০৫.

মুসা তোমার বো চুরি করেনি, জোর দিয়ে বলল কিশোর।

করেছে! গর্জন ছাড়ল পুঁটকি। আর তুমি ওকে দিয়ে চুরিটা করিয়েছ!

আমি? বলল কিশোর।

শুঁটকি মাথা ঝাঁকাল।

 জি। তুমি যে শুধু কাঁচি চালাও তাই না, তুমি একটা চোরও!

 কিশোর ছোঁ মেরে মুসার হাত থেকে বো-টা কেড়ে নিল।

আমি যদি কাঁচি চালাই, তা হলে এটা কী?

শুঁটকির নাকের সামনে বো-টা দোলাচ্ছে, এসময় এক টুকরো কাগজ দেখতে পেল কিশোর-পিছনে স্ট্যাপল করা। ফ্যাশন হাউজের প্রাইস ট্যাগ।

একটু আগে কিনেছি ওটা, ঐ কুঁচকে বলল শুঁটকি। বাইরে এসে পরেছি। ওটা দিয়ে দাও বলছি!

আঙুলে বো-টার স্পর্শ নিল কিশোর। ওই কোটটার মত পুরু আর মোলায়েম নয়।

সরি, টেরি, বলে বো-টা বাড়িয়ে দিল কিশোর। আমরা আসল কাট আপকে ধরতে চাইছি বলে নাটকটা করতে হলো।

থাবা মেরে কেড়ে নিল জিনিসটা শুঁটকি।

তাকে ধরতে আবার এসব করতে হয় নাকি? আমি তো কাগজে সূত্র দিয়েই দিয়েছি।

ছেলেরা পরস্পর দৃষ্টি বিনিময় করল।

ইন ফ্যাক্ট, বলে নাক উঁচু করল বঁটকি। আমি ডয়েল নিউজকে ডেইলি পেপার করব ভাবছি। যাতে প্রতিদিন গসিপ কলাম লিখতে পারি।

খাইছে! আওড়াল মুসা।

শুঁটকি বো-টা বেঁধে নিল লম্বা চুলে। তারপর যার সঙ্গে এসেছিল, সেই মহিলাকে বেরোতে দেখে এগিয়ে গেল।

চলো, আমরা ফ্যাশন হাউজে যাই, প্রস্তাব করল কিশোর। মিরা হয়তো তদন্তের কাজে হেল্প করবে আমাদের।

কিন্তু ওরা যখন স্টোরের ভিতরে ঢুকল, মিরা ওদেরকে ক্লু দিতে রাজি হলো না।

একবার শুধু একটু উঁকি মেরেই চলে আসব, বলল রবিন।

 মাথা নেড়ে সাফ নিষেধ করে দিল মিরা।

এখন থেকে স্টকরূম বন্ধ থাকবে।

ও, আচ্ছা, বলল গোয়েন্দাপ্রধান। স্টোরের সামনের দিকে হেঁটে এসেছে, জুয়েলারি কাউন্টারের উপর একটা কাগজ চাপা দিয়ে রাখা হয়েছে দেখতে পেল। ডয়েল নিউজের একটা কপি।

তাই তো বলি, ফিসফিস করে বলল কিশোর। মিরাও আমাকে সন্দেহ করছে!

শুঁটকির মাথাটা ভেঙে দিতে ইচ্ছা করছে আমার! দাঁত কিড়মিড় করে বলল মুসা। ওকে হাতের কাছে পেলে দেখে নিতাম।

দোকান ত্যাগ করল ওরা। বাইরে এসে এক বেঞ্চির উপর বসল।

শুঁটকিকে সন্দেহ তালিকা থেকে বাদ দেয়া যায়, বলল গোয়েন্দাপ্রধান।

তারপরও দুজন থাকে, বলল রবিন। মিসেস হগার্ড আর কেন শিপটন।

কেন তোমার বাসার কাছেই থাকে, কিশোর, বলল মুসা। লাঞ্চের পর ওকে চেক করলে হয় না?

লাঞ্চের পর কিশোর তো প্রায়ই বাঘাকে নিয়ে হাঁটতে বেরোয়, বলল রবিন। ঠিক না, কিশোর?

মাথা ঝাঁকাল কিশোর। পরমুহূর্তে মাথায় একটা বুদ্ধি ঝিলিক দিয়ে গেল ওর।

মানি আর পেনি তো কুকুর ভালবাসে, তাই না? বন্ধুদের উদ্দেশে বলল।

হ্যাঁ, একসঙ্গে জানাল রবিন ও মুসা।

ওরা যখন বাঘাকে আদর করবে, সেই সুযোগে আমরা কেনের ওপর তদন্ত চালাব, বাতলে দিল কিশোর।

সাবাস! বলে উঠল মুসা।

.

কিশোরের বাসায় ফিরে এল তিন বন্ধু। মেরি চাচী রবিন ও মুসাকে খেয়ে যেতে বললেন। ওরা বাসায় ফোন করে অনুমতি নিয়ে নিল।

মেরি চাচীর বানানো টিউনা সালাদ স্যান্ডউইচ চিবোতে চিবোতে বেরিয়ে পড়ল তিন গোয়েন্দা। বাঘাকে নিয়ে হাঁটতে হাঁটতে চলে এল কেন শিপটনদের ব্লকে।

ওর ঘরটা সার্চ করতে না হলেই বাঁচি, বলল রবিন।

ওর পোষা ইগুয়ানার জন্য বলছ? জিজ্ঞেস করল কিশোর।

না, বলল রবিন। নাক টিপে ধরল। ওর মোজার দুর্গন্ধের জন্য।

ওরা গিয়ে দেখল মিসেস শিপটন বাগান পরিচর্যা করছেন। ওদেরকে দেখে হাসলেন ভদ্রমহিলা, বাঘাকে হাত বুলিয়ে আদর করলেন।

কেমন আছ তোমরা? কুশল জানতে চাইলেন।

ভাল, মিসেস শিপটন, বলল কিশোর। কেন, মানি, পেনি ওরা বাসায় আছে?

হ্যাঁ, জানালেন তিনি। মানি-পেনি উপরতলায় ফিঙ্গার পেইন্টিং করছে। কেন আছে পিছনের উঠনে। ও-ও আঁকাআঁকি করছি।

কেন কি তেলাপোকা আঁকছে? নাক কুঁচকে প্রশ্ন করল রবিন।

হ্যাঁ, বললেন মিসেস শিপটন। কালো রঙের কীসের ওপরে যেন।

কালো? চমকে গেল কিশোর।

মিসেস শিপটন, স্বাভাবিক গলায় বলল ও। আমরা কেনের সাথে একটু কথা বলে আসি?

মাথা নেড়ে সম্মতি দিলেন মিসেস শিপটন।

 বেশ তো, যাও না। ও খুশি হবে বন্ধুদের দেখলে।

বন্ধুদের  শুনে শ্বাস টানল মুসা, স্পষ্ট শুনতে পেল কিশোর।

 ধন্যবাদ, মিসেস শিপটন, বলল ও। শিকল ধরে টানল বাঘাকে।

বাড়িটাকে এক পাক দিয়ে পিছনে এল ওরা।

 ওই যে! গলা খাদে নামিয়ে বলল কিশোর।

ইজেল সামনে নিয়ে বসেছে কেন শিপটন। পাশে ছোট টেবিলের উপর। কাঁচের এক জার রাখা।

দিলে তো আলো বন্ধ করে, তিন গোয়েন্দা কাছিয়ে এলে বিরক্তির সুরে বলল কেন। আর আমার বিলিকেও ভয় পাইয়ে দিয়েছে তোমাদের কুকুরটা।

বিলি কে? কিশোরের প্রশ্ন।

কাঁচের জারটা দেখাল কেন। জারের ভিতরে ইয়া বড় এক তেলাপোকা।

 ঘেন্নায় নাক কুঁচকে গেল রবিনের।

লোকে বিলিকে পানির পোকা বলে, ব্যাখ্যা করল কেন। কিন্তু আমি ওকে স্রেফ একটা বড়সড় তেলাপোকা মনে করি।

কালো এক টুকরো জিনিসের উপর তেলাপোকাটাকে আঁকছে কেন দেখে নিল কিশোর।

নীচের দিকে চোখ গেলে আরেকটা জিনিস নজরে এল। কেন শিপনের পাশে একই ধরনের জিনিসের আরেকটা ছোটখাট তূপ।

কালো ভেলভেটের উপর আঁকছে নাকি, কেন? কিশোর জিজ্ঞেস করল।

 পেইব্রাশ তুলে ধরল কেন।

হতেও পারে, নাও হতে পারে, বলল।

 কিশোর হাত বাড়াল জিনিসগুলোর উপর।

 কোথায় পেয়েছ?

কেন শিপটন তার আগেই ধপ করে বসে পড়ল ওগুলোর উপর।

তাতে তোমার কী? পাল্টা প্রশ্ন করল।

 মুসা এগিয়ে এল কেনের কাছে।

গতকাল ফ্যাশন হাউজে যে ভেলভেটের কোটটা কাটা হয়েছে এগুলো সেই কাপড়।

তুমি কেটেছিলে ওটা, কেন? কিশোর জবাব চাইল।

 শ্রাগ করল ছেলেটি।

হয়তো, হয়তো নয়।

 বাঘা দৌড়ে গেল। কেন বসেছে, সেই আসনটা কামড়ে ধরে টানতে লাগল।

অ্যাই, সরাও ওকে! চেঁচিয়ে উঠল কেন।

কিশোর বাঘাকে সরিয়ে নেবে, এ সময় কারা যেন খিলখিল করে হেসে উঠল।

যমজ ভাইদেরকে ডাক দিল কেন শিপটন। কুকুরটাকে দেখে যাও।

ছেলেরা ঘুরে দাঁড়াল। যমজ ভাইরা বাড়ির পিছন থেকে উঁকি দিয়ে দেখছে।

 পরমুহূর্তে কুকুর দেখে সোৎসাহে ছুটে এল।

সভয়ে শ্বাস চাপল কিশোর। রঙমাখা হাত নিয়ে ছুটে আসছে দুভাই।

.

০৬.

করো কী! করো কী! চেঁচিয়ে উঠল কিশোর। কিন্তু কে শোনে কার কথা। বাঘাকে নানা রঙে রঙিন করার খেলায় মেতে গেল যেন দুভাই। শীঘি সবুজ, লাল, হলদে ডোরা আঁকা হয়ে গেল বাঘার সারা গায়ে।

হয়েছে, হয়েছে! বলে মুসা যমজদের টেনে সরিয়ে দিল।

কিশোর কেন শিপটনের পেইন্টিংটা কেড়ে নিয়ে শূন্যে তুলে ধরল।

দিয়ে দাও বলছি! কেন গর্জে উঠল।

আগে বলো কালো কাপড়টা কোথায় পেয়েছ, বলল কিশোর।

বলছি, বলছি, দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল কেন। এত যখন শোনার শখ।

কালো জিনিসটা তুলে নিল কেন। ঝাড়া দিল বার কয়েক। অসংখ্য ফুটো দেখা গেল ওটার মধ্যে।

এটা ছিল আমার জাদুকরের আলখেল্লা, বলল ও। যখন আমি গ্রেট ম্যাজিশিয়ান হতে চাইতাম।

কাটলে কেন? রবিনের প্রশ্ন।

রেখে কী লাভ? বলল কেন। আমি তো এখন বড় শিল্পী।

কিশোর ভাল মত স্পর্শ করে দেখল কাপড়টা। ভেলভেট নয়। হতাশ হয়ে পড়ল ও।

এবার দয়া করে আমাকে একটু কাজ করতে দাও, বলল কেন শিপটন। কালকে বিকেলে আমার প্রথম আর্ট শো কিনা।

শিয়োর, বিমর্ষ কণ্ঠে বলল কিশোর।

আমরা তোমাকে আর বিরক্ত করব না, বলল মুসা।

বাঁচালে, হাঁফ ছেড়ে বলল কেন শিপটন।

কেন আর যমজদের কাছ থেকে বিদায় নিল তিন গোয়েন্দা। বাইরে বেরিয়ে এল।

কেন শিপটন একদম পরিষ্কার, বলে বাঘার দিকে চাইল কিশোর। কিন্তু বাঘা নয়। শুঁটকি শত্রু

এখন বাকি থাকলেন শুধু মিসেস হগার্ড, বলল রবিন।

এখনই যাব আমরা, কিশোর? মুসা জিজ্ঞেস করল।

মাথা নাড়ল গোয়েন্দাপ্রধান।

কালকে যাই, প্রস্তাব করল। বাঘাকে গোসল করাতে হবে তো।

নোংরা একটা থাবা মাথায় রাখল বাঘা, তারপর জোরে বার দুয়েক হুফ-হুঁফ করে উঠল।

.

একদম নড়বি না, চুপ করে বসে থাক! ইয়ার্ডে বাঘার গা ঘষছে কিশোর, চলে গেছে বাসায়।

বিশাল মেটাল বেসিনটা থেকে লাফিয়ে বেরিয়ে এল বাঘা। সারা গায়ে সাবা, মাখা।

হতাশ হয়ে মাথা নাড়ল কিশোর। লাল-হলুদ-সবুজ রং এখনও লেগে রয়েছে বাঘার লোমে।

ঠিক আছে, বাঘা, আমাকে গোসল করাতে দিলি না তো, বলল কিশোর, কালকে তোকে ড্যাশিং ডগ পেট সেলুনে নিয়ে যাব। তারপর দেখব বিদঘুঁটে রং নিয়ে ঘুরিস কী করে।

এই কথা শুনে বাঘা গা ঝাড়া দিল। ছিটকে সরে গেল কিশোর।

আর এসময় কার যেন তীক্ষ্ণ চিৎকার ওর কানে এল। মুখ তুলে চেয়ে দেখে সাবান-পানির ছিটে মেখে দাঁড়িয়ে রয়েছে রুডি মার্শ।

রুডি!

থ্যাংকস আ লট, কোনমতে আওড়াল রুডি। দিলে তো ধোয়া কাপড়টার বারোটা বাজিয়ে।

বাঘা আসলে বুঝতে পারেনি, সাফাই গাইল কিশোর।

কিন্তু তুমি পেরেছিলে,কাটখোট্টা জবাব দিল রুডি।

তারমানে?

তুমি বুঝেশুনে ঠাণ্ডা মাথায় কালো কোটটা কেটে দিয়েছিলে, বলল রুডি। কেননা তুমি ওটা পরতে পারেনি। রকি বীচের সব ছেলে-মেয়েরা এই কথাই বলছে।

চোখ বিস্ফারিত হয়ে গেল কিশোরের। গুজবটা এভাবে বাতাসের বেগে ছড়িয়ে পড়বে ভাবতে পারেনি ও।

ওরা ফালতু কথা বলছে, রুডি, বলল ও মৃদু কণ্ঠে। আমি কখনোই অমন ছোটলোকি কাজ করব না।

অথচ করেছ, চিবুক বাড়িয়ে দিয়ে বলল রুডি। এবং একাজে অন্যদের সাহায্যও নিয়েছ।

এক কপি ভেজা ডয়েল নিউজ তুলে ধরল রুডি।

পড়ে দেখো!

গসিপ ছাপা হয়েছে প্রথম পৃষ্ঠায়। জোরে জোরে পড়ল কিশোর: প্রিয় বন্ধুর জন্য কারা সব কিছু করতে প্রস্তুত? সূত্র দিচ্ছি: সাদা-কালো।

কান গরম হয়ে গেল গোয়েন্দাপ্রধানের। রবিন আর মুসার প্রতি ইঙ্গিত করেছে শুঁটকি।

একদম বাজে কথা! দৃঢ় কণ্ঠে ঘোষণা করল ও। কিন্তু রুডি মার্শ ততক্ষণে দুপ দাপ পা ফেলে গেটের দিকে চলেছে।

কিশোর হাঁটু গেড়ে বসে বাঘার ভেজা শরীরে হাত বুলোতে লাগল।

রহস্যটার কিনারা না করলেই নয়, মনে মনে বলল। শুঁটকি আমার প্রিয় বন্ধুদের ঘাড়েও দোষ চাপিয়েছে!

.

সে রাতে চাচা-চাচীর সঙ্গে ডিনারে বসে প্রসঙ্গটা তুলল কিশোর।

চাচা, শুঁটকি একটার পর একটা মিথ্যে গুজব রটাচ্ছে। কী করব আমি?

তোর উচিত মাথা গরম না করা, পরামর্শ দিলেন চাচা। চিকেনে গোলমরিচের গুঁড়ো ছিটালেন। সত্য কখনও চাপা থাকে না।

তোর চাচা ঠিক কথাই বলেছে, বললেন মেরি চাচী। দেখিস, মিথ্যে বেশিদিন টিকবে না।

দীর্ঘশ্বাস ফেলল কিশোর। ষড়যন্ত্রের জাল যত শীঘি ছিন্ন হয় ততই মঙ্গল।

.

পরদিন সকালে মুসা আর রবিনের সঙ্গে দেখা করল ও। বাঘাকে নিয়ে ড্যাশিং ডগ পেট সেলুনের উদ্দেশে রওনা হলো ওরা।

শুঁটকির এতদূর বাড় বেড়েছে যে সাদা-কালোর কথা পর্যন্ত তুলে ফেলেছে ক্রুJদ্ধ কণ্ঠে বলে উঠল রবিন।

ওর যা খুশি বলুক,বন্ধুকে শান্ত করার জন্য বলল মুসা। আমাদের কী?

মেইন স্ট্রীট দিয়ে হাঁটছে ওরা। সাইডওয়কে রঙিন চকে লেখা একটা মেসেজ চোখে পড়ল কিশোরের। লিখেছে; কিশোর পাশার নাম এখন থেকে কোট-কাটা কিশোর।

কিশোরকে মাথা নাড়তে দেখে ওর হাত চেটে দিল বাঘা।

 গুজবটা ওরা মেইন স্ট্রীটেও পর্যন্ত ছড়িয়ে দিয়েছে!

ড্যাশিং ডগে গিয়ে ঢুকল ছেলেরা।

কিশোর আগে এখানে আসেনি। গোলাপি রঙের আসবাব দিয়ে সাজানো সেলুনটা। সুন্দর সব কুকুরের ছবি সেঁটেছে দেয়ালে।

হ্যালো। আমার নাম রয়, ডেস্কের পিছনে বসা লোকটি বলল। কী দরকার বলো।

ইঙ্গিতে বাঘাকে দেখাল কিশোর।

লোকটি বহুবর্ণ বাঘার দিকে একদৃষ্টে চেয়ে রইল।

 এসময় দরজা খুলে গেল।

 আরে, মিসেস হগার্ড যে! বলে উঠল লোকটা। আসুন, আসুন।

 চরকির মত ঘুরে দাঁড়াল কিশোর।

দরজার কাছে, কোলে খুদে কুকুর দুটো নিয়ে দাঁড়িয়ে মিসেস হগার্ড।

কুকুর দুটোর গায়ে ছোট লাল কোট-আর গলায় দামি চকচকে কালো ভেলভেটের কলার!

.

০৭.

কিশোর, ফিসফিস করে বলল মুসা। দেখেছ?

উপরে-নীচে মাথা নাড়ল কিশোর। মিসেস হগার্ডের দিকে চেয়ে রয়েছে। ভদ্রমহিলা কথা বলছেন রয়ের সঙ্গে।

বেশ গরম লাগছে এখানে, বললেন মিসেস হগার্ড।

একেই বোধহয় বলে আগস্টের ডগ ডে, বলল রয়।

আমার কাছে সারা বছরই ডগ ডে! কুকুর দুটোকে বুকের সঙ্গে চেপে ধরে বললেন ভদ্রমহিলা।

জলদি লুকিয়ে পড়ো, কিশোর বলল বন্ধুদের উদ্দেশে। আমি চাই না উনি আমাদেরকে দেখে ফেলুন।

বাঘার শিকল ধরে টান দিল কিশোর। ঘাপটি মারল গোলাপি রঙের এক পর্দার পিছনে। ওর দেখাদেখি একই কাজ করল মুসা ও রবিন।

কিশোর! গলা নামিয়ে ডাকল রবিন। আমরা একা নই। দেখেছ!

ঘুরে তাকাল কিশোর। উঁচু টেবিলে বসে দুটো কুকুর। কোকড়াচুলো এক পুড়ল, আর তোয়ালে মোড়া এক বুলডগ।

শশ, কুকুর দুটোকে লক্ষ্য করে বলল কিশোর। ঠোঁটে আঙুল রেখেছে।

বিশ্বাস করতে পারো, মিসেস হগার্ডের কুকুরদের গলায় কালো ভেলভেটের কলার! মুসা ফিসফিসে কণ্ঠে বলল।

হু, মাথা ঝাঁকাল কিশোর। দেখা যাক, ঘটনা কদ্দুর গড়ায়।

হঠাৎ মৃদু এক গর্জন কানে এল ওদের। নীচের দিকে তাকাল কিশোর। ছোট্ট এক ইয়র্কি পর্দার আড়াল থেকে উঁকি দিচ্ছে।

মিসেস হগার্ডের ঝাড়ন, বলল মুসা। এই যা, ভাগ!

অপর ইয়র্কিটাও এসে উঁকি মারছে। গা গুঁকছে বাঘার। এবার ডাক ছাড়তে শুরু করল।

খাইছে!

কী হচ্ছেটা কী ওখানে? সামনে থেকে শোনা গেল রয়ের গলা।

বাঘা পাল্টা ঘেউ-ঘেউ করে পর্দার নীচ দিয়ে সঁত করে বেরিয়ে গেল। তিন গোয়েন্দা ওর পিছু-পিছু ছুটল।

বাঘা, ফিরে আয় বলছি! কিশোর হাঁক ছাড়ল।

খুদে ইয়র্কি দুটো বাঘাকে তাড়া করে বেড়াতে লাগল ওয়েটিং রূম জুড়ে।

এক মহিলা ম্যাগাজিন পড়ছিলেন, চেঁচিয়ে উঠলেন। এক ভদ্রলোক তাঁর চিহুয়াহুয়া চেপে ধরলেন বুকের সঙ্গে।

কুকুর তিনটে সোফা আর চেয়ার টপকে ছুটে বেড়াচ্ছে।

ওই, ধাড়ি কুকুরটা আমার সোনামণিদেরকে তাড়া করছে! তীক্ষ্ণ কণ্ঠে চেঁচিয়ে উঠলেন মিসেস হগার্ড।

ব্যাপারটা ঠিক তার উল্টো! বাঘাকে ধরার চেষ্টারত কিশোর বলল।

কুকুরগুলোর লাথি খেয়ে এদিক-সেদিক উড়ছে ম্যাগাজিন। কোনদিকে হৃক্ষেপ নেই ওদের। ঘরময় ছোটাছুটি করেই চলেছে। তার সঙ্গে সমান তালে চলেছে হাঁক-ডাক।

স্টপ! গর্জে উঠল রয়। ডাউন! হীল!

ইয়র্কি দুটো বাঘার গায়ে লাফিয়ে উঠে ঘেউ-ঘেউ করতে লাগল। বাঘা কেউ-কেঁউ করে নালিশ জানাল। শেষমেশ আর না পেরে দৌড়ে এসে আশ্রয় নিল কিশোরের কাছে। ওর মাথা চাপড়ে আদর করল কিশোর। ওদিকে মিসেস হগার্ড তার কুকুরছানাদের পরম আদরে কোলে তুলে নিলেন।

আমার সোনামণিদের কোট আরেকটু হলেই ছিঁড়ে দিয়েছিল ধাড়িটা, চোখ পাকিয়ে বললেন।

মুসার হাতে বাঘার শিকলটা ধরিয়ে দিল কিশোর। গিয়ে গেল মিসেস হগার্ডের কাছে।

কালো কলার দুটো কোথায় পেলেন, মিসেস হগার্ডঃ

তোমার চাই নাকি? জবাবটা দিল রয়। আরও আছে আমার কাছে।

 কিশোর ঘুরে দাঁড়াল।

আমার ডগি ফ্যাশন কালেকশনের কোট ওগুলো, জানাল রয়। আজ ডিসপ্লে দেব। বলে একটা বাক্স ডেস্কের নীচ থেকে টেনে বের করল।

বাক্সের ভিতর উঁকি দিল কিশোর। খুদে হ্যাট, সোয়েটার আর কোটে ঠাসা ওটা। অনেকগুলোরই দেখা গেল কালো ভেলভেটের কলার।

রয় কাল আমাকে এগুলো দেখিয়েছে, বললেন মিসেস হগার্ড। কালো ভেলভেটের কলারওয়ালা কোট দেখেই মনে ধরে যায় আমার।

তা হলে ফ্যাশন হাউজের কালো কোটটা কিনতে চাইছিলেন কেন? কিশোর প্রশ্ন করল।

ওটা তো দারুণ দেখতে, বললেন ভদ্রমহিলা। আমার নাতনীকে খুব মানাত।

আপনার নাতনী? বলে পকেট থেকে মুক্তার ইয়ারিংটা বের করে দেখাল কিশোর। কালকে এটা ফ্যাশন হাউজে পেয়েছি আমরা।

ইয়ারিং দেখে হাসলেন মিসেস হগার্ড।

কোটের সাইয দেখছিলাম, বললেন। তখন হয়তো পড়ে গেছে। স্টকরূমে তখন আমি ছাড়া কেউ ছিল না।

আচ্ছা, তা হলে ব্যাপারটা এই, মনে মনে বলল কিশোর। ইয়ারিংটা ফিরিয়ে দিল।

আচ্ছা, চলি, বললেন মিসেস হগার্ড। রয়কে দেখাতে এসেছিলাম আমার সোনামণিদের নতুন পোশাকে কেমন দেখাচ্ছে।

সেলুন ত্যাগ করছেন তিনি, খুদে কুকুর দুটো শেষবারের মত ঘেউ-ঘেউ করে গেল বাঘার উদ্দেশে।

আমার কাছে চমৎকার এক ডেনিম জ্যাকেট আছে, বলে হাতে হাত ঘষল রয়। বাঘাকে খুব মানাবে। দেখাব?

দরকার নেই, জানাল কিশোর। গোসল করালেই ওর রূপ খুলে যাবে।

বাঘার শিকল ধরল রয়।

এক ঘণ্টা পরে এসে নিয়ে যেয়ো।

ড্যাশিং ডগ ত্যাগ করল ছেলেরা।

মিসেস হগার্ডও ফসকে গেল, হতাশ কণ্ঠে বলল রবিন। এখন আর বাকি থাকল কে?

নীচের ঠোঁটে চিমটি কাটল গোয়েন্দাপ্রধান।

কেউ না। অথচ যা করার শীঘি করতে হবে, বলল। নইলে শুঁটকি যাতা কথা লিখতেই থাকবে।

মেইন স্ট্রীট ধরে হাঁটছে, ছোটখাট এক জটলা চোখে পড়ল ওদের।

কী হচ্ছে ওখানে? মুসা জিজ্ঞেস করল।

আর্ট শো, বলে কাছিয়ে গেল কিশোর।কেন শিপটনের আর্ট শো!

সাইডওয়কে সারি দিয়ে রাখা কেনের আর্টওয়র্ক। পিঁপড়ে, ফড়িং অবশ্যই বিলির ছবি শোভা পাচ্ছে সেখানে।

তুমি কোথা থেকে অনুপ্রেরণা পেয়েছ? এক লোক শিল্পীকে প্রশ্ন করল।

 বিলির কাঁচের জারটা উঠিয়ে দেখাল কেন।

পাথরের তলা থেকে।

কিশোর লক্ষ করল একটা পেইন্টিং অন্যগুলোর চাইতে আলাদা। পোকা মাকড়ের বদলে বাদামী-সাদা এক ছোপ।

রবিনেরও দৃষ্টি কেড়েছে ছবিটা।

কেউ মনে হয় পোকাটাকে মাড়িয়ে দিয়েছিল, বলল।

পোকার মত লাগছে না আমার কাছে, কিশোর বলল।কাছ থেকে খুঁটিয়ে পরখ করল। বাদাম আর চকোলেট চিপ ছিটিয়ে তৈরি করা হয়েছে প্রলেপটা। আইসক্রীম।

মুসা একদৃষ্টে চেয়ে রয়েছে ছোপটার দিকে।

খাইছে! পাণ্ডা বার আইসক্রীম! চেঁচিয়ে উঠল ও।

আর খেয়াল করে দেখো, বলল কিশোর। ছবিটার নীচে কেন, শিপটনের সই নেই। আছে মানি আর পেনির।

কালো পটভূমিটা পরিচিত ঠেকল কিশোরের চোখে। হাত বাড়াল ছোঁয়ার জন্য। পুরু আর মোলায়েম।

রবিন। মুসা! উত্তেজিত কণ্ঠে বলে উঠল কিশোর। এটাই সেই কালো কোটের ভেলভেট!

.

০৮.

 খপ করে কে যেন চেপে ধরল কিশোরের কব্জি। চেয়ে দেখে মানি। হাসছে কান অবধি।

হাত ছাড়িয়ে নিল কিশোর। পাণ্ডা বার আইসক্রীমের ছবিটা দেখিয়ে বলল, ওটা এল কোত্থেকে?

গর্বের হাসি হাসল মানি।

কেনের প্রদর্শনীতে সুযোগ পেয়ে ঢুকে পড়লাম।

তোমার পছন্দ হয়েছে? পেনি জিজ্ঞেস করল।

 না, সাফ জবাব দিল কিশোর। চেরি ভ্যানিলা পাণ্ডা বার হলে পছন্দ হত।

পরস্পর মুখ তাকালাকি করল যমজরা। চোখে হতাশা।

ওটা তো আইসক্রীমের দাগ, তাই না? গোয়েন্দাপ্রধানের কণ্ঠে কৈফিয়ত তলবের সুর।

না তো! ফস করে বলে দিল মানি।

 তা হলে কী ওটা? মুসার জিজ্ঞাসা।

উম…মেরু ভালুক, পেনি জানাল।

 কাদা-ধসের মধ্যে পড়ে গেছে, জোগান দিল মানি।

 কিশোর কালো ভেলভেটের দিকে আঙুল তাক করল।

বুঝলাম, কিন্তু ওই কালো ভেলভেট এল কোত্থেকে?

 এটাই তো সেই ফ্যাশন হাউজের কোটের কাপড়টা, জোর দিয়ে বলল রবিন।

যমজরা গা ঘেঁষাঘেঁষি করে দাঁড়াল। চোখে-মুখে আতঙ্ক।

মানি, পেনি, ফালতু প্রশ্নের জবাব দেয়ার দরকার নেই। হঠাৎ শোনা গেল পরিচিত এক কণ্ঠ।

চরকির মত ঘুরে দাঁড়াল কিশোর। পিছনে দাঁড়িয়ে শুঁটকি টেরি স্বয়ং।

সবাই জানে কিশোর পাশা কোটটা কেটেছে, বলল গোটা শহরে রটে গেছে এ কথা।

তোমার সৌজন্যে, ফোড়ন কাটল রবিন।

শুঁটকি প্লাস্টিকের মানিব্যাগ বের করল।

ছবিটা কিনব আমি। বিছানার পাশে ঝুলিয়ে রাখব।

খবরদার! গর্জে উঠল মুসা। তুমি ছবিটা কিনতে পারবে না। তুমি চাইছ সরাই যাতে মনে করে তোমার কথাই ঠিক-কিশোরই কোটটা কেটেছে। তোমার শয়তানী আমাদের বুঝতে বাকি নেই, শুঁটকি

কী সব উল্টোপাল্টা বকছ! বলে উঠল শুঁটকি।

মানি হাত পেতে দিল শুঁটকির সামনে।

পঞ্চাশ সেন্ট।

একমাত্র প্রমাণ হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে দেখে বিচলিত হয়ে পড়ল রবিন। অসহায়ের মত চেয়ে রয়েছে কিশোরের মুখের দিকে।

গটগট করে এসময় কেন শিপটনের কাছে পৌঁছে গেল মুসা।

ওটা দাও দেখি, বলে ছোঁ মেরে জারটা কেড়ে নিল ওর হাত থেকে।

আরে, করো কী? হাহাকার করে উঠল কেন। বিলি আমাদের শোয়ের সুপারস্টার। মোনালিসার মত।

অ্যাই, শুঁটকি, জারটা তুলে ধরে বলল মুসা। বিলিকে হ্যালো বলো। নইলে দেব গায়ে ছেড়ে।

বি-বি-বিলি? তোতলাচ্ছে রীতিমত শুঁটকি।

কিশোর আর রবিন ওর পিছনে দাঁড়ানো।

বিলি সারা সপ্তা জারের ভিতর রয়েছে, বলে ঢাকনা খুলতে শুরু করল। মনে হয় পাণ্ডা বার আইসক্রীম চাখতে ওর খারাপ লাগবে না।

শুঁটকি বিলির দিকে চেয়ে রয়েছে। চিবুক কাঁপতে শুরু করল হঠাৎ। পাণ্ডা বার পেইন্টিংটা খসে পড়ল হাত থেকে। পরমুহূর্তে বাপরে বলে চিৎকার করে উঠল।

দাঁড়াও, দাঁড়াও। শুঁটকিকে লেজ গুটিয়ে পালাতে দেখে চেঁচিয়ে উঠল মানি। ছবি কিনবে না?

ইতোমধ্যে কেন শিপটন এসে জারটা নিয়ে নিয়েছে মুসার হাত থেকে। কিশোর যমজদের কাঁধ জড়িয়ে ধরল।

ব্যাপারটা কী বলো তো, ভাইয়ারা, আদরের সুরে বলল। সত্যি কথা বললে তোমাদেরকে আইসক্রীম কিনে দেব।

মুখ উজ্জ্বল হয়ে উঠল যমজদের। কিশোরকে ওরা বিশ্বাস করে।

বলছি, বলল মানি। মিরা ম্যাডাম মিনি ফ্রিজে পাণ্ডা বর রাখতে বলেছিল। কিন্তু আমাদের মাথায় শয়তানী চাপল কোটটা আইসক্রীম মাখিয়ে নষ্ট করব।

তারপর? তাগিদ দিল কিশোর।

সবাই যখন লাল কার্পেটে প্র্যাকটিস করছে, আমরা স্টকরূমে ফিরে গিয়ে ফ্রিজ থেকে পাণ্ডা বার বের করি, বলল মানি।

তারপর কোটে আইসক্রীম ঘসে দাও, বলল মুসা।

হ্যাঁ, পেনি বলল। পরে ধরা পড়ে যাওয়ার ভয়ে আমরা কাঁচি দিয়ে কোটটা কেটে দিই।

কিশোর বলল, যাতে কোটে আইসক্রীম লেগে থাকতে দেখে কেউ তোমাদের ধরতে না পারে! এমনকী গন্ধও যেন না পায়।

হ্যাঁ, বলল মানি। টুকরোটা আমি প্যান্টের পকেটে ঢুকিয়ে রাখি। সেজন্যেই এখন কাপড়টার গায়ে দাগ দেখতে পাচ্ছ।

কেন শিপটনের দিকে ঘুরে দাঁড়াল কিশোর।

তুমি জানতে তোমার ভাইরা এ কাজ করেছে?

নাহ, কথাটা স্রেফ উড়িয়ে দিল কেন। আমি ভেবেছি ওটা ফিঙ্গার পেইন্টিং।

যমজদের হাতের দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি হানল কিশোর। রঙিন চকের গুঁড়ো লেগে রয়েছে আঙুলে আর তালুতে।

তোমরা দেয়ালে আমার সম্পর্কে আজেবাজে কথা লিখেছ, ঠিক না?  

মাথা নিচু করে ফেলল যমজরা।

বিশ্বাস করো, বলল মানি, টেরির কথায় আমরা তোমার নামে ওসব লিখেছি। যাতে তোমার ওপর সবার সন্দেহ আরও বেশি করে পড়ে। আমাদের কোন দোষ নেই।

তোমাদের খেল খতম, কঠিন গলায় বলল মুসা। এখনই মিরার কাছে গিয়ে সব খুলে বলবে তোমরা?

তা হলে তো আর কখনও মডেল হতে পারব না! পেনি ভয়ার্ত কণ্ঠে বলে উঠল।

মানি হাত নেড়ে কথাটাকে উড়িয়ে দিল।

তাতে বয়েই গেল। ওই সোয়েটারগুলো ভীষণ কুটকুট করে।

তিন গোয়েন্দা যমজদেরকে সোজা ফ্যাশন হাউজে নিয়ে এল। দুই অপরাধী মিরার সামনে দাঁড়িয়ে অকপটে সব স্বীকার করল।

তোমরা তো দোষ করেছই, বলল মিরা। আমিও কম দায়ী না। খামোকা কিশোরকে সন্দেহ করেছি। তাছাড়া আমার উচিত ছিল সর্বক্ষণ ঘরটা পাহারা দেওয়ার ব্যবস্থা করা।

মাফ-টাফ চেয়ে নিল যমজরা। তারপর কিশোরের কাছ থেকে আইসক্রীমের পয়সা নিয়ে এক ছুটে বেরিয়ে গেল দোকান ছেড়ে।

এত সুন্দর কোটটা নষ্ট হয়ে গেল, বলল রবিন, খারাপ লাগছে!

ভেবো না, বলল মিরা। রকি বীচে অমন কোট অনেক দেখতে পাবে তোমরা।

তাই? কিশোর অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করল।

মৃদু হাসল মিরা।

হ্যাঁ, ফ্যাশন শো-র পরে পাঁচটা কোটের অর্ডার পেয়েছি। ফুটো ছাড়া অবশ্য।

হেসে ফেলল তিন গোয়েন্দা।

দোকান থেকে বেরিয়ে এল ওরা। স্বস্তি বোধ করছে কিশোর। মস্ত বড় এক পাথর যেন নেমে গেছে বুকের উপর থেকে।

শুঁটকিকে ফোন করে এখনই সব জানানো দরকার, বলল রবিন। যাতে আজেবাজে লেখা বন্ধ করে।

প্রস্তাবটা নিয়ে দুমুহূর্ত ভাবল গোয়েন্দাপ্রধান। তারপর মাথা নেড়ে নিষেধ করল।

দরকার কী, বলল। মিথ্যে যদি বাতাসের বেগে রটতে পারে, তবে সত্যিটাও জানাজানি হতে দেরি হবে না।

আজকের দিনটা পিযা প্যালেসে সেলিব্রেট করবে ঠিক করল ওরা।

কিন্তু তার আগে ড্যাশিং ডগ থেকে বাঘাকে নিয়ে আসি চলো, বলল রবিন। ড্যাশিং ডগের দিকে হাঁটা দিল তিন গোয়েন্দা।

Super User