গভীর রাতে ভাঙল ঘুম।
বাইরে ঝির ঝির হাওয়া আর ফকফকে জ্যোত্সার মাখামাখি। নিশ্চল দাঁড়িয়ে আছে কালো ঘোড়াটা। যাত্রার জন্য প্রস্তুত।
কাছে গেল ইয়াসীন। ডান হাতে ধরা কফির মগে চুমুক দিতে দিতে দেখছে সে ঘোড়াটাকে। বাঁ হাতে গানঅয়েলের মাজা ঝকঝকে রাইফেল।
ঘোড়ার জিনসংলগ্ন পকেটে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে দুটো পানির বোতল, একটা খাবারের প্যাকেট ও টুকিটাকি কিছু জিনিস। তার পিছনে ভাঁজ করা একটা কম্বল বাধা।
সন্ধ্যা থেকেই খোলা রাখা হয়েছে গেট। যাতে বেরোনোর সময় ওটা খুলতে গিয়ে অহেতুক আওয়াজ না হয়। দুইজন সৈন্য পাহারায় রয়েছে সেখানে।
মোকাটো কাছে এল নিঃশব্দে। চমৎকার হাওয়া, বলল সে। সুবিধাই হবে তোমার। হালকা শব্দগুলো আলাদা ভাবে চিনতে পারবে না ওরা।
ম্যাকহার্ডি এল। খুব শোচনীয় অবস্থায় রয়েছে টহলদল। আরও কিছু খাবার নিতে পারতে তুমি, মন্তব্য করল।
তা ঠিক, সায় দিল ইয়াসীন। তবে অহেতুক বোঝা বাড়াতে চাচ্ছি না আমি। ওদের খুঁজে পেলে ফিরে আসতে সময় লাগবে না। ততক্ষণে পানির উপর টিকে থাকতে পারবে ওরা। তুমি কিন্তু ফাউলার আর ওই চুপচাপ লোকটার দিকে নজর রেখো। ওরা ঝামেলা পাকাতে পারে।
সে দেখা যাবেখন। এখন নিজের কথা ভাবো তো তুমি? তাড়া লাগাল ম্যাকহার্ডি। এক ইন্ডিয়ান নবাব অন্য ইন্ডিয়ানদের হাতে বেঘোরে মারা পড়ক-তা কিন্তু আমরা চাই না।
বেলিন্দা হাত রাখল তার বাহুতে। কখন যেন পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। তাকে কিছু বলতে যাচ্ছিল ইয়াসীন। নাহ্ এখন নয়, ফিরে এসেই বলবে-ভাবল সে। ওর হাতে কফির মগটা ধরিয়ে দিয়ে ঘোড়ায় চড়ে বসল। ভোর হতে এখনও অনেক বাকি।
গেট পেরিয়ে বাইরে আসতেই হঠাৎ গলা শুকিয়ে গেল ইয়াসীনের। ঘাড়ের কাছটা শিরশির করছে। এই নির্জন রাতে এভাবে একা বেরোনো মোটেও নিরাপদ নয়। হয়তো ওকে দেখে ফেলেছে ইন্ডিয়ানরা। হয়তো কিছুক্ষণের মধ্যে মারা যাবে ও। তবু এগিয়ে যেতেই হবে। সামনে কোথাও মৃত্যুর প্রহর গুণছে অসহায় কিছু মানুষ। তাই কোন অবস্থাতেই সম্ভব নয় ফেরা। ভয় তাড়াবার জন্য ঘোড়ার গতি সামান্য বাড়িয়ে দিল ও।
টিলার সারিগুলো বয়ে রেখে খোলা মরুভূমিতে বেরিয়ে এল ইয়াসীন। চারপাশে চ নো ছিটানো পাথর আর ছোট ছোট ঝোঁপ। আকাশে আধখানা চাদ।
পিছনে তাকাল সে। কালো পাহাড়ের পটভূমিতে আর দেখা যায় না ফাঁড়িটা। সম্ভবত ওকে দেখতে পায়নি ইন্ডিয়ানরা। সোজা গম্বুজের দিকে চলল ও।
ক্রমেই উঁচুতে উঠতে হচ্ছে তাকে। এভাবে চড়াই বেয়ে মাইল ছয়েক ওঠার পর পৌঁছা’নো যাবে গম্বুজের মাথায়। প্রায় বারোশো ফুট উঁচু গম্বুজ। ওটা পার হলে পাওয়া যাবে ওয়াইল্ডক্যাট পাহাড়। তার ওপাশে আরও উত্তরে রয়েছে, আর একটা পাহাড়। গ্যারিকের বর্ণনা অনুযায়ী সেখানে রয়েছে লেফটেন্যান্ট সাইমনের টহলদল। ইন্ডিয়ানরা অনেক দূর তাড়া করে নিয়ে গেছে ওদের!
সরাসরি গম্বুজের মাথায় না উঠে সামান্য ঘুরে উঠছে ইয়াসীন। ঘোরানো সিঁড়ি বেয়ে ওঠার মত। এর ফলে কষ্ট কম হবে ঘোড়াটার। এবং আকাশের বিপরীতে ফুটে উঠবে না তার সচল ছায়া। দূর থেকে সহজে তাকে দেখতে পাবে ইন্ডিয়ানরা।
তবু নিশ্চিন্ত হওয়া যায় না কিছুতে। মাঝে মাঝে ঘোড়া থামাচ্ছে ইয়াসীন। উৎকর্ণ হয়ে শোনার চেষ্টা করছে কোন সন্দেহজনক শব্দ। আবার চলতে শুরু করে সতর্ক চোখ রাখছে ঘোড়ার কানে। অন্ধকারে বিপদ আঁচ করার সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য সংকেত হচ্ছে ঘোড়ার কান। সওয়ারির অনেক আগে বিপদ বুঝতে পারে ঘোড়া। সাথে সাথে খাড়া করে কান।
রাইফেলটা জিনে আটকে নিয়েছে ইয়াসীন। বামহাতে ধরে রেখেছে লাগাম। ডানহাতে পিস্তল। রাতের অ্যাকশনে রাইফেলের চেয়ে পিস্তল অনেক বেশি উপযোগী। বিশেষ করে ঘোড়ার পিঠে। হেঁটে চলেছে ঘোড়াটা।
প্রায় তিন মাইল পথ চলে এসেছে ও। আরও মাইলখানেক যাবার পর হঠাৎ বিনা সংকেতেই গতি বাড়িয়ে দিল ঘোড়াটা। সাথে সাথে সতর্ক হলো ইয়াসীন। কোন সন্দেহজনক শব্দ শোনা যায়নি। তবু ভয় পেয়েছে ঘোড়াটা বোঝা যাচ্ছে। অর্থাৎ বিপদ ঘনিয়ে আসছে।
ছুটতে ছুটতে মুখ ঘুরিয়ে পিছন দিকটা দেখার চেষ্টা করল ঘোড়াটা। পিছনে তাকাল ইয়াসীন। কোথাও কিছু দেখা যায় না। কোন শব্দও নেই। কিন্তু কিছু আছে পিছনে। নিঃশব্দ, অদৃশ্য অথচ ভয়ানক কোন বিপদ।
বাতাস পড়ে গেছে। চারদিকের নিথর নীরবতার মাঝে কেবল ঘোড়ার নিঃশ্বাস আর ক্ষুরের অস্পষ্ট আওয়াজ। অকস্মাৎ পাক খেয়ে বাঁয়ে ঘুরে গেল ঘোড়াটা। সাথে সাথে সামনের বালি থেকে গর্জিয়ে উঠল একজন মানুষ। ডাইনে কোন কিছুর শব্দ। মাথা ঘুরিয়ে সেদিকে তাকাল ও। ফলে কপাল ঘেঁষে বেরিয়ে গেল বাঁদিক থেকে ছোঁড়া একটা তীর। সাথে সাথে পিছন থেকে কেউ লাফিয়ে উঠে তার কোমর জাপটে ধরার চেষ্টা করল।
লাগাম কঁকিয়ে ঘোড়াটাকে সংকেত দিল ও। ছুটতে শুরু করল ওটা। জাপটে ধরা হাত তাকে ভালভাবে আঁকড়ে ধরতে পারেনি, তাই পিছলে নেমে গেল।
সোজাসুজি গম্বুজের মাথায় উঠতে চেষ্টা করছে ইয়াসীন। কিন্তু ওরা আছে সবদিকে। প্রায় ডজনখানেক ইন্ডিয়ান গোল হয়ে ঘিরে রেখেছে তাকে। বেরোতে হলে ওদের কর্ডন ভাঙতে হবে। সামনের ইন্ডিয়ানটার দিকে সোজা ঘোড়া হাকাল সে। ধনুকে তীর সংযোজন করছিল লোকটা। বিপদ টের পেয়ে লাফিয়ে সরে যেতে চেষ্টা করল। কিন্তু দেরি হয়ে গেছে। ঘোড়ার ক্ষুরে থেঁতলে গেল তার দেহ। এক অমানুষিক আর্তচিঙ্কারে চমকে উঠল রাত।
দ্রুত ছুটছে ওর ঘোড়া। পিছনে হিস্ করে উঠল কিছু। সম্ভবত তীর। কিন্তু লাগল না গায়ে। এযাত্রা ওদের কর্ডন ভেঙে বেরোনো গেছে। ঘোড়াটার ক্ষিপ্রতা আর বুদ্ধিই তাকে রক্ষা করেছে।
কিন্তু সহজে তাকে বাঁচতে দেবে না ওরা। সহজে কাউকেই নিস্তার দেয় না ইন্ডিয়ানরা। একবার ব্যর্থ হয়েছে ওদের আক্রমণ। কিন্তু তাতে একটুও উদ্যম হারাবে না। দমও হারাবে না। অবিশ্বাস্য স্ট্যামিনা ওদের। ঘোড়াটার সাথে পাল্লা দিয়ে সমানে দৌড়ে আসবে। এবং একসময় ধরে ফেলবে। কারণ এই চড়াইয়ে পিঠে সওয়ার নিয়ে বেশিক্ষণ জোরে ছুটতে পারবে না ঘোড়াটা। তার উপরে পানির অভাব। সবই জানা আছে ওদের।
দূরে গম্বুজের ওপাশে পাহাড়ের চূড়া। ফ্যাকাসে আকাশের বিপরীতে আবছাভাবে দেখা যাচ্ছে এখন।
সোজা গম্বুজের মাথায় আর উঠছে না ও। একটা বিশাল বৃত্ত তৈরি করে, ঘুরে উঠছে। কিন্তু এত করেও হয়তো ধোকা দেওয়া যাবে না ইন্ডিয়ানদের।
গতি কমাল ইয়াসীন। হেঁটে চলেছে ঘোড়াটা। বিশ্রাম প্রয়োজন ওটার। ভবিষ্যৎ বিপদ মোকাবিলার জন্য কিছু সঞ্চিত শক্তি প্রয়োজন। আধামাইল কোনাকুনি যাবার পর দিক পরিবর্তন করল ও। সোজা উঠছে গম্বুজের মাথায়।
কিছুক্ষণ চলার পর বাঁয়ে একটা ছায়া দেখা গেল। বেশ দূরে। ডানেও দেখা যাচ্ছে ওদের। সামনের পথ আটকাতে চাচ্ছে ওরা। যাতে ঘোড়া ঘুরিয়ে ফিরে যায় ও। এতক্ষণে ওরাও বুঝে গেছে ইয়াসীনের উদ্দেশ্য। কিছুতেই টহলদলটার কাছে পৌঁছা’তে দেবে না তাকে। অথচ ফিরে যাওয়া নিরাপদ নয়। পিছনে আরও ইন্ডিয়ান রয়েছে।
সামান্য থমকাল ইয়াসীন। চারদিক ভালভাবে দেখে নিল। ঘোড়াটাকে সামান্য ডাইনে ঘুরিয়ে এগিয়ে চলল আবার। এর ফলে বাঁ দিকের ইন্ডিয়ানরা একটু দূরে সরে যাবে।
কিন্তু ডানদিকের একজন ইন্ডিয়ান দ্রুত এগিয়ে আসছে কাছে। লোকটার হাতে একটা লম্বা ছোরা। দেখেও না দেখার ভান করল ইয়াসীন। মাথাটা এমন ভাবে বাঁয়ে ঘুরিয়ে রাখল যেন কিছুই দেখেনি। মনে মনে লোকটার স্টেপিং গুণছে-এক, দুই, তিন, চার…।
শেষ মুহূর্তে ডানে ঘুরল সে। এবং গুলি করল। নিখুঁত হয়েছে টাইমিং। কোপ মারার জন্য ছোরা তুলেছিল ইন্ডিয়ানটা। কিন্তু এ জনমে আর কাউকে কোপ মারা হবে না তার।
আরও ডাইনে ঘুরে ঘোড়া ছুটাল ইয়াসীন। এভাবে ডাইনের দলটাকে পাশ কাটিয়ে এগিয়ে চলল ও। কিছুদূর দ্রুত ছুটিয়ে আবার ঘোড়ার গতি কমাল। এবং বাঁয়ে মোড় নিয়ে উঠে এল গম্বুজের মাথায়।
গম্বুজের মাথাটা কিছুটা সমতল। এখান থেকে চারদিকে ঢালু হয়ে নেমে গেছে ভূমি। সামনের ঢাল অত খাড়া নয়। বেশ দূরে ঢাল আটকে দাঁড়িয়ে আছে ওয়াইল্ডক্যাট পাহাড়। সোজা সেটার দিকে এগোল ইয়াসীন।
চারপাশে প্রচুর পাথর রয়েছে ছড়িয়ে ছিটিয়ে। কভারের জন্য চমৎকার হবে পাহাড়টা। সেজন্যেই ওখানে আক্রমণ করার ঝুঁকি বোধহয় ইন্ডিয়ানরা নেবে না। তা ছাড়া গুলির শব্দ হয়েছে একটু আগে। সেটা যদি লেফটেন্যান্ট সাইমনের দল শুনে থাকে তবে তারাও এগিয়ে আসতে পারে এদিকে। তাই পাহাড়টাকে পাশ কাটিয়ে এগিয়ে যাবে ওরা। এবং টহলদলটাকে যে সমস্ত ইন্ডিয়ান ঘিরে আছে তারা এদের সাথে যোগ দিয়ে শক্তি বৃদ্ধি করবে। ফলে, টহলদল এবং ওর মাঝখানে সৃষ্টি হবে দুর্ভেদ্য এক ব্যারিকেড।
ওয়াইল্ডক্যাট পাহাড়ের কোল ঘেঁষে উত্তরপশ্চিম দিকে চলল ইয়াসীন। কিছুক্ষণের মধ্যে পৌঁছা’ল পাহাড়টার পশ্চিম প্রান্তে। ওপাশে আবার শুরু হয়েছে মরুভূমির ঢাল। উত্তরে আকাশ ছোঁয়া একটা পাহাড়। ওর কোলেই কোথায় আছে লেফটেন্যান্ট সাইমন। এবং মরুভূমিতে ওত পেতে আছে ইন্ডিয়ানরা।
থামল ইয়াসীন। বিশ্রাম প্রয়োজন ঘোড়াটার। সামনে লম্বা পাল্লার দৌড় রয়েছে ওটার জন্যে। ঘোড়া থেকে নামল সে।
একটা বড় পাথরখণ্ডের আড়ালে দাঁড় করাল ঘোড়াটাকে। পাশে ছোট্ট একখণ্ড পাথরের উপর বসল বিশ্রাম নিতে। কোলের উপর রাখল পিস্তল। সতর্ক দৃষ্টি অনবরত ঘুরছে ডানে বাঁয়ে।
শেষ প্রহরের শীতল রাত। আরও কিছুক্ষণ পর লাল হতে শুরু করবে পুব আকাশ।
উত্তরের পাহাড়টার দূরত্ব প্রায় দুই মাইল। খোলা মরুভূমি পার হয়ে পৌঁছাতে হবে ওখানে। ভোরের আলো ফুটবার আগেই পৌঁছা’নো দরকার। নইলে হয়তো কোনদিনই পৌঁছা’নো যাবে না ওটার কাছে। এদিকে পরিশ্রান্ত ঘোড়াটার জন্য প্রয়োজন বিশ্রাম।
বিশ্রাম প্রয়োজন তার নিজের জন্যেও। ইউনিফর্ম জ্যাকেটের ভিতর ঘামে আর বালিতে চটচটে হয়ে উঠেছে শার্ট। মুখের ভিতরে কি কি করছে বালি। বুটের মধ্যে পায়ের আঙুল পিচ্ছিল হয়ে উঠেছে। এখন চাই ঠাণ্ডা জলের একটা স্নান, গরম খাবার এবং আটচল্লিশ ঘণ্টার একটা লম্বা ঘুম। ঘুম আসছে!
মাথা ঝাঁকিয়ে তন্দ্রা তাড়াল সে। ঘুমের সময় নয় এটা। এখানে চোখ বুজলেই হাজির হবে মৃত্যু। এবং সেই সাথে মারা যাবে লেফটেন্যান্ট সাইমনের টহলদল।
উঠে দাঁড়াল ইয়াসীন। এদিক ওদিক পায়চারি করল কিছুক্ষণ। ওকে খুঁজতে চুপিসারে এখানেও চলে আসতে পারে কোন ইন্ডিয়ান যোদ্ধা। মরুভূমিতে সতর্ক দৃষ্টি রাখছে সে। যোশুয়ার ঝোঁপগুলো ভাল করে খুঁটিয়ে দেখছে। নড়ে না ওগুলো-অর্থাৎ ইন্ডিয়ান নয়। তবে আছে ওরা সন্দেহ নেই।
ওদের এড়ানো যাবে না কিছুতেই। এবং টহলদলের কেউও অন্ধকারে ওকে চিনে গুলি করে বসতে পারে। ম্যাকহার্ডির কথাগুলো মনে পড়ল। আনমনে হাসল ইয়াসীন। কার মৃত্যু যে কোথায়!
টুপির খোলে সামান্য পানি ঢেলে ঘোড়াটাকে খাওয়াল ও। ওটার কানের কাছে কথা বলল ফিসফিসিয়ে। এখনি সময়, সাগরেদ। তুমি যদি না পারো, মোযেভে কেউই পারবে না। ঘোড়াটা নাক ঘষল ওর কাঁধে।
নিজেও এক ঢোক পানি খেল ইয়াসীন। বাকিটা থাক টহলদলের জন্যে। বোতল জিনের পকেটে রেখে দিল ও। ঘোড়ার পিঠে আবার শুরু হলো যাত্রা।
আকাশে তারার সংখ্যা কমে এসেছে। চলতে চলতে নিজের হার্টবিট শোনার চেষ্টা করল ইয়াসীন। শোনার চেষ্টা করছে সন্দেহজনক কোন শব্দ। জিভ দিয়ে শুকনো ঠোঁট ভিজাল ও। এতক্ষণে ওর অবস্থান বুঝে গেছে ইন্ডিয়ানরা। সামনে কোথাও ওত পেতে আছে তারা।
অপেক্ষা করছে ইন্ডিয়ানরা। কিছুতেই রেহাই দেবে না। প্রথমে ঘোড়াটা ঘায়েল করবে মাংসের জন্যে। তারপর অসহায় ঘোড়সওয়ারকে হত্যা করবে অস্ত্র আর রসদের জন্যে। এবং হত্যা করবে টহলদলের সবাইকে।
দূরে কালো পাহাড়ের অবয়ব। বাম হাতে লাগাম আর ডানহাতে পিস্তল নিয়ে সেদিকে চলেছে ঘোড়সওয়ার। ঠিক তার পিছনে একই ঘোড়ায় সওয়ার হয়ে চলেছে-কুটিল বন্ধুর মত-মৃত্যু!
<