জনম অবধি কার               তোমা’পরে অধিকার
“প্রিয়” বলে ডাকিবার দিয়েছেন বিধি,
জানি না গো আমি তাহা        তবু ভাবি যদি আহা
পাইতাম তোমা হেন অলকার নিধি |
তোমার বিহনে শুধু               প্রাণ মোর করে ধু ধু
যেন গো সিকতাময় নিদারুণ মরু,
সুনিবিড় ছায়াদানে                জুড়াও কাতর প্রাণে
তুমি এ সাহারা মাঝে সুশীতল তরু |

প্রাণের গোপন কথা              প্রকাশিছে ব্যাকুলতা
বাহির হইতে মায়া মোহ পরিহরি,
লেখনী সে বাধ-বাধ              কথা কহে আধ-আধ
দুয়ারে দাঁড়ায়ে আছে সরম প্রহরী |

ভাঙ্গি সরমের বাঁধ                 মনের আকুল সাধ
গিরিজা তটিনী সম ধায় তব পানে,
তুমি মম হে সাগর,                তুমি মম হে নাগর
হতাশা দিও না ঢেলে প্রোষিত পরাণে |

করিবারে দাসীপনা              ভেবেছিনু বাসিব না
বিপুল এ ধরা মাঝে কাহারেও ভাল,
আঁধারে একটি দীপ             আকাশে চাঁদের টীপ
সম তুমি এ হৃদয় করিয়াছ আলো |

তাই আজ যেচে এসে             পড়েছি চরণ দেশে
জেনো মোরে এ জগতে বড় অভাগিনী,
নয়নে কিসের জ্বালা              হদয়ে বিষের জ্বালা
কানে বাজে সকরুণ হতাশ রাগিনী |

প্রভাত আলোক মিশে          বায়ু ধায় দিশে দিশে
কত কুসুমিকা তারে দিয়ে ফেলে প্রাণ,
পবন তো জানে না তা        ফুল বোঝে নিজ ব্যথা
জানে সেই বুকে যার বিঁধে আছে বাণ!

তাই এই বাচালতা        চপল চটুল কথা
আনমনে কতশত বাতুল প্রলাপ,
এই বলে ক্ষমা কর           একটি কঠিন শর
ত্যজিয়াছে মোরে চাহি মদনের চাপ |

 

————————-
“দাদার কীর্ত্তি” উপন্যাস … থেকে নেওয়া

Sharadindu Bandyopadhyay ।। শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়