বহু বছর আগে লিখেছিলাম এক সনেটে-
‘যে-তুমি আমার স্বপ্ন, অন্নজল, অস্তিত্বের গান।
কার উদ্দেশে রচিত হয়েছিল সেই পঙক্তি,
আজ আর স্পষ্ট মনে পড়ে না। কোন এক কুহকিনী
সেই পঙক্তি গলায় দুলিয়ে দমকা হাওয়ার মতো
মিলিয়ে গেছে ঘন কুয়াশায়। আমার কয়েকটি দিন
লুট করে সে উধাও। তার অনুপস্থিতি পারেনি
আমার কাছ থেকে ছিনিয়ে নিতে অশ্রুকণা অথবা দীর্ঘশ্বাস।

আজ এতকাল পরে তুমি, হ্যাঁ তুমি,
পা রেখেছে আমার ধূসর প্রাঙ্গণে, রঙ বেরঙের
অনেক পাখি উড়িয়ে দিয়েছ আমার আকাশে, তোমার শরীর
বীণা হয়ে বেজে উঠেছে আমার অন্তরে।
প্রথম যেদিন তোমাকে দেখলাম আমার জীবনের
সবচেয়ে আশ্চর্য বিকেলে, সেদিনই মনে হলো
আমার পুরনো কবিতার সেই পঙক্তি, সেই নৈবেদ্য
একান্ত তোমারই প্রাপ্য, আর কারো নয়। কেন আমি আগে
সেই শব্দমালার অপব্যবহারে মেতে উঠেছিলাম? আমার সেই
উপব্যবহার মার্জনায় ধুয়ে পঙক্তিটি তুমি নিত্যনতুনরূপে গ্রহণ করো প্রিয়তমা।
নিউইয়র্ক, ২৫/৮/৯৫

Shamsur Rahman।। শামসুর রাহমান