তিন বন্ধু লাফিয়ে নেমে পড়ল ক্যানু থেকে।

বৃষ্টির তেজ বেড়েছে ইতোমধ্যে।

বানরটা বিদায় নিল। গাছ থেকে গাছে দোল খেয়ে, নদী তীর ধরে এগিয়ে চলল।

ডাক ছেড়ে তিন বন্ধুকে হাতছানি দিচ্ছে। আমাদেরকে ওর সাথে যেতে বলছে, বলল মুসা।

না! আমাদেরকে বিশেষ জিনিসটা খুঁজে বের করতে হবে। তারপর বাড়ি ফিরে যাব! বলল কিশোর।

ও আমাদের হেল্প করতে চায়! বলল রবিন। বানরটার পিছন পিছন দৌড় দিল।

রেইন ফরেস্টের ভিতরে অদৃশ্য হয়ে গেল ওরা দুজন।

রবিন! ডাকল কিশোর।

আকাশ কেঁপে উঠল বাজের শব্দে।

খাইছে! ও গেল কোথায়? বলল মুসা।

ওরা দুজন দৌড় দিল রবিন আর বানরটার পিছু পিছু। ঢুকে পড়ল অন্ধকার অরণ্যের ভিতরে।

বনভূমি আশ্চর্যজনকভাবে শুকনো।

মুখ তুলে চাইল কিশোর, এখনও বৃষ্টি হচ্ছে। কিন্তু বৃক্ষশীর্ষ বিশাল

এক ছাতার মত কাজ করছে।

রবিন? ডাকল কিশোর।

কিশোর! মুসা! রবিনের কণ্ঠ।

তুমি কোথায়? মুসা গলা চড়িয়ে বলল।

এখানে!

ওর কণ্ঠস্বর অনুসরণ করে তড়িঘড়ি এগোল কিশোর আর মুসা।

শীঘ্রি বানরটাকে খুঁজে পেল ওরা। দাঁত-মুখ খিচিয়ে ডাক ছেড়ে দোল খাচ্ছে গাছ থেকে।

বনের মেঝেতে হাঁটু গেড়ে বসে রয়েছে রবিন। বিড়ালছানার মত দেখতে খুদে এক জানোয়ারের সঙ্গে খেলা করছে।

খাইছে, এটা তো জাগুয়ারের বাচ্চা! বলে উঠল মুসা।

জাগুয়ার আমাজানের সবচাইতে বড় বাঘ।

ছানাটার থাবায় হাত বুলোচ্ছে রবিন। সোনালী পশম আর কালো ফুটি-ফুটি দাগ ওটার গায়ে।

বলো কী? বলে উঠল রবিন।

গররর! হঠাই ভয়ঙ্কর এক রক্তজমাট করা গর্জন উঠল।

পাঁই করে ঘুরে দাঁড়াল কিশোর।

এক গাছের আড়াল থেকে বেরিয়ে আসছে মা জাগুয়ার। মরা পাতার উপর দিয়ে পা টিপে টিপে এগোচ্ছে-সোজা রবিনকে লক্ষ্য করে।

নোড়ো না! ফিসফিস করে বলল কিশোর।

কাঠ-পুতুল হয়ে গেল রবিন। জাগুয়ারটা সন্তর্পণে এগোচ্ছে ওর দিকে।

খাইছে!

আচমকা গাছ থেকে সাঁ করে নেমে এল বানরটা। চেপে ধরল জাগুয়ারের লেজ!

বাঘটা গর্জে উঠে চরকির মতন ঘুরে দাঁড়াল।

রবিন লাফিয়ে উঠল।

বানরটা জাগুয়ারের লেজ ধরে আবারও টানল। এবার ছেড়ে দিয়ে পালাল।

জাগুয়ারটা লাফ দিল বানরটার পিছনে।

দৌড়াও, রবিন! চেঁচাল কিশোর।

রেইন ফরেস্ট ভেদ করে ছুটল তিন বন্ধু। জান নিয়ে পালাচ্ছে ওরা!

<

Super User