চলে গেল ম্যাট আর জেস, ওদের গমনপথের দিকে চেয়ে রইল ক্লিফ ফ্যারেল। চোখ দুটো ছোট হয়ে গেছে, রাগে ফেটে পড়তে চাইছে ও, সেই সঙ্গে অসহায় বোধ করছে।

গ্যাড়াকলেই পড়া গেছে, বলল জেস স্টোন। এত সহজে হাল ছাড়ছি না, বলল ক্লিফ। প্রয়োজনে ব্যাটাকে নিজহাতে খুন করব!

সে সুযোগ, তুমি একবার পেয়েছিলে।

জানি, চোখ রাঙিয়ে শেরিফের দিকে তাকাল ক্লিফ। দ্রুত চিন্তা চলছে মাথায়, কিন্তু সমস্যার সমাধান পাচ্ছে না। কী করার আছে? পাহাড়চূড়ায় একসঙ্গে পাঁচ বাক্স ডিনামাইট ফাটলে গ্রে বাট শহরের অস্তিত্ব বিলুপ্ত হবে, মাটির সঙ্গে মিশে যাবে বসতবাড়ি, প্রাণ হারাবে অসংখ্য মানুষ।

খবরটা সবাইকে জানিয়ে আসি, বলল স্টোন।

দুড়দাড় করে পালাতে শুরু করবে লোকে।

যদি কাউকে শহরের বাইরে যাবার সুযোগ দেয়া হয়। গ্রে বাট পাহাড়ের দিকে তাকাল জেস স্টোন। তারপর ঘুরে মন্থর পদক্ষেপে হাঁটতে শুরু করল। হোটেলের দিকে তাকাল ক্লিফ। বারান্দার খুঁটিতে এক টুকরো কাগজ সঁটছে ম্যাট, রেগান সরতেই চারপাশে ভিড় জমে উঠল। কাগজটা পড়া শেষ হলে একসঙ্গে সন্ত্রস্ত চেহারায় পাহাড়ের দিকে তাকাল সবাই। পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে পাহাড়ী চাতালে বসা ম্যাটের দুভাইকে।

শেরিফকে দেখে শোরগোল তুলে ছুটে এল ওরা। জনতাকে শান্ত করার ব্যর্থ চেষ্টা চালাল স্টোন। জেলহাউসে ফিরে এল ক্লিফ, সজোরে লাথি হাঁকিয়ে দরজা আটকাল।

খাঁচায় বন্দী বাঘের মতো দশ পনের মিনিট অবিরাম কামরার একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে পায়চারি করে বেড়াল। অসম্ভব একেকটা বুদ্ধি আসছে মাথায়, সঙ্গে সঙ্গে নাকচ করে দিচ্ছে, গোলক ধাঁধায় পড়ে খাবি খাচ্ছে ও, চোখে অন্ধকার দেখছে। ম্যাটের পরিকল্পনায় ফাঁক নেই, ঠেকাবে কীভাবে?

আচমকা দড়াম করে দরজা খুলে গেল, এলোমেলো পায়ে ভেতরে ঢুকল ডেলহ্যান্টি, মুখের একপাশে রক্তের দাগ, মাথার চুল শুকনো রক্তে জট পাকিয়ে গেছে। চেহারায় যন্ত্রণার ছাপ, দৃষ্টিতে ক্রোধ। ক্লিফ, ওরা..:পাঁচ বাক্স ডিনামাইট কেড়ে নিয়ে গেছে…অজ্ঞান করে ফেলে গিয়েছিল আমায়…জ্ঞান ফিরতেই খবরটা জানাতে ছুটে এসেছি…

আগেই জানতে পেরেছি…

তাহলে শয়তানগুলোকে ধরছ না কেন? তুমি না অফিসার?

একটু এদিকে এসো, ডেলহ্যান্টি… এগিয়ে গিয়ে দরজা খুলল ক্লিফ, নেমে এল রাস্তায়। সন্দিগ্ধ চেহারায় অনুসরণ করল বুড়ো দোকানি। গ্রে বাট-এর দিকে ইঙ্গিত করল ডেপুটি, ওইযে, পাহাড়ে উঠে বসেছে ওদের দুজন। ডিনামাইটগুলো ওখানে ঘোড়া নিয়ে একজন অপেক্ষা করছে নীচে।

আতঙ্কে বিস্ফারিত হলো ডেলহ্যান্টির চোখজোড়া। কেন? কী চায় ওরা?

মাথা নেড়ে জেলহাউসের দিকে ইশারা করল ফ্যারেল। ল্যুকের ভাই। ওরা, ওকে ছাড়িয়ে নিতে এসেছে।

কী করবে বলে, ভাবছ?

জানি না। কিছু ঠিক করি নি!

পাহাড়ের দিকে সম্মোহিতের মতো চেয়ে রয়েছে ডেলহ্যান্টি, চোখজোড়া কোটর ছেড়ে বেরিয়ে আসতে চাইছে। পাঁচ বাক্স ডিনামাইট! ইয়া আল্লাহ!

কী রকম ক্ষতি হতে পারে?

প্রায় পুরো পাহাড়টাই নেমে আসবে। মোট কথা কবর হয়ে যাবে আমাদের!

প্রথম আঘাতটা কোথায় লাগবে?

বাট স্ট্রীটের মাথায়।

আমিও তাই ভেবেছি। ওখানেই সোনিয়াদের বাড়ি।

ঘাড় ফিরিয়ে ক্লিফের দিকে তাকাল ডেলহ্যান্টি, তারপর ঘোরলাগা লোকের মতো বিড়বিড় করতে করতে এলোমেলো পা ফেলে সামনে এগোল। পাগল! বদ্ধ উন্মাদ! আমি গেলাম..এখানে আর থাকা যাবে না।

চোখ কুঁচকে ডেলহ্যান্টির গমনপথের দিকে চেয়ে রইল ক্লিফ। কয়েক হাজার টন পাথরাইয়ের ধস সরাসরি সোনিয়াদের বাড়ির ওপর পড়বে ভাবতেই দুহাত মুষ্টিবদ্ধ হলো ওর। শিগগির ওদের সরিয়ে আনতে হবে, ও বাড়িতে থাকা নিরাপদ নয়।

অবশ্য, আপনমনে বলল ক্লিফ, এই মুহূর্তে বিপদের আশঙ্কা নেই, তাড়াহুড়ো করে ডিনামাইট ফাটাতে যাবে না ম্যাট। শহরবাসীরাও এমন কিছু করবে না যাতে অজুহাত পায়।

সুযোগ যখন পেয়েছিল তখনই ল্যুককে হত্যা করা উচিত ছিল, ভাবল ক্লিফ এখন পরিস্থিতি সম্পূর্ণ আয়ত্তের বাইরে চলে গেছে। ল্যুককে আটক রাখতে গেলে শহর ধ্বংসের ঝুঁকি নিতে হবে।

এদিকে আবার উধাও হয়েছে স্টোন। উত্তেজিত ভীত জনতা পথে নেমে পড়েছে। ডেল পোমরয় হাহট আর হোটেল ক্লার্ক হিউগে স্মিদারসসহ দশ বারজনের…একটা দল দৌড়ে এল ক্লিফের দিকে। ফুট দশেক দূরে থাকতেই রুদ্ধশ্বাসে চেঁচিয়ে উঠল পোমরয়। ওকে ছেড়ে দাও, ক্লিফ! নইলে সবাইকে মরতে হবে!

উঁহু, মাথা নাড়ল ফ্যারেল। ওকে আমি ছাড়ব না। আদালতে দাঁড়াতেই হবে বদমাশটাকে।

কিন্তু ওরা…

কিচ্ছু করবে না। ল্যুক যতক্ষণ জেলে আছে, বিপদের আশঙ্কা নেই। এরা স্রেফ ল্যুকের ফাঁসি ঠেকাতে চাইছে-আর কিছু না।

ওকে বরং ছেড়েই দাও! আমরা কি ছাই জানতাম যে…!

ক্রুদ্ধ দৃষ্টিতে জনতার দিকে তাকাল ক্লিফ। কালই না ওকে ঝোলানোর জন্যে খেপে উঠলে তোমরা? ওকে ছিনিয়ে নিয়ে ফাঁসি দেয়ার জন্যে মেরে বেহুশ করে দিলে আমায়! আজ আবার উল্টে গেলে কেন? ল্যুক ফেরেশতা হয়ে গেল? না ভয়ে নীতি পাল্টালৈ?

পোমরয়সহ কয়েকজনের চেহারা লাল হলো। মুখ তুলে ক্লিফের দিকে তাকাল পোমরয়। যা খুশি ভাবতে পারো, কিন্তু এক লোককে নিয়ে টানাহ্যাঁচড়া করতে গিয়ে পুরো শহরকে বিপদের মুখে ঠেলে দেয়ার কোনও মানে হয় না।

সামনে রাস্তার দিকে তাকাল ক্লিফ। সোনিদের বাড়ির কাছাকাছিই পোমরয়ের বাড়ি, পাহাড় ধসের পথে পড়বে রেগানের বিচার হবেই, গোয়ারের মতো বলল ও। অপরাধী সে, শাস্তি তাকে পেতেই হবে।

রক্ত সরে শাদা হয়ে গেল পোমরয়ের চেহারা। পালা করে একবার রাস্তা আর একবার ক্লিফের দিকে তাকাল। বউ বাচ্চা নিয়ে এখুনি চলে যাচ্ছি আমি এখান থেকে! কাঁপা গলায় বলে উঠল সে।

ঘুরে দাঁড়াল পোমরয়, সঙ্গীদের ঠেলে এগোল, দৌড় দিল বাড়ির দিকে। ক্লিফের দৃঢ়প্রতিজ্ঞ চেহারার দিকে তাকাল অন্যরা, তারপর পোমরয়ের মতো যার যার বাড়ির পথ ধরল। আরও অনেকে উদ্ভ্রান্তের মতো ছুটোছুটি করছে রাস্তায়।

স্টোন কোথায় গেছে, কে জানে! লোকটা থাকলে ভালো হত, ভাবল ফ্যারেল, বিপদ সম্পর্কে সোনিদের সতর্ক করা দরকার, কিন্তু আসামীদের একা ফেলে কোথাও যাবার সাহস হচ্ছে না।

হঠাৎ ঘোড়ার খুরের শব্দে চমকে তাকাল ক্লিফ। ধুলো উড়িয়ে দ্রুত ছুটে এল একটা বাকবোর্ড, ক্লিফকে পেরিয়ে গেল, অপ্রতিহত গতিতে ছুটল শহর সীমান্তের দিকে। গ্রে বাট-এর চূড়ার দিকে তাকাল ক্লিফ, রাইফেলের নলে রোদের প্রতিফলন দেখল, পরমুহূর্তে ধোয়ার কুণ্ডলী দেখা দিল ওখানে। চট করে বাকবোর্ডের দিকে চোখ ফেরাল ও ঠিক তখনই মাটিতে লুটিয়ে পড়ল ঘোড়াটা। একদিকে কাত হয়ে গেল বাকবোর্ড, কাঁকড়ার মতো পিছলে এগিয়ে গেল বেশ খানিকটা। দুজন যাত্রী ছিটকে পড়ল, সঙ্গে সঙ্গে উঠে দাঁড়াল। মেয়েটা ছুটে এল নিঃসাড় লোকটার কাছে।

মুহূর্তের জন্যে ইতস্তত করল ফ্যারেল। ভালো একটা রাইফেল থাকলে পাহাড়ের নীচের লোকটা মাত্র শতিনেক গজ দূরে কিন্তু তাকে মেরে ওপরের দুজনকে ঘায়েল করার আগেই বদমাশগুলো তারে আগুন ধরিয়ে দেবে। তা ছাড়া এখান থেকে ওদের গুলি লাগানো যাবে, তার কোনও নিশ্চয়তা নেই।

ঘুরে উল্টানো বাকবোর্ডের দিকে দৌড়ে গেল ফ্যারেল। চরকির মতো এখনও ঘুরছে একটা চাকা। জবাই করা মুরগীর মতো দাপাদাপি করছে আহত ঘোড়াট, উঠতে পারছে না।

মেয়েটিকে চিনতে পারল ক্লিফ, ডেলা ব্রনসন। অচেতন লোকটি তার স্বামী, এড ব্রনসন। ব্রনসনের পাশে হাঁটু গেড়ে বসেছে ডেলা, ধুলো রক্তের আস্তরণ ওর মুখে, এখানে ওখানে ছিড়ে গেছে পোশাক।

ডেলার মুখোমুখি হয়ে ব্রনসনের অন্যপাশে বসে পড়ল ক্লিফ। স্বাভাবিক শ্বাসপ্রশ্বাস চলছে এডের। তীক্ষ্ণ চোখে ওর মাথা পরীক্ষা করল ক্লিফ কানের কাছে একটু চামড়া কেটে গেছে, আর কিছু না।

চিন্তার কিছু নেই, ম্যাম, বলল ও, হঠাৎ চোট লাগায় জ্ঞান হারিয়েছে। দাঁড়াও ওকে বাতি পৌঁছানোর ব্যবস্থা করছি, অপ্রয়োজনে আর বাইরে এসো না , ঠিক আছে?

ওদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে হাত গুটিয়ে বসে আছ কেন?

লোকজন যতক্ষণ শহরে থাকছে, ওরা চুপচাপ থাকবে। ল্যুককে বের করে নিয়ে যেতে চাইছে তার ভাইয়েরা।

ছেড়ে দাও!

কাল রাতে এডসহ আরও কয়েকজন রেগানকে ছিনিয়ে নেয়ার জন্যে আমাকে প্রায় খুন করে ফেলছিল, বলল ক্লিফ, আর তুমি বলছ তাকে ছেড়ে দিতে?

দ্বিধার ছাপ পড়ল ডেলার চেহারায়। সোজা হয়ে দাঁড়াল ক্লিফ। ইতিমধ্যে ভিড় জমতে শুরু করেছে, ব্রনসনকে বাড়ি পৌঁছে দেয়ার জন্যে অনুরোধ করল জনতাকে। তারপর আহত ঘোড়ার সামনে এসে দাঁড়াল ও, কপাল লক্ষ্য করে গুলি ছুঁড়ল পিস্তল থেকে, স্থির হয়ে গেল অবোধ জানোয়ারটা।

তুফান বেগে ঘোড়া হাঁকিয়ে ছুটে এল এক লোক। চেঁচিয়ে তাকে থামতে, অনুরোধ করল ফ্যারেল। কিন্তু কে শোনে কার কথা, ঝড়ের মতো ওকে পাশ কাটিয়ে গেল সে। পাহাড়চূড়ায় আবার রাইফেল গর্জাল প্রচণ্ড শব্দে। ধুলো ছিটকে উঠল ছুটন্ত ঘোড়র পায়ের কাছে। সঙ্গে সঙ্গে লাগাম টেনে ঘোড়া থামাল সওয়ারী, সাঁই করে ঘুরল, আবার ক্লিফদের দিকে ফিরে এল, চলে গেল যে-পথে আসছিল সে-পথে। ক্লিফ শুনল লোকটা বিড়বিড় করছে, রাত হোক, অন্ধকারে লুকিয়ে ঠিক পালাব!

অফিসে চলে এল ফ্যারেল। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে পুরো জনপদে, দ্বিধায় ভুগছে সবাই। পালাতে গেলে গুলি খেতে হবে, বুঝিয়ে দিয়েছে দুবৃত্তরা। আবার শহরে থাকাও নিরাপদ নয় মোটেই। ভয়ের কথা, নতি স্বীকার করবে না সাফ সাফ বলে দিয়েছে ক্লিফ।

জেলহাউসের পেছন থেকে বেরিয়ে এল জেস স্টোন। আতঙ্কে বিহ্বল জনতার দিকে একনজর তাকিয়ে ধূর্ত দৃষ্টি ফেরাল ক্লিফের দিকে।

কোথায় ছিলে? জিজ্ঞেস করল ফ্যারেল।

বাসায়। ভেবেছিলাম ছেলেমেয়েসহ ওকে বাইরে পাঠিয়ে দেব, কিন্তু…

এখানে একটু থাকতে পারবে? মুহূর্তের জন্যে ভয়ের ছাপ পড়ল শেরিফের চোখে।

না, পালাব না, ওকে আশ্বস্ত করল ক্লিফ। একটু সোনিদের বাড়িতে যাব। ওদের সরিয়ে আনা জরুরি, ডিনামাইট ফাটলে সবার আগে ওরাই বিপদে পড়বে।

ঠিক আছে, যাও। স্টোনের কণ্ঠে স্পষ্ট স্বস্তির ছাপ।

হাঁটতে হাঁটতে সোনিয়াদের বাড়ির দিকে এগোল ফ্যারেল। মাঝে মাঝে গ্রে বাট পাহাড়ের দিকে চাইছে। ইচ্ছে করছে ছসাতজন লোক নিয়ে গা ঢাকা দিয়ে এগিয়ে যায়, শেষ করে দিয়ে আসে ওদের। কিন্তু ভীষণ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যাবে কাজটা। চেষ্টা করলে শদুয়েক গজ কাছাকাছি যাওয়া যাবে হয়তো, তারপরই ওদের চোখে ধরা পড়তে হবে। আত্মরক্ষার জন্যে স্রেফ চাতালের ওপর শুয়ে পড়বে ওরা, তারপর আগুন লগিয়ে দেবে ডিনামাইটের, ফিউজে। সর্বনাশ হয়ে যাবে।

কিন্তু রাতেভাবল ক্লিফটেইল বেয়ে উঠে আচমকা হামলা চালিয়ে ঘোডাঅলাকে বন্দী করে…হ্যাঁ, সম্ভব তারপর-চাতালে উঠে বাকি দুজনকেও পাকড়াও করা যাঝে…কিন্তু ব্যর্থতার সমূহ আশঙ্কাঅন্য কোনও উপায় দেখতে হবে।

একটা চটের বস্তা আর দুটো ক্যান্টিন নিয়ে ম্যাট রেগান ট্রেইল ধরে এগিয়ে যাচ্ছে, দেখ ক্লিফ। চাতালের নীচে ঢালের মাথায় ঘোড়া থামিয়ে স্যাডল থেকে নামল ম্যাট। ওপর থেকে রশি নেমে এল, খানিক পরেই বস্তা আর ক্যান্টিনসহ উঠে গেল, আবার।

আবার ঘোড়ায় উঠে বসল ম্যাট রেগান। ফিরতি পথ ধরল। সোনিদের বাড়ির ঠিক সামনে মুখোমুখি হলো ওরা।

কী ঠিক করলে, ডেপুটি? জিজ্ঞেস করল ম্যাট।

কিছু না, আমি জানি, ল্যুক যতক্ষণ জেলে আছে, ডিনামাইট ফাটানোর ঝুঁকি তোমরা নেবে না। তাহলে তাকেও মরতে হবে।

এতটুকু ম্লান হলো না ম্যাটের হাসি, তবে দুচোখের দৃষ্টিতে কাঠিন্য ফুটল। তোমার ঘাড়ের রগ কী করে সোজা করতে হবে আমি জানি।

তা হলে আর কী, চেষ্টা করো!

জবাব দিল না ম্যাট, ঠাণ্ডা দৃষ্টিতে একবার ওর দিকে তাকাল, তারপর আবার নিজের পথ ধরল।

সোনিয়াদের দরজায় টোকা দিল ক্লিফ। দরজা খুলল সোনির মা। ক্রুদ্ধ চেহারা। কিন্তু সে মুখ খোলার আগেই বাধা দিল ক্লিফ। চুপ থাকুন! আপনার বকবকানি শুনতে আসি ন; এসেছি, জরুরি একটা কথা বলতে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বেরিয়ে পড়ুন এখান থেকে আপনাদের মাথার ওপর পাঁচ বাক্স ডিনামাইট আগলে দুই বদমাশ বসে আছে পাহাড়ে। ল্যুক রেগানকে না ছাড়লে পুরো গ্রে বাট ধসিয়ে দেয়ার হুমকি দিয়েছে ওরা।

 ফ্যাকাসে হয়ে গেল মিসেস ম্যাকনেয়ারের চেলা, চট করে ঘুরে দাঁড়াল। জুলস! সেনি! চিৎকার জুড়ে দিল সে, শিগগির এসো! তাড়াতাড়ি! শোনো ক্লিফ কী বলছে!

সিঁড়ি বেয়ে নীচে নামল সোনিয়া আর জুলস ম্যাকনেয়ার। একই কথার পুনরাবৃত্তি করল ক্লিফ। ব্যাকুল দৃষ্টিতে তাকাল সোনিয়ার দিকে। ওর দুচোখের তারায় এখন সেই শূন্যতা নেই। কিন্তু ক্লিফের দিকে সরাসরি তাকাল না সোনি।

এক্ষুনি বেরিয়ে যাব আমরা, বলল সোনির বাবা। আপাতত টেইলরদের ওখানেই উঠব।

ঈষৎ মাথা দোলাল ফ্যারেল। যত চাপই আসুক, নিশ্চিত থাকুন, ল্যুক রেগানকে ছাড়ছি না, বলল ও।

<

Super User