চোখ মেলল কিশোর।

বাতাসে গরম ভাব আর বাষ্প।

মনে হচ্ছে আমরা কোন ঝোপ-ঝাড়ের মধ্যে নেমেছি, বলল রবিন।

ট্রী হাউসের জানালা দিয়ে উকি মারছে ও। ওর পকেট থেকে মুখ। বের করেছে জেরি।

কিশোর আর মুসাও বাইরে তাকাল।

চকচকে সবুজ পাতার সাগরে নেমেছে ওরা। বাইরে ফুল, রঙবেরঙের প্রজাপতি, আর পাখি। ঠিক বইতে যেমন ছিল।

খাইছে, বলল মুসা। আমরা কোন গাছে নামলাম না কেন তাই ভাবছি। যেমনটা সব সময় নামি।

কে জানে, বলল রবিন। এখন চলো তাড়াতাড়ি মরগ্যানের জিনিসটা খুঁজে বের করি। বিরাট বড় কোন মাকড়সার খপ্পরে পড়ার

আগেই যাতে বাড়ি ফিরতে পারি।

দাঁড়াও। ব্যাপারটা অদ্ভুতই বটে, বলল কিশোর। ঝোপের মধ্যে নামলাম কেন বুঝছি না। একটু পড়ে দেখি।

ধুর, এসো তো, বলল রবিন। আমাদের এমনকী মইও লাগবে না। স্রেফ জানালা দিয়ে বেরিয়ে গেলেই হবে।

পকেটে জেরিকে ঢুকিয়ে রাখল রবিন। জানালা দিয়ে বের করে দিল এক পা।

দাঁড়াও! কিশোর রবিনের আরেক পা চেপে ধরল। ও পড়ল:

রেইন ফরেস্টের তিনটি স্তর। ঘন বৃক্ষশীর্ষ
সবচেয়ে উপরের স্তর তৈরি করে। প্রায়ই এর
উচ্চতা হয় ১৫০ ফীট। একে বলে অরণ্যের
শামিয়ানা। তারপর দ্বিতীয় স্তর,
এবং তারপর বনতল।

ফিরে এসো! চেঁচাল কিশোর। আমরা সম্ভবত মাটি থেকে দেড়শো ফীট ওপরে! এটা বনের শামিয়ানা!

বলো কী! বলল রবিন। সাত করে ঢুকে পড়ল ট্রী হাউসের ভিতরে।

আমাদেরকে মই ব্যবহার করতে হবে, বলল কিশোর। হামাগুড়ির ভঙ্গিতে বসল। মেঝের গর্ত থেকে পাতা সরাল। নীচের দিকে চাইল।

মইটা বিশাল এক গাছের ডাল-পালা ভেদ করে নেমে গেছে। কিন্তু অতদূর কিশোরের দৃষ্টি গেল না।

নীচে কী আছে কে জানে, বলল। সাবধান!

ব্যাকপ্যাকে রেইন ফরেস্টের বইটা ঢুকিয়ে রাখল ও। এবার পা রাখল দড়ির মইতে।

নামতে শুরু করল। রবিন আর মুসা অনুসরণ করল।

পাতা ভেদ করে নামতে হচ্ছে।

শামিয়ানার নীচের স্তরে চলে এল ও।

বনতলের দিকে চাইল। অনেক দূরে।

বাব্বা, ফিসফিস করে বলল।

বৃক্ষ শীর্ষের পৃথিবীর সঙ্গে এই পৃথিবীর বিস্তর ফারাক।

সূর্য আড়ালে, তাই এখানে বেশ ঠাণ্ডা। স্যাঁতসেঁতে আর নিস্তব্ধ পরিবেশ।

শিউরে উঠল কিশোর।

<

Super User