এই তো সেদিন গোধূলিতে আধলেখা একটি কবিতা শেষ
করবার ইচ্ছায় টেবিলে ঝুঁকে ছিলাম লেখায়
মগ্ন কিছুক্ষণ, কয়েকটি শব্দ আমার মাথায়
বাগানে সুস্নিগ্ধ প্রজাপতির ধরনে উড়ে উড়ে
দিব্যি ঘুরে বেড়ায়, কখনও ফুলে বসে নিরিবিলি
পাখনা নাচায়, পঙ্‌ক্তি হয়ে দেখা দেয়
খাতার পাতায়। হৈ হুল্লোড় নেই, অকস্মাৎ দেখি,
টেবিলের মধ্যস্থলে একজোড়া চোখ তাকিয়ে আছে
বিহ্বল আমার দিকে। কার চোখ? মনে হয় চিনি,
অথচ অচেনা লাগে পরমুহূর্তেই।

সেই দুটি চোখ এখন হ্যাঙারে
ঝোলানো মলিন ট্রাউজারে, তখন উজ্জ্বল বিছানায় আর
আমার নিঝুম ঘুমে ঘুরে বেড়ায় কেবলি। চক্ষুদ্বয়
কিছু কি বলতে চায়? বলতে কি চায় কোনও ইতিহাস
অথবা খুলতে চায় দূর কোনও ট্রাজেডির জট? হায়, আমি
মরণের পূর্বমুহূর্তেও জেনে যাবো না সে দুটি
চোখের না-বলা কথা। শুধু মাঝে মাঝে দেখা দেবে
আমার এ বাসগৃহে, সভাস্থলে, কখনও বা পৌরপথে। ভাবি,
ওরা একালেরই কারও স্মিত মুখে সুশোভিত কিংবা
সুদূর কালের কোনও রূপসীর প্রগাঢ় নয়ন।
১৩.১২.২০০০

Shamsur Rahman।। শামসুর রাহমান