কাল রাতে ডাকাতটার কাছ থেকে কেড়ে নেয়া অস্ত্রে ছয়টা গুলি আছে, কিন্তু লড়াই করে জেতা বা না করে পালিয়ে যাওয়া দুটোই এখন অসম্ভব। ঘেরাও হয়ে গেছে ও। শ্বাস আটকে বসে থাকল বেনন, কাকের মত ভাবছে, ও যখন দেখতে পাচ্ছে না তখন অন্য কেউ ওকে দেখবে কেন!
আরে দাড়িয়ে পড়লে কেন, এগোও! বিরক্ত স্বরে বলল পাশ দিয়ে যাওয়া লোকটা। আঁধারে চিনতে পারেনি ওকে। নিজেদের লোক ভেবে নিয়েছে।
সুযোগটা নিল বেনন। আস্তে করে স্পার ছোঁয়াতেই তস্করের পিছু নিল ঘোড়াটা। হ্যাটারের র্যাঞ্চের দিকে যাচ্ছে।
আবছা ভাবে দেখতে পাচ্ছে ও সামনের লোকটার ঢালু কাঁধ। এই লোকটাই মিস হ্যাটারের নাকের সামনে পিস্তল ধরেছিল। কালকে রাতেও একে ক্যাম্পে দেখেছে ও। মন থেকে সমস্ত সন্দেহ দূর হয়ে গেল। ভাল গ্যাড়াকলেই পড়া গেছে! সামনে পেছনে শত্রুর দল; মাঝখানে ও! প্রেইরির আঁধারে ওকে লোকগুলো চিনতে পারছে না বটে, কিন্তু আস্তানায় ফিরলেই চোখ বুজে চিনে যাবে।
খুব সাবধানে গতি কমিয়ে দলের পেছনে চলে এলো ও। লোকগুলোর সঙ্গে যেতে চায় না ও, অনুসরণ করতে চায়। ঘোড়া থেকে নেমে ভান করল যেন ঢিলে স্যাডল টাইট করছে। মনে মনে আশা করছে ওকে থামতে দেখেও এগিয়ে যাবে সবাই।
একজনকে দাঁড়াতে দেখে থেমে গেল বাকিরাও। বেননের পাশের লোকটা অধৈর্য হয়ে বলল, তাড়াতাড়ি করো, দেরি হয়ে যাচ্ছে আমাদের।
দীর্ঘশ্বাস গোপন করে আবার ঘোড়ায় উঠল বেনন। পালাবার চেষ্টা করতে গিয়ে মনোযোগ আকর্ষণ করতে চায়নি ও। নিজেকে ভীমরুলের চাকে হাত ঢুকিয়ে বসা বোকা ভালুক বলে মনে হচ্ছে ওর। একটু পরেই চাঁদ উঠবে। তখন আর লুকোচুরি খেলা লাগবে না। কিন্তু করার কিছু নেই ওর।
ভরসার কথা লোকগুলো পরস্পারের সঙ্গেও বোধহয় ভাল মত পরিচিত নয়। বাড়তি কথা বলছে না কেউ। মন্ট্যানা সেন্ট্রাল রেল রোডকে থামানোর জন্যে এদেরকে সম্ভবত দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে আনা হয়েছে।
হ্যাটারের র্যাঞ্চটা ওরা পাঁচশো গজ দূর দিয়ে পার হলো। বাঙ্ক হাউজ আর বাড়ির জানালায় আলো দেখে হ্যাটার আর ক্রুরা ফিরেছে বুঝতে পারল বেনন।
সামনে থেকে দলনেতা বলল, হ্যাটারের এখানে কয়েকটা গুলি খরচ করে গেলে কেমন হয়? লোকটা ভাববে রেল রোডের লোক শত্রুতা করছে। আরও খেপে উঠবে।
কাজটা ঠিক হবে না, কাসি, দ্বিমত পোষণ করল আরেকজন। ব্যাটারা ক্ষ্যাপা কুকুরের মত লড়াকু। ঝামেলা বাড়িয়ে লাভ কী, এমনিতেই অনেক কাজ পড়ে আছে।
মিথ্যে বলোনি, বলল নেতা। এমনিই ভাবছিলাম। চলো সবাই, আগের কাজ আগে।
র্যাঞ্চটাকে পাশ কাটিয়ে এগোল সবাই। সমব্রেরো হ্যাট মাথার ওপর টেনে বসাল বেনন। বুকের সঙ্গে ঠেকিয়ে রাখল চিবুক। পাশের লোকটা যতবার কথা বলল হুঁ-হাঁ করে জবাব দেয়ার দায় সারল। ভাবনায় ডুবে আছে ও। এদের টাকা দিচ্ছে কে? ডক্টর ওয়াং, নাকি আর কেউ? কি স্বার্থ ডক্টর ওয়াঙের? আর কেউ আছে এসবের পেছনে? কে সেই লোক? কিসের শত্রুতা রেল রোডের সঙ্গে?
কিছুক্ষণ পর হাল ছেড়ে দিল বেনন। মনে প্রশ্ন আসছে একের পর এক অথচ একটা প্রশ্নেরও জবাব জানা নেই।
পশ্চিমে, কুঁজো পিঠ সেই টিলার দিকে যাচ্ছে এখন দলটা। আগের চেয়ে গতি বাড়িয়েছে।
ক্যানিয়নের গোলকধাঁধার পেছন থেকে অবশেষে মুখ বের করল বাকা একটুকরো ম্লান চাঁদ। আবছা আলোয় ভূতুড়ে দেখাল চারপাশ। ভাগ্যকে ধন্যবাদ দিল বেনন। টিলার গোড়ায়, ঘন জঙ্গলের ভেতর ঢুকে পড়েছে ওরা। আরেকটু আগে চাঁদ তার চাঁদমুখ দেখালেই সেরেছিল, নির্ঘাত ধরা পড়ে যেত ও।
আঁকাবাকা সরু ট্রেইল ধরে একজনের পেছনে আরেকজন এগোল ওরা। দলের শেষ মাথায় থাকলে বেনন আলগোছে সরে পড়তে পারত, কিন্তু দুর্ভাগ্য ওর; পেছনে আরও কয়েকজন আছে।
খাড়া উঠে গেছে ট্রেইল। জায়গায় জায়গায় ঘোড়া থেকে নেমে হাঁটতে হলো। আরও ঘন হয়ে ট্রেইলের দিকে চেপে এসেছে জঙ্গল; দু’দিকের মাঝখানের ফাঁকটা বড়জোর ফুট তিনেক। এখন একটা ডায়নোসর এসে হাজির হলে হয়, ভাবল বেনন।
কিছুক্ষণ পর পাহাড়ের কাঁধে একটা খোলা জায়গায় বেরিয়ে এলো ওরা। টিলার পুব দিকে পাথুরে জমিতে একটা তাঁবু খাটানো হয়েছে। পেছনে টিলাটা খাড়া হয়ে উঠে গেছে আরও অনেকদূর। জঙ্গল বেষ্টিত এই আস্তানা সুরক্ষিত। সরু ট্রেইলটা ছাড়া এখানে পৌঁছানোর কোন উপায় নেই। জঙ্গল যেখানে শেষ হয়েছে সেখানে দশজন সশস্ত্র লোক অবস্থান নিলে ঠেকিয়ে দিতে পারবে একশো লোকের আক্রমণ।
আগুন জ্বলছে তাঁবুর সামনে। মাটিতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে ব্ল্যাংকেট আর স্যাডল গিয়ার। কোন লোক দেখল না বেনন। পাহারায় কাউকে রাখা জরুরী মনে করেনি কাসি।
আগুনের পাশে পৌঁছে মৃদু স্বরে শিস দিল লোকটা। গাছের আড়াল থেকে বেরিয়ে এলো আবছা একটা আকৃতি। আগুনের সামনে এসে দাঁড়াতেই তাকে চেনা গেল। ডক্টর ওয়াং!
কি খবর! হাসল লোকটা তার চোখ-না-ছোঁয়া হাসি।
লাফ দিয়ে ঘোড়া থেকে নামল কাসি। উত্তেজিত ভঙ্গিতে বলল, দারুণ অবাক একটা খবর আছে, বস্! কালকে রাতে কারা যেন কন্ট্রাকশন ক্যাম্পে হামলা করেছে। ওরা কয়েকজন কুলিকে মেরে ফেলেছে, তছনছ করে দিয়েছে ক্যাম্পটা। দারুণ কাজ দেখিয়েছে লোকগুলো, কি বললো, বস?
মাথা দোলাল চাইনিজ।
কুলিরা অবশ্য ধাওয়া করেছিল। কিন্তু একটা দানব বের হয়ে ওদের এমন ভয় দেখিয়েছে যে বাপ বাপ করে পালিয়েছে সবাই।
রোনাল্ডোকে দেখছি না কেন? ডক্টর ওয়াং জানতে চাইল।
কালকে রাতে প্রায় ধরা পড়ে যাচ্ছিল। কোনমতে পালিয়েছে। ভোর বেলা ফিরেছে এখানে। ওকে টেইলহল্টে পাঠিয়েছি বিশ্রাম নেয়ার জন্যে।
বেশ, বেশ, খুশি খুশি দেখাল ডক্টরকে।
ঘোড়া থেকে নামছে সবাই। স্যাডল ইত্যাদি খুলে ঘোড়াগুলোকে রোপ করালে রেখে আগুনের ধারে গিয়ে দাঁড়াচ্ছে। প্রমাদ গুণল বেনন। একা আলাদা দাঁড়িয়ে থাকলে সন্দেহ করবে লোকগুলো, আবার আলোয় যাওয়া মানেও ধরা পড়ে যাওয়া। যতটা সম্ভব দেরি করতে লাগল ও স্যাডল খুলতে। তারপর অনিচ্ছাসত্ত্বেও ঘোড়াটাকে ঢুকিয়ে দিল করালে। স্যাডল মাটিতে রেখে ছায়ায় দাঁড়িয়ে ভাবতে লাগল মুক্তির উপায়।
এবার আমাদের কাজ কি হবে, বস? জানতে চাইল কাসি।
মাইনিং। সবার ওপর চোখ বুলিয়ে নাটকীয় ভঙ্গিতে বলল চাইনিজ। তোমরা দিন কয়েকের জন্যে মাইনার হয়ে যাবে। প্রয়োজনীয় সবকিছু আছে আমার কাছে–গাইতি, শাবল, কোদাল, সবই আছে; কোন অসুবিধা হবে না তোমাদের।
কিন্তু, বস, লড়াই করার জন্যে রাখা হয়েছে আমাদের, অসন্তুষ্ট চেহারায় বলল কাসি।
চিন্তার কিছু নেই, লড়াই করলে যে টাকা পেতে তাই পাবে, আশ্বস্ত করল ওয়াং। ভাল কথা, কালকে রাতের চমৎকার কাজটির জন্যে পুরস্কার পাওনা হয়েছে তোমাদের। টাকা আমার সঙ্গেই আছে, লাইন করে দাড়িয়ে যে যারটা নিয়ে নিতে পারো ইচ্ছে করলে।
হৈ-হৈ করে উঠল গানফাইটারের দল। মুখ শুকিয়ে গেল, বেননের।
তাঁবুর ভেতর থেকে ভারী একটা ক্যানভাসের ব্যাগ হাতে বেরিয়ে এলো ওয়াং। দ্রুত লাইনে দাঁড়িয়ে গেল সবাই কাসির পেছনে। বাধ্য হয়ে বেননও লাইনে দাঁড়াল। বুকটা দুরুদুরু করছে। ওর। আবার সেই একই সমস্যা দেখা দিয়েছে। টাকা নিতে লাইনে না দাঁড়ালে সেটা খুবই অস্বাভাবিক ঠেকবে সবার চোখে। আবার ওয়াঙের সামনে টাকা নিতে গেলেও ধরা পড়ার সমূহ সম্ভাবনা। ওয়াং এত ঘোলা বুদ্ধির লোক নয় যে দু’দিন আগের সহযাত্রীকে ভুলে যাবে।
বেতো রুগির মত চেহারা করে লাইনের শেষে এগোল বেনন। জীবনে কখনও কখনও এমন কিছু সময় আসে যখন মনে হয় দুনিয়ার সবকিছুই বিপক্ষে চলছে। তারপর হঠাৎ করেই যদি বাধাগুলো দূর হয়ে যায় তাহলে বুকটা ভরে ওঠে কৃতজ্ঞতায়। বেননেরও তেমন হলো। মাত্র দু’পা বেড়েছে ও আগুনের দিকে, এমন সময় জঙ্গলের প্রান্ত থেকে কথা বলে উঠল একজন লোক। গানফাইটাররা আড়ষ্ট হয়ে গেল। অস্ত্রের দিকে হাত বাড়াল কেউ কেউ। বোঝা গেল লোকটা তাদের পরিচিত নয়। শুধু স্বাভাবিক রইল ডক্টর ওয়াং। তার ভাব দেখে মনে হলো লোকটা আসবে আশা করছিল সে।
ওয়াং! ঝোঁপের আড়াল থেকে আবার ডাক দিল হ্যারি হুলাহান। আমার হাতে একটা অস্ত্র আছে, ওয়াং। ইচ্ছা করলে তোমাকে আমি মেরে ফেলতে পারি যেকোন সময়। তেমন কিছু করার ইচ্ছে নেই আমার। আমি শুধু কথা বলতে চাই।
অবশ্যই! হাসল ওয়াং। তোমার জন্যে আমাদের দ্বার সব সময় অবারিত।
ঠাট্টা নয়, ওয়াং, আমি মশকরা করতে আসিনি।
চলে এসো, ভাবছ কেন তোমার সঙ্গে ঠাট্টা করছি? আমার ঘাড়ে কটা মাথা?
খালি হাতে বেরিয়ে এসে ওয়াঙের মুখোমুখি দাঁড়াল ব্যাঙ্কার। রাগে লাল হয়ে আছে সরু মুখটা। চড়া গলায় বলল, বাজে কথায় সময় নষ্ট করতে আমি আসিনি, ওয়াং। স্পারটা পেয়েছ?
ছোট্ট করে বো করল ওয়াং। হ্যাঁ। ক্যানভাসের ব্যাগ নামিয়ে রেখে পকেট থেকে সেই সিল্কের রুমাল বের করল লোকটা। কি যেন মুড়িয়ে রেখেছে রুমালে। জাদুকরের ভঙ্গিতে হাতের তালু থেকে রুমালটা সরিয়ে নিল সে। দেখা গেল আগুনের আভায় স্পারটা চকচক করছে।
একটু সামনে ঝুঁকল ব্যগ্র বেনন। অন্যান্য স্পারের সঙ্গে কোন তফাত খুঁজে পেল না। সাধারণ একটা স্পার; হাজার হাজার এরকম স্পার দেখেছে ও জীবনে। অথচ দেখার মত হয়েছে ব্যাঙ্কারের মুখভঙ্গি। সম্মোহিতের মত এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে স্পারটার দিকে। নিজেকে বসে আনতে পাক্কা দু’মিনিট লাগল লোকটার। তারপর ফাঁসফেঁসে স্বরে জানতে চাইল, কত দিতে হবে?
শ্রাগ করল ওয়াং। দরদাম করব কী, আমি কি জিনিসটার আসল দাম জানি? ঠকে গেলে তখন? মাথা নাড়ল সে। তবু আমি বেশি চাইব না। যা ন্যায্য তাই দিয়ো। ধরো হাজার পঞ্চাশেক হলেই চলবে।
তুমি উন্মাদ হয়ে গেছ! রাগে চেঁচাল হুলাহান।
তাই? আমি বরং তাহলে আর কেউ কিনতে চায় কিনা খোঁজ নিই।
এবার কাণ্ডজ্ঞান হারিয়ে ফেলল ব্যাঙ্কার। ওয়াঙের উদ্দেশে পা বাড়িয়ে চোখ পাকিয়ে গাল দিল। দে! দিয়ে দে আমার স্পার, হলুদমুখো নোংরা বেঁটে বানর কোথাকার! দে বলছি!
চট করে কয়েক পা পিছিয়ে গেল ওয়াং। উত্তেজনার কোন চিহ্ন নেই মুখে। রাগেনি একফোঁটা। কথা যখন বলল কণ্ঠস্বর থাকল একদম শান্ত। দেখো, হুলাহান, বলল সে, তেড়িবেড়ি করার অবস্থানে তুমি নেই। বেশি বাড়াবাড়ি করলে তোমারই ক্ষতি হবে। ভুলে যেয়ো না তোমার আদেশেই এই লোকগুলোকে ভাড়া করা হয়েছে যাতে মন্ট্যানা সেন্ট্রাল রেল রোডের কাজ বন্ধ হয়ে যায়। নিঃশব্দে হাসল ওয়াং। দরদামের উপায় নেই তোমার, হুলাহান।
কুঁজো কাঁধ আরও ঝুলে পড়ল ব্যাঙ্কারের। থমকে দাঁড়াল লোকটা। অপেক্ষাকৃত সুস্থির দেখাচ্ছে তাকে এখন। বলল, আমার দিকটা একটু বোঝো, ওয়াং; পঞ্চাশ হাজার ডলার দেয়ার সাধ্য নেই আমার।
কথাটা মিথ্যে বললে। তুমি তো স্পারটা হ্যাটারকে ফিরিয়ে দিয়ে রেলওয়ের জন্যে জমির ব্যবস্থা করবে। ভাল কথা, রেল ওয়ের কাছ থেকে কত টাকা কমিশন খাচ্ছ তুমি? নিশ্চয়ই এক লাখ ডলারের কম নয়?
তুমি ভুল ভাবছ, এক পয়সাও নিচ্ছি না আমি।
বিশ্বাস করতে পারলাম না। তোমাকে যতটুকু চিনি মরা মায়ের হাত কেটে চুড়ি বের করে নেবে তুমি।
এই তাহলে ব্যাপার! এতক্ষণে স্পার রহস্য পরিষ্কার হলো বেননের কাছে। পাগলা হ্যাটার স্পার নিয়ে পাগলামি করছে জানতে পেরে ওটা চুরি করিয়েছে হুলাহান, যাতে রেল রোডের কাছে লোকটা জমি বেচে। হয়তো ব্যাঙ্কার নিশ্চিত জানে যে স্পার পেলে হ্যাটার জমি বেচতে আর আপত্তি করবে না। দুয়ে দুয়ে চার মেলাতে কোন কষ্ট হলো না বেননের। হুলাহান নিশ্চয়ই রেল রোডের সঙ্গে কোন চুক্তি করেছে। জমি পেলেই মন্ট্যানা সেন্ট্রাল লোকটাকে টাকা দিয়ে দেবে। এরমধ্যে বাগড়া দিয়ে বসেছে চতুর ওয়াং। ফাঁক তালে কামিয়ে নিতে চাইছে পঞ্চাশ হাজার ডলার।
দৌড়ে গিয়ে ওয়াঙের হাত থেকে স্পারটা কেড়ে নেবে কিনা ভাবল বেনন। কাজটা সোজা, কিন্তু তারপর পালানো প্রায় অসম্ভব। দেখবে একবার চেষ্টা করে? যদি কপালটা সহায়তা করে…
উত্তেজনার বশে অজান্তেই একটু সামনে বাড়ল ও। চলে এলো আলোর আওতায়। সেই একই মুহূর্তে সামনে দাঁড়ানো লোকটা ওর কাঁধের গুঁতো খেয়ে বিরক্ত হয়ে ফিরে তাকাল। এক বাড়িতে ওর মাথা থেকে ফেলে দিল সমব্রেরো হ্যাট। পরক্ষণেই বাঁশ-ফাটা গলায় চেঁচিয়ে উঠল, আরে আরে… কোত্থেকে… কে তুমি!
বিপদ বুঝে গায়ের জোরে ঘুসি হাঁকাল বেনন। লাগল না। ওর গায়ে সেঁটে এলো প্রতিপক্ষ। মরিয়া হয়ে লোকটাকে ঠেলা দিয়ে সরিয়ে করালের দিকে দৌড় দিল ও। চারপাশে একবার তাকিয়েই বুঝে গেল জালে আটকা পড়া মাছের মত অবস্থা হয়েছে ওর। ওকে ধরতে সবদিক থেকে ছুটে আসছে লোকগুলো। দশ পা যাওয়ার আগেই ঝাঁপিয়ে পড়ল কয়েকজন।
<