মেঘের জমিনে একটি বাড়ি বানাবার কথা
ভাবছিল সে। চাঁদের পাথর আর
রৌদ্রের গাঁথুনি দিয়ে বাংলো ধরনের বসতবাড়ি
গড়ার খেয়াল তাকে অনেক দূর নিয়ে যায়।
সকাল সন্ধ্যা শাদা মেঘ আর কালো মেঘের
আহ্বান তার রক্তে আনে দোলা, তন্ময়তায় সে
রচনা করে মেঘসঙ্গীত এবং
সেই মেঘসঙ্গীতের মূর্ছনা জন্ম দেয়
এক অপরূপ মেঘ মানবীকে, যার চোখের
মেঘাঞ্জনে অনন্তের রূপটান। সে ভাবে,
মেঘ-জমিনে তৈরি বাংলায় সেই প্রতিমাপ্রতিম
নারীকে বসবাসের আমন্ত্রণ জানাবে।
তার মনোভাবনা টের পেয়ে মেঘমানবী
একবার মেঘের আয়নায় নিজেকে দেখে নেয়,
তারপর বলে মেঘলীন স্বরে-‘এখানে
আমি তো অতিথি নই কোনো, নিশ্চিত এ আমার জন্মভূমি।
এই মেঘমগ্ন গাছপালাময় বাংলোয় আমরা
ভালোবাসব পরস্পর
এবং সেই ভালোবাসার মোহনতাপে
তোমার হৃদয় থেকে উৎসারিত হবে মেঘমানুষের কবিতা’।

কিছুই না বলে সে, শব্দের রূপকার, তাকিয়ে থাকে
মেঘমানবীর দিকে, তার চোখে হঠাৎ
আগুন আর গলতে থাকে মেঘজমিনের বাড়ি,
মেঘমানবী ছুটে এসে জড়িয়ে ধরে তাকে।
২২.১১.৯৪

Shamsur Rahman।। শামসুর রাহমান