ওই, চেঁচাল উলফ, ওই জানোয়ারটা। জানোয়ারকে বলল জান-ওয়ার।
চোখ থেকে বিনকিউলার সরিয়ে কিশোরকে বলল সে, ঠিকই আন্দাজ করেছ। ব্যাটা ওখানেই ফিরে গেছে। তাড়াতাড়ি ককপিটে এসে কিশোরকে সরিয়ে হুইল ধরল।
টিনহাও দেখেছে রোভারকে। রেলিঙে বুকে দাঁড়িয়েছে সে। ডাকল, রোভার। এই রোভার!
ডাক শুনে সঙ্গে সঙ্গে মাথা তুলল রোভার। ছুটে আসতে শুরু করল।
বাক্স কই? বকের মত মাথা বাড়িয়ে দেখছে উলফ। বাক্সটা কই?
তীরের দিকে চেয়ে আছে কিশোর। বালিতে পড়ে আছে একটা লোক, তার পাশে দাঁড়ানো রবিন। এদিকেই চেয়ে রয়েছে সে। তর্জনী আর বুড়ো আঙুলের মাথা ঠেকিয়ে গোল করে দেখিয়ে ইঙ্গিত দিল ঃ সব ঠিক আছে! – তাড়াতাড়ি যাওয়া দরকার, মুসাকে ফিসফিস করে বলল কিশোর। উলফ কিছু বোঝার আগেই।
ঠিকই বলেছ, ওয়েট সুট খোলেনি মুসা। পানিতে ঝাঁপিয়ে পড়ে সাঁতরাতে শুরু করল।
জামা খুলে কিশোরও পানিতে নামল, সাঁতরে চলল তীরের দিকে।
আরে, নীল বনেট! হাত দিয়ে গায়ের পানি মুছতে মুছতে বলল কিশোর। ও কি করছিল এখানে? রবিন, কি ব্যাপার?
সংক্ষেপে সব জানান রবিন। সব শেষে বলল, মরেই গিয়েছিল আরেকটু . শরীরে কিছু নেই, একেবারে কাহিল।
কাঁধের ওপর দিয়ে ঘুরে তাকাল কিশোর। তীরের যতটা সম্ভব কাছে বোট নিয়ে এসেছে উলফ। নোঙ্গর ফেলেছে। রোদে চকচক করছে টাকা উত্তেজিত ভঙ্গিতে হাত নেড়ে লাফিয়ে নামল পানিতে।
বাক্সটা কোথায়? জিজ্ঞেস করল কিশোর।
লুকিয়ে ফেলেছি… উলফকে দেখে চুপ হয়ে গেল রবিন।
নীল বনেটের দিকে তাকালই না উলফ। ওকে এখানে দেখে বিন্দুমাত্র অবাক নি। ছেলেদের কাছে এসে রবিনকে বলল বাক্সটা কোথায়?
জবাব দিল না রবিন।
এই ছেলে, তোমাকে বলছি, খেকিয়ে উঠল উলফ। বাক্সটা দাও।
কিসের বাক্স? আকাশ থেকে পড়ল যেন রবিন। কনুই দিয়ে আলতো গুঁতো দিল মূসার শরীরে। উলফের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ার জন্যে ইঙ্গিত। তার ইচ্ছে, মূসা লোকটাকে আটকে রাখতে পারলে দৌড়ে গিয়ে বাক্স নিয়ে সাইকেলে করে পালিয়ে যাবে।
ব্যাপারটা আঁচ করতে পেরে ধমকে উঠল উলফ, খবরদার! কোন চালাকি নয়। কোমর পর্যন্ত ভেজা তার। খাটে ডেনিম জ্যাকেটে পানি লাগেনি। পকেটে হাত ঢুকিয়ে দিল। আবার যখন বের করল, হাতে দেখা গেল ভোতা নাক ছোট একটা পিস্তল, কুৎসিত চেহারা।
রবিনের দিকে পিস্তল তাক করল উলফ। বাক্স। তিমিটা নিয়ে এসেছে। দাও, কেই-আটা, জলদি।
অসহায়ভাবে কিশোরের দিকে তাকাল রবিন।
কিশোর চেয়ে আছে পিস্তলের দিকে। আগ্নেয়াস্ত্রের ওপরে পড়াশোনা মোটামুটি করছে। উলফের হাতে ওটা কোন কোম্পানির চিনতে পারল না, তবে ব্যারেলের আকার দেখে অনুমান করল, নিশানা মোটেই ভাল হবে না অস্ত্রটার। দশ গজ দূর থেকেও ওটা দিয়ে লক্ষ্য ভেদ করা কঠিন হবে। কিন্তু উলফ ধরে রেখেছে রবিনের বুকের এক ফুট দূরে।
রবিন, কিশোর বলল, দিয়ে দাও বাটা।
মাথা ঝাঁকাল রবিন। মুখ কালো, এত কষ্ট করে লাভ হলো না। পাথরের কাছে এসে দাঁড়াল। তার পেছনেই রয়েছে উলফ। বাক্সটা তুলল রবিন। নেয়ার জন্যে হাত বাড়াল উলফ।
না-আ-আ-আ! তীক্ষ্ণ চিৎকার।
প্রথমে বুঝতে পারল না রবিন চিৎকারটা কোথা থেকে এসেছে। তারপর দেখল, এলোমেলো পায়ে দৌড়ে আসছে বনেট।
ঘুরে চেয়েছে উলফ। চিৎকারে সে-ও অবাক হয়েছে।
রবিনের মাত্র কয়েক গজ দূরে রয়েছে কিশোর, মাথা নেড়ে ইশারা করল। বক্সট ছুঁড়ে দিল রবিন। লুফে নিল কিশোর।
উলকে গাল দিতে দিতে আসছে বনেট, বেঈমান! হারামী! মিথ্যুক! চোর!
রবিন আর কিশোরের দিকে নজর দেয়ার আগেই উলফের ওপর এসে ঝাপিয়ে পড়ল বনেট। আঙুল বাঁকা করে খামচি মারতে গেল চকচকে টাকে, গলা চেপে ধরতে গেল। পিস্তল নামিয়ে ফেলেছে উলফ, কনুই দিয়ে পেটে তো মেরে বনেটকে গায়ের ওপর থেকে সরানোর চেষ্টা করল, এপাশ-ওপাশ সরাচ্ছে মাথা।
ধাক্কা খেয়ে চিত হয়ে পড়ে গেল বনেট, কিন্তু উলফের জ্যাকেট ছাড়ল না, তাকে নিয়ে পড়ল।
বাক্সটা কিশোরের হাতে মুসা দাঁড়িয়ে আছে দশ গজ দূরে, পানির কিনারে। আরেকটু দূরে পানিতে রোভারের গায়ে গা ঠেকিয়ে দেখছে টিনহা।
মুসার কাছে বাক্সটা ছুঁড়ে দিল কিশোর।
ঝাড়া দিয়ে জ্যাকেট ছাড়িয়ে নিয়ে উঠে দাঁড়াল উলফ। আবার কাহিল হয়ে গেছে বনেট, দুর্বল পায়ে উঠে দাঁড়াল সে-ও।
বাক্সটা ধরেছে মুসা। টিনহার দিকে তাকাল।
বুঝতে পারল টিনহা। তীরের দিকে সারাতে শুরু করল।
বাক্সটা দু-হাতে বুকে ঝাপটে ধরে টিনহার দিকে ছুটল মুসা। ছুটতে শুরু করেছে উলফ। চেঁচিয়ে উঠল, দাঁড়াও। দাঁড়াও, বলছি।
কে শোনে তার কথা? ফিরেও তাকাল না মুসা। বুঝতে পারছে, তার দিকেই চেয়ে আছে উলফের পিস্তল, কিন্তু তোয়াক্কা করল না।
দাও, হাত বাড়াল টিনহা। ছুঁড়ে মারো।
বাসকেট বল খেলে মুসা, ভালই খেলে। ক্ষণিকের জন্যে ভুলে গেল উলফের কথা। ভুলে গেল, যে কোন মুহূর্তে গর্জে উঠতে পারে পিস্তল। বাক্সটাকে বাসকেট বলের মত করে ধরে দূর থেকে ছুঁড়ে দিল টিনহার দিকে, বল ছোড়ার কায়দায়।
লম্বা ধনুক সৃষ্টি করে উড়ে গেল বাক্সটা, কোমর পানিতে দাঁড়িয়ে সেটা ধরল টিনহা।
বাক্সটা ছুঁড়ে দিয়েই আর দেরি করেনি মূসা, ঝাপ দিয়েছে পানিতে। ডুবে গেল সঙ্গে সঙ্গে। ভাসল না। পানির নিচ দিয়েই সাঁতরে চলল গভীর পানির দিকে। দম একেবারে ফুরিয়ে এলে, আসল।
বিশ গজ দূরে চলে গেছে টিনহা। তীরের দিকে চেয়ে আছে। বাক্সটা কামড়ে ধরে রেখেছে রোভার।
মাথা নিচু করে রেখে ফিরে চাইল মুসা।
পিস্তল নেই উলফের হাতে, বোধহয় পকেট ঢুকিয়ে রেখেছে। টেকো মাথাটা সামান্য ঝুঁকিয়ে তাকিয়ে আছে এদিকে। মূসার মনে হলো, ভয়ানক রেগে গিয়ে কুঁসছে একটা ষাড়, কি করবে বুঝতে পারছে না। তার কাছেই দাঁড়িয়ে আছে কিশোর আর রবিন।
হাত নেড়ে মুসাকে ডাকল কিশোর।
পানি থেকে উঠে এল মুসা।
…আপনার জিনিস ডাকাতি করার কোন ইচ্ছেই নেই আমাদের, মিস্টার উলফ, কিশোর কাছে। বাক্সের জিনিস অর্ধেক আমাদের, মানে, মিস শাটানোগার প্রাপ্য। সেটা নিশ্চিত করার জন্যেই একাজ করেছি।
অনেকক্ষণ কোন কথা বলল না উলফ। জোরে জোরে নিঃশ্বাস ফেলছে। ভুরু নাচাল, কি করতে চাইছ?
বাক্সটা শহরে নিয়ে যাব, বলল কিশোর। থানায়, ইয়ান ফ্লেচারের অফিসে। উনি এখানকার পুলিশ চীফ, জানেন বোধহয়। খুব ভাল লোক। পুলিশকে ভয়ের কিছু নেই, বেআইনী কিছু করেননি, আমাদেরকে পিস্তল দেখানো ছাড়া। সেকথা বলব না আমরা। সব খুলে বলবেন, তাঁকে। মিস্টার ফ্লেচার বাক্সের জিনিসগুলো ভাগাভাগি করে দেবেন আপনাকে আর টিনহাকে।
আবার দীর্ঘ নীরবতা। সাগরের দিকে তাকাল উল। পাশাপাশি ভাসছে টিনহা আর রোভার। ওদের কাছ থেকে বাক্সটা ফেরত নেয়ার কোন উপায় নেই। পিস্তল তাক করেও কোন লাভ হবে না, বিচ্ছ একেকটা, কেয়ারই করবে না। উল্টে আরও বেকায়দা অবস্থায় ফেলে দিতে পারে তাকে।
বেশ, তেঁতা গলায় বলল উলফ। বোটে করে যাব আমরা। রকি বীচের নৌকাঘাটায় বোট রেখে থানায় যাব। ঠিক আছে?
রাজি হলো না কিশোর, মাথা নাড়ল। উলফের চালাকি বুঝতে পারছে, কিন্তু সেকথা বলল না। নরম গলায় বলল, এত ঘুরে যাওয়ার দরকার কি? আসলে এখান থেকে যাওয়ারই দরকার নেই। চীফকেই ডেকে নিয়ে আসতে পারি আমরা।
ডেকে? কিভাবে? ষাড়ের মত ফোস ফোস করে উঠল উলফ। এখানে ফোন কোথায়? সব চেয়ে কাছেরটাও…
…আধ মাইল দূরে, কথাটা শেষ করে দিল কিশোর, কোস্ট রাডের ধারে একটা কাফেতে। সাইকেল নিয়ে পাঁচ-সাত মিনিটেই চলে যাবে রবিন। চীফকে ফোন করে আসবে। কি ররিন, পারবে না?
খুব পারব, হাসল রবিন।
মিস্টার উলফ, আপনার স্কিলটা যদি বোটে রেখে আসেন, মোলায়েম গলায় বলল কিশোর, টিনহাকে বাক্সটা আনতে বলতে পারি। তারপর রাস্তায় গিয়ে দাঁড়াতে পারি পুলিশ আসার অপেক্ষায়। কি বলেন?
কি আর বলবে উলফ? কোঁকড়াচুলো, সাংঘাতিক পাজি, ইবলিসের দোসর ছেলেটাকে কষে দুই চড় লাগানোর ইচ্ছেটা অনেক কষ্টে দমন করল সে। চোখ পাকিয়ে তাকাল অতি নীরিহের ভান করে থাকা মুখটার দিকে। কিন্তু কিছুই করার নেই।
পুলিশকে ফোন করতে গেল রবিন।
বোটের লকারে পিস্তলটা রেখে এল উলফ। মুসা আবার গিয়ে দেখে এল, সত্যিই রেখেছে কিনা।
তীরে এসে মাছের বালতিটা নিয়ে গেল টিনহা, রোভারকে খাওয়াল। তাকে বিদায় জানিয়ে ফিরে এল। সঙ্গে সঙ্গে এল তিমিটা, তীরের কাছে এসে মাথা তুলে চেয়ে রইল, টিনহাকে চলে যেতে দেখে খারাপ লাগছে তার।
এতক্ষণে খেয়াল করল কিশোর, বনেট নেই। কোথাও দেখা গেল না তাকে। কেটে পড়েছে কোন এক ফাঁকে।
পথের ধারে বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হলো না ওদের, রবিন ফিরে এল। কয়েক মিনিট পরেই পুলিশের গাড়ি। আরও পনেরো মিনিট পর থানায় পৌঁছল ওরা।
ওদের দিকে চেয়ে অবাকই হলেন ইয়ান ফ্লেচার। তাকে দোষ দিতে পারল না কিশোর, কাদা-পানিতে যা চেহারা হয়েছে ওদের একেকজনের, পোশাক-আশাকের যা অবস্থা, তাতে তিনি অবাক না হলেই বরং, অস্বাভাবিক লাগত।
কি ব্যাপার কিশোর? জানতে চাইলেন পুলিশ-প্রধান।
তিন গোয়েন্দাকে চেনেন তিনি। কয়েকবার পুলিশকে সাহায্য করেছে ওরা। বেশ কয়েকটা জটিল কেসের সমাধান করে দিয়েছে। কিশোরের বুদ্ধির ওপর যথেষ্ট আস্থা তাঁর।
উলকে দেখিয়ে বল কিশোর, উনি মিস্টার উক। উনিই বলুন সব, সেটাই ভাল হবে।
বলুন, মিস্টার উলফ, অনুরোধ করলেন ফ্লেচার।
উঠে দাঁড়াল উল। পকেট থেকে ভেজা কাগজপত্র বের করে তা থেকে ড্রাইভিং লাইসেন্সটা নিয়ে বাড়িয়ে ধরল।
লাইসেন্সটা একজন সহকারীকে দিলেন ক্যাপ্টেন, পরীক্ষা করে দেখার জন্যে।
সব খুলে বলল উলফ। মেকসিকোয় ক্যালকুলেটর চোরাচালান করতে নিয়ে যাওয়া থেকে শুরু করে ফেরার পথে ঝড়ে বোট ভোলা, তারপর তিমির সাহায্যে বাক্সটা উদ্ধার, কিছুই বাদ দিল না। কিশোরকে দেখিয়ে বলল, আমার এই খুদে বন্ধুটি পরামর্শ দিল, বাক্সটা আপনার সামনে খুলতে। তাতে আমার আর মিস্টার শ্যাটানোগার ভাগ নিয়ে পরে কোন গোলমাল হবে না। ভেবে দেখলাম ঠিকই বলেছে। রাজি হয়ে গেলাম।
পকেট থেকে বাক্সের চাৰি বের করে ক্যাপটেনকে দিল উলফ। টিনহা, বাক্সটা দাও ক্যাপটেনের কাছে।
মনে মনে স্বীকার না করে পারল না কিশোর, অভিনয় মোটামুটি ভালই করেছে উলফ। যেন নিরীহ একজন মানুষ। কারও সঙ্গে বেঈমানী করতে চায় না। মিস্টার স্ট্যাটানোগার প্রাপ্য ভাগ দিতে বিশেষ আগ্রহী।
তালা খুলে বাক্সের ডালা তুললেন ক্যাপটেন। কুঁচকে গেল ভুরু।
টিনহা চমকে গেল। রবিন আর মুসার চোখ দেখে মনে হলো, হঠাৎ সার্চ লাইটের তীব্র উজ্জ্বল আলো ফেলেছে কেউ তাদের চোখে।
ধীরে সুস্থে এগিয়ে এল কিশোর, উঁকি দিয়ে দেখল বাক্সের ভেতরে কি আছে। সামান্যতম অবাক মনে হলো না তাকে, যেন জানত এ-জিনিসই থাকবে।
দশ ডলারের কড়কড়ে নতুন নোটের বাণ্ডিলে ঠাসা বাটা।
রবার ব্যাও দিয়ে বেধে সুন্দর করে সাজিয়ে রাখা হয়েছে। কিশোর অনুমান করল, দশ লাখ ডলারের কম হবে না।
তো, দেখলেন তো চীফ, স্বাভাবিক কণ্ঠে বলল উলফ। লা পাজে এবারের ট্রিপে যা আয় হয়েছে, আছে এখানে। সেই সঙ্গে টেলিফোন বেজে ওঠায় থেমে গেল।
রিসিভার কানে ঠেকিয়ে কয়েক সেকেণ্ড চুপচাপ শুনলেন মিস্টার ফ্লেচার। নামিয়ে রেখে বললেন, আপনার আই ডি চেক করা হয়েছে। পরিষ্কার। আপনার নামে কোথাও কোন ওয়ারেন্ট নেই। হ্যাঁ, যা বলছিলেন, সেই সঙ্গে কি?
পকেট ক্যালকুলেটরগুলো লা পাজে বিক্রি করে দিয়েছিলাম, সেই টাকা আছে এখানে। সেই সঙ্গে রয়েছে আমার অন্য টাকা। লা পাজে আমার কিছু সম্পত্তি ছিল, একটা হোটেল ছিল, সব বিক্রি করে দিয়ে এসেছি। সেই টাকা। এখন টিনহা বলুক, তার বাবার ক্যালকুলেটরগুলোর জন্যে কত চায়।
চিন্তিত ভঙ্গিতে মাথা ঝাকালেন ক্যাপটেন। আপনার বিরুদ্ধে কোন কেস দাড় করাতে পারছি না। ট্যাক্স যদি ক্লিয়ার থাকে… শ্রাগ করলেন তিনি। মিস শ্যাটানোগা, বলুন কত চান?
হাসল টিনহা। বুঝতে পারছি না। মিস্টার উলফ বলেছিলেন, বাক্সে ক্যালকুলেটর রয়েছে, পঁচিশ-তিরিশ হাজার ডলার দাম। মিছে কথা কেন বলেছিলেন, জানি না। যাক গে। বাবার অর্ধেক শেয়ার হয় সাড়ে বারো থেকে পনেরো হাজার কিন্তু তুলতে খরচাপাতি লেগেছে। হাসপাতালের বিল হাজার দশেক লাগবে, ওটা পেলেই আমি খুশি।
ঠিক আছে, দশ হাজারই দেব, বাক্সটা তুলে নেয়ার জন্যে সামনে ঝুঁকল উল। কাল সকালে চেক দিয়ে দেব তোমাকে। কালই টাকা তুলে নিতে পারবে ব্যাংক থেকে।
এখান থেকে নগদ নয় কেন জিজ্ঞেস করতে গিয়েও করল না টিনহা, সঙ্কোচে।
বাক্সটা টেবিলের ওপর দিয়ে টেনে আনল উলফ। ডালা আটকাবে। তারপর বেরিয়ে যাবে এতগুলো টাকা নিয়ে।
এক কদম সামনে বাড়ল কিশোর। নিচের ঠোঁটে চিমটি কাটছিল, হাত সরিয়ে ক্যাপটেনকে বলল, স্যার, ছোট্ট একটা অনুরোধ আছে।
চাবিটা উলফকে দিতে গিয়েও থেমে গেল ক্যাপটেনের হাত। কি?
বাক্সটা আবার খুলুন। নোটের সিরিয়াল নাম্বার মেলান।
সিরিয়াল?
মেলান। আমার ধারণা, একই নাম্বারের অনেকগুলো পাবেন। বলতে বলতেই টান দিয়ে নিজেই নিয়ে এল বাক্সটা। ডালা তুলে একটা বালি বের করে ঠেলে দিল ক্যাপটেনের দিকে। আর, ট্রেজারিতে ফোন করুন, এক্সপার্ট পাঠাক। সব জাল নোট, আমি শিওর।
<