ছিলাম নিশ্চুপ ব’সে বিকেলে ঘরের এককোণে,
হাতে ছিল আধ-পড়া বই।
হঠাৎ পাশের পুরো খোলা দরজার
নগ্নতাকে যেন চুমো খেয়ে অন্দরে প্রবেশ করে
তিনটি শকুন। কখন যে হাত থেকে
আধ-পড়া বইটি মেঝেতে পড়ে গেলো
জানতে পারিনি; শকুনোর, কী অবাক কাণ্ড, ছিল
বেজায় নিশ্চুপ।

অবাক দৃষ্টিতে চেয়ে থাকি অযাচিত
আগত শকুনদের দিকে।
বিস্মিত আমাকে ওরা চকিতে বাংলায়
করে সম্ভাষণ,বলে কিছু ভালো কথা
যা আমি কখনও আগে শুনিনি এবং আরও বেশি
বিস্ময়ের আবর্তে ভীষণ ঘুরপাক খেতে থাকি।

আমাকে বেজায় বিহ্বল, হতবাক হ’তে দেখে
তিনটি শকুন
একে অপরের কালো শরীরে লুটিয়ে প’ড়ে দিব্যি
জোরে হেসে হেসে ঘর প্রবল কাঁপিয়ে।
আমাকে হঠাৎ ভীত দেখে ওরা তিন পাখি
নিমেষে অদৃশ্য হয়, আসমানে চাঁদ জেগে ওঠে।

কিছুক্ষণ ব’সে আরও ভাবনার মায়াজালে দূরে
কোথায় যে ভ্রমণ করতে থাকি,-বুঝি কি বুঝি না, অকস্মাৎ-
হাতে উঠে আসে প্রিয়সঙ্গী বলপেন। পাশে-রাখা
প্যাডের উন্মুক্ত বুকে ফোটে বুনো ফুল!
২৯.১০.২০০৪

Shamsur Rahman।। শামসুর রাহমান