জ্যোৎস্নাস্নাত রাত্তিরে মাটির নিচে নিঃসাড়, নীরব
ঘুমের কুয়াশা শুষে নিয়ে সত্তায় এমন ভাষাহীন
থাকা এত একা বছরের পর বছর সাজে কি
আপনার? কী করে নিলেন মেনে এই
পরিস্থিতি? কেন গর্জে উঠে আসমানি
বাজের মতোই প্রতিবাদে দেননি কাঁপিয়ে ত্রিভূবন?

যখন এ-পথে হেঁটে যায় জনসাধারণ, তারা
কখনো কীভাবে
এখানে এ মাটি আর রোদ-পোড়া ঘাসের তলায়
আছেন গভীর ঘুমে মগ্ন একজন
প্রায় চিহ্নহীন, দীপ্র নাম যার আজো উচ্চারিত দিগ্ধিদিক।
কেউ কেউ ভাবে হয়তো-বা, পরমুহূর্তেই খিস্তিতে বিভোর।

হয়তো-বা প্রায়শই ভুলে থাকে তাকে নানা জন; কোনো কোনো
উপলক্ষে পুস্তকের ধুলোবালি ঝেড়ে ঝুড়ে কিছু
আবৃত্তির অনুষ্ঠানে মাতে। তবে গীতিমালা তার
ফুলের মতোই পরিস্ফুট নিত্য স্মৃতির বাগানে।
ভাগ্যিস গানের ডালি তিনি সাজিয়েছিলেন মেতে
শব্দ আর সুরে নিত্য সৃজনের কুহকী আহ্বানে।
কবি, ক্ষমা করবেন এই অধমকে। যতদিন
আছি নক্ষত্রের নিচে ধুলোবালি গায়ে নিয়ে আর
কবিতার প্রতি আনুগত্য বজায় রাখার সাধনায় মগ্ন,
আপনাকে করবো স্মরণ শ্রদ্ধাভরে। এও জানি
এতে আপনার কণামাত্র কিছু এসে যাবে না কখনো। তবু
কবরের ঘাসগুলো অনুরাগে নড়বে হাওয়ায় পূর্ণিমায়।
২৪-৮-২০০৩

Shamsur Rahman।। শামসুর রাহমান