পুষ্প ঠাণ্ডা মেঝেতে হাত-পা এলিয়ে পড়ে আছে। তার চমৎকার লাগছে। দুপুরবেলার এই সময়টার মধ্যে কোনট-একটা রহস্য আছে। সময়টাকে খুব আপন মনে হয়। সারা শরীরে থাকে ঘুম-ঘুম আলস্য। ঘুমাতে ইচ্ছা করে, আবার জেগে থাকতেও ইচ্ছা করে।

বাবু ঘুমাচ্ছে। তার ঘুমবার ভঙ্গিটা খুব বিশ্ৰী। হাঁ করে ঘুমায়। আজো হাঁ করে আছে। পুষ্প খুব সাবধানে মুখের হাঁ বন্ধ করে দিল। অভ্যাস হয়ে গেলে মুশকিল। বড় হয়েও যদি হাঁ করে ঘুমায়, তা হলে তো সর্বনাশ!

বাবু ঘুমের মধ্যেই হাত দিয়ে মাকে একটা ধাক্কা দিল। পুষ্প গম্ভীর গলায় বলল, এসব কী হচ্ছে? মার গায়ে হাত তোলা হচ্ছে। খুব খারাপ। আমি কিন্তু রাগ করলাম। তোমার সঙ্গে আর কোনো কথা হবে না। না না না।

ঘুমন্ত ছেলের সঙ্গে পুষ্পমাঝে-মাঝে সময় ধরে একতরফা কথাবার্তা বলে। টেনেটেনে অনেকটা গান গাওয়ার ভঙ্গিতে। শেষের দিকে কথাগুলো বলা হয় মিল দিয়ে। দিয়ে।

খোকন সোনা
কথা বলে না,
শুধু ঘুমায়, মাথা নাড়ায়
আবার হাসে, ভালবাসে।

এই ব্যাপারগুলি ছেলে জেগে থাকা অবস্থায় বা ছেলের বাবার উপস্থিতিতে পুল্প কখনন করে না। তার খুব লজ্জা লাগে। এই বাবু তার নিজের, অন্য কারোর নয়—এর মধ্যেও যেন খানিক লজ্জা আছে। এই বাবু অন্য কারোর হলে সে বোধহয় আরো বেশি ভালবাসতে পারত।

খুব অল্প সময়ের জন্যে কলিংবেল বাজল। নিশ্চয়ই নিশাত আপা। নিশাত আপা কলিংবেলটা ছুঁয়েই হাত সরিয়ে নেন। ঘরের ভেতর থেকে কে কে বলে চেচিয়ে মরলেও সাড়া দেন না। কিছুক্ষণ চুপচাপ দাঁড়িয়ে থেকে আরেক বার বেল টেপেন।

পুষ্প দ্বিতীয় বার বেল টেপার জন্যে অপেক্ষা করল না। উঠে দরজা খুলে দিল। নিশাত নয়, মিজান দাঁড়িয়ে। চোখে সানগ্লাস। চুল উচ্চখুষ্ক।

কি, ভেতরে আসতে বলবেন, না বাইরে দাঁড়িয়ে থাকব?

ভাই আসুন।

আমি হচ্ছি অসময়ের অতিথি। আজো দেখি মেঝেতে শয্যা পেতেছেন। মেঝেতে ঘুমোতে বুঝি খুব আরাম?

পুষ্প হাসল। মিজান বলল, আমিও এক দিন শুয়ে দেখব। চট করে এক গ্লাস ঠাণ্ডা পানি আনুন। হিম-শীতল।

খুব ঠাণ্ডা তো হবে না।

ও আচ্ছা-আচ্ছা, মনে থাকে না। তা হলে চা। আপনার পুত্র দেখি আজ এখানেই আছে। কেউ নিয়ে যায় নি?

জ্বি-না।

সুন্দর ছেলে আপনার। মার বিউটি পেয়েছে। বাবার মতো হয় নি—এটা একটা ভালো ব্যাপার। হা হা হ্যাঁ। রাগ করলেন না তো ভাবি?

জ্বি-না। রাগ করব কেন?

বসতেও তো বলছেন না।

বসুন। আমি চা নিয়ে আসছি।

দেরি করবেন না, আমার হাতে সময় বেশি নেই।

পুষ্প চা বানিয়ে নিয়ে এল। লোকটির উপর আজ আর প্রথম দিনের মতত রাগ হচ্ছে না। কত ঝামেলা করে সুন্দর একটা বাসা জোগাড় করেছে। আজকালকার যুগে কে আর বন্ধুদের জন্যে কিছু করে। কেউ করে না।

চিনি হয়েছে?

মিজান চুমুক না-দিয়েই বলল, হয়েছে। যতটুকু মিষ্টি হবার কথা তার চেয়েও বেশি হয়েছে। ভাবি আপনি বসুন। আপনি দাঁড়িয়ে আছেন কেন?

পুষ্প বসল। মিজান বলল, মাথায় এমন ঘোমটা দিয়ে বসেছেন কেন? আমাকে লজ্জা করছেন নাকি?

জ্বি-না।

গুড, লজ্জা করবেন না। ঘোমটা ফেলে দিন। এই তো চমৎকার, ইন্দ্রাণীর মতো লাগছে। বুঝলেন ভাবি, খুব সুন্দরী যে-সব তরুণীরা আছে, তাদের বিয়ে করা উচিত নয়। মোটেই উচিত নয়।

উচিত নয় কেন?

সৌন্দর্য হচ্ছে সবার জন্য, এক জন পুরুষের জন্য নয়। প্রাচীন মিশরের একটা নিয়ম কী ছিল জানেন? সবচেয়ে সুন্দরী রমণীদের নাচেগানে শিক্ষিত করে তোলা হত। তাদেরকে আলাদা করে রাখা হত সব পুরুষদের মনোরঞ্জনের জন্য। বুঝতে পারছেন ব্যাপারটা? এরা হত জনপদবধূ। Lady of the town.

পুষ্প হ্যাঁ, না কিছুই বলল না। অস্বস্তি বোধ করতে লাগল। এই মানুষটি এইসব কথা বলছে কেন?

ভাবি।

জ্বি।

শুনলাম বাসা নাকি আপনাদের পছন্দ হয়েছে।

জ্বি, হয়েছে। খুব সুন্দর বাসা।

ধন্যবাদ তো দিলেন না।

ধন্যবাদ।

শুধু ধন্যবাদ! এর বেশি কিছু না? আপনি দেখছি হার্টলেস।

পুষ্প কী বলবে ভেবে পেল না। বাবুর দিকে তাকাল। বাবুর উঠে পড়ার সময় হয়েছে। এক্ষুণি হয়তো উঠবে। সে মনে-মনে বলল, বাবু ওঠ।

ভাবি।

জ্বি।

এবার তা হলে বিদায় দিন।

আবার আসবেন।

নিশ্চয়ই আসব। যাই তা হলে? যে-জন্য এসেছিলাম তা অবশ্যি এখনো বলা হয়। নি। যদি অনুমতি দেন তা হলে বলি।

পুষ্প ক্ষীণ স্বরে বলল, বলুন।

ভয়ে বলব না নিৰ্ভয়ে বলব?

পুষ্পের ইচ্ছা করছে লোকটাকে কিছু কড়া কথা বলতে। সে যা করছে তাকে ঠিক ঠাট্টা হিসেবে সে নিতে পারছে না। এইভাবে কেউ ঠাট্টা করে না। ঠাট্টা বোঝর মতো বয়স তার হয়েছে।

এই রকম ফ্যাকাসে হয়ে গেলেন কেন ভাবি? আপনার কি ধারণা আমি আপনাকে ভয়ানক কিছু বলব? অবসিন কিছু?

জ্বি-না, তা কেন বলবেন?

বলতেও তত পারি?

হা হা হ্যাঁ।

হাসির শব্দে পল্টুর ঘুম ভেঙে গেল। অপরিচিত লোকটিকে সে কিছুক্ষণ দেখল। কেঁদে ওঠার উপক্রম করেই মত বদলাল। হাসিমুখে হামাগুড়ি দিয়ে মার কাছে আসতে লাগল।

মিজান উঠে দাঁড়াল। হালকা গলায় বলল, চলি ভাবি, আমি যে এসেছিলাম এটা রকিবকে বলবেন না। কি না কি মনে করে বসবে। স্বামীরা আবার খুব ঈর্ষাপরায়ণ হয়।

মিজান চলে যাবার কিছুক্ষণ পরই রকিব এসে পড়ল। রকিবের মুখ হাসি-হাসি। এরকম হাসিমুখ তার সচরাচর থাকে না। খুশির কোনো ব্যাপার নিশ্চয়ই হয়েছে।

মিজান এসেছিল নাকি?

হ্যাঁ।

খুব জ্বালিয়ে গেছে না? হা হা হ্যাঁ। ব্যাটা প্ল্যান করে এসেছে। আমার সঙ্গে পঞ্চাশ টাকা বাজি—তোমাকে কাঁদিয়ে দেবে। কাঁদাতে পেরেছে? কেঁদেছিলে? আমি বললাম, কাঁদাতে পারবেনা রে বাবা। শক্তচিজ। সে বললপারবেই। তারপর বল রেজাল্ট কি? পাস না ফেল?

পুষ্প জবাব দিল না। তাকিয়ে রইল।

মিজান এই রকমই। কলেজ লাইফ থেকে দেখছি। দারুণ ফুর্তিবাজ ছোকরা। কাপড় পর। কুইক, ভেরি কুইক। সময় নেই।

কোথায় যাবে?

মিজান কিছু বলে নি?

না।

আরে, এই ব্যাটা তোমার কাছে এসেছে কেন? তার গাড়ি রেখে যাওয়ার জন্যে। গাড়ি রেখে গেছে। বারান্দায় গিয়ে দেখ, ক্ৰীম কালারের গাড়ি উইথ ড্রাইভার।

গাড়ি দিয়ে কী হবে?

ঘরব। চিড়িয়াখানাফিডিয়াখানা যাব। পন্ট নাকি গাড়ি পছন্দ করে। যাও যাও, দেরি করবে না। দু-এক জন আত্মীয়স্বজনের বাসায়ও যাওয়া যায়, কি বল। গাড়ি যখন পাওয়া গেছে বড়লোক কায়দা করা যাক। রাত নটা পর্যন্ত গাড়ি রাখা যাবে।

বড়লোক কায়দা তারা ভালই করল। চিড়িয়াখানা, শিশুপার্ক, বলধা গার্ডেন সব এক দিনে। পল্টু মহা খুশি জে জে জে জে করে নিজের মনে গান গেয়ে যাচ্ছে। খোলা জানালা দিয়ে মাথা বের করবার চেষ্টা করছে। হাসতে-হাসতে ভেঙে পড়ছে। রকিবও খুশি। সে পাঁচটা বেনসন সিগারেট কিনেছে। গাড়ির সীটে হেলান দিয়ে সিগারেট খাবার মজাই নাকি আলাদা। এর মধ্যে চারটা সিগারেট শেষ। মাঝেমাঝে ড্রাইভারের সঙ্গে কথাও বলছে।

তেল আছে তো ড্রাইভার?

জ্বি স্যার, আছে।

তেল শেষ হয়ে গেলে বলবেন, তেল কিব। নো প্রবলেম। দেশ কোথায় আপনার?

বিক্রমপুর।

খুব ভালো জায়গা। বিক্রমপুরে অনেক গেটম্যানের জন্ম হয়েছে। জগদীশচন্দ্র বসু, নাম শুনেছেন?

জি না।

সাইনটিস্ট। বিরাট সাইনটিস্ট।

পুষ্পেরও খুব ভালো লাগছে। হাওয়ায় তার চুল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, এই নিয়ে সে খানিকটা বিব্রত। তা ছাড়া বাবুকে সামলাতে হচ্ছে। অতিরিক্ত উৎসাহে সে খোলা জানালা দিয়ে লাফিয়ে পড়ে কি না সেটাও দেখতে হচ্ছে। পুষ্প বলল, সাভার স্মৃতি সৌধে যাবে? দেখি নি কখনো।

চল যাওয়া যাক। অসুবিধা কী? অন্য কোথাও যদি যেতে চাও যেতে পার। নটা পর্যন্ত গাড়ি থাকবে। বলা আছে।

ওঁর অসুবিধা হবে না?

হলে হবে। ড্রাইভার সাহেব, একটু গাড়িটা থামান তো। আরো কয়েকটা সিগারেট কিনব। আপনার গাড়িতে ক্যাসেট আছে না?

জি স্যার।

আরে, তা হলে এতক্ষণ চুপচাপ কেন? গান লাগিয়ে দিন। কি বল পুষ্প, গানবাজনা শুনতে শুনতে যাই? ফাইন হবে।

পুষ্প হাসল। ছেলে এবং স্বামী—এই দুজনের মধ্যে এই মুহূর্তে কে বেশি খুশি সে ধরতে পারছে না। দুজনেরই চোখ ঝলমল করছে। ড্রাইভার ক্যাসেট চালু করেছে। গানের আওয়াজ কী পরিষ্কার। পুষ্পের চোখ ভিজে উঠছে। কে জানে এক দিন এরকম একটা গাড়ি তারা কিনতে পারবে কি না। নিজেদের গাড়িতে গা এলিয়ে বসে গান শুনতে-শুনতে দূর-দূর জায়গায় বেড়াতে যাবে। চিটাগাং, কক্সবাজার, রাঙ্গামাটি। তাদের সঙ্গে ক্যামেরা থাকবে। কোনট-একটা জায়গা পছন্দ হলেই গাড়ি থামিয়ে তারা ছবি তুলবে। ফ্লাঙ্কে চা থাকবে। মাঝেমাঝে চা খাওয়া হবে। বাবু ঘুমিয়ে পড়বে। সে বলবে একটু আস্তে চালান ড্রাইভার সাহেব, বাবু ঘুমিয়ে পড়েছে। এক দিন এরকম তো হতেই পারে। মানুষের কিছু-কিছু কল্পনা তো পূর্ণ হয়। বিয়ের আগে পুষ্প কল্পনা করত নম্র, ভদ্ৰ, লাজুক একটা ছেলের সঙ্গে তার বিয়ে হয়েছে। ছেলেটি রাত জেগে গল্প করছে তার সঙ্গে। ঘুমে তার চোখ জড়িয়ে আসছে, কিন্তু ছেলেটি তাকে ঘুমোতে দিচ্ছে না। একের পর এক গল্প বলেই যাচ্ছে।

পুষ্পের এই কল্পনাটা খুব মিলে গিয়েছিল। বিয়ের পর তিন মাস রকিব অনবরত কথা বলেছে। পুষ্প ধারণাই করতে পারে নি একজন পুরুষ মানুষের পেটে এত কথা থাকতে পারে। সবই তার নিজের গল্প। খুব ছোটবেলায় তার বন্ধুরা তাকে ধাক্কা দিয়ে পুকুরে ফেলে দিয়েছিল—এই গল্প কম হলেও পাঁচ বার শুনিয়েছে। বেচারা উঠতে যায়, আবার তার বন্ধুরা ধাক্কা দিয়ে তাকে পানিতে ফেলে দেয়। সে ধরেই নিয়েছিল মারা যাবে।

প্রথম বার এই গল্প শুনে সমবেদানায় পুষ্পের চোখ ভিজে উঠেছিল। শেষের দিকে কেন জানি হাসি পেত। সেই হাসি লুকানোর জন্যে খুব কষ্ট করতে হত। পুষ্পের নিজেরও কত কথা বলতে ইচ্ছে করত। সুযোগই পেত না। হয়তো কোনো একটা গল্প শুরু করেছে, অল্প কিছদর এগোবার পরই রকিব তাকে থামিয়ে দিয়ে বলেছে একট দাঁড়াও, আমার নানার বাড়িতে আমাকে এক বার একটা রাজহাঁস কামড় দিয়েছিল। এই গল্পটা বলে নিই, পরে মনে থাকবে না, ভুলে যাব।

রাজহাঁস কামড়ের গল্প পুষ্প আগেও শুনেছে, তবু ভান করল যেন এই প্রথম বার শুনছে। চোখ বড়-বড় করে বলল, তারপর কী হল? কী ভয়ঙ্কর। তুমি গাছে উঠে গেলে?

কিছু-কিছু কল্পনা মিলে যায়, আবার কিছু-কিছু মেলে না। না-মেলা কল্পনার সংখ্যাই বোধহয় এক জন মানুষের জীবনে অনেক বেশি। গাড়ি কেনার কল্পনাটা হয়ত মিলবে না। পুষ্প ছোট্ট করে নিশ্বাস ফেলল। ড্রাইভার বলল, এখন কোন দিকে যাব? রকিব বলল, কোনো দিকে না, রাস্তায় চক্কর দাও। আর শোন, ইংরেজি ভালো লাগছে না, বাংলা কোনো গান থাকলে দাও।

আধুনিক না রবীন্দ্রসংগীত?

রবীন্দ্রই চলুক। ঠাণ্ডাঠাণ্ডা গান।

পুষ্প চোখ বন্ধ করে গান শুনছে। বাবু তার কোলে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়েছে। ক্যাসেটে একটি মেয়ে কোমল স্বরে গাইছে, এসো কর স্নান নবধারা জলে। আহ্, বেঁচে থাকা কী সুখের।

পুষ্প একটু সরে এল রকিবের দিকে, নিচু গলায় বলল, চল না একটু যাত্রাবাড়ির দিকে যাই। যাবে? রাত তত বেশি হয় নি।

ওখানে কী?

ছোট মামার বাসা। নানিজান হয়ত এসেছেন ছোট মামার বাসায়, দেখা করে আসি। কত দিন নিজানকে দেখি না।

আরে দূরবাদ–দাও। চিপা গলি, আমার গাড়িই ঢুকবে না।

রকিব এমনভাবে আমার গাড়ি বলছে যেন এটা সত্যি-সত্যিই তার গাড়ি। গানের সঙ্গে মাথা দোলাচ্ছে। পা নাচাচ্ছে।

কাঁচটা তুলে দাও তো পুষ্প। একটা সিগারেট ধরাব। হ্যান্ডেলটা ধরে ঘোরাও, কাঁচ অটোমেটিক উঠবে।

তুমি আজ এত সিগারেট খাচ্ছ কেন?

রোজ তো আর খাই না। ওয়ান্স ইন এ হোয়াইল। তুমি একটা টান দিয়ে দেখবে নাকি? টেস্ট করবে?

কী যে বল পাগলের মত!

পাগলের মতো কী আবার বললাম, বিদেশে মেয়েরাই এখন সিগারেট খায়। পুরুষরা ক্যান্সারের ভয়ে ছেড়ে দিয়েছে।

তুমি ছাড় না কেন? তোমার ক্যান্সারের ভয় নেই?

আরে দূর, আমি হচ্ছি ছোট মানুষ। ছোট মানুষের ছোট অসুখ। আমার হবে সর্দি, আমাশা, গেঁটে বাত এইসব হা হা হ্যাঁ।

হাসির শব্দে পল্টু জেগে উঠেছে। জেগেই আর সে দেরি করল না। তারস্বরে কাঁদতে শুরু করল। রকিব বিরক্ত মুখে বলল, একটা চড় দাও তো। দাও একটা চড়।

চড় দেব কেন? কী করেছে সে?

ভ্যা-ভ্যা করছে শুনছ না?

করুক।

পুষ্প ছেলেকে সামলাতে চেষ্টা করছে। সে কিছুতেই পোষ মানছে না। গলার আওয়াজ বাড়ছেই। রকিব বিরক্ত মুখে তাকিয়ে আছে। রাগে তার গা জ্বলে যাচ্ছে।

<

Humayun Ahmed ।। হুমায়ূন আহমেদ