জানি বেশ কিছুকাল ধ’রে
কী একটা উৎসব মতো
চলছে তোমার ওখানে।
তুমি আমাকে ডাকোনি। অবিশ্যি সেজন্যে আমার হৃদয়
বিলাপ-কাতর নয় আদৌ।

উৎসব শব্দটি উচ্চারিত হলেই
আমি দেখতে পাই এক গুচ্ছ ডাগর গোলাপ,
স্রোতে ভাসমান দীপের মতো
কয়েকটি মুখ, শুনি সরোদের তান
মনে মনে আমি সাজিয়ে নিচ্ছি
কিছু ঝলমলে দৃশ্য-কেউ একজন এল, যার পরনে
সাফারি স্যুট, শীতলপাটির মতো
পরিপাটি চুল, কেউ চলে যাচ্ছে গলগলে ধোঁয়া উড়িয়ে।
এই মুহূর্তে আমি ভাবছি
পাপড়িহীন কিন্তু সৌরভময় কোনো গোলাপের কথা,
করুণ অথচ গীতনিষ্ঠ একটি পাখির কথা এবং
আমার মনে হলো, এখানেই শেষ হলে ছিল ভালো।

আমন্ত্রহীন তোমার ঘরে ঢুকেই দেখি তুমি সোফায়
বসে আছো আলস্যামদির ভঙ্গিতে।
তোমার চুল খোলা, হাতে
সায়ান্স ফিকশন। দেবব্রত ছড়িয়ে দিচ্ছেন ব্যাকুলতা।

টেবিলে কয়েকটি গ্লাশ, ত্র্যাশট্রে উপচে-পড়া
আধপোড়া সিগারেট আর ছাই। এই গৃহে
এমন দাহ, আমার জানা ছিল না। সেই মুহূর্তে আমার চোখ
ইকারুসের চোখ, আমার বাহুমূলে ওর উচ্চাকাঙ্ক্ষী ডানা।

Shamsur Rahman।। শামসুর রাহমান