকা। মাসে পাবে। ঘরে বসে বসে এই টাকাটাই-বা মন্দ কি? আর কাজকাম ছাড়া ঘরে বসে থাকা যায় নাকি?

দবির মিয়া উত্তর দিল না।

কি, বলব চাকরিটার জন্যে?

চৌধুরী সাহেব, একটু জিজ্ঞেস করে দেখি।

তা দেখ। তবে আমাকে দু-এক দিনের মধ্যে বলবে।

জ্বি, বলব। কাজ ছাড়া মানুষ বাঁচে?

<

Humayun Ahmed ।। হুমায়ূন আহমেদ