যে মাথা নোয়ায়ে সিজদা করেছ এক প্রভু আল্লারে,
নত করিয়ো না সে মাথা কখনও কোনো ভয়ে কোনো মারে!
আল্লার নামে নিবেদিত শির নোয়ায় সাধ্য কার।
আল্লা সে শির বুকে তুলে নেন, কাটে যদি তলোয়ার!
ভীরু মানবেরে প্রবল করিতে চাহেন যে দুনিয়াতে
তাঁরেই ইমাম নেতা বলি আমি, প্রেম মোর তারই সাথে।
আড়ষ্ট নরে বলিষ্ঠ করে যাঁর কথা যাঁর কাজ,
তাঁরই তরে সেনা সংগ্রহ করি, গড়ি তাঁরই শির-তাজ!
গরিবের ঈদ আসিবে বলিয়া যে আত্মা রোজা রাখে,
পরমাত্মার পরমাত্মীয় বলে আমি মানি তাঁকে।
অকল্যাণের দূত যারা, যারা মানুষের দুশমন,
তাদের সঙ্গে যে দুরন্তেরা করিবে ভীষণ রণ –
মোর আল্লার আদেশে তাদেরে ডাক দিই জমায়েতে,
অচেতন ছিল যারা, তারা আসিতেছে সে তীর্থপথে।
আমি তকবীর-ধ্বনি করি শুধু কর্ম-বধির কানে,
সত্যের যারা সৈনিক তারা জমা হবে ময়দানে!
অনাগত ‘নবযুগ’-সূর্যের তুর্য বাজায়ে যাই,
মৃত্যু বা কারাগারের কোনো ভয় দ্বিধা নাই।
একা ‘নবযুগ’-মিনারে দাঁড়ায়ে কাঁদিয়া সকলে ডাকি,
দরমার হাঁস না আসে, আসিবে মুক্তপক্ষ পাখি।
এ পথে ভীষণ বাজপাখি আর নিঠুর ব্যাধের ভীতি,
আলোক-পিয়াসি পাখিরা তবুও আসিছে গাহিয়া গীতি।


মৃত্যু-ভয়াক্রান্ত আজিকে বাংলার নরনারী,
তাদের অভয় দিতেই আমরা ধরিয়াছি তরবারি।
আমরা শুনেছি ভীত আত্মার সকরুণ ফরয়্যাদ,
আমরা তাদেরে রক্ষা করিব, এ যে আল্লার সাধ!
আমরা হুকুম-বর্দার তাঁর পাইয়াছি ফরমান,
ভীত নর-নারী তরে অকাতরে দানিব মোদের প্রাণ!
বাজাই বিষাণ উড়াই নিশান ঈশান-কোণের মেঘে,
প্রেম-বৃষ্টি ও বজ্র-প্রহারে আত্মা উঠিবে জেগে!
রাজনীতি করে তৈরি মোদের কুচকাওয়াজের পথ,
এই পথ দিয়ে আসিবে দেখিয়ো আবার বিজয়-রথ।
প্রবল হওয়ার সাধ ও সাধনা যাহাদের প্রাণে আছে,
তাদেরই দুয়ারে হানা দিই আমি, আসি তাহাদেরই কাছে।
সঙ্ঘবদ্ধ হতেছে তাহারা বঙ্গভূমির কোলে,
আমি দেখিয়াছি পূর্ণচন্দ্র তাদেরই ঊর্ধ্বে দোলে!