স্নানের পরে

তারপর সে বলল, চলো এবার নদীকে সারা গায়ে মাখি
নদীর সব জায়গায় কুয়াশা, শুধু মাঝখানে
একটি ছোট্ট বৃত্ত দু’জনের জন্য
এই কুয়াশা কি যোজনগন্ধার?
নিজেকে যোগভ্রষ্ট, কামমোহিত সন্ন্যাসী ভাবতে মন্দ লাগে না
সে রমণীও যেন শুধু আমারই জন্য রেখেছে খেয়ার নৌকো
নীল জলে এসো একটু ড়ুবি, আরও একটু, আরও গভীরে
সে ড়ুবছে, আমি তুলছি
আমি ড়ুবছি, সে হয়ে যাচ্ছে মৎসকন্যা
জল-প্রাণীদের মতন পোশাক না-পরা দু’খানি শরীর
ধুয়ে যাচ্ছে মিলন গন্ধ, ধুয়ে যাচ্ছে ঘাড়ের ময়লা

ভুস করে একবার মাথা তুলে দেখি, সে অন্য মানবী
তার কানের লতির কাছে অজস্র হিরে কুচি, বুকে স্থলপদ্ম
তার চোখের পল্লবে সূক্ষ্ম জলকণার পবিত্রতা
সে চলে যাচ্ছে শিল্পময়তার দিকে, ত্বকে ও বর্ণে
বতিচেল্লির তুলি
দু’জনের মাঝখানে রচিত হচ্ছে সুদূর
আলিঙ্গনের মাঝখানে চলে আসছে বিশ্বপ্রকৃতি
আমাকেও যেন টান মারছে চির সন্ন্যাস

তখন নিজেকেও যেন মনে হয়, শুদ্ধতার প্রতিমূর্তি
দূর ছাই, এই শুদ্ধতা নিয়ে আমি এখন কী যে করি!
এর চেয়ে দু’জনের পিঠের বিনবিনে ঘাম আর
ভাঁটফুলের ঘ্রাণ মাখা দিন ও রাত্রি
কত ভালো ছিল!

<

Sunil Gangapadhyay।। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়