“এই না, ইংলণ্ডেশ্বরি, রাজত্ব তোমার?
তবে যেন ক্রীতদাস হয় গো উদ্ধার
তোমার পরশ মাত্র --- সরস অন্তরে
ছিঁড়িয়া শৃঙ্খলমালা স্বাধীনতা ধরে?
তবে যেন রাজ্যেস্বরি রাজ্যেতে তোমার
সকলে সমান স্নেহ উত্সাহ সবার?
নাহি যেন ভিন্নভাব কন্যাসুত প্রতি?
নাহি যেন তোমার রাজ্যে নারীর দুর্গতি?
শুনেছি না বৃটনের শ্বেতাঙ্গী মহিলা
পুরুষের সহতরী সঙ্গে করে লীলা?
সন্তান ধরেছ গর্ভে তুমি মা আপনি,
সন্তানের কত মায়া জান ত জননী।
তবে কেন আমাদের দুর্গতি এমন,
এখনো মা ঘুচিল না অশ্রুবিসর্জ্জন!”

আয় আয় সহতরী,                ধরি গে বৃটনেশ্বরী,
করি গো তাঁহার কাছে দুঃখের রোদন ;
এ জগতে আমাদের কে আছে আপন?
বিমুখ বান্ধব ধাতা,                বিমুখ জনক ভ্রাতা,
বিমুখ নিষ্ঠুর তিনি পতি নাম যাঁর---
রাজেশ্বরী বিনে ভবে কোথা যাব আর?
আয় আয় সহচরী,                ধরি গে বৃটনেশ্বরী,
করি গে তাঁহার কাছে দুঃখের রোদন ;
এ জগতে আমাদের কে আছে আপন?

“সাতশতবর্ষ, মাতঃ, পৃথিবী ভিতরে
এই রূপে অহরহঃ অশ্রধারা ঝরে
মাতা মাতামহী চক্ষে জন্ম জন্মকাল,
আমাদেরো সেই দুর্দশা হায় রে কপাল!
কত রাজ্য হলো গেলো, কত ইন্দ্রপাত,
নক্ষত্র খসিল কত, ভূধর নিপাত,
হিন্দু বৌদ্ধ মুসলমান ম্লেচ্ছ অধিকার,
শাস্ত্র ধর্ম্ম মতামত কতই প্রকার
উঠিল ভারত ভূমে, হইল পতন,
আমাদের দুঃখ আর হলো না মোচন!

hemchandra bandyopadhyay ।। হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়