বড় রুখা সুখা সেই শহর,
অথচ সেখানে যাওয়ার সাধ
আমার চুড়াস্পর্শী।

বড় রুঠা সেই শহর,
তবু জানি সেখানে কোথাও
হৃদয়-জাগানো
স্মিত জলধারা বয় অষ্টপ্রহর,
সেখানে
লাবণ্য ব’সে থাকে আমার
কবিতার ওপারে,
মাধুর্য শয্যায় শুয়ে পত্র রচনা
করে
অস্তাচলের উদ্দেশে,
সুন্দরের কণ্ঠ সজীব হয়
গানে। সেখানে প্রোথিত
অলোকসামান্য
আলোকলতার মূল।

রুখা সুখা সেই শহরে ঘুরি
একা-একা
সারা দিনমান অমৃত ধারার
উৎস সন্ধানে।
এখানে যাই কায়ক্লেশে শ্রান্ত,
সেখানে শুধাই
ব্যাকুল কণ্ঠস্বর হ’য়ে; সবাই
নিরুত্তর।
কেউ কেউ, মনে হয়,
আমাকে প্রতারিত
করে ওদের ছায়াচ্ছন্ন
নীরবতায়।

ওদের উদাসীন দৃষ্টি আর
নীরবতাকে
পরাজিত করে আকণ্ঠ শুষে
নিই অন্ধকার,
রটনা আর বিদ্রুপকে
পুষ্পসার বানিয়ে দেখি,
আমি আলোকলতার মূলে
দাঁড়ানো
বিরস ঐ দূরের শহরে, অমৃত
ধারায় আমার অবগাহন।

Shamsur Rahman।। শামসুর রাহমান