সন্ধ্যা হয়-হয় এমন সময় বিকাশ আসিল‌, বলিল‌, ‘খবর আছে স্যার।’

বিকাশ‌, গুপীকেষ্ট‌, বাবুই ও চিচিং নামধারী চারিটি যুবক যে বোমকেশের পক্ষ হইতে টিকটিকির কাজ করিতেছে‌, তাহা ভুলিয়া গিয়াছিলাম। মনটা অগ্রবর্তী হইয়া কটকের দিকে ছুটিয়াছিল।

তিনজনে ঘন-সন্নিবিষ্ট হইয়া তক্তপোশের উপর বসিলাম। বিকাশ বলিল, ‘চীনেম্যানটা বড় জ্বালিয়াছে স্যার।‘

‘চীনে ম্যান!’

ওই যে আপনার রবিবর্মা। নাক-মুখ-চোখ চীনেম্যানের মত; নিশ্চয় লুকিয়ে লুকিয়ে আরশোলা খায়।‘

‘বিচিত্র নয়। তারপর বল, জ্বালিয়েছে কি ভাবে?’

‘কদিন ধরে লোকটার পিছনে লেগে আছি, তা একবার কি এদিক-ওদিক যাবে! না, বাড়ি থেকে অফিস, আর অফিস থেকে বাড়ি। হয়রান হয়ে গিয়েছিলাম স্যার। তারপর আজ—‘

‘আজ কী হয়েছে?’

‘অন্যদিন পাঁচটার সময় অফিস থেকে বেরোয়, আজ সাড়ে চারতের সময় বেরুলো। বাড়ির দিকে গেল না, বৌবাজারের বাসে উঠল। আমিও উঠলাম। লোকটার মনে পাপ আছে বেশ বোঝা যায়, বারবার পিছু ফিরে চাইছে। আমি ঘাপটি মেরে আছি। শেষে শিয়ালদার কাছাকাছি এসে রবিবর্মা টুক করে নেমে পড়ল। আমিও নামলাম।

‘আপনি লক্ষ্য করেছেন বোধহয় ঐখানে একটা হোটেল আছে—নাম ইন্দো-পাক হোটেল। তিনতলা বাড়ি, কিন্তু একটু ঘুপ্‌সি গোছের। যারা পাকিস্তান থেকে যাওয়া-আসা করে, তারাই বেশির ভাগ এই হোটেলে ওঠে। নীচের তলায় রেস্তরাঁ, মুর্গী-মটম চলছে, ওপরতলায় থাকবার ঘর। রবিবর্মা হোটেলে ঢুকে পড়ল।

‘রেস্তরাঁয় হট্টগোল চলছে, রবিবর্মা সেদিকে গেল না। পাশের একটা অন্ধকার সিঁড়ি দিয়ে চুপি চুপি ওপরে উঠে গেল।

‘আমিও গেলাম। সিঁড়ি যেখানে দোতলায় গিয়ে তেতলার দিকে মোড় ঘুরেছে, সেখানে সরু গলির মস্ত একটা বারান্দা, তার দু’পাশে সারি সারি ঘরের ঘর; মাথার ওপর ধোঁয়াটে একটা বাল্‌ব ঝুলছে। আমি সিঁড়ির মোড় থেকে উঁকি মেরে দেখলাম রবিবর্মা কোণের দিকের একটা ঘরের দরজা চাবি দিয়ে খুলছে। দরজা কিন্তু খুলল না; তখন রবিবর্মা চাবির গোছ থেকে আর একটা চাবি বেছে নিয়ে তালায় পরালো, কিন্তু তবু তালা খুলল না।

‘এই সময় তেতিলার দিক থেকে সিঁড়ির ওপর পায়ের আওয়াঙ্গ হল, দু-তিনজন ভাড়াটে নেমে আসছে। আমি তখন এমন ভাব দেখালাম যেন আমি দোতলায় থাকি, পকেট থেকে চাবি বার করতে করতে একটা ঘরের সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম; রবিবর্মা চট করে চাবির গোছা পকেটে-পুরে নীচে নেমে গেল; আমিও তার দরজাটা এক নজরে দেখে নিয়ে তাঁর পিছু নিলাম।

‘তারপর রবিবর্মা সটান বাড়ি ফিরে গেল। তাকে বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে আসছি।‘

বোমকেশের চক্ষু কিছুক্ষণ অন্তর্নিমগ্ন হইয়া রহিল।

‘ইন্দো-পাক হোটেল—হেনা পাকিস্তানের মেয়ে ছিল—রবিবর্মা—‘ বিকাশের দিকে চোখ তুলিয়া ব্যোমকেশ বলিল, ‘ঘরের নম্বরটা লক্ষ্য করেছিলে?’

বিকাশ বলিল, ‘হ্যাঁ স্যার; দোরের মাথায় পেতলের নম্বর মারা ছিল—৭ নম্বর।‘

‘৭ নম্বর!’ ব্যোমকেশের চোখ ধক করিয়া জ্বলিয়া উঠিল।

‘হ্যা স্যার, ৭ নম্বর।‘

ব্যোমকেশ আবার চক্ষু মুদিয়া ধ্যানস্থ হইয়া পড়িল; আমারও মনে হইল সাত নম্বর কথাটা কোথায় যেন শুনিয়াছি, হঠাৎ স্মরণ করিতে পারিলাম না। বিকাশ চুপি চুপি আমাকে জিজ্ঞাসা করিল, ‘৭ নম্বরের কোন মাহাত্ম্য আছে নাকি স্যার?’

কোমকেশ চক্ষু খুলিল, বিকাশের কাঁধে হাত রাখিয়া বলিল, ‘তুমিই আমাদের মধ্যে সবচেয়ে কাজের লোক! কিন্তু কাজ এখনো শেষ হয়নি। তুমি ইন্দো-পার্ক হোটেলে ফিরে যাও, ৭ নম্বর ঘরের সামনে পাহা্রা দাও। আমরা আধা ঘন্টার মধ্যেই যাচ্ছি।’

‘আচ্ছা স্যার।’ বিকাশ চলিয়া গেল।

ব্যোমকেশ পাশের ঘরে উঠিয়া গিয়া ফোন তুলিয়া লইল। সংযোগ স্থাপিত হইলে বলিল‌, ‘এ কে রে? আমি ব্যোমকেশ…একটু দরকার আছে..হেনার চাবির গোছা তোমার কাছে আছে তো?…বেশ বেশ। আমরা এখনি তোমার কাছে যাচ্ছি‌, চাবির গোছোটা দরকার…সাক্ষাতে বলব…তুমি যদি আমাদের সঙ্গে আসতে পারো তো ভাল হয়…বেশ বেশ‌, আমরা এখনি যাচ্ছি।’

ফোন রাখিয়া দিয়া সে বলিল‌, ‘চল‌, আজ রাত্রেই হেনা-রহস্যের সমাধান হবে মনে হচ্ছে।’

এতক্ষণে মনে পড়িল হেনার চাবির গোছায় একটা চাবিতে ৭ নম্বর ছাপ মারা ছিল।

এ কে রে-কে ট্যাক্সিতে তুলিয়া লইয়া আমরা আন্দাজ আটটার সময় ইন্দো-পাক হোটেলের সম্মুখে উপস্থিত হইলাম। পথে একবার মাত্র কথা হইল‌, এ কে রে বলিলেন‌, ‘আমি কিন্তু এখন পুলিস নই, স্রেফ তোমার বন্ধু।’

ব্যোমকেশ বলিল, ‘তাই সই।‘

দোতলার সিঁড়ির মুখে বিকাশ রেলিংয়ে ঠেস দিয়া দাঁড়াইয়া ছিল, আমাদের দেখিয়া খাড়া হইল। ব্যোমকেশ চুপি চুপি তাহাকে জিজ্ঞাসা করিল‌, ‘সাত নম্বর ঘরের খবর কি?’

বিকাশ বলিল‌, ‘ভাল। আর কেউ আসেনি।’

‘হোটেলের ম্যানেজার কোথায় থাকে জানো?’

‘ঐ ঘরে!’ বিকাশ সামনের ঘরের দিকে আঙুল দেখাইল।

ব্যোমকেশ এ কে রে-র দিকে দৃষ্টি ফিরাইল : চোখে চোখে কথা হইল। এ কে রে ঘাড় নাড়িয়া ম্যানেজারের ঘরের বন্ধ দ্বারে টোকা দিলেন।

দ্বার খুলিয়া একটি মধ্যবয়স্ক ব্যক্তি দাঁড়াইলেন। তাঁহার পিছনে আলোকিত ঘরটি দেখিতে পাইলাম‌, টেবিল-চেয়ার দিয়া সাজানো ঘর‌, ঘরে অন্য কেহ নাই‌, কেবল টেবিলের ওপর একটি বোতল শোভা পাইতেছে।

এ কে রে বলিলেন‌, ‘আপনি হোটেলের ম্যানেজার?’

ম্যানেজার ঢুলু ঢুলু চক্ষে এ কে রে-র পোশাক অবলোকন করিয়া বলিলেন‌, ‘আজ্ঞে হ্যাঁ, আসতে আজ্ঞা হোক।’ বলিয়া তিনি আভুমি অবনত হইয়া অভিবাদন করিতে গিয়া গোঁত্তা খাইয়া পড়িয়া যাইতেছিলেন‌, এ কে রে তাঁহাকে ধরিয়া ফেলিলেন। বলিলেন‌, ‘আমি পুলিসের কাজে আসিনি। আপনার সঙ্গে আলাপ করতে এলাম।’

ম্যানেজারের কণ্ঠ হইতে বিগলিত হাসির খিকখিক আওয়াজ নিৰ্গত হইল। এ কে রে ঘাড় ফিরাইয়া ব্যোমকেশকে চোখের ইশারা করিলেন‌, পকেট হইতে হেনার চাবির রিঙ লইয়া তাহার হাতে দিলেন‌, তারপর ঘরে প্রবেশ করিয়া দ্বার ভেজাইয়া দিলেন। আমরা তিনজন বাহিরে রহিলাম।

ব্যোমকেশ বলিল‌, ‘এবার সাত নম্বর।’

সুড়ঙ্গের শেষ প্রান্তে সাত নম্বর ঘর। টিমটিমে বালবের আলোয় চাবি বাছিয়া লইয়া ব্যোমকেশ তালায় চাবি পরাইল। সঙ্গে সঙ্গে তালা খুলিয়া গেল। চাবিটা যে এই ঘরেরই এবং হেনার এই ঘরে যাতায়াত ছিল তাহাতে সন্দেহ রহিল না।

ঘর অন্ধকার। ঘরে পদার্পণ করিতে গিয়া মনে হইল একটা কালো হিংস্ব জন্তু ঘরের কোণে ওৎ পাতিয়া আছে‌, আমরা পা বাড়াইলেই ঘাড়ে লাফাইয়া পড়িবে। ব্যোমকেশ বলিল‌, ‘দাঁড়াও‌, দেশলাই বার করি।’

কিন্তু বিকাশ তৎপূর্বেই ঘরে প্রবেশ করিয়া দ্বারের পাশে হাতুড়াইয়া সুইচ টিপিল। দিপ করিয়া ঘরটা আলোকিত হইয়া উঠিল। আমরা ভিতরে গিয়া দ্বার ভেজাইয়া দিলাম।

ঘরের বদ্ধ বাতাসে সেঁতা-সেঁতা গন্ধ। একটি মাত্র জানালা বন্ধ। ঘরটি প্রায় নিরাভরণ; একদিকের দেওয়াল ঘেঁষিয়া একটি লোহার খাট নগ্ন অবস্থায় পড়িয়া আছে‌, অন্য দেওয়ালে একটি মধ্যমাকৃতি গোদরেজের স্টীলের আলমারি। আর কিছু নাই।

ব্যোমকেশের দৃষ্টি প্রথমেই স্টীলের আলমারির দিকে গিয়াছিল‌, সে চাবির রিঙ হইতে আর একটি চাবি লইয়া আলমারিতে লাগাইয়া পাক দিতেই কপাট খুলিয়া গেল। বিকাশ ও আমি ব্যোমকেশের পিছন হইতে ঝুঁকিয়া দেখিলাম–

আলমারির তিনটি থাক। নীচের দু’টি থাক খালি‌, উপরের থাকে একটি বই এবং রেক্সিনে বাঁধানো পুস্তকাকার একটি ফাইল রহিয়াছে। পিছন দিকে একটি কৃষ্ণবর্ণ বস্তু অস্পষ্টভাবে দেখা যাইতেছিল‌, ব্যোমকেশ হাত বাড়াইয়া সেটি বাহিরে আনিল। দেখা গেল সেটি একটি ভাঙা মাউথ-অর্গান।

মাউথ-অর্গানটি নাড়িয়া-চাড়িয়া ব্যোমকেশ আবার রাখিয়া দিল। তারপর বইখানি তুলিয়া লইল। জগজগে বাঁধানো কোয়াটো সাইজের বাংলা বই‌, মলাটে ফারসী লিপির অনুকরণে নাম লেখা আছে—ব্রুবাইয়াৎ-ই-ওমর খৈয়াম। ব্যোমকেশ পাতা উল্টাইয়া দেখিল উপহার-পৃষ্ঠায় লেখা আছে—শ্ৰীমতী মীনা ‘মাতাহারি’ প্রিয়তমাসু। তিন্নিম্নে উপহর্তার নাম দেখিয়া চমকিয়া উঠিলাম। নামটা একান্ত পরিচিত।

বইখানি আমার হাতে দিয়া ব্যোমকেশ রেক্সিন-বাঁধানো ফাইলটি হাতে লইল‌, সন্তর্পণে পাতা খুলিয়া আবার চট্ট করিয়া বন্ধ করিয়া ফেলিল। যতটুকু দেখিতে পাইলাম‌, মনে হইল কয়েকটি বাংলা হরফে লেখা চিঠি তাহার মধ্যে রহিয়াছে।

ব্যোমকেশ বলিল‌, ‘চল‌, এখানে আমাদের কাজ শেষ হয়েছে।’ দেখিলাম‌, তাহার চোখ উত্তেজনায় জ্বলজ্বল করিতেছে। ঘরের বাহিরে আসিয়া সে দরজায় তালা লাগাইল‌, বলিল‌,’এবার ম্যানেজারের সঙ্গে দেখা করা যেতে পারে।’

ম্যানেজারের ঘরে তখন আসর। জমিয়া উঠিয়াছে; নিঃশেষিত বোতলটি টেবিলের উপর গড়াইতেছে। এ কে রে একটি অর্ধ-পূর্ণ পাত্র হাতে লইয়া বসিয়া আছেন‌, ম্যানেজার হাত-জোড় করিয়া তাঁহাকে সনির্বন্ধ অনুরোধ করিতেছেন–’আর এক চুমুক স্যার‌, স্রেফ একটি চুমুক। আমার মাথার দিব্যি।’

আমরা প্রবেশ করিলে বোমকেশের সঙ্গে এ কে রে-র দৃষ্টি বিনিময় হইল‌, ব্যোমকেশ একটু ঘাড় নাড়িল। এ কে রে উঠিবার উপক্রম করিয়া বলিলেন‌, ‘আচ্ছা‌, আজ তাহলে–’

ম্যানেজার গদগদ হাস্য করিয়া বলিলেন‌, ‘তা কি হয়! ভদ্র মহো-মহোদয়েরা এসেছেন‌, এক চুমুক না খেয়ে যেতে পাবেন না। আমি আর এক বোতল ভাঙছি।’

তিনি আলমারির দিকে অগ্রসর হইলেন‌, ব্যোমকেশ বাধা দিয়া বলিল‌, ‘না না‌, আজ থাক‌, আর একদিন হবে। আচ্ছা ম্যানেজারবাবু্‌, আপনার ৭ নম্বর ঘরে কে থাকে বলুন দেখি?’

‘৭ নম্বর!’ ম্যানেজার কিছুক্ষণ চক্ষু মিটমিটি করিয়া বলিলেন‌, ‘ও ৭ নম্বর। একটি পাকিস্তানী ভদ্রলোক ভাড়া নিয়েছেন। ভারি মজার লোক! মাসে মাসে ভাড়া গোনেন‌, কিন্তু মাসের মধ্যে বড় জোর তিন দিন আসেন। আধা ঘন্টা থেকেই চলে যান। ভারি মজার লোক।’

‘তাঁর সঙ্গে কেউ আসে?’

ম্যানেজারের চোখে একটু ধূৰ্ততার ছায়া পড়িল‌, তিনি বলিলেন‌, ‘একটি পরী আসে।’

‘ভদ্রলোকের নাম কি?’

‘নাম!’ ম্যানেজার আকাশ-পাতাল চিন্তা করিয়া বলিলেন‌, ‘নামটা বিস্মরণ হয়ে গেছে। কিন্তু কুচ পরোয়া নেই‌, রেজিস্টারে নাম আছে।’

একটি বাঁধানো খাতা খুলিয়া তিনি বলিলেন‌, ‘ঠিক ধরেছি‌, যাবে কোথায়? এই যে ভদ্রলোকের নাম-ঢাকা পাকিস্তান ওমর শিরাজি।’ তিনি বিজয়োৎফুল্ল নেত্ৰে চাহিলেন।

ব্যোমকেশ বলিল‌, ‘ওমর শিরাজি। ধন্যবাদ–অশেষ ধন্যবাদ। আজ চলি‌, আবার একদিন আসব।’

ম্যানেজারের আর একটি বোতল ভাঙিবার সনির্বন্ধ প্রস্তাব এড়াইয়া আমরা নীচে নামিলাম। ব্যোমকেশ বিকাশের পিঠ চাপড়াইয়া বলিল‌, ‘তোমাদের কাজ শেষ হয়েছে। আজ বাড়ি যাও। শীগগির একদিন এস।’

বিকাশ প্রস্থান করিল। আমরা একটা ট্যাক্সি ধরিয়া এ কে রে-র থানার দিকে চলিলাম‌, তাঁহাকে পৌঁছাইয়া দিয়া বাসায় ফিরিব।

পথে যাইতে যাইতে এ কে রে বলিলেন‌, ‘ম্যানেজার ভদ্রতার অবতার‌, একেবারে নাছোড়বান্দা ভদ্রলোক‌, আমাকে এক পেগ খাইয়ে তবে ছাড়লো। আরো খাওয়াবার তালে ছিল। —যাহোক‌, তোমার কাজ হল?’

ব্যোমকেশ চাবি তাহাকে ফেরত দিয়া বলিল‌, ‘হল। তুমি কিছু জানতে চাও না?’

এ কে রে দৃঢ়ভাবে মাথা নাড়িলেন‌, ‘না।’

বাসায় ফিরিয়া ব্যোমকেশ প্রথমেই ওমর খৈয়ামের কাব্য ও চিঠির ফাইল সযত্নে দেরাজের মধ্যে চাবি বন্ধ করিয়া রাখিল। আমি প্রশ্ন করিলাম‌, ‘ওমর খৈয়ামকে তো চিনি‌, ওমর শিরাজি লোকটি কে?’

পুরনো খবরের কাগজটা টেবিলের ওপরেই ছিল‌, ব্যোমকেশ তাহার পাতা খুলিয়া আমাকে দেখাইল। পাকিস্তানী বিমান-দুর্ঘটনায় মৃতের তালিকায় নাম রহিয়াছে-ওমর শিরাজি‌, ন্যাভিগেটর।

রাত্রের আহারাদি সম্পন্ন করিয়া ব্যোমকেশ চিঠির ফাইল লইয়া বসিল।

Sharadindu Bandyopadhyay ।। শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়