ভেসে চলেছে হাউসবোট।

ঝাঁপ দিয়ে পড়, চিৎকার করে বলল কিশোর। সাঁতরে উঠব।

নাআ! সময়মত নেতৃত্ব নিয়ে নিয়েছে মুসা। চুপ করে দাঁড়িয়ে থাক। দুজনেই।

জমে গেল যেন কিশোর আর রবিন।

স্রোত খুব বেশি, মুসা বলল। টেনে নিয়েই যাবে, বুঝতে পারছি। জরুরী কণ্ঠে নির্দেশ দিল, জলদি গিয়ে ওপরে ওঠ।

মুসাকে অনুসরণ করে ওপরের ডেকে উঠে এল দুজনে। ভয়ঙ্কর স্রোত। প্রতি মুহূর্তে এগিয়ে আসছে বাঁধটা।

বাক্স-টাক্স যা,আছে, সব জলদি ফেল পেছন দিকে, আবার বলল মুসা।

ফেলতে ফেলতে হাঁপিয়ে গেল ছেলেরা। সবে ফেলা শেষ করেছে, এই সময় আওয়াজ হল বোটের তলায়, ঘষা লেগেছে কোন কিছুর সঙ্গে। থেমে গেছে বোট। কিশোর বলল, আমরা…আমরা বাঁধের ওপর চলে এসেছি!

সামনে শুধুই শূন্যতা। অনেক নিচ থেকে কুয়াশা উঠছে, যেখানে পাথরের ওপর আছড়ে পড়ছে পানি। ঢোক গিলল রবিন, চেহারা ফ্যাকাসে। বাঁধের ওপর প্রায় ৰূলে থেকে দুলছে বোটটা, সেদিকে তাকিয়ে চোখ বন্ধ করে ফেলল কিশোর।

জোরে কেঁপে উঠল একবার বোট, ঝটকা দিয়ে আগে বাড়ল, তারপর আবার থেমে গেল। দুই ধার দিয়ে বয়ে গিয়ে ঝরে পড়ছে পানি।

গুড। বাঁধের ওপর আটকা পড়েছি আমরা, শান্তকণ্ঠে বলল মুসা।

চোখ মেলল কিশোর। পা বাড়াতে গেল।

না না, নড়ো না! তাড়াতাড়ি বাধা দিল মুসা।

থেমে গেল আবার গোয়েন্দাপ্রধান।

পেছনটা আটকেছে, মুসা বলল। জিনিসপত্র ফেলে ভারি করে ফেলেছি। আমাদেরও ভার রয়েছে। নাহলে আটকাত না। নিঃশ্বাস ফেলতেও ভয় পাচ্ছে ছেলেরা। চারপাশে তাকাল। বাঁধের কিনারে আটকেছে বোট, তীর দুদিকেই দশ ফুট দূরে। ঠিক মাঝখানে রয়েছে ওরা।

কি করা এখন? রবিনের প্রশ্ন।

মাথা ঠাণ্ডা রেখেছে মুসা, ভেবে দেখল কি করা যায়। সাঁতার কেটে তীরে পৌঁছতে পারব না। লাফিয়েও পেরোতে পারব না এতদূর। মাথার ওপরে এমন কোন ডালও নেই যে ধরে বেয়ে বেয়ে চলে যাব। তাড়াহুড়ো করে কিছু করতে গেলে বোটটা যাবে পড়ে।

কি করা যায়, বল তো মুসা? গলা কাঁপছে কিশোরের।

নিচে দড়ি দেখতে পাচ্ছি, মুসা বলল। ওটার মাথায় ফাঁস বানিয়ে ব্যাসোর মত তীরে ছুঁড়ে মারা গেলে, কোন ভাঙা গাছের গুড়িতে আটকানো যাবে। তারপর ওই দড়ি ধরে ঝুলে ঝুলে পেরিয়ে যেতে পারব। রবিন, তোমার ওজন সব চেয়ে কম। যাও, দড়িটা নিয়ে এস।

মাথা ঝাঁকিয়ে দড়ির জন্যে রওনা হল রবিন। দুলে উঠল বোট, ঘ্যাঁস্‌স্‌ করে আওয়াজ হল নিচে, ঝটকা দিয়ে আগে বাড়ল খানিকটা।

ওদিক দিয়ে নয়! হুঁশিয়ার করল মুসা। পেছন দিয়ে যাও, রেলিঙের ওপর দিয়ে বেয়ে নামো। আমরা আরও পেছনে সরে ভার চাপাচ্ছি।

আরেকবার মাথা ঝাঁকিয়ে রেলিঙে উঠে পড়ল রবিন। রেলিঙ ধরে ঝুলে পড়ল। তারপর আলগোছে ছেড়ে দিল হাত। খুব আস্তেই পড়ল নিচের ডেকে। দড়ির বাণ্ডিল তুলে নিয়ে ছুঁড়ে দিল ওপরে।

দড়ি খুলে একমাথায় একটা ফাঁস বানিয়ে ফেলল মুসা। শরীর যথাসম্ভব কম নেড়ে, কম ঝাঁকিয়ে ফাঁসটা ছুঁড়ে মারল একটা গাছ সই করে। গাছের তিন ফুট দূরে পড়ল ফাঁসটা।

টেনে এনে আবার চেষ্টা করল সে। ভাঙা গাছের গোড়ায় পড়ল ফাঁসটা। ভীষণ দুলে উঠল বোট। টাল সামলাতে না পেরে পড়েই যাচ্ছিল কিশোর, কোনমতে রেলিঙ ধরে সামলাল। পানি যেদিক থেকে আসছে সেদিকে চোখ পড়তেই রক্ত সরে গেল মুখ থেকে। তোতলাতে শুরু করল, মু-মুসা, গাছ। এসে বাড়ি মারলে গেছি…।

ভেসে আসা বিশাল গুড়িটার দিকে শান্ত দৃষ্টিতে তাকাল মুসা, আস্তে মাথা ঝাঁকিয়ে খুলে ফেলতে লাগল বাণ্ডিলের বাকি দড়ি। তারপর সাবধানে নিশানা করে ছুঁড়ে মারল আবার ফাঁস। এইবার কাজ হল, ভাঙা গাছের কাণ্ড গলে আটকে গেল ফাঁস। দড়িটা টান টান করে এদিকের মাথা শক্ত করে বেঁধে ফেলল রেলিঙে। বলল, রবিন, তুমি আগে যাও।

সরে গিয়ে ওপরে হাত তুলে দড়িটা ধরল রবিন। ঝুলে ঝুলে এগোল। খুব তাড়াতাড়িই তীরের মাটিতে গিয়ে দাঁড়াল সে। তাড়াতাড়ি ফাঁসটা টেনে নামিয়ে দিল গাছের গোড়ার দিকে। যাতে আরও শক্ত হয়ে আটকে থাকে।

কিশোর, এবার তুমি যাও,মুসা বলল।

দ্বিধা করল কিশোর। দেখল, ছুটে আসছে গাছের গুঁড়িটা। একবার ঢোক গিলে, দড়ি ধরে ঝুলে পড়ল। ভাবছে, সময়মত পেরোতে পারবে তো? পারল। কিছুক্ষণ পরেই রবিনের পাশে এসে দাঁড়াল সে।

দুজনের ভার সরে যাওয়ায় অনেক হালকা হয়ে গেল বোটের পেছনটা। আটকা পড়া কুটোর মত দুলতে শুরু করল, এপাশ ওপাশ নড়ছে গলুই। গাছের গুঁড়িটাও প্রায় এসে গেছে। দেরি করল না আর মুসা। দড়ি ধরে ঝুলে পড়ে সড়সড় করে নেমে চলে এল অনেকখানি। তার পা-ও মাটি ছুঁল, গুড়িটাও এসে ধাক্কা মারল বোটটাকে।

ছেলেদের ভার সরে যাওয়ায় এমনিতেই সরি সরি করছিল বোট, ধাক্কা খেয়ে আর আটকে থাকতে পারল না। সড়াৎ করে পেরিয়ে গেল বাধের বাকি অংশ, হ্যাঁচকা টানে ছিঁড়ে গেল দড়ি।

পাথরে বাড়ি খেয়ে বোট ভাঙার মড়মড় শব্দ কানে এল ছেলেদের, কাঁটা দিল গায়ে।

হউফ, করে মুখ দিয়ে বাতাস ছাড়ল রবিন।

এতক্ষণে রাগ দেখা দিল মুসার মুখে। শুঁটকি! মুঠো শক্ত হয়ে গেল তার। দাঁড়া, আগে ধরে নিই…।

শুঁটকি, ঘোর ভাঙল যেন কিশোরের, আমাদের আগে চলে গেছে। সে বলেছে, সিঁড়িটা কোথায় জানে। এস।

উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে আবার গোয়েন্দাপ্রধানের চোখের তারা। বিপদ কেটে গেছে, তার মগজও চালু হয়ে গেছে পুরোদমে।

আশেপাশেই কোথাও আছে সিঁড়িটা, বলল সে। আলাদা আলাদা হয়ে খুঁজব আমরা। ওয়াকিটকিতে যোগাযোগ রাখব। কারও চোখে কোন সিঁড়ি পড়লেই অন্যকে জানাব।

ওয়াইনেক ক্রিকের ধার ধরে খুঁজতে শুরু করল ওরা। অনেক দূর পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে খুঁজল, কিছুই চোখে পড়ল না।

ভুল হয়েছে কোথাও, ওয়াকিটকিতে বলল কিশোর। কি জানি! জবাব দিল মুসা।

কিশোর, রবিন বলল, প্রথম ধাঁধাটার সঠিক সমাধান হয়েছে তো? তুমি কি শিওর, বিলাবং মানে জলাশয়?

নিশ্চয়…, থেমে গেল কিশোর। দ্বিধায় পড়েছে। ডিকশনারিতে অবশ্য দেখিনি। অন্য কোন মানে থাকতেও পারে। কাছাকাছি টেলিফোন কোথায় বল তো?

ডেপুটির অফিসে, জবাব দিল মুসা। যাব নাকি? সাইকেলের কাছাকাছি রয়েছি আমি।

যাও। লাইব্রেরিয়ানকে ফোন করে জিজ্ঞেস কর, কি কি মানে হয়। কুইক।

 

মুসা গেছে অনেকক্ষণ হয়েছে। পশ্চিম দিগন্তে নেমে যাচ্ছে সূর্য। অন্ধকার হয়ে যাবে শিগগিরই, উদ্বিগ্ন হয়ে উঠেছে কিশোর। ভাবছে, মুসাকে খুঁজতে যাবে কিনা,

এই সময় হঠাৎ ওয়াকিটকিতে শোনা গেল তার কণ্ঠ।

কিশোর? রবিন? আছ ওখানে?

আছি, সেকেণ্ড, জবাব দিল কিশোর। কি জানলে?

অনেক মানেই হয় বিলাবঙের। মূল জলধারা থেকে বেরোনো উপ-জলধারা, যেটা আর কোন জলধারার সঙ্গে মিশতে পারে না, কোথাও গিয়ে বুজে কিংবা মরে যায়, তাকে বলে বিলাবং।

নেই ওরকম, রবিন বলল। এখানে দেখিনি।

তাহলে আরেক রকমের কথা বলি। শুধু বর্ষাকালে পানি বহন করে এরকম জলধারাকেও বিলাবং বলে।

হ্যাঁ, হয়েছে, এইটাই! বলে উঠল কিশোর। সিমেন্টে তৈরি ওই নালাটা, পর্বতের ঢাল বেয়ে যেটা নেমে এসেছে বাঁধে। বৃষ্টি হলেই শুধু পানি বহন করে ওটা, এমনিতে থাকে শুকনো। মুসা, ওখানে মিলিত হব আমরা।

কয়েক মিনিট পর নালাটার মুখের কাছে এসে দাঁড়াল রবিন আর কিশোর। ওয়াইনেজ ক্রিক এখানে সব চেয়ে চওড়া। সিমেন্টে তৈরি নালাটা আঁকা হয়ে উঠে গেছে ঢাল বেয়ে, অদৃশ্য হয়ে গেছে ঝোপঝাড়ের আড়ালে। নালার দুপাড় ধরে ধীরে ধীরে ওপরে উঠতে শুরু করল দুজনে।

কিছুই নেই, মাথা নাড়ল রবিন। সিঁড়ির চিহ্নও দেখছি না।

থাকতেই হবে। আমি এখন শিওর, বুড়ো কারমলের বিলাং এটাই। এস।

কমে আসছে দিনের আলো। আবার আগের জায়গায় নেমে আসতে শুরু করল দুজনে। খানিকটা নেমেছে, হঠাৎ ওয়াইনেজ ক্রিকের অন্য পাড় থেকে শোনা গেল মুসার চিৎকার। এই, পেয়েছি, কোথায় তোমরা?

প্রায় ছুটে নেমে এল দুজনে। হাত তুলে ঝর্নার ভাটির দিকে দেখাল মুসা, ওদের বাঁয়ে।

কই? রবিন জিজ্ঞেস করল। আমি তো কিছু দেখছি না।

এখান থেকে দেখা যাবে না, কিশোর বলল। চল ওখানে যাই। ঝোপঝাড়ের ভেতর ঢুকে পড়ল সে। ছুটতে শুরু করল। তার পিছে রবিন। কয়েক মিনিট পরেই সিঁড়িটা দেখল ওরাও। অনেক পুরানো, কাঠের তৈরি। গাছপালার ফাঁকফোকর দিয়ে আসা পড়ন্ত রোদে সোনালি দেখাচ্ছে। আশেপাশে ঝোপ গজিয়ে উঠেছে। পর্বতের গা থেকে অর্ধেক নেমে এসেছে সিঁড়ি, নিচের অংশ নেই।

পানির তোড়ে ভেঙে চলে গেছে, কিশোর আন্দাজ করল, কিংবা পুরানো হতে হতে আপনাআপনিই ভেঙে পড়েছে। সিঁড়ির অবস্থা খুব খারাপ।

আরেক দিক দিয়ে ঘুরে এসে ওদের পাশে দাঁড়াল মুসা। হাঁপাতে হাঁপাতে বলল, মহা ধড়িবাজ ছিল কারমলটা। ক্রিক থেকে হাজার চেষ্টা করেও দেখা যাবে না। আমি পলকের জন্যে দেখেছি রাস্তার ওপর থেকে।

আশা করি, হেসে বলল কিশোর, তোমার মত ঈগল চোখ নেই শুঁটকির। এস।

পুরানো নড়বড়ে সিঁড়ি বেয়ে পর্বতের ওপরের একটা ভোলা চত্বরে উঠে এল ছেলেরা। বড় বড় ঘাস জন্মে রয়েছে, তৃণভূমিই বলা চলে জায়গাটাকে। অনেক দূর দিয়ে ওটার পাশ কাটিয়েছে পার্কের মেইন রোড। পঞ্চাশ গজমত দূরে একটা বাস স্টপেজ। চত্বরের মাঝে দাঁড়িয়ে রয়েছে ব্রোঞ্জের একটা ছোট মূর্তি।

কিশোর! রবিন বলল, মূর্তিটা!

কাউবয়ের মূর্তি, দাঁড়িয়ে আছে গ্র্যানাইটের বেদির ওপর। গুলি ছোঁড়ার ভঙ্গিতে পিস্তল তুলে রেখেছে কাউবয়।

পিসটল, প্রায় চেঁচিয়ে উঠল মুসা। দ্য লেডি ফ্রম ব্রিস্টল, অ্যাণ্ড অল আলোন, অর্থাৎ একা!

পিস্তলটা কোনদিক নির্দেশ করছে? নিজেকেই প্রশ্ন করল যেন কিশোর।

বেদিতে চড়ে কাউবয়ের হাতে গাল লাগিয়ে পিস্তল কোনদিকে নিশানা করছে দেখল মুসা। তারপর চোখ মিটমিট করতে করতে মাথা নাড়ল। না, তেমন কিছুই তো দেখলাম না।

রবিনও উঠে দেখল। বলল, শুধু গাছপালা।

বেদির দিকে তাকাল কিশোর। একবার চিমটি কাটল নিচের ঠোঁটে। মাথা দোলাল, হমম্। ঘোরানো যায় মূর্তিটা। ভূমিকম্প হলে ঝাঁকুনি লেগে ঘুরে যায়।

মানে? ভ্রূকুটি করল মুসা। ইদানীং তো ভূমিকম্প হয়নি।

মাথা নাড়ল কিশোর, না, ভুমিকম্পে নয়। পায়ের গোড়ায় তাজা চিহ্ন, পাথরের গুড়োও পড়ে আছে। ঘোরানো হয়েছে।

শুঁটকি! গুঙিয়ে উঠল মুসা।

তাছাড়া আর কে? গম্ভীর হয়ে বলল কিশোর। এটাকে ঘুরিয়ে রেখে গেছে, যাতে আমরা বুঝতে না পারি কোনদিক নির্দেশ করছে।

তাহলে পরের ধাঁধার সমাধান কি করে করব? রবিন বলল।

শুঁটকির ঘাড় চেপে ধরে।

যাওয়ার জন্যে ঘুরল ওরা। গাছের তলায় গোধূলির ছায়া। সেখান থেকে বেরিয়ে পার্কের রাস্তার দিকে ছুটে গেল একটা ছায়ামূর্তি।

আমাদের ওপর চোখ রাখছিল! রবিন বলল।

ধর ব্যাটাকে, বলেই দৌড় দিল কিশোর।

গাছপালার ভেতর দিয়ে ছুটল ওরা। সামনে রাস্তায় গাড়ির ইঞ্জিন স্টার্ট নেয়ার শব্দ হল। ওরা রাস্তায় পৌঁছতে পৌঁছতে অনেক দূরে চলে গেল গাড়িটা।

গাড়িটা চিনেছ? কিশোরের প্রশ্ন।

না, মুসা বলল, তবে শুঁটকির নয় এটা ঠিক।

আবার তৃণভূমিতে ফিরে এল ওরা। সিঁড়ি বেয়ে ঢালে নেমে এল ওয়াইনেজ ক্রিকের কাছে। ঘনায়মান সাঝের ম্লান আলোয় সাইকেল চালাতে চালাতে রবিন বলল, কিশোর, নিশ্চয় সেই দৈত্যটা।

কিন্তু ছায়ামূর্তিটা তো ছোট দেখলাম। না রবিন, অন্য কেউ।

পথের পাশে গাছপালার আড়ালে ঘন ছায়া। সেদিকে তাকিয়ে অস্বস্তি লাগল মুসার। মনে পড়ল, টেলিফোনে হুঁশিয়ারির কথা।

শুঁটকিকে কোথায় খুঁজব? রবিন জানতে চাইল। আর ধরে জিজ্ঞেস করলেই কি বলবে নাকি আমাদেরকে?

না, বলবে না, একমত হল কিশোর। তবে উল্টোপাল্টা কথা শুরু করবে। আর বেশি কথা বলতে গিয়েই কিছু ভুল করে ফেলবে, সব সময় যা করে। চলো আগে ওর বাড়িতে দেখি। দেরি এমনিতেই হয়ে গেছে আমাদের, আর কয়েক মিনিটে কিছু হবে না।

বাড়িতে নেই শুঁটকি। তার মা বললেন, বাবার সঙ্গে নাকি কোথায় বেরিয়েছে।

এবার? রবিন বলল।

নজর রাখব ওর ওপর, বলল কিশোর। আমার মনে হয় না আজ রাতে আর গুপ্তধন খুঁজতে বেরোবে ও। রাইমিং স্ল্যাঙের কথা বলতে শুনেছে আমাদেরকে। বলা যায় না, বঁটকির পক্ষেও এখন ধাঁধার সমাধান করে ফেলা হয়ত সম্ভব।

কিশোর, মুসা প্রশ্ন তুলল। শুঁটকিকে সারাক্ষণ চোখে চোখে রাখতে পারব না আমরা। ওর গাড়ি আছে। আমাদের নেই।

দরকারও নেই। ভূত-থেকে-ভূতের সাহায্য নেব আমরা।

<

Super User