নক্ষত্র, সবুজ ঘাস, টলটলে শিশির এবং গোধূলির
রঙে গড়া একজন বড় একা নিশ্চুপ যাচ্ছেন হেঁটে, চোখ
তাঁর ভাসমান মেঘে, কালো যমজ পাম্পসু জোড়া
ধুলোয় সফেদপ্রায়। হাঁটছেন, তিনি হাঁটছেন
ফুটপাতে, বলা যেতে পারে, হাজার বছর ধরে। নালন্দার
গভীর জ্ঞানের আভা বিচ্ছুরিত তাঁর মুখমণ্ডলে সর্বদা।

অক্লান্ত পথিক তিনি প্রান্তরে, উদ্যানে, কখনও বা
সরাইখানার ধার ঘেঁষে, প্রজাপতিময় কোনও সর্ষেক্ষেত
বামে রেখে হেঁটে যান; দিঘির কাজল
ঠাণ্ডা জল সুস্থির আঁজলা ভরে করেন সাগ্রহে পান আর
কখনও গাছের শান্ত ছায়ায় বসেন, নানা পাখি
কাছে আসে নিকট আত্মীয় ভেবে তাঁকে।

দূর অজন্তার গুহাচিত্রের যুগল নরনারী উদাসীন
সেই পথিকের পদতলে রাখে অগণিত ঘিয়ের প্রদীপ
অন্ধকারে, কলকাতার কলরোল মেশে
ধানসিঁড়ি নদীর কল্লোলে, ট্রামলাইন বিমুগ্ধ যাত্রী করে
আকাশে বিলীন হয়, ভাবমগ্ন যাত্রীর ধূসর পাণ্ডুলিপি
অধিক উজ্জ্বলতায় আকাশ প্রদীপ রূপে প্রতিভাত হয়।
১৮.১.২০০১

Shamsur Rahman।। শামসুর রাহমান