এবার চলেছি নিজ দেশে
           ভারতের ছায়াতরুতলে
ধ্যানী যেথা মীলিত লোচন
           প্রকৃতিরে মানা দেয় হেসে
স্বামী যেন কামিনীরে বলে
“ওগো তুমি থাম কিছুখন |”

হে আমার নব আবিষ্কার
            হে মহান হে চির স্বাধীন
হে প্রেমিক মহা কারুণিক
            খোলো খোলো তব সিংহদ্বার
তুমি নহ কারো হতে দীন
            তুমি নহ ভিখারী ধনিক  |

তোমার উদার তরুতল
           তোমার সুঅনুগতা সতী
পতি সে মুক্তির তপে রত
           বনিতা ভাবিছে কত ছল
সে তব মানিনী প্রেমবতী |
           হে ভারত, কোথা তব ক্ষত ?

সুখে তুমি পরিয়াছ চীর
           মন তবু কটীবাসে নাই
তন্ময় রয়েছ শরবৎ
           কুশাসনে বসিয়াছ স্থির
কত না শতাব্দী ধরে তাই
           তব দ্বারে অতিথি জগৎ |

অতিথি দস্যুর ছদ্মবেশে
           আসে যায় শত শত বার
মুঠাভরে যত সোনা লয়
           তত সত্য লয় অবশেষে |
অফুরান তোমার ভান্ডার
           যত ধন যায় তত রয়

আমরা ভাবিয়া হই সারা
           সে মোদের ভাবনা বিলাস
তুমি দেব অজর অমর
           তোমারে রুধিতে নারে কারা
তোমারে টলাতে নারে ত্রাস
           অপমানে তুমি অকাতর |
হে ভারত, তোমার ধ্যানের
           তোমার তনয়ে করো ভাগী
মোরে দাও বীজমন্ত্র তব |
            অর্থহীন ধনের মানের
হব না হব না অনুরাগী
.             জনকের যোগ্য সুত হব |

Annada Shankar Ray ।। অন্নদাশঙ্কর রায়